শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

আগামীকাল কমরেড মেহেদী’র ৬ষ্ট মৃত্যুবার্ষিকী

গরীব মুক্তি আন্দোলনের নেতা কমরেড নুরুল হক চৌধুরী মেহেদী। ফাইল ছবি

ঢাকা ব্যুরো ।।

আগামীকাল সোমবার ১১ অক্টোবর, ২০২১ মজলুম জনেতা মওলানা ভাসানীর অনুসারী, গরীব মুক্তি আন্দোলনের নেতা  কমরেড নুরুল হক চৌধুরী মেহেদী (কমরেড মেহেদী)’র তার ৬ষ্ট মৃত্যুবার্ষিকী।

কমরেড মেহেদী জমিদার পরিবারের একজন সন্তান সারাটা জীবনে কাটিয়ে দিল একটি শোষণমুক্ত রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রামের মধ্য দিয়ে। নোয়াখালি জেলার অম্বর নগর গ্রামের চৌধুরী পরিবারে জমিদার ঘরে জন্ম গ্রহন করে আজীবন এই নেতা কাজ করেছেন খেটে খাওয়া মানুষের পক্ষে। ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের মধ্য দিয়ে রাজনীতিতে প্রবেশ করে ১৯৫৩ সালে বৃহত্তর নোয়খালীর কাজিরহাটে প্রথম শহীদ মিনার করছিলেন তিনি।

মওলানা ভাসানী যখন সিরাজগঞ্জ, ভাসানচর, ভরপেটায় কৃষকদের অভাব অভিযোগ নিয়ে ‘কৃষক প্রজা সম্মেলন’ করেন, তখন কমরেড মেহেদীও এই আন্দোলনে নিজেকে যুক্ত রাখেন। কমরেড মেহেদী কৃষক আন্দোলন করতে গিয়ে সংসার জীবনে আবদ্ধ হননি। রাজনৈতিক জীবনে ১৯৭৫ সালে ২ বছর, ১৯৮৩ সালেসহ একাধিকবার কারাভোগসহ দীর্ঘ এক দশক আন্ডারগ্রাউন্ডে জীবনযাপন করেন। ১৯৬২ সাল থেকে ১৯৭০ সাল পর্যন্ত কমরেড মেহেদী বৃহত্তর নোয়াখালী জেলায় অবিভক্ত ন্যাপের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। ১৯৬৫ সালে ফাতেমা জিন্নাহ’র নির্বাচনী প্রচারণায় তৎকালীন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুল মালেক উকিল ও সম্পাদক নুরুল হক মিয়ার সঙ্গে আইয়ুব বিরোধী আন্দোলনে এক মঞ্চ থেকে একযোগে কাজ করেন। আমাদের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন কমরেড মেহেদী।

১৯৬২ থেকে ১৯৬৫ পর্যন্ত কমরেড মেহেদী আইয়ুব খানের সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে নোয়াখালী সম্মিলিত বিরোধী দল (কপ)-এর ব্যানারে সারা জেলায় শত শত সভা-সমাবেশ করে জনমত গঠন করেন। আইয়ুব বিরোধী আন্দোলনে বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখেন। ১৯৫৬ সালে ফাতেমা জিন্নাহর নির্বাচনী প্রচারণায় তিনি বৃহত্তর নোয়াখালীতে নেতৃস্থানীয় ভূমিকা রাখেন। ১৯৬৮-৭১ পর্যন্ত সরকারের হুলিয়া মাথায় নিয়ে স্বাধীন জনগণতান্ত্রিক পূর্ব বাংলা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে কর্মসূচী বাস্তবায়নে কৃষকদের সাথে কাজ করেন।

