শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কলকাতা বিমানবন্দরে এসে পৌঁছল করোনা ভ্যাকসিন

 আবু রায়হান জিকো ## ভ্যাকসিন নিয়ে রাজ্যে পৌঁছল স্পাইসজেটের বিশেষ বিমান। দুপুর আড়াইটের মধ্যেই বিমানবন্দর থেকে গাড়িতে করে ভ্যাকসিন অন্যত্র নিয়ে যাওয়ার কথা। কলকাতা সহ দেশের ১৩ টি জায়গায় পৌঁছে যাবে এই ভ্যাকসিন। সেগুলি নিতে বিমানবন্দরে রাজ্য সরকারের গাড়ি পৌঁছে গিয়েছে। জানা গিয়েছে কলকাতা বিমানবন্দরে পৌঁছেছে দুটি ভ্যান। তাতেই নিয়ে যাওয়া হবে করোনা ভ্যাকসিন। অন্যদিকে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের পক্ষ থেকেও একটি গাড়ি এসে পৌঁছেছে বিমানবন্দরে। নিরাপত্তার দায়িত্বে মোতায়েন করা হয়েছে টাস্ক ফোর্স।
জানা গিয়েছে, প্রথম দফায় মোট ৬ লক্ষ ৮৯ হাজার ডোজ এসেছে। এদিন বিশেষ বিমান থেকে মোট ৫৮টি বক্স নামানো হয়। বিমানবন্দর থেকে ভ্যাকসিন নিয়ে বাগবাজারের সেন্ট্রাল স্টোরে মজুত করা হবে। এরপর আজ রাত থেকেই ভ্যাকসিন বন্টন শুরু হবে। নিয়ম মেনেই বন্টন হবে বলে জানিয়েছেন রাজ্যের মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়। ১৬ জানুয়ারি থেকে শুরু হবে টিকাকরণের কাজ।
মঙ্গলবার ভোররাত থেকেই শুরু হয়ে যায় তার তোড়জোড়। পুনের সেরাম ইনস্টিটিউট অফ ইন্ডিয়া (এসআইআই) থেকে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে কোভিশিল্ড পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। প্রথম দফায় তিনটি ট্রাক বোঝাই টিকা পাঠানো হচ্ছে। এর আগে সোমবার বিকেলেই টিকা কেনার জন্য সেরামের সঙ্গে সরকারিভাবে চুক্তি স্বাক্ষর করে কেন্দ্র। তারপরই শুরু হয়ে যায় দেশের বিভিন্ন প্রান্তে টিকা পৌঁছে দেওয়ার শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। পাশাপাশি এর জন্য বন্দোবস্ত করা হয় কড়া নিরাপত্তারও। গতকাল বিকেল থেকেই ট্রাক জড়ো হতে শুরু করে সেরামের কার্যালয়ে।
আজ, মঙ্গলবার দিনের আলো ফোটার আগেই পুণের মঞ্জরিতে সেরামের কার্যালয়ে পুজোর আয়োজন করা হয়। নারকেল ফাটান পুলিসের ডেপুটি কমিশনার নম্রতা পাতিল। তারপর সেরামের কর্মীদের তুমুল হাততালির মধ্যে ভোর ৪ টে ৫৫ মিনিটে কোভিশিল্ড বোঝাই তিনটি ট্রাক কড়া নিরাপত্তার বেষ্টনীতে পুনে বিমানবন্দরের উদ্দেশে রওনা হয়ে যায়। ভোর ৫ টা ৩০ মিনিট নাগাদ বিমানবন্দরে আসার পর সেগুলি তোলা হয় বিশেষ বিমানে। বিমান সংস্থার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ওই বিশেষ বিমানটিতে ভিতরের তাপমাত্রা ২ ডিগ্রি থেকে 8 ডিগ্রির মধ্যে রাখার বিশেষ ব্যবস্থা রয়েছে।
পুণে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে বিমানে করে কোভিশিল্ড পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্বে থাকা এসবি লজিস্টিকের সন্দীপ ভোঁসলে জানিয়েছেন, পুনে বিমানবন্দর থেকে প্রথম উড়ানটি দিল্লির উদ্দেশে রওনা দেবে। সেটি বেলা ১০ টা ১৫ মিনিট নাগাদ দিল্লিতে অবতরণ করবে। সব মিলিয়ে আটটি বাণিজ্যিক উড়ানে (দুটি পণ্যবাহী এবং বাকিগুলি যাত্রীবাহী) টিকা পাঠানো হচ্ছে বলে জানানো হয়েছে।
সূত্রের খবর, আপাতত নয়াদিল্লি ও কলকাতা ছাড়াও আমদাবাদ, চেন্নাই, বেঙ্গালুরু, কারনাল, হায়দরাবাদ, বিজয়ওয়াড়া, গুয়াহাটি, লখনউ, চণ্ডীগড় এবং ভুবনেশ্বরে এই কোভিশিল্ড পৌঁছবে। প্রথম পণ্যবাহী বিমানে টিকা পাঠানো হবে হায়দরাবাদ, বিজয়ওয়াড়া এবং ভুবনেশ্বরে। দ্বিতীয় পণ্যবাহী উড়ানে কোভিশিল্ড এসে পৌঁছাবে কলকাতা এবং গুয়াহাটিতে।
এদিকে কলকাতা বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষকে আগে থেকেই এয়ারপোর্টের কোল্ডস্টোরেজেৱ ব্যবস্থা দেখে রাখতে বলা হয়েছে। জানা যাচ্ছে, আজ নির্ধারিত সময়েই বিমানবন্দরে চলে আসবে রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তরের দুটি বড় ভ্যাকসিন ভ্যান। যার একটিতে থাকবে ফ্রিজাৱ অন্যটি ইনসুলেটেড বা বায়ু নিরোধক। সঙ্গে কুল বক্সে তাপমাত্রা বজায় রেখে ভ্যাকসিন নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। স্বাস্থ্যদপ্তর সূত্রে জানানো হয়েছে, এই দুটি ভ্যানে ৪০ লক্ষ ডোজ ভ্যাকসিন নিয়ে যাওয়া সম্ভব। বিমানবন্দর থেকে ভ্যাকসিন নিয়েই ভ্যান দুটি ছুটবে বাগবাজারের কেন্দ্রীয় মেডিক্যাল স্টোরের দিকে, যেখানে রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তরের টিকা মজুত রাখার প্রধান স্টোরের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সেই স্টোরে বিশেষ আইএলআর ফ্রিজে রাখা হবে করোনার টিকা। দপ্তর সূত্রে আরও জানানো হয়েছে, সেই মেন স্টোরটি থেকে ৪৭টি ভ্যাকসিন ভ্যানের মাধ্যমে জেলায় জেলায় পৌঁছে দেওয়া হবে করোনার টিকা।

