আন্তর্জাতিক ডেস্ক ।।
আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলে দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী বিসমিল্লাহ খান মোহাম্মদির বাড়িতে বন্দুকধারীরা হামলা চালিয়েছে। এতে অন্তত চার বেসামরিক ব্যক্তি নিহত হয়েছে।
স্থানীয় সময় গতকাল মঙ্গলবার (৩ আগস্ট) মধ্যরাতে এ হামলা চালায় দুর্বৃত্তরা। তবে হামলার সময় বাড়িতে ছিলেন না প্রতিরক্ষামন্ত্রী বিসমিল্লাহ খান। হামলার পর বাড়িতে থাকা তার পরিবারের সদস্যদের নিরাপদে সরিয়ে নিয়েছে দেশটির আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
কাবুলের অত্যন্ত সুরক্ষিত গ্রিন জোনের কাছে বন্দুকধারীরা একটি গাড়ি বোমা বিস্ফোরণ ঘটায়। লক্ষ্য ছিল প্রতিরক্ষামন্ত্রী ও পার্লামেন্ট সদস্যদের বাড়ি। বিস্ফোরণের পরেই কয়েকজন বন্দুকধারী এলাকায় ঢুকে পড়ে। পরে গুলির শব্দও শোনা যায়।
নিরাপত্তা বাহিনীর দাবি, তিনজন বন্ধুকধারী তাদের গুলিতে মারা গেছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র জানিয়েছেন, গাড়ি বোমা বিস্ফোরণের পরেই বন্দুকধারীরা সেখানে ঢোকে। পুলিশের সাথে এনকাউন্টারে তারা মারা যায়। পুলিশ এখন এলাকায় চিরুনি তল্লাশি চালাচ্ছে।
স্থানীয় হাসপাতাল জানিয়েছে, বিস্ফোরণে আহত ছয়জন এখন চিকিৎসাধীন। পুলিশ জানিয়েছে, প্রথম বিস্ফোরণে ১০জন আহত হয়েছিলেন।
প্রথম বিস্ফোরণের ঘণ্টাদুয়েক পরে ওই এলাকায় আবার একটি বিস্ফোরণ হয়। আবার গুলি চলতে শুরু করে। কাবুল পুলিশের মুখপাত্র জানিয়েছেন, এলাকার মানুষদের নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। বাড়ি বাড়ি গিয়ে এখন তল্লাশি করছে পুলিশ। তারা একটি গাড়ি বোমা নিস্ক্রিয় করে দিয়েছে।
যে এলাকায় বিস্ফোরণ হয়েছে, তা কাবুলের সব চেয়ে সুরক্ষিত জায়গা। সেখানে যেতে গেলে একের পর এক চেক পয়েন্ট পার হতে হয়। যে জায়গায় প্রথম গাড়ি বোমা বিস্ফোরণ হয়েছে, তার কাছেই চেক পয়েন্ট আছে। এই কঠোর সুরক্ষা ব্যবস্থার জন্য ওই এলাকাকে বলা হয় রিং অব স্টিল। তা সত্ত্বেও এই ধরনের হামলা হলো।
কোনো সংগঠন এর দায় স্বীকার করেনি। তবে যুক্তরাষ্ট্র জানিয়েছে, যেভাবে হামলা হয়েছে, তাতে মনে হচ্ছে, তালেবান এর পিছনে আছে। তারাই এইভাবে আক্রমণ করে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র নেড প্রাইস বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র অত্যন্ত উদ্বিগ্ন। এভাবে চলতে থাকলে আফগানিস্তানে গৃহযুদ্ধ শুরু হবে।
এদিকে হামলার কয়েক ঘণ্টা পর রাতে কাবুলের কয়েকশ বাসিন্দা রাস্তায় নেমে এসে আফগানিস্তানের সরকারি বাহিনীর প্রতি তাদের সমর্থন জানিয়ে ও তালেবানের বিরোধিতা করে ‘আল্লাহু আকবর’ বলে শ্লোগান দেয়। পরে মিছিল শহরজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে। অধিকাংশ স্থানে বিক্ষোভে শুধু পুরুষরা থাকলেও কয়েকটিতে কিছু নারীও যোগ দেন। তারা মোমবাতি ও আফগানিস্তানের পতাকা নিয়ে মিছিল করেন।
এসময় অনেক স্থানীয় বাসিন্দা বাড়ির ছাদে উঠে মিছিলকারীদের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করে গ্লোগান দেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করা ভিডিওতে এমনটি দেখা গেছে। -ডয়চে ভেলে, রয়টার্স ও বিবিসি