স্বাধীনতার পর ভারতীয় অর্থনৈতিক লুণ্ঠন ও তৎকালীন সরকারের শোষণ, নির্যাতনের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করতে গিয়ে ১৯৭৫ সালে চট্টগ্রাম গ্রেফতার হয়ে দীর্ঘ ২ বছর কারা নির্যাতন ভোগ করেন। দীর্ঘ ৯ বছর এরশাদের স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে একটানা আন্দোলন সংগ্রাম করেছেন। ১৯৮৯ সালে আন্দোলন করতে গিয়ে গ্রেফতার হন এবং দীর্ঘ কারা নির্যাতন ভোগ করেন।

১৯৭৮ সালে পূর্ব বাংলার কমিউনিস্ট পার্টির সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করে “গণতান্ত্রিক কর্মী শিবির” নামে একটি দল গঠন করেন। তিনি জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত এ দলের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। ১৯৮০ সালের ৩০ নভেম্বর তালপট্টি দিবস (পূর্বাশা দিবস) পালন করেন। তালপট্টির উপর ভারতের অযৌক্তিক দাবীর প্রতিবাদে ১৯৮১ সালের ৬ জানুয়ারি ভারতের দূতাবাস ঘেরাও করেন।

কমরেড নুরুল হক চৌধুরী মেহেদী’র ৬ষ্ট মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আগামীকাল ১১ অক্টোবর, ২০২১ সোমবার বেলা ১১ টায় নয়াপল্টনের যাদু মিয়া মিলনায়তনে নাগরিক স্মরণ মঞ্চ স্মরণসভা ও দোয়া অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে।

স্মরণ মঞ্চের সমন্বয়কারী ও এনডিপি মহাসচিব মো. মঞ্জুর হোসেন ঈসা’র সভাপতিত্বে আলোচনায় অংশগ্রহন করবেন বিএলডিপি চেয়ারম্যান ও সাবেক মন্ত্রী এম. নাজিম উদ্দিন আল আজাদ, বাংলাদেশ ন্যাপ মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া, লেবার পার্টি চেয়ারম্যান হামদুল্লাহ আল মেহেদী, সমাজতান্ত্রিক মজদুর পার্টির সাধারণ সম্পাদক সামছুল আলম প্রমুখ।

আগামীকাল কমরেড মেহেদী’র ৬ষ্ট মৃত্যুবার্ষিকী

প্রকাশের সময় : ০৩:২৭:০৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ১০ অক্টোবর ২০২১

ঢাকা ব্যুরো ।।

আগামীকাল সোমবার ১১ অক্টোবর, ২০২১ মজলুম জনেতা মওলানা ভাসানীর অনুসারী, গরীব মুক্তি আন্দোলনের নেতা  কমরেড নুরুল হক চৌধুরী মেহেদী (কমরেড মেহেদী)’র তার ৬ষ্ট মৃত্যুবার্ষিকী।

কমরেড মেহেদী জমিদার পরিবারের একজন সন্তান সারাটা জীবনে কাটিয়ে দিল একটি শোষণমুক্ত রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রামের মধ্য দিয়ে। নোয়াখালি জেলার অম্বর নগর গ্রামের চৌধুরী পরিবারে জমিদার ঘরে জন্ম গ্রহন করে আজীবন এই নেতা কাজ করেছেন খেটে খাওয়া মানুষের পক্ষে। ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের মধ্য দিয়ে রাজনীতিতে প্রবেশ করে ১৯৫৩ সালে বৃহত্তর নোয়খালীর কাজিরহাটে প্রথম শহীদ মিনার করছিলেন তিনি।

