শনিবার, ৩০ মার্চ ২০২৪, ১৬ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

সপরিবারে করোনা জয়ী হলেন কমিশনার ড. একেএম নুরুজ্জামান

নুরুজ্জামান লিটন:/=

সপরিবারে করোনামুক্ত হলেন কমিশনার ড. একেএম নুরুজ্জামান। ১৪ দিনের কঠোর নিয়ম পালন আর চিকিৎসার মাধ্যমে করোনা যুদ্ধে জয়ী হলেন তারা। ১ জুলাই (বুধবার) নমুনা পরীক্ষায় তিনজনের নেগেটিভ আসে। বৃহস্পতিবার (২ জুলাই) কমিশনার এ তথ্য জানিয়েছেন। এর আগে ২০ জুন কমিশনার ড. একেএম নুরুজ্জামান, তার স্ত্রী ও একমাত্র ছেলে দায়েম এর নমুনা পজেটিভ আসে।

কাস্টমস ও ভ্যাট বিভাগের মধ্যে কমিশনার হিসেবে তিনি প্রথম রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। তবে করোনা আক্রান্ত হলেও তাদের কোন উপসর্গ ছিল না। ড. একেএম নুরুজ্জামান বিসিএস (শুল্ক ও আবগারি) ক্যাডারের ১৩তম ব্যাচের কর্মকর্তা। বর্তমানে তিনি কাস্টমস মূল্যায়ন ও অভ্যন্তরীণ নিরীক্ষা কমিশনারেট, ঢাকার কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

কমিশনার ড. একেএম নুরুজ্জামান বলেন, ২৯ জুন সোমবার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে নমুনা পরীক্ষা করতে দিয়েছি। বুধবার (১ জুলাই) নমুনার রেজাল্ট দেয়া হয়। আলহামদুলিল্লাহ আমার নিজের, পুত্র দায়েম ও স্পাউসসহ তিনজনের করোনা টেষ্ট রিপোর্ট নেগেটিভ হয়েছে। আল্লাহর অশেষ মেহেরবানীতে আমরা মাত্র ১৪ দিনের মধ্যে করোনা যুদ্ধে বিজয় হয়েছি। ভবিষ্যতে কারো এ পজেটিভ এবং ও পজেটিভ রক্তের গ্রুপের প্লাজমা প্রয়োজন হলে তাও দেওয়া হবে হবে।

তিনি বলেন, সাধারণ ছুটির মধ্যেও মাঝে মাঝে অফিস করেছি। করোনা ভীতি দূরে ঠেলে সরকারি দায়িত্ব পালন করেছি। করোনার কোন উপসর্গ ছিল না। তবুও সন্দেহ দূর করতে ১৫ জুন সোমবার পরিবারের সবার নমুনা দিয়েছি। আইইডিসিআর এর স্বাস্থ্যকর্মী আমিসহ পরিবারের সবার নমুনা সংগ্রহ করেন। ২০ জুন শনিবার রাতে রিপোর্ট দেওয়া হয়। তাতে আমার, ছেলে দায়েম ও স্পাউসসহ তিনজনের পজেটিভ আসে।

কমিশনার বলেন, ২০ জুন রাত হতে আমরা বাসায় আইসোলেশনে ছিলাম এবং টেলিমেডিসিনের মাধ্যমে চিকিৎসা গ্রহন করেছি। কঠোর নিয়ম পালন আর চিকিৎসকদের পরামর্শ মেনে ওষধ সেবনের মাধ্যমে আমরা করোনা জয়ী হয়েছি। পাশে থেকে সাহস জোগানো ও খোঁজ খবর নেওয়ার জন্য সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন তিনি।

কমিশনার জানান, কাস্টমস মূল্যায়নের ক্যাশিয়ার গোলাম কিবরিয়া করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। গত তিনদিন ধরে তিনি আক্রান্ত হয়ে বাসায় থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন। হালকা জ্বর, কাশিসহ করোনার উপসর্গ দেখা দিলে ঢাকা কাস্টমস বন্ড কমিশনারেটে নমুনা পরীক্ষা করায়। নমুনা পজেটিভ আসে। তিনি বাসায় আইসোলেশনে থেকে টেলিমেডিসিনের মাধ্যমে চিকিৎসা নিচ্ছেন।

