শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

যশোরের চৌগাছায় সুদ কারবারীর অত্যাচার: ৪ লাখ টাকা দিয়ে ৩৩ লাখ টাকা আদায়

চৌগাছা ব্যুরো :/= যশোরের চৌগাছায় ৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা দাদন নিয়ে ৩৩ লাখ ৩০ হাজার টাকা পরিশোধ করেও রক্ষা পাচ্ছেন না হায়দার আলী নামে চৌগাছা শহরের এক জুয়েলার্স ব্যবসায়ী। এ অভিযোগে শহরেরই মিজানুর রহমান মিঠু নামে এক সুদে কারবারী ও মাদক ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে মঙ্গলবার দুপুরে চৌগাছা প্রেসক্লাবে সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন।

লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, ২০১০ সালে আমার ব্যবসায়িক প্রয়োজনে ন্যাশনাল ব্যাংক চৌগাছা শাখার তিনটি ব্যাংক (সাদা) চেক জামানত রেখে সুদে মিঠুর নিকট থেকে ৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা দাদন হিসেবে নিই। প্রতিমাসে ৪০ হাজার টাকা সুদ হিসেবে দিতে হয়। দীর্ঘ ৬ বছর সুদের টাকা দিয়েছি ২৮ লাখ ৮০ হাজার টাকা। তার দাবি তিনি এই ছয় বছরে সুদে-আসলে মিঠুকে ৩৩ লাখ ৩০ হাজার টাকা পরিশোধ করেও রক্ষা পাচ্ছেন না।

তিনি বলেন, মিঠুর সুদের টাকা দিতে গিয়ে আমি সর্বশান্ত হয়ে গেছি। সুদের টাকা পরিশোধ করতে গিয়ে ২০১৬ সালে আমার চৌগাছা পৌর শহরের নিরিবিলিপাড়ার নিজের বসতি ভিটা বাড়ীসহ বিক্রি করি। সেসময় পৌর শহরের হুদা চৌগাছা গ্রামের মৃত এরশাদ সর্দারের ছেলে স্থানীয় (মহুরী) দলীল লেখক রেজাউল ইসলামসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের উপস্থিতে সুদে মিঠুর নিকট থেকে দাদন নেয়া ৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা পরিশোধ করি।

টাকা ফেরত দেয়ার সময় তিনি আমাকে বলেন তোমার জামানত রাখা চেকের মধ্যে ১টি চেক হারিয়ে গেছে। বাকী ২টি চেক আমার নিকট ফিরিয়ে দেন। বর্তমানে আমি আমার বসত ঘরবাড়ী হারিয়ে দারুণ ভাবে মানবেতর জীবন যাপন করছি। এর মধ্যে সুদে মিঠু আমার নিকট থেকে জামানত রাখা ন্যাশনাল ব্যাংক চৌগাছা শাখার সেই চেক যার নং ৫৮১৯৫৪৮ ব্যবহার করে আমার নামে একটি লিগ্যাল নোঠিশ প্রেরণ করেছে। নোঠিশে সে আমার নিকট বর্তমানে আরো ১১ লাখ টাকা পাবে বলে দাবি করছেন। বাধ্য হয়ে আজ সংবাদ সম্মেলন করছি। যাতে বিষয়টি গণমাধ্যমে প্রচার করে সংশ্লিষ্ট উদ্ধর্তন কর্তৃপক্ষের নজরে পড়ে। সরকার এ সমস্ত সুদে মহাজনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে প্রশাসনকে মাঠে ময়দানে কাজ করতে তাগিদ দিয়েছেন। আমরা আশা করি এ সংবাদ সম্মেলনের খবর গণমাধ্যমে প্রচার হলে সুদে মিঠুর বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন প্রশাসন।

