শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

আমি ওবায়দুল কাদেরকেও ভয় পাই না: কাদের মির্জা

প্রভাষক মামুনুর রশিদ ##

সাম্প্রতিক সময়ে নোয়াখালীর বসুরহাট পৌরসভা নির্বাচন উপলক্ষে বিভিন্ন সভায় দেয়া সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই আবদুল কাদের মির্জা বক্তব্য নিয়ে নানা আলোচনা-সমালোচনা চলছে। খোদ আওয়ামী লীগের মধ্যে এ নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে।

এর মধ্যেই মঙ্গলবার বসুরহাট পৌরসভার জামাইরটেকে নির্বাচনী পথসভায় ‘সত্য বলতে ভয় পান না’ বলে জানিয়েছেন আবদুল কাদের মির্জা।

তিনি বলেন, ‘আমি বললে অপরাধ। ধমকায় —গুলি করবে, ঝাঁজরা করে দিবে। কিন্তু আমি এসবকে ভয় পাই না। আমি ওবায়দুল কাদেরকেও ভয় পাই না। দল থেকে বহিষ্কার করে দেওয়া হলেও আমি বঙ্গবন্ধুর আদর্শের রাজনীতি ছেড়ে যাব না।’

তার বিরুদ্ধে জাতীয় পর্যায় থেকে ষড়যন্ত্র চলছে জানিয়ে বলেন, আমি যখন নোয়াখালীর অপরাজনীতি, ফেনীর অপরাজনীতি এবং সন্দ্বীপের এমপি, যে আমার এলাকার হাজার হাজার একর জমি দখল করে রেখেছে, এদের কথা যখন বলি, যখন প্রশাসনের অনিয়মের কথা বলি, যখন ভোট ডাকাতির বিরুদ্ধে কথা বলি, তখন আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র আজকে জাতীয় পর্যায় থেকে।

বসুরহাট পৌরসভার ৫ নং ওয়ার্ডের সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্দেশে কাদের মির্জা বলেন, ‘আপনি জিরো টলারেন্স ঘোষণা করেছেন মাদকের বিরুদ্ধে। কিন্তু সেটা আমাদের নেতারা কার্যকর করেনি, প্রশাসন কার্যকর করেনি। আপনি এই সিদ্ধান্ত দেন যে মাদকের সঙ্গে, নারীর সঙ্গে যারা জড়িত; তারা দলের কোনো পর্যায়ে কোনো প্রতিনিধি হতে পারবে না।’

বসুরহাট পৌরসভার নির্বাচনে তিনি আওয়ামী লীগের প্রার্থী। আগামী ১৬ জানুয়ারি এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

গত বৃহস্পতিবার (২ জানুয়ারি)  থেকে নির্বাচন সম্পর্কে দেওয়া তার বক্তব্য নিয়ে দেশের রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়। বৃহস্পতিবার নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণাকালে তিনি বলেন, জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশের মানুষের ভাতের অধিকার নিশ্চিত হলেও ভোটের অধিকার এখনও নিশ্চিত হয়নি। এজন্যই আমার স্লোগান ‘আমার ভোট আমি দেব, যাকে ইচ্ছা তাকে দেব’।

আবদুল কাদের মির্জা বলেছিলেন, প্রশাসনকে বলতে চাই, পরিচ্ছন্ন নির্বাচনের উদ্দেশ্যে পরিবেশ সৃষ্টি করুন। নির্বাচনে কোথাও কোনো অনিয়ম হলে সঙ্গে সঙ্গে ওই কেন্দ্রের ভোট বন্ধ করে দিতে হবে। মা-বোনসহ সবাইকে বলতে চাই, উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দেবেন। কেউ ভোট কেন্দ্রের ভেতরে-বাইরে কোনো ধরনের অনিয়ম-বিশৃঙ্খলা করতে চাইলে পায়ের স্যান্ডেল খুলে মুখে মারবেন। না পারলে আমাকে জানাবেন।

এদিকে মঙ্গলবার দুপুরে কাদের মির্জার স্বাক্ষরিত একটি ‘প্রেস বিজ্ঞপ্তি’ গণমাধ্যমকে সরবরাহ করা হয়। এতে তিনি তার নামে বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে বলে দাবি করেন। সেই সঙ্গে তার খণ্ডিত বক্তব্য প্রচার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন। নোয়াখালীর স্থানীয় রাজনীতি নিয়ে কথা বলেছেন, জাতীয় ইস্যুতে কোনো বক্তব্য রাখেননি বলে দাবি করেন।

প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে তিনি উল্লেখ করেন, নির্বাচন নিয়ে নানা বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে মানুষের মাঝে। আমি শুধুমাত্র একটি অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত স্থাপনের উদ্দেশ্যে ১৬ জানুয়ারি অনুষ্ঠিতব্য বসুরহাট পৌরসভা নির্বাচন অবাধ, গ্রহণযোগ্য ও প্রভাবমুক্ত নিরপেক্ষ নির্বাচন যেন হয়, এ জন্য নানা নির্বাচনী কর্মসূচিতে আমি কথাগুলো বলেছি।

