শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সোনার হরিণ ধরতে অন্ধের মতো ছুটবেন না

রোকনুজ্জামান রিপন ## সোনার হরিণ ধরার জন্য অন্ধের মতো না ছুটতে বিদেশ যেতে ইচ্ছুকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, আমাদের দেশে এখন কাজের যেমন অভাব নেই, তেমনি আল্লাহর রহমতে খাবারেরও অভাব নেই।

তাই এখন সেই সোনার হরিণ ধরার পেছনে কেউ আর দয়া করে অন্ধের মতো ছুটবেন না।’ বুধবার আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবস উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে তিনি একথা বলেন।

সকালে গণভবন থেকে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রের মূল অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি অংশ নেন তিনি।

অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী অভিবাসী কর্মীদের নিবন্ধন এবং প্রশিক্ষণের ওপর গুরুত্বারোপ করে এসব বিষয়ে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়কে নজরদারি বাড়ানোর নির্দেশ দেন।

তিনি বলেন, ‘প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়কে এ বিষয়ে আরও নজরদারি করতে হবে এবং বিদেশে কর্মী পাঠানোর কাজে সম্পৃক্তদের দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে। প্রবাসীদের কর্মসংস্থান ঠিকমতো হচ্ছে কিনা, কর্মস্থলের নিরাপত্তা, বিশেষকরে নারীকর্মীদের নিরাপত্তার বিষয়ে লক্ষ্য রাখতে হবে।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘অনেকেই প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ না নিয়ে কোনোভাবে একটি সার্টিফিকেট নিয়ে নেন এবং বিদেশে গিয়ে সমস্যায় পড়েন। কাজেই এ কাজটি না করে আন্তরিকতার সঙ্গে প্রশিক্ষণ নিয়ে গেলে কেউ আর বিদেশ গিয়ে হেনস্তার শিকার হবেন না।’

তিনি বলেন, ‘আমরা যেসব ডিজিটাল সেন্টার করেছি, তার মাধ্যমে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ে নিবন্ধন করার যে সুযোগ রয়েছে তাকে কাজে লাগাতে হবে। যেখানেই কাজের সুযোগ হয়, সেখানে নিবন্ধিতদের মধ্য থেকেই প্রেরণ করা হয়। কাজেই ধৈর্য ধরতে হবে। নিজেদের নিরাপত্তার কথা এবং পরিবারের কথাটা সব সময় চিন্তা করতে হবে।’

বিদেশে ভাগ্যোন্নয়নে যেতে গিয়ে দালালের খপ্পরে পড়ে সর্বস্বান্ত হওয়া থেকে শুরু করে অন্ধকার পথে পা বাড়ানোর বিষয়েও সবাইকে সতর্ক করেন প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, ‘কারও প্ররোচনায় বিদেশে গিয়ে কেউ বিপদে পড়লে সেটা নিজের জন্য এবং তার পরিবারের জন্য খুবই ক্ষতিকর এবং কষ্টদায়ক হয়। কিছুদিন আগে লিবিয়াতে অনেককে জীবন দিতে হলো। এ পরিস্থিতির শিকার যেন আর হতে না হয়।’

প্রবাসী কল্যাণ এবং বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্তমন্ত্রী ইমরান আহমেদ। স্বাগত বক্তব্য দেন, মন্ত্রণালয়ের সচিব মুনীরুছ সালেহীন।

প্রবাসী কল্যাণ এবং বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, রিক্রুটিং এজেন্টদের সংগঠন ‘বায়রা’র সাবেক সভাপতি বেনজির আহমেদ মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন।

এছাড়া গণভবন প্রান্তে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম এবং প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউসসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে মন্ত্রী ইমরান আহমেদ প্রবাসী বাংলাদেশীদের মেধাবী সন্তানদের মধ্যে শিক্ষাবৃত্তির চেক এবং প্রবাসী বাংলাদেশিদের মাঝে সিআইপি ত্রেস্ট এবং সনদ বিতরণ করেন।

বৈধ চ্যানেলে সর্বোচ্চ রেমিটেন্স প্রদানকারী হিসেবে মাহতাবুর রহমান এবং জেসমিন আক্তারকে পুরস্কৃত করা হয় এবং অনিবাসী বাংলাদেশি হিসেবে দেশে সরাসরি বিনিয়োগের জন্য কল্লোল আহমেদ সিআইপি ক্রেস্ট লাভ করেন।