কাস্টমস ও ভ্যাট বিভাগের হিসাবে, বৃহস্পতিবার পর্যন্ত দুই বিভাগে আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়ে ১২৮। বেশিরভাগ কর্মকর্তা-কর্মচারী সপরিবারে আক্রান্ত হয়েছেন। আক্রান্তদের মধ্যে দুইজন রাজস্ব কর্মকর্তা (আরও) ও একজন গাড়ি চালক মারা গেছেন। সুস্থ হয়েছেন ৪৩ জন। আক্রান্তদের মধ্যে ১১ জনই বিসিএস (শুল্ক ও আবগারি) ক্যাডার কর্মকর্তা। তার মধ্যে একজন কমিশনার। চারজন উপ কমিশনার (ডিসি) ও ছয়জন সহকারী কমিশনার (এসি)।

চারজন উপ কমিশনার হলেন-রংপুর ভ্যাট কমিশনারেটের ডিসি ইমাম গাজ্জালী। এছাড়া ডিসি বাকি তিনজন হলেন-কাজী রেজাউল হাসান। তিনি এনবিআরের দ্বিতীয় সচিব (মূসক নীতি) হিসেবে কর্মরত। চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের ডিসি মো. আল আমিন, কাস্টম, এক্সাইজ ও ভ্যাট আপীলাত ট্রাইব্যুনালের রেজিস্ট্রার মোহাম্মদ সাইদুল আলম করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। মোহাম্মদ সাইদুল আলমের কোন উপসর্গ ছিল না।

আক্রান্ত ছয়জন সহকারী কমিশনার হলেন, ঢাকা কাস্টমস বন্ড কমিশনারেটের সহকারী কমিশনার শরীফ মোহাম্মদ ফয়সাল ও মনিরুল ইসলাম, ঢাকা কাস্টম হাউসের সহকারী কমিশনার উম্মে নাহিদা আক্তার, পানগাঁও কাস্টম হাউসের সহকারী কমিশরার এ এস এম নাজমুল হক শিমুল, মোংলা কাস্টম হাউসের সহকারী কমিশনার তানজিলা ইয়াসমিন ও সিলেট ভ্যাটের সহকারী কমিশনার শরীফ মোহাম্মদ আল আমিন। সুত্র –শেয়ার বীজ।

আপনার মন্তব্য লিখুন

লেখকের সম্পর্কে

Shahriar Hossain

সপরিবারে করোনা জয়ী হলেন কমিশনার ড. একেএম নুরুজ্জামান

প্রকাশের সময় : ০৬:০৫:৩২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২ জুলাই ২০২০

নুরুজ্জামান লিটন:/=

সপরিবারে করোনামুক্ত হলেন কমিশনার ড. একেএম নুরুজ্জামান। ১৪ দিনের কঠোর নিয়ম পালন আর চিকিৎসার মাধ্যমে করোনা যুদ্ধে জয়ী হলেন তারা। ১ জুলাই (বুধবার) নমুনা পরীক্ষায় তিনজনের নেগেটিভ আসে। বৃহস্পতিবার (২ জুলাই) কমিশনার এ তথ্য জানিয়েছেন। এর আগে ২০ জুন কমিশনার ড. একেএম নুরুজ্জামান, তার স্ত্রী ও একমাত্র ছেলে দায়েম এর নমুনা পজেটিভ আসে।

কাস্টমস ও ভ্যাট বিভাগের মধ্যে কমিশনার হিসেবে তিনি প্রথম রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। তবে করোনা আক্রান্ত হলেও তাদের কোন উপসর্গ ছিল না। ড. একেএম নুরুজ্জামান বিসিএস (শুল্ক ও আবগারি) ক্যাডারের ১৩তম ব্যাচের কর্মকর্তা। বর্তমানে তিনি কাস্টমস মূল্যায়ন ও অভ্যন্তরীণ নিরীক্ষা কমিশনারেট, ঢাকার কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

কমিশনার ড. একেএম নুরুজ্জামান বলেন, ২৯ জুন সোমবার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে নমুনা পরীক্ষা করতে দিয়েছি। বুধবার (১ জুলাই) নমুনার রেজাল্ট দেয়া হয়। আলহামদুলিল্লাহ আমার নিজের, পুত্র দায়েম ও স্পাউসসহ তিনজনের করোনা টেষ্ট রিপোর্ট নেগেটিভ হয়েছে। আল্লাহর অশেষ মেহেরবানীতে আমরা মাত্র ১৪ দিনের মধ্যে করোনা যুদ্ধে বিজয় হয়েছি। ভবিষ্যতে কারো এ পজেটিভ এবং ও পজেটিভ রক্তের গ্রুপের প্লাজমা প্রয়োজন হলে তাও দেওয়া হবে হবে।