তিনি আরো বলেন সুধু আমি ভিটে ছাড়া হয়নি সুদে মিঠুর অত্যাচারে সর্বশান্ত হয়েছেন উপজেলার উত্তর কয়ার পাড়া গ্রামের হিন্দুপাড়ার শ্রী বসির বিশ্বাসের ছেলে শ্রী পরেশ বিশ্বাস, পৌর শহরের বিশ্বাসপাড়ার আইনাল হোসেন বিশ্বাসের ছেলে আশরাফ হোসেন বিশ্বাস, শহরের কারিকার পাড়ার মৃত মানিক বিশ্বাসের ছেলে নজরুল ইসলাম নজু, শহরের নজরুল ইসলামের ছেলে তরিকুল ইসলাম, শহরের বিশ্বাসপাড়ার মৃত আব্দুস শুকুরের ছেলে আলাউদ্দীন।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন চৌগাছা বাজার জুয়েলারী সমিতির সভাপতি বাবু অনন্ত সরকার, সাধারণ সম্পাদক দিদার হোসেন ডাবলু, ব্যবসায়ী ফারুক হোসেন, স্বরুপদহ ইউপি মেম্বর জাকির হোসেন খান, ফখরুজ্জামান, নারায়ন মন্ডল, বাবুল হোসেন প্রমুখ।

এ বিষয়ে জানতে মিঠুন সাথে কথা বলা হলে তিনি বলেন আমি আপনাদের প্রেসক্লাবে আসছি। কিছুক্ষন পরেই হন্তদন্ত হয়ে ছুটে আসেন তিনি। এসেই একজন রাজনৈতিক নেতার পরিচয় দেন। তখন সাংবাদিকরা বলেন ভাই আপনার এ বিষয়ে বক্তব্য কি উত্তরে তিনি বলেন আমি গহনা তৈরি করতে ১১ লাখ টাকা দিয়েছি। টাকা বা গহনা কিছুই ফেরৎ না পেয়ে চেকের মামলা করেছি। গহনা তৈরি করতে টাকা দিয়ে কেনো চেক নিলেন একথার কোনো উত্তর তিনি দিতে পারেননি।

আপনার মন্তব্য লিখুন

লেখকের সম্পর্কে

Shahriar Hossain

রাজনীতিতে নাম লেখাতে যাচ্ছেন সানিয়া মির্জা

যশোরের চৌগাছায় সুদ কারবারীর অত্যাচার: ৪ লাখ টাকা দিয়ে ৩৩ লাখ টাকা আদায়

প্রকাশের সময় : ০৭:৫৭:৩১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৭ জুলাই ২০২০

চৌগাছা ব্যুরো :/= যশোরের চৌগাছায় ৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা দাদন নিয়ে ৩৩ লাখ ৩০ হাজার টাকা পরিশোধ করেও রক্ষা পাচ্ছেন না হায়দার আলী নামে চৌগাছা শহরের এক জুয়েলার্স ব্যবসায়ী। এ অভিযোগে শহরেরই মিজানুর রহমান মিঠু নামে এক সুদে কারবারী ও মাদক ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে মঙ্গলবার দুপুরে চৌগাছা প্রেসক্লাবে সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন।

লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, ২০১০ সালে আমার ব্যবসায়িক প্রয়োজনে ন্যাশনাল ব্যাংক চৌগাছা শাখার তিনটি ব্যাংক (সাদা) চেক জামানত রেখে সুদে মিঠুর নিকট থেকে ৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা দাদন হিসেবে নিই। প্রতিমাসে ৪০ হাজার টাকা সুদ হিসেবে দিতে হয়। দীর্ঘ ৬ বছর সুদের টাকা দিয়েছি ২৮ লাখ ৮০ হাজার টাকা। তার দাবি তিনি এই ছয় বছরে সুদে-আসলে মিঠুকে ৩৩ লাখ ৩০ হাজার টাকা পরিশোধ করেও রক্ষা পাচ্ছেন না।