মওলানা ভাসানী যখন সিরাজগঞ্জ, ভাসানচর, ভরপেটায় কৃষকদের অভাব অভিযোগ নিয়ে ‘কৃষক প্রজা সম্মেলন’ করেন, তখন কমরেড মেহেদীও এই আন্দোলনে নিজেকে যুক্ত রাখেন। কমরেড মেহেদী কৃষক আন্দোলন করতে গিয়ে সংসার জীবনে আবদ্ধ হননি। রাজনৈতিক জীবনে ১৯৭৫ সালে ২ বছর, ১৯৮৩ সালেসহ একাধিকবার কারাভোগসহ দীর্ঘ এক দশক আন্ডারগ্রাউন্ডে জীবনযাপন করেন। ১৯৬২ সাল থেকে ১৯৭০ সাল পর্যন্ত কমরেড মেহেদী বৃহত্তর নোয়াখালী জেলায় অবিভক্ত ন্যাপের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। ১৯৬৫ সালে ফাতেমা জিন্নাহ’র নির্বাচনী প্রচারণায় তৎকালীন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুল মালেক উকিল ও সম্পাদক নুরুল হক মিয়ার সঙ্গে আইয়ুব বিরোধী আন্দোলনে এক মঞ্চ থেকে একযোগে কাজ করেন। আমাদের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন কমরেড মেহেদী।

১৯৬২ থেকে ১৯৬৫ পর্যন্ত কমরেড মেহেদী আইয়ুব খানের সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে নোয়াখালী সম্মিলিত বিরোধী দল (কপ)-এর ব্যানারে সারা জেলায় শত শত সভা-সমাবেশ করে জনমত গঠন করেন। আইয়ুব বিরোধী আন্দোলনে বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখেন। ১৯৫৬ সালে ফাতেমা জিন্নাহর নির্বাচনী প্রচারণায় তিনি বৃহত্তর নোয়াখালীতে নেতৃস্থানীয় ভূমিকা রাখেন। ১৯৬৮-৭১ পর্যন্ত সরকারের হুলিয়া মাথায় নিয়ে স্বাধীন জনগণতান্ত্রিক পূর্ব বাংলা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে কর্মসূচী বাস্তবায়নে কৃষকদের সাথে কাজ করেন।

স্বাধীনতার পর ভারতীয় অর্থনৈতিক লুণ্ঠন ও তৎকালীন সরকারের শোষণ, নির্যাতনের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করতে গিয়ে ১৯৭৫ সালে চট্টগ্রাম গ্রেফতার হয়ে দীর্ঘ ২ বছর কারা নির্যাতন ভোগ করেন। দীর্ঘ ৯ বছর এরশাদের স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে একটানা আন্দোলন সংগ্রাম করেছেন। ১৯৮৯ সালে আন্দোলন করতে গিয়ে গ্রেফতার হন এবং দীর্ঘ কারা নির্যাতন ভোগ করেন।

১৯৭৮ সালে পূর্ব বাংলার কমিউনিস্ট পার্টির সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করে “গণতান্ত্রিক কর্মী শিবির” নামে একটি দল গঠন করেন। তিনি জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত এ দলের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। ১৯৮০ সালের ৩০ নভেম্বর তালপট্টি দিবস (পূর্বাশা দিবস) পালন করেন। তালপট্টির উপর ভারতের অযৌক্তিক দাবীর প্রতিবাদে ১৯৮১ সালের ৬ জানুয়ারি ভারতের দূতাবাস ঘেরাও করেন।

কমরেড নুরুল হক চৌধুরী মেহেদী’র ৬ষ্ট মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আগামীকাল ১১ অক্টোবর, ২০২১ সোমবার বেলা ১১ টায় নয়াপল্টনের যাদু মিয়া মিলনায়তনে নাগরিক স্মরণ মঞ্চ স্মরণসভা ও দোয়া অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে।

স্মরণ মঞ্চের সমন্বয়কারী ও এনডিপি মহাসচিব মো. মঞ্জুর হোসেন ঈসা’র সভাপতিত্বে আলোচনায় অংশগ্রহন করবেন বিএলডিপি চেয়ারম্যান ও সাবেক মন্ত্রী এম. নাজিম উদ্দিন আল আজাদ, বাংলাদেশ ন্যাপ মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া, লেবার পার্টি চেয়ারম্যান হামদুল্লাহ আল মেহেদী, সমাজতান্ত্রিক মজদুর পার্টির সাধারণ সম্পাদক সামছুল আলম প্রমুখ।