তিনি বলেন, সাধারণ ছুটির মধ্যেও মাঝে মাঝে অফিস করেছি। করোনা ভীতি দূরে ঠেলে সরকারি দায়িত্ব পালন করেছি। করোনার কোন উপসর্গ ছিল না। তবুও সন্দেহ দূর করতে ১৫ জুন সোমবার পরিবারের সবার নমুনা দিয়েছি। আইইডিসিআর এর স্বাস্থ্যকর্মী আমিসহ পরিবারের সবার নমুনা সংগ্রহ করেন। ২০ জুন শনিবার রাতে রিপোর্ট দেওয়া হয়। তাতে আমার, ছেলে দায়েম ও স্পাউসসহ তিনজনের পজেটিভ আসে।

কমিশনার বলেন, ২০ জুন রাত হতে আমরা বাসায় আইসোলেশনে ছিলাম এবং টেলিমেডিসিনের মাধ্যমে চিকিৎসা গ্রহন করেছি। কঠোর নিয়ম পালন আর চিকিৎসকদের পরামর্শ মেনে ওষধ সেবনের মাধ্যমে আমরা করোনা জয়ী হয়েছি। পাশে থেকে সাহস জোগানো ও খোঁজ খবর নেওয়ার জন্য সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন তিনি।

কমিশনার জানান, কাস্টমস মূল্যায়নের ক্যাশিয়ার গোলাম কিবরিয়া করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। গত তিনদিন ধরে তিনি আক্রান্ত হয়ে বাসায় থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন। হালকা জ্বর, কাশিসহ করোনার উপসর্গ দেখা দিলে ঢাকা কাস্টমস বন্ড কমিশনারেটে নমুনা পরীক্ষা করায়। নমুনা পজেটিভ আসে। তিনি বাসায় আইসোলেশনে থেকে টেলিমেডিসিনের মাধ্যমে চিকিৎসা নিচ্ছেন।

কাস্টমস ও ভ্যাট বিভাগের হিসাবে, বৃহস্পতিবার পর্যন্ত দুই বিভাগে আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়ে ১২৮। বেশিরভাগ কর্মকর্তা-কর্মচারী সপরিবারে আক্রান্ত হয়েছেন। আক্রান্তদের মধ্যে দুইজন রাজস্ব কর্মকর্তা (আরও) ও একজন গাড়ি চালক মারা গেছেন। সুস্থ হয়েছেন ৪৩ জন। আক্রান্তদের মধ্যে ১১ জনই বিসিএস (শুল্ক ও আবগারি) ক্যাডার কর্মকর্তা। তার মধ্যে একজন কমিশনার। চারজন উপ কমিশনার (ডিসি) ও ছয়জন সহকারী কমিশনার (এসি)।

চারজন উপ কমিশনার হলেন-রংপুর ভ্যাট কমিশনারেটের ডিসি ইমাম গাজ্জালী। এছাড়া ডিসি বাকি তিনজন হলেন-কাজী রেজাউল হাসান। তিনি এনবিআরের দ্বিতীয় সচিব (মূসক নীতি) হিসেবে কর্মরত। চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের ডিসি মো. আল আমিন, কাস্টম, এক্সাইজ ও ভ্যাট আপীলাত ট্রাইব্যুনালের রেজিস্ট্রার মোহাম্মদ সাইদুল আলম করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। মোহাম্মদ সাইদুল আলমের কোন উপসর্গ ছিল না।

আক্রান্ত ছয়জন সহকারী কমিশনার হলেন, ঢাকা কাস্টমস বন্ড কমিশনারেটের সহকারী কমিশনার শরীফ মোহাম্মদ ফয়সাল ও মনিরুল ইসলাম, ঢাকা কাস্টম হাউসের সহকারী কমিশনার উম্মে নাহিদা আক্তার, পানগাঁও কাস্টম হাউসের সহকারী কমিশরার এ এস এম নাজমুল হক শিমুল, মোংলা কাস্টম হাউসের সহকারী কমিশনার তানজিলা ইয়াসমিন ও সিলেট ভ্যাটের সহকারী কমিশনার শরীফ মোহাম্মদ আল আমিন। সুত্র –শেয়ার বীজ।