শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বেসরকারি শিক্ষকদের টিকা নিবন্ধনের সুযোগ নেই

প্রভাষক মামুনুর রশিদ ## করোনাভাইরাসের টিকা গ্রহণে শিক্ষকরাও অগ্রাধিকার তালিকায় রয়েছেন। শিক্ষা এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে এমনটা প্রচার করা হলেও বাস্তবতা ভিন্ন। কারণ টিকা নেয়ায় শিক্ষকদের নাম রেজিস্ট্রেশন করার ক্ষেত্রে এই অগ্রাধিকারের কোনো সুযোগ দৃশ্যমান নয়। ‘সুরক্ষা’ লিংকে ঢুকে ৪০ বছরের কম বয়সী শিক্ষকরা নাম রেজিস্ট্রেশন করতে পারছেন না। এই লিংকে ‘শিক্ষক’ নামে কোনো আলাদা অপশনও নেই।

শিক্ষকরা গণমাধ্যমকে জানান, সরকারি শিক্ষকরা সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীর অপশনে ঢুকতে পারলেও বেসরকারি শিক্ষকদের জন্য সেই সুযোগও নেই। আবার ৪০ বছরের কম বয়সী সরকারি-বেসরকারি শিক্ষকদের কেউ টিকার জন্য নাম নিবন্ধন করতে পারছেন না। করোনা টিকার ক্ষেত্রে শিক্ষকদের অগ্রাধিকারের কথাটা কেবল প্রচারেই আছে কাজে নেই।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিচালক ও মুখপাত্র অধ্যাপক ডা. নাজমুল ইসলাম বলেন, করোনা টিকা দেয়ায় শিক্ষকদের অগ্রাধিকার দেয়ার ক্ষেত্রে অফিশিয়াল কোনো নির্দেশনা আমরা পাইনি। এ জন্য সুরক্ষা লিংকে শিক্ষকদের জন্য আলাদা কোনো অপশন নেই। একই কারণে ৪০ বছরের কম বয়সীরা টিকার জন্য রেজিস্ট্রেশন করতে পারছেন না। শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে অফিসিয়ালি চিঠি দেয়া হলে আমরা এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবো।

বাংলাদেশ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক সমিতির নেতা হাবিবুর রহমান বলেন, অগ্রাধিকার দেয়া হলে শিক্ষকদের জন্য অপশন রাখা দরকার ছিলো। সেটা করা হয়নি। আর শিক্ষক তো শুধু সরকারি নয়, বেসরকারিও আছেন। তাদের জন্য তো কোনো সুযোগই নেই।

জানা যায়, দেশে শিক্ষক-কর্মচারীর সংখ্যা প্রায় ২০ লাখ। এর মধ্যে ১৫ লাখের বেশি শিক্ষকই বেসরকারি। সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকের সংখ্যা প্রায় চার লাখ। এ ছাড়া সরকারি ও সদ্য জাতীয়করণকৃত স্কুল-কলেজ মিলে আরো প্রায় ৭০ হাজার শিক্ষক-কর্মচারী রয়েছেন। এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারী প্রায় পাঁচ লাখ। আর এমপিওভুক্ত প্রতিষ্ঠানে নন-এমপিও শিক্ষক ও কিন্ডার গার্টেনে আরো প্রায় ১০ লাখ শিক্ষক রয়েছেন। সরকারি ও এমপিওভুক্ত প্রতিষ্ঠানের ৪০ শতাংশ শিক্ষকের বয়সই ৪০ বছরের নিচে। আর কিন্ডার গার্টেনে তা প্রায় ৭০ শতাংশ।

বাংলাদেশ অধ্যক্ষ পরিষদের সভাপতি অধ্যাপক মোহাম্মদ মাজহারুল হান্নান বলেন, নিবন্ধনে শিক্ষকদের জন্য আলাদা কোনো অপশন নেই। সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীর অপশনে সরকারি শিক্ষকরা রেজিস্ট্রেশন করতে পারলেও বেসরকারি শিক্ষকরা সেই সুযোগও পাচ্ছেন না। অথচ মাধ্যমিক থেকে মাস্টার্স পর্যন্ত ৯৭ শতাংশ শিক্ষকই বেসরকারি। ৪০ বছরের বেশি বয়সী শিক্ষকরা অন্যান্য সাধারণ নাগরিকের মতো রেজিস্ট্রেশন করতে পারছেন। সুরক্ষা অ্যাপে দ্রুততার সঙ্গে অগ্রাধিকারের তালিকায় শিক্ষক নামে অপশন যুক্ত করার জোর দাবি জানান তিনি।

আপনার মন্তব্য লিখুন

লেখকের সম্পর্কে

Shahriar Hossain

ইসরায়েল ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র আক্রমণ’ও চালায়,তার জবাব হবে কঠোর-ইরানের প্রেসিডেন্ট

