বরিশাল ব্যুরো: বরিশালের উজিরপুর উপজেলার জল্লা ইউনিয়নের সিমান্তবর্তী ইন্দুরকানি গ্রামে আম গাছের সাথে একই রশিতে ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছে এক প্রেমিক যুগল। নিহত প্রেমিক প্রিন্সের মুঠোফোনে একটি সুইসাইড নোট পাওয়ায় প্রাথমিকভাবে পুলিশের ধারণা প্রেমিক যুগল আত্মহত্যা করেছে।
মঙ্গলবার ভোরে থানা পুলিশ তাদের লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য মর্গে প্রেরন করে। এরা হলো প্রিন্স (২৫) ও তৃষ্ণা (১৭)।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ওই উপজেলার জল্লা ইউনিয়নের ইন্দুরকানি গ্রামের খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের এক সন্তানের জনক প্রিন্স ৮ বছর পূর্বে প্রেম করে পার্শ্ববর্তী আগৈলঝাড়া উপজেলায় হিন্দু সম্প্রদায়ের মিনুকে বিয়ে করেন। তাদের সংসারে চার বছরের একটি পুত্র সন্তান রয়েছে। এরই মধ্যে প্রিন্সের সাথে গত ২ মাস ধরে একই গ্রামের তৃষ্ণার (১৭) পরকীয়া প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এ নিয়ে দুই পারিবারের মধ্যে দ্বন্দ্ব চলে আসছিল।
পুলিশের ধারণা পারিবারিক কলহ থেকে মুক্তি পেতে সোমবার রাতের কোনো এক সময় প্রেমিক যুগল প্রিন্স ও তৃষ্ণা একসাথে গাছের সাথে ঝুলে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। তবে তারা সহমরণের উদ্দেশ্যে স্বেচ্ছায় আত্মহত্যা করেছে নাকি পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেয়ার অপচেষ্টা করা হচ্ছে সে বিষয়টি অনুসন্ধানে নেমেছে পুলিশ।
মরদেহ উদ্ধারকারী উজিরপুর মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) হেলাল উদ্দিন জানান, মঙ্গলবার ভোরে ইন্দুরকানি গ্রামের খোকন রায়ের বাড়ির আম গাছে তাদের ঝুলন্ত মরদেহ দেখতে পেয়ে স্থানীয়রা পুলিশে খবর দেয়। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ দুটি উদ্ধার করে মর্গে প্রেরন করে।
পরিদর্শক হেলাল আরো জানান, ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার হওয়া প্রিন্সের মুঠোফোনে তার লেখা একটি ক্ষুদে বার্তা পাওয়া গেছে। এতে লেখা রয়েছে ‘আমরা স্বেচ্ছায় আত্মহত্যা করেছি। আমাদের মৃত্যুর পরে আমার এই মোবাইল ফোনটি যে পাবেন তার কাছে অনুরোধ আমাদের দুই জনকে যেন এক সঙ্গে এক কবরে সমাধিস্থ করা হয়’। এই ধরণের নোটে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে তারা আত্মহত্যা করেছে।
উজিরপুর মডেল থানার ওসি জিয়াউল আহসান বলেন, প্রিন্স ও তৃষ্ণার মৃত্যু রহস্য উন্মোচনে তাদের মরদেহ ময়না তদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় মামলা দায়ের সহ আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলেন ওসি।