২০০৯ থেকে এ পর্যন্ত ১৫৫ জনকে সিআইপি মর্যাদা প্রদান করা হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, দক্ষ কর্মী তৈরির লক্ষ্যে কারিগরি প্রশিক্ষণের জন্য বিদ্যমান ৭০টি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে অচিরেই যুক্ত হবে উপজেলা পর্যায়ে আরও ৪০টি কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র।

এছাড়া মুজিববর্ষেই উপজেলা পর্যায়ে আরও ১০০টি কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র নির্মাণের প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে; যাতে নিজের এলাকায় বসে প্রশিক্ষণ নিয়ে দক্ষ কারিগর হিসেবে বিদেশ যেতে পারেন।

নিউইয়র্কে ২০১৬ সালে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে অভিবাসীদের অধিকার সম্পর্কে নিজের ভাষণ দেওয়ার বিষয়টি উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘গ্লোবাল কমপ্যাক্ট ফর মাইগ্রেশন (জিসিএম) সেটা অনুমোদন করে এবং তা বাস্তবায়নেও সরকার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। কারণ, যুগ যুগ ধরেই মানুষ এক জায়গা থেকে অন্যত্র যাচ্ছে। কাজেই সেখানে গিয়ে নিজের কাজটি যেন নিজে করতে পারে।’

তিনি বলেন, ’৭৫ পরবর্তী সরকারগুলো বাংলাদেশ আত্মনির্ভরশীলভাবে গড়ে তোলার পরিবর্তে পরনির্ভরশীল করে তুলেছিল। সেখান থেকে আমরা দেশকে মর্যাদাবান করে গড়ে তোলার নানা পদক্ষেপ নিয়েছি।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দেশে ১০০ অর্থনৈতিক অঞ্চল তৈরি করছি। সেখানে বিদেশি বিনিয়োগ আসছে। সেখানেও দক্ষ কর্মীর প্রয়োজন পড়বে। তাই দেশেও ভবিষ্যতে কাজের অভাব হবে না।’

তিনি বলেন, বৈশ্বিক মন্দা ও কোভিড পরিস্থিতির মধ্যেও ২০২০ সালে রেকর্ড ২১ দশমিক ৭৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার রেমিটেন্স পাওয়া গেছে এবং সরকার ২০১৮-১৯ অর্থবছর থেকে বৈধ চ্যানেলে প্রেরিত রেমিটেন্সের ওপর ২ শতাংশ হারে প্রণোদনা চালু করেছে। এর ফলে রেমিটেন্সও বেড়েছে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘করোনাভাইরাসে মৃত্যুবরণকারী নিবন্ধিত ও অনিবন্ধিত নির্বিশেষে সব প্রবাসী কর্মীর পরিবারকে পুনর্বাসনের জন্য ৩ লাখ টাকা প্রদান করছি। করোনায় অনেকে কাজ হারাচ্ছেন। তারপরও আমি বলব, যারা দেশে ফিরে আসছেন তাদের জন্য ব্যবস্থা নিয়েছি। প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়, প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক, কর্মসংস্থান ব্যাংক, পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক, এসএমই ফাউন্ডেশন বা অন্যান্য ক্ষেত্রে যে প্রণোদনা দিচ্ছি সেখান থেকে বা ঋণ নিয়ে বিদেশ ফেরতরা ব্যবসা-বাণিজ্য করতে পারেন।

তিনি বলেন, বিদেশ ফেরত কর্মীদের আর্থিকভাবে পুনর্বাসনের জন্য ৭০০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। রাষ্ট্রায়ত্ত বিশেষায়িত ‘প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক’র মাধ্যমে সহজ শর্তে ও স্বল্প সুদে প্রবাসীরা এ ঋণ নিতে পারবেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিদেশগামী কর্মীদের জন্য নামমাত্র প্রিমিয়ামে বিশেষ বীমা স্কিম চালু করা হয়েছে এবং যেসব দেশে ১০ হাজারের বেশি বাংলাদেশি কর্মী কর্মরত আছেন সেখানকার বাংলাদেশ দূতাবাসে পর্যায়ক্রমে শ্রম-উইং চালুর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

বিভিন্ন দেশে নিজস্ব চ্যান্সেরি ভবন উদ্বোধনসহ বর্তমানে শ্রম উইংয়ের সংখ্যা ১৬ থেকে ২৯টিতে উন্নীত হয়েছে।