আপনার মন্তব্য লিখুন

লেখকের সম্পর্কে

Shahriar Hossain

আমি ওবায়দুল কাদেরকেও ভয় পাই না: কাদের মির্জা

প্রকাশের সময় : ০৩:৪৭:০৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ৬ জানুয়ারী ২০২১

প্রভাষক মামুনুর রশিদ ##

সাম্প্রতিক সময়ে নোয়াখালীর বসুরহাট পৌরসভা নির্বাচন উপলক্ষে বিভিন্ন সভায় দেয়া সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই আবদুল কাদের মির্জা বক্তব্য নিয়ে নানা আলোচনা-সমালোচনা চলছে। খোদ আওয়ামী লীগের মধ্যে এ নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে।

এর মধ্যেই মঙ্গলবার বসুরহাট পৌরসভার জামাইরটেকে নির্বাচনী পথসভায় ‘সত্য বলতে ভয় পান না’ বলে জানিয়েছেন আবদুল কাদের মির্জা।

তিনি বলেন, ‘আমি বললে অপরাধ। ধমকায় —গুলি করবে, ঝাঁজরা করে দিবে। কিন্তু আমি এসবকে ভয় পাই না। আমি ওবায়দুল কাদেরকেও ভয় পাই না। দল থেকে বহিষ্কার করে দেওয়া হলেও আমি বঙ্গবন্ধুর আদর্শের রাজনীতি ছেড়ে যাব না।’

তার বিরুদ্ধে জাতীয় পর্যায় থেকে ষড়যন্ত্র চলছে জানিয়ে বলেন, আমি যখন নোয়াখালীর অপরাজনীতি, ফেনীর অপরাজনীতি এবং সন্দ্বীপের এমপি, যে আমার এলাকার হাজার হাজার একর জমি দখল করে রেখেছে, এদের কথা যখন বলি, যখন প্রশাসনের অনিয়মের কথা বলি, যখন ভোট ডাকাতির বিরুদ্ধে কথা বলি, তখন আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র আজকে জাতীয় পর্যায় থেকে।

বসুরহাট পৌরসভার ৫ নং ওয়ার্ডের সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্দেশে কাদের মির্জা বলেন, ‘আপনি জিরো টলারেন্স ঘোষণা করেছেন মাদকের বিরুদ্ধে। কিন্তু সেটা আমাদের নেতারা কার্যকর করেনি, প্রশাসন কার্যকর করেনি। আপনি এই সিদ্ধান্ত দেন যে মাদকের সঙ্গে, নারীর সঙ্গে যারা জড়িত; তারা দলের কোনো পর্যায়ে কোনো প্রতিনিধি হতে পারবে না।’

বসুরহাট পৌরসভার নির্বাচনে তিনি আওয়ামী লীগের প্রার্থী। আগামী ১৬ জানুয়ারি এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

গত বৃহস্পতিবার (২ জানুয়ারি)  থেকে নির্বাচন সম্পর্কে দেওয়া তার বক্তব্য নিয়ে দেশের রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়। বৃহস্পতিবার নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণাকালে তিনি বলেন, জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশের মানুষের ভাতের অধিকার নিশ্চিত হলেও ভোটের অধিকার এখনও নিশ্চিত হয়নি। এজন্যই আমার স্লোগান ‘আমার ভোট আমি দেব, যাকে ইচ্ছা তাকে দেব’।

আবদুল কাদের মির্জা বলেছিলেন, প্রশাসনকে বলতে চাই, পরিচ্ছন্ন নির্বাচনের উদ্দেশ্যে পরিবেশ সৃষ্টি করুন। নির্বাচনে কোথাও কোনো অনিয়ম হলে সঙ্গে সঙ্গে ওই কেন্দ্রের ভোট বন্ধ করে দিতে হবে। মা-বোনসহ সবাইকে বলতে চাই, উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দেবেন। কেউ ভোট কেন্দ্রের ভেতরে-বাইরে কোনো ধরনের অনিয়ম-বিশৃঙ্খলা করতে চাইলে পায়ের স্যান্ডেল খুলে মুখে মারবেন। না পারলে আমাকে জানাবেন।

এদিকে মঙ্গলবার দুপুরে কাদের মির্জার স্বাক্ষরিত একটি ‘প্রেস বিজ্ঞপ্তি’ গণমাধ্যমকে সরবরাহ করা হয়। এতে তিনি তার নামে বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে বলে দাবি করেন। সেই সঙ্গে তার খণ্ডিত বক্তব্য প্রচার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন। নোয়াখালীর স্থানীয় রাজনীতি নিয়ে কথা বলেছেন, জাতীয় ইস্যুতে কোনো বক্তব্য রাখেননি বলে দাবি করেন।

প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে তিনি উল্লেখ করেন, নির্বাচন নিয়ে নানা বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে মানুষের মাঝে। আমি শুধুমাত্র একটি অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত স্থাপনের উদ্দেশ্যে ১৬ জানুয়ারি অনুষ্ঠিতব্য বসুরহাট পৌরসভা নির্বাচন অবাধ, গ্রহণযোগ্য ও প্রভাবমুক্ত নিরপেক্ষ নির্বাচন যেন হয়, এ জন্য নানা নির্বাচনী কর্মসূচিতে আমি কথাগুলো বলেছি।