বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

আন্তর্জাতিক অপরাধী চক্রের ৮০০ জন এফবিআইয়ের জালে ধরা পড়েছে

আন্তর্জাতিক ডেস্ক ##

আন্তর্জাতিক অপরাধী চক্রের কাছে অ্যাপস আর এনক্রিপটেড ফোন বিক্রি করে অপরাধ জগতে জাল বিছিয়ে দিয়েছে স্বয়ং এফবিআই। এরপর তারা ওই এনক্রিপ্টেড ফোন আর অ্যাপগুলো দিয়ে নজরদারির মাধ্যমে শনাক্ত করেছে ৮০০ জন অপরাধীকে। গত তিন বছরে ১৮টি দেশ থেকে ওই ৮০০ জনকে গ্রেফতার করা হয়। ইউরোপোল এবং স্থানীয় নিরাপত্তা বাহিনীকে সাথে নিয়ে ‘অপারেশন ট্রোজান শিল্ড’ নামের ওই অভিযানে উদ্ধার হয়েছে প্রায় দেড়শ মিলিয়ন ডলার এবং প্রচুর পরিমাণ মাদক। আটককৃতদের মধ্যে রয়েছে খুনি, ধর্ষক, মাদক ও অস্ত্র ব্যবসায়ী।

এমনই এক অভিযানে অস্ট্রেলিয়ায় একটি মাদক তৈরির কারখানায় ড্রাগলর্ডদের টানা গুলির মুখে পড়ে দেশটির স্পেশাল ফোর্স। তবে এফবিইআইয়ের সহায়তায় চলা ওই অভিযানেও গ্রেফতার করা হয় সবাইকেই। শুধু অস্ট্রেলিয়াই নয়, এমন অভিযান চলে ইউরোপ, দক্ষিণ আমেরিকা ও মধ্যপ্রাচ্যের ১৮টি দেশে। গ্রেফতার করা হয় ৮শ’র বেশি অপরাধীকে। যারা হত্যা, গুম, ধর্ষণসহ অস্ত্র এবং মাদক ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করতো।

এফবিআইয়ের পরিচালক কেলভিন শিভার বলেন, নিঃসন্দেহে এটা ইতিহাসের অন্যতম বড় এবং সফল একটি অভিযান। এতদিন ধরে, এতটা পরিকল্পিতভাবে, এতগুলো নিরাপত্তা বাহিনীর সমন্বয়ে অন্য কোনো অভিযান পরিচালিত হয়নি।

ইউরোপোলের পরিচালক জ্যা ফিলিপ জানান, বর্তমান সময়ে অপরাধীরা পরিচালিত হচ্ছে সাইবার জগতের মাধ্যমে। তাই তারা চেয়েছে ওই মাধ্যমেই অপরাধীদের সিন্ডিকেটে ঢুকে তাদের শেষ করতে। অপরাধীদের এই সিন্ডিকেট ধরা পড়ায়, অস্ত্র এবং মাদকের বিস্তার অনেকটাই কমে আসবে বলেও তিনি মনে করেন।

২০১৮ সালে অস্ট্রেলিয়ান পুলিশকে সাথে নিয়ে ট্রোজান শিল্ড নামের এই অভিযানের পরিকল্পনা করে এফবিআই। তৈরি করা হয় অ্যানম নামের বিশেষ অ্যাপস। দ্রুত এনক্রিপটেড তথ্য লেনদেনের সুবিধা থাকায় এই অ্যাপস বেশ জনপ্রিয় হয়ে ওঠে অপরাধীদের কাছে। এমনকি কাস্টমাইজ ফোনও কৌশলে অপরাধীদের কাছে সরবরাহ করে এফবিআই। শতাধিক দেশের ৩০০টিরও বেশি অপরাধী চক্র অ্যাপ সম্বলিত প্রায় ১২ হাজার ডিভাইস ব্যবহার করে। ফলে অপরাধীরা নিজেদের অজান্তেই জড়িয়ে যায়, নিরাপত্তা বাহিনীর জালে।

এফবিআইয়ের ইনচার্জ সুজান টার্জার বলেন, অপরাধীরা সবাই আন্তর্জাতিক চক্রের সদস্য। এরা ভেবেছিলো এই অ্যাপস এবং মোবাইল ফোনগুলো নিরাপদ। ওরা যা বলতো, যে তথ্য পাঠাতো বা যে ছবিই শেয়ার করতো, সবই আমরা দেখতে পেতাম। কোথায় অস্ত্র পাঠানো হবে, কে অর্থ পাচার করবে সবই জেনে যেতাম। কিন্তু ওরা এটা বুঝতো না। এরপর আমরা আগে থেকে ঘটনাস্থলে গিয়ে অপরাধীদের হাতেনাতে ধরতাম।

তিন বছর ধরে চলা ট্রোজান শিল্ড অভিযানে ৮০০ অপরাধী গ্রেফতারসহ জব্দ হয় দেড়শ মিলিয়ন ডলারের বিপুল পরিমাণ মাদক। মঙ্গলবার (৮ জুন) ইতি টানা হয় ওই অভিযানের।