আপনার মন্তব্য লিখুন

লেখকের সম্পর্কে

Shahriar Hossain

সোনার হরিণ ধরতে অন্ধের মতো ছুটবেন না

প্রকাশের সময় : ১২:০১:২১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৭ জানুয়ারী ২০২১

রোকনুজ্জামান রিপন ## সোনার হরিণ ধরার জন্য অন্ধের মতো না ছুটতে বিদেশ যেতে ইচ্ছুকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, আমাদের দেশে এখন কাজের যেমন অভাব নেই, তেমনি আল্লাহর রহমতে খাবারেরও অভাব নেই।

তাই এখন সেই সোনার হরিণ ধরার পেছনে কেউ আর দয়া করে অন্ধের মতো ছুটবেন না।’ বুধবার আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবস উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে তিনি একথা বলেন।

সকালে গণভবন থেকে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রের মূল অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি অংশ নেন তিনি।

অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী অভিবাসী কর্মীদের নিবন্ধন এবং প্রশিক্ষণের ওপর গুরুত্বারোপ করে এসব বিষয়ে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়কে নজরদারি বাড়ানোর নির্দেশ দেন।

তিনি বলেন, ‘প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়কে এ বিষয়ে আরও নজরদারি করতে হবে এবং বিদেশে কর্মী পাঠানোর কাজে সম্পৃক্তদের দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে। প্রবাসীদের কর্মসংস্থান ঠিকমতো হচ্ছে কিনা, কর্মস্থলের নিরাপত্তা, বিশেষকরে নারীকর্মীদের নিরাপত্তার বিষয়ে লক্ষ্য রাখতে হবে।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘অনেকেই প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ না নিয়ে কোনোভাবে একটি সার্টিফিকেট নিয়ে নেন এবং বিদেশে গিয়ে সমস্যায় পড়েন। কাজেই এ কাজটি না করে আন্তরিকতার সঙ্গে প্রশিক্ষণ নিয়ে গেলে কেউ আর বিদেশ গিয়ে হেনস্তার শিকার হবেন না।’

তিনি বলেন, ‘আমরা যেসব ডিজিটাল সেন্টার করেছি, তার মাধ্যমে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ে নিবন্ধন করার যে সুযোগ রয়েছে তাকে কাজে লাগাতে হবে। যেখানেই কাজের সুযোগ হয়, সেখানে নিবন্ধিতদের মধ্য থেকেই প্রেরণ করা হয়। কাজেই ধৈর্য ধরতে হবে। নিজেদের নিরাপত্তার কথা এবং পরিবারের কথাটা সব সময় চিন্তা করতে হবে।’

বিদেশে ভাগ্যোন্নয়নে যেতে গিয়ে দালালের খপ্পরে পড়ে সর্বস্বান্ত হওয়া থেকে শুরু করে অন্ধকার পথে পা বাড়ানোর বিষয়েও সবাইকে সতর্ক করেন প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, ‘কারও প্ররোচনায় বিদেশে গিয়ে কেউ বিপদে পড়লে সেটা নিজের জন্য এবং তার পরিবারের জন্য খুবই ক্ষতিকর এবং কষ্টদায়ক হয়। কিছুদিন আগে লিবিয়াতে অনেককে জীবন দিতে হলো। এ পরিস্থিতির শিকার যেন আর হতে না হয়।’

প্রবাসী কল্যাণ এবং বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্তমন্ত্রী ইমরান আহমেদ। স্বাগত বক্তব্য দেন, মন্ত্রণালয়ের সচিব মুনীরুছ সালেহীন।

প্রবাসী কল্যাণ এবং বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, রিক্রুটিং এজেন্টদের সংগঠন ‘বায়রা’র সাবেক সভাপতি বেনজির আহমেদ মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন।

এছাড়া গণভবন প্রান্তে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম এবং প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউসসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে মন্ত্রী ইমরান আহমেদ প্রবাসী বাংলাদেশীদের মেধাবী সন্তানদের মধ্যে শিক্ষাবৃত্তির চেক এবং প্রবাসী বাংলাদেশিদের মাঝে সিআইপি ত্রেস্ট এবং সনদ বিতরণ করেন।

বৈধ চ্যানেলে সর্বোচ্চ রেমিটেন্স প্রদানকারী হিসেবে মাহতাবুর রহমান এবং জেসমিন আক্তারকে পুরস্কৃত করা হয় এবং অনিবাসী বাংলাদেশি হিসেবে দেশে সরাসরি বিনিয়োগের জন্য কল্লোল আহমেদ সিআইপি ক্রেস্ট লাভ করেন।