তিনি বলেন, মিঠুর সুদের টাকা দিতে গিয়ে আমি সর্বশান্ত হয়ে গেছি। সুদের টাকা পরিশোধ করতে গিয়ে ২০১৬ সালে আমার চৌগাছা পৌর শহরের নিরিবিলিপাড়ার নিজের বসতি ভিটা বাড়ীসহ বিক্রি করি। সেসময় পৌর শহরের হুদা চৌগাছা গ্রামের মৃত এরশাদ সর্দারের ছেলে স্থানীয় (মহুরী) দলীল লেখক রেজাউল ইসলামসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের উপস্থিতে সুদে মিঠুর নিকট থেকে দাদন নেয়া ৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা পরিশোধ করি।

টাকা ফেরত দেয়ার সময় তিনি আমাকে বলেন তোমার জামানত রাখা চেকের মধ্যে ১টি চেক হারিয়ে গেছে। বাকী ২টি চেক আমার নিকট ফিরিয়ে দেন। বর্তমানে আমি আমার বসত ঘরবাড়ী হারিয়ে দারুণ ভাবে মানবেতর জীবন যাপন করছি। এর মধ্যে সুদে মিঠু আমার নিকট থেকে জামানত রাখা ন্যাশনাল ব্যাংক চৌগাছা শাখার সেই চেক যার নং ৫৮১৯৫৪৮ ব্যবহার করে আমার নামে একটি লিগ্যাল নোঠিশ প্রেরণ করেছে। নোঠিশে সে আমার নিকট বর্তমানে আরো ১১ লাখ টাকা পাবে বলে দাবি করছেন। বাধ্য হয়ে আজ সংবাদ সম্মেলন করছি। যাতে বিষয়টি গণমাধ্যমে প্রচার করে সংশ্লিষ্ট উদ্ধর্তন কর্তৃপক্ষের নজরে পড়ে। সরকার এ সমস্ত সুদে মহাজনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে প্রশাসনকে মাঠে ময়দানে কাজ করতে তাগিদ দিয়েছেন। আমরা আশা করি এ সংবাদ সম্মেলনের খবর গণমাধ্যমে প্রচার হলে সুদে মিঠুর বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন প্রশাসন।

তিনি আরো বলেন সুধু আমি ভিটে ছাড়া হয়নি সুদে মিঠুর অত্যাচারে সর্বশান্ত হয়েছেন উপজেলার উত্তর কয়ার পাড়া গ্রামের হিন্দুপাড়ার শ্রী বসির বিশ্বাসের ছেলে শ্রী পরেশ বিশ্বাস, পৌর শহরের বিশ্বাসপাড়ার আইনাল হোসেন বিশ্বাসের ছেলে আশরাফ হোসেন বিশ্বাস, শহরের কারিকার পাড়ার মৃত মানিক বিশ্বাসের ছেলে নজরুল ইসলাম নজু, শহরের নজরুল ইসলামের ছেলে তরিকুল ইসলাম, শহরের বিশ্বাসপাড়ার মৃত আব্দুস শুকুরের ছেলে আলাউদ্দীন।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন চৌগাছা বাজার জুয়েলারী সমিতির সভাপতি বাবু অনন্ত সরকার, সাধারণ সম্পাদক দিদার হোসেন ডাবলু, ব্যবসায়ী ফারুক হোসেন, স্বরুপদহ ইউপি মেম্বর জাকির হোসেন খান, ফখরুজ্জামান, নারায়ন মন্ডল, বাবুল হোসেন প্রমুখ।

এ বিষয়ে জানতে মিঠুন সাথে কথা বলা হলে তিনি বলেন আমি আপনাদের প্রেসক্লাবে আসছি। কিছুক্ষন পরেই হন্তদন্ত হয়ে ছুটে আসেন তিনি। এসেই একজন রাজনৈতিক নেতার পরিচয় দেন। তখন সাংবাদিকরা বলেন ভাই আপনার এ বিষয়ে বক্তব্য কি উত্তরে তিনি বলেন আমি গহনা তৈরি করতে ১১ লাখ টাকা দিয়েছি। টাকা বা গহনা কিছুই ফেরৎ না পেয়ে চেকের মামলা করেছি। গহনা তৈরি করতে টাকা দিয়ে কেনো চেক নিলেন একথার কোনো উত্তর তিনি দিতে পারেননি।