আন্তর্জাতিক অপরাধী চক্রের ৮০০ জন এফবিআইয়ের জালে ধরা পড়েছে

প্রকাশের সময় : ০৬:২১:০৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ৯ জুন ২০২১

আন্তর্জাতিক ডেস্ক ##

আন্তর্জাতিক অপরাধী চক্রের কাছে অ্যাপস আর এনক্রিপটেড ফোন বিক্রি করে অপরাধ জগতে জাল বিছিয়ে দিয়েছে স্বয়ং এফবিআই। এরপর তারা ওই এনক্রিপ্টেড ফোন আর অ্যাপগুলো দিয়ে নজরদারির মাধ্যমে শনাক্ত করেছে ৮০০ জন অপরাধীকে। গত তিন বছরে ১৮টি দেশ থেকে ওই ৮০০ জনকে গ্রেফতার করা হয়। ইউরোপোল এবং স্থানীয় নিরাপত্তা বাহিনীকে সাথে নিয়ে ‘অপারেশন ট্রোজান শিল্ড’ নামের ওই অভিযানে উদ্ধার হয়েছে প্রায় দেড়শ মিলিয়ন ডলার এবং প্রচুর পরিমাণ মাদক। আটককৃতদের মধ্যে রয়েছে খুনি, ধর্ষক, মাদক ও অস্ত্র ব্যবসায়ী।

এমনই এক অভিযানে অস্ট্রেলিয়ায় একটি মাদক তৈরির কারখানায় ড্রাগলর্ডদের টানা গুলির মুখে পড়ে দেশটির স্পেশাল ফোর্স। তবে এফবিইআইয়ের সহায়তায় চলা ওই অভিযানেও গ্রেফতার করা হয় সবাইকেই। শুধু অস্ট্রেলিয়াই নয়, এমন অভিযান চলে ইউরোপ, দক্ষিণ আমেরিকা ও মধ্যপ্রাচ্যের ১৮টি দেশে। গ্রেফতার করা হয় ৮শ’র বেশি অপরাধীকে। যারা হত্যা, গুম, ধর্ষণসহ অস্ত্র এবং মাদক ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করতো।

এফবিআইয়ের পরিচালক কেলভিন শিভার বলেন, নিঃসন্দেহে এটা ইতিহাসের অন্যতম বড় এবং সফল একটি অভিযান। এতদিন ধরে, এতটা পরিকল্পিতভাবে, এতগুলো নিরাপত্তা বাহিনীর সমন্বয়ে অন্য কোনো অভিযান পরিচালিত হয়নি।

ইউরোপোলের পরিচালক জ্যা ফিলিপ জানান, বর্তমান সময়ে অপরাধীরা পরিচালিত হচ্ছে সাইবার জগতের মাধ্যমে। তাই তারা চেয়েছে ওই মাধ্যমেই অপরাধীদের সিন্ডিকেটে ঢুকে তাদের শেষ করতে। অপরাধীদের এই সিন্ডিকেট ধরা পড়ায়, অস্ত্র এবং মাদকের বিস্তার অনেকটাই কমে আসবে বলেও তিনি মনে করেন।

২০১৮ সালে অস্ট্রেলিয়ান পুলিশকে সাথে নিয়ে ট্রোজান শিল্ড নামের এই অভিযানের পরিকল্পনা করে এফবিআই। তৈরি করা হয় অ্যানম নামের বিশেষ অ্যাপস। দ্রুত এনক্রিপটেড তথ্য লেনদেনের সুবিধা থাকায় এই অ্যাপস বেশ জনপ্রিয় হয়ে ওঠে অপরাধীদের কাছে। এমনকি কাস্টমাইজ ফোনও কৌশলে অপরাধীদের কাছে সরবরাহ করে এফবিআই। শতাধিক দেশের ৩০০টিরও বেশি অপরাধী চক্র অ্যাপ সম্বলিত প্রায় ১২ হাজার ডিভাইস ব্যবহার করে। ফলে অপরাধীরা নিজেদের অজান্তেই জড়িয়ে যায়, নিরাপত্তা বাহিনীর জালে।

এফবিআইয়ের ইনচার্জ সুজান টার্জার বলেন, অপরাধীরা সবাই আন্তর্জাতিক চক্রের সদস্য। এরা ভেবেছিলো এই অ্যাপস এবং মোবাইল ফোনগুলো নিরাপদ। ওরা যা বলতো, যে তথ্য পাঠাতো বা যে ছবিই শেয়ার করতো, সবই আমরা দেখতে পেতাম। কোথায় অস্ত্র পাঠানো হবে, কে অর্থ পাচার করবে সবই জেনে যেতাম। কিন্তু ওরা এটা বুঝতো না। এরপর আমরা আগে থেকে ঘটনাস্থলে গিয়ে অপরাধীদের হাতেনাতে ধরতাম।

তিন বছর ধরে চলা ট্রোজান শিল্ড অভিযানে ৮০০ অপরাধী গ্রেফতারসহ জব্দ হয় দেড়শ মিলিয়ন ডলারের বিপুল পরিমাণ মাদক। মঙ্গলবার (৮ জুন) ইতি টানা হয় ওই অভিযানের।