২০০৯ থেকে এ পর্যন্ত ১৫৫ জনকে সিআইপি মর্যাদা প্রদান করা হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, দক্ষ কর্মী তৈরির লক্ষ্যে কারিগরি প্রশিক্ষণের জন্য বিদ্যমান ৭০টি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে অচিরেই যুক্ত হবে উপজেলা পর্যায়ে আরও ৪০টি কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র।

এছাড়া মুজিববর্ষেই উপজেলা পর্যায়ে আরও ১০০টি কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র নির্মাণের প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে; যাতে নিজের এলাকায় বসে প্রশিক্ষণ নিয়ে দক্ষ কারিগর হিসেবে বিদেশ যেতে পারেন।

নিউইয়র্কে ২০১৬ সালে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে অভিবাসীদের অধিকার সম্পর্কে নিজের ভাষণ দেওয়ার বিষয়টি উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘গ্লোবাল কমপ্যাক্ট ফর মাইগ্রেশন (জিসিএম) সেটা অনুমোদন করে এবং তা বাস্তবায়নেও সরকার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। কারণ, যুগ যুগ ধরেই মানুষ এক জায়গা থেকে অন্যত্র যাচ্ছে। কাজেই সেখানে গিয়ে নিজের কাজটি যেন নিজে করতে পারে।’

তিনি বলেন, ’৭৫ পরবর্তী সরকারগুলো বাংলাদেশ আত্মনির্ভরশীলভাবে গড়ে তোলার পরিবর্তে পরনির্ভরশীল করে তুলেছিল। সেখান থেকে আমরা দেশকে মর্যাদাবান করে গড়ে তোলার নানা পদক্ষেপ নিয়েছি।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দেশে ১০০ অর্থনৈতিক অঞ্চল তৈরি করছি। সেখানে বিদেশি বিনিয়োগ আসছে। সেখানেও দক্ষ কর্মীর প্রয়োজন পড়বে। তাই দেশেও ভবিষ্যতে কাজের অভাব হবে না।’

তিনি বলেন, বৈশ্বিক মন্দা ও কোভিড পরিস্থিতির মধ্যেও ২০২০ সালে রেকর্ড ২১ দশমিক ৭৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার রেমিটেন্স পাওয়া গেছে এবং সরকার ২০১৮-১৯ অর্থবছর থেকে বৈধ চ্যানেলে প্রেরিত রেমিটেন্সের ওপর ২ শতাংশ হারে প্রণোদনা চালু করেছে। এর ফলে রেমিটেন্সও বেড়েছে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘করোনাভাইরাসে মৃত্যুবরণকারী নিবন্ধিত ও অনিবন্ধিত নির্বিশেষে সব প্রবাসী কর্মীর পরিবারকে পুনর্বাসনের জন্য ৩ লাখ টাকা প্রদান করছি। করোনায় অনেকে কাজ হারাচ্ছেন। তারপরও আমি বলব, যারা দেশে ফিরে আসছেন তাদের জন্য ব্যবস্থা নিয়েছি। প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়, প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক, কর্মসংস্থান ব্যাংক, পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক, এসএমই ফাউন্ডেশন বা অন্যান্য ক্ষেত্রে যে প্রণোদনা দিচ্ছি সেখান থেকে বা ঋণ নিয়ে বিদেশ ফেরতরা ব্যবসা-বাণিজ্য করতে পারেন।

তিনি বলেন, বিদেশ ফেরত কর্মীদের আর্থিকভাবে পুনর্বাসনের জন্য ৭০০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। রাষ্ট্রায়ত্ত বিশেষায়িত ‘প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক’র মাধ্যমে সহজ শর্তে ও স্বল্প সুদে প্রবাসীরা এ ঋণ নিতে পারবেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিদেশগামী কর্মীদের জন্য নামমাত্র প্রিমিয়ামে বিশেষ বীমা স্কিম চালু করা হয়েছে এবং যেসব দেশে ১০ হাজারের বেশি বাংলাদেশি কর্মী কর্মরত আছেন সেখানকার বাংলাদেশ দূতাবাসে পর্যায়ক্রমে শ্রম-উইং চালুর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

বিভিন্ন দেশে নিজস্ব চ্যান্সেরি ভবন উদ্বোধনসহ বর্তমানে শ্রম উইংয়ের সংখ্যা ১৬ থেকে ২৯টিতে উন্নীত হয়েছে।