বেসরকারি শিক্ষকদের টিকা নিবন্ধনের সুযোগ নেই

প্রকাশের সময় : ১১:৪৩:৫২ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৫ ফেব্রুয়ারী ২০২১

প্রভাষক মামুনুর রশিদ ## করোনাভাইরাসের টিকা গ্রহণে শিক্ষকরাও অগ্রাধিকার তালিকায় রয়েছেন। শিক্ষা এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে এমনটা প্রচার করা হলেও বাস্তবতা ভিন্ন। কারণ টিকা নেয়ায় শিক্ষকদের নাম রেজিস্ট্রেশন করার ক্ষেত্রে এই অগ্রাধিকারের কোনো সুযোগ দৃশ্যমান নয়। ‘সুরক্ষা’ লিংকে ঢুকে ৪০ বছরের কম বয়সী শিক্ষকরা নাম রেজিস্ট্রেশন করতে পারছেন না। এই লিংকে ‘শিক্ষক’ নামে কোনো আলাদা অপশনও নেই।

শিক্ষকরা গণমাধ্যমকে জানান, সরকারি শিক্ষকরা সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীর অপশনে ঢুকতে পারলেও বেসরকারি শিক্ষকদের জন্য সেই সুযোগও নেই। আবার ৪০ বছরের কম বয়সী সরকারি-বেসরকারি শিক্ষকদের কেউ টিকার জন্য নাম নিবন্ধন করতে পারছেন না। করোনা টিকার ক্ষেত্রে শিক্ষকদের অগ্রাধিকারের কথাটা কেবল প্রচারেই আছে কাজে নেই।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিচালক ও মুখপাত্র অধ্যাপক ডা. নাজমুল ইসলাম বলেন, করোনা টিকা দেয়ায় শিক্ষকদের অগ্রাধিকার দেয়ার ক্ষেত্রে অফিশিয়াল কোনো নির্দেশনা আমরা পাইনি। এ জন্য সুরক্ষা লিংকে শিক্ষকদের জন্য আলাদা কোনো অপশন নেই। একই কারণে ৪০ বছরের কম বয়সীরা টিকার জন্য রেজিস্ট্রেশন করতে পারছেন না। শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে অফিসিয়ালি চিঠি দেয়া হলে আমরা এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবো।

বাংলাদেশ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক সমিতির নেতা হাবিবুর রহমান বলেন, অগ্রাধিকার দেয়া হলে শিক্ষকদের জন্য অপশন রাখা দরকার ছিলো। সেটা করা হয়নি। আর শিক্ষক তো শুধু সরকারি নয়, বেসরকারিও আছেন। তাদের জন্য তো কোনো সুযোগই নেই।

জানা যায়, দেশে শিক্ষক-কর্মচারীর সংখ্যা প্রায় ২০ লাখ। এর মধ্যে ১৫ লাখের বেশি শিক্ষকই বেসরকারি। সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকের সংখ্যা প্রায় চার লাখ। এ ছাড়া সরকারি ও সদ্য জাতীয়করণকৃত স্কুল-কলেজ মিলে আরো প্রায় ৭০ হাজার শিক্ষক-কর্মচারী রয়েছেন। এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারী প্রায় পাঁচ লাখ। আর এমপিওভুক্ত প্রতিষ্ঠানে নন-এমপিও শিক্ষক ও কিন্ডার গার্টেনে আরো প্রায় ১০ লাখ শিক্ষক রয়েছেন। সরকারি ও এমপিওভুক্ত প্রতিষ্ঠানের ৪০ শতাংশ শিক্ষকের বয়সই ৪০ বছরের নিচে। আর কিন্ডার গার্টেনে তা প্রায় ৭০ শতাংশ।

বাংলাদেশ অধ্যক্ষ পরিষদের সভাপতি অধ্যাপক মোহাম্মদ মাজহারুল হান্নান বলেন, নিবন্ধনে শিক্ষকদের জন্য আলাদা কোনো অপশন নেই। সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীর অপশনে সরকারি শিক্ষকরা রেজিস্ট্রেশন করতে পারলেও বেসরকারি শিক্ষকরা সেই সুযোগও পাচ্ছেন না। অথচ মাধ্যমিক থেকে মাস্টার্স পর্যন্ত ৯৭ শতাংশ শিক্ষকই বেসরকারি। ৪০ বছরের বেশি বয়সী শিক্ষকরা অন্যান্য সাধারণ নাগরিকের মতো রেজিস্ট্রেশন করতে পারছেন। সুরক্ষা অ্যাপে দ্রুততার সঙ্গে অগ্রাধিকারের তালিকায় শিক্ষক নামে অপশন যুক্ত করার জোর দাবি জানান তিনি।