আপনার মন্তব্য লিখুন

লেখকের সম্পর্কে

Shahriar Hossain

কলকাতা বিমানবন্দরে এসে পৌঁছল করোনা ভ্যাকসিন

প্রকাশের সময় : ০৬:০০:৪৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১২ জানুয়ারী ২০২১
 আবু রায়হান জিকো ## ভ্যাকসিন নিয়ে রাজ্যে পৌঁছল স্পাইসজেটের বিশেষ বিমান। দুপুর আড়াইটের মধ্যেই বিমানবন্দর থেকে গাড়িতে করে ভ্যাকসিন অন্যত্র নিয়ে যাওয়ার কথা। কলকাতা সহ দেশের ১৩ টি জায়গায় পৌঁছে যাবে এই ভ্যাকসিন। সেগুলি নিতে বিমানবন্দরে রাজ্য সরকারের গাড়ি পৌঁছে গিয়েছে। জানা গিয়েছে কলকাতা বিমানবন্দরে পৌঁছেছে দুটি ভ্যান। তাতেই নিয়ে যাওয়া হবে করোনা ভ্যাকসিন। অন্যদিকে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের পক্ষ থেকেও একটি গাড়ি এসে পৌঁছেছে বিমানবন্দরে। নিরাপত্তার দায়িত্বে মোতায়েন করা হয়েছে টাস্ক ফোর্স।
জানা গিয়েছে, প্রথম দফায় মোট ৬ লক্ষ ৮৯ হাজার ডোজ এসেছে। এদিন বিশেষ বিমান থেকে মোট ৫৮টি বক্স নামানো হয়। বিমানবন্দর থেকে ভ্যাকসিন নিয়ে বাগবাজারের সেন্ট্রাল স্টোরে মজুত করা হবে। এরপর আজ রাত থেকেই ভ্যাকসিন বন্টন শুরু হবে। নিয়ম মেনেই বন্টন হবে বলে জানিয়েছেন রাজ্যের মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়। ১৬ জানুয়ারি থেকে শুরু হবে টিকাকরণের কাজ।
মঙ্গলবার ভোররাত থেকেই শুরু হয়ে যায় তার তোড়জোড়। পুনের সেরাম ইনস্টিটিউট অফ ইন্ডিয়া (এসআইআই) থেকে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে কোভিশিল্ড পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। প্রথম দফায় তিনটি ট্রাক বোঝাই টিকা পাঠানো হচ্ছে। এর আগে সোমবার বিকেলেই টিকা কেনার জন্য সেরামের সঙ্গে সরকারিভাবে চুক্তি স্বাক্ষর করে কেন্দ্র। তারপরই শুরু হয়ে যায় দেশের বিভিন্ন প্রান্তে টিকা পৌঁছে দেওয়ার শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। পাশাপাশি এর জন্য বন্দোবস্ত করা হয় কড়া নিরাপত্তারও। গতকাল বিকেল থেকেই ট্রাক জড়ো হতে শুরু করে সেরামের কার্যালয়ে।
আজ, মঙ্গলবার দিনের আলো ফোটার আগেই পুণের মঞ্জরিতে সেরামের কার্যালয়ে পুজোর আয়োজন করা হয়। নারকেল ফাটান পুলিসের ডেপুটি কমিশনার নম্রতা পাতিল। তারপর সেরামের কর্মীদের তুমুল হাততালির মধ্যে ভোর ৪ টে ৫৫ মিনিটে কোভিশিল্ড বোঝাই তিনটি ট্রাক কড়া নিরাপত্তার বেষ্টনীতে পুনে বিমানবন্দরের উদ্দেশে রওনা হয়ে যায়। ভোর ৫ টা ৩০ মিনিট নাগাদ বিমানবন্দরে আসার পর সেগুলি তোলা হয় বিশেষ বিমানে। বিমান সংস্থার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ওই বিশেষ বিমানটিতে ভিতরের তাপমাত্রা ২ ডিগ্রি থেকে 8 ডিগ্রির মধ্যে রাখার বিশেষ ব্যবস্থা রয়েছে।
পুণে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে বিমানে করে কোভিশিল্ড পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্বে থাকা এসবি লজিস্টিকের সন্দীপ ভোঁসলে জানিয়েছেন, পুনে বিমানবন্দর থেকে প্রথম উড়ানটি দিল্লির উদ্দেশে রওনা দেবে। সেটি বেলা ১০ টা ১৫ মিনিট নাগাদ দিল্লিতে অবতরণ করবে। সব মিলিয়ে আটটি বাণিজ্যিক উড়ানে (দুটি পণ্যবাহী এবং বাকিগুলি যাত্রীবাহী) টিকা পাঠানো হচ্ছে বলে জানানো হয়েছে।
সূত্রের খবর, আপাতত নয়াদিল্লি ও কলকাতা ছাড়াও আমদাবাদ, চেন্নাই, বেঙ্গালুরু, কারনাল, হায়দরাবাদ, বিজয়ওয়াড়া, গুয়াহাটি, লখনউ, চণ্ডীগড় এবং ভুবনেশ্বরে এই কোভিশিল্ড পৌঁছবে। প্রথম পণ্যবাহী বিমানে টিকা পাঠানো হবে হায়দরাবাদ, বিজয়ওয়াড়া এবং ভুবনেশ্বরে। দ্বিতীয় পণ্যবাহী উড়ানে কোভিশিল্ড এসে পৌঁছাবে কলকাতা এবং গুয়াহাটিতে।
এদিকে কলকাতা বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষকে আগে থেকেই এয়ারপোর্টের কোল্ডস্টোরেজেৱ ব্যবস্থা দেখে রাখতে বলা হয়েছে। জানা যাচ্ছে, আজ নির্ধারিত সময়েই বিমানবন্দরে চলে আসবে রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তরের দুটি বড় ভ্যাকসিন ভ্যান। যার একটিতে থাকবে ফ্রিজাৱ অন্যটি ইনসুলেটেড বা বায়ু নিরোধক। সঙ্গে কুল বক্সে তাপমাত্রা বজায় রেখে ভ্যাকসিন নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। স্বাস্থ্যদপ্তর সূত্রে জানানো হয়েছে, এই দুটি ভ্যানে ৪০ লক্ষ ডোজ ভ্যাকসিন নিয়ে যাওয়া সম্ভব। বিমানবন্দর থেকে ভ্যাকসিন নিয়েই ভ্যান দুটি ছুটবে বাগবাজারের কেন্দ্রীয় মেডিক্যাল স্টোরের দিকে, যেখানে রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তরের টিকা মজুত রাখার প্রধান স্টোরের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সেই স্টোরে বিশেষ আইএলআর ফ্রিজে রাখা হবে করোনার টিকা। দপ্তর সূত্রে আরও জানানো হয়েছে, সেই মেন স্টোরটি থেকে ৪৭টি ভ্যাকসিন ভ্যানের মাধ্যমে জেলায় জেলায় পৌঁছে দেওয়া হবে করোনার টিকা।