শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

ইলিয়াস আলীকে ফিরে পেতে আশায় বুক বেঁধে আছেন পরিবার

ঢাকা ব্যুরো ##   নিখোঁজ বিএনপি নেতা এম ইলিয়াস আলীর স্ত্রী তাহসীনা রুশদীর লুনা নয় বছর ধরে স্বামীর খোঁজে সব কিছুই করেছেন। তবে এখনো হাল ছাড়েননি তিনি। আশায় বুক বেঁধে আছেন একদিন ঠিকই বাড়িতে ফিরবেন তার তিন সন্তানের বাবা ইলিয়াস আলী।

তবে লুনার কষ্ট তার সন্তানদের নিয়ে। কারণ তারা জানে না কোথায়, কেমন আছেন তাদের বাবা। যে কারণে বন্ধু-সহপাঠিরা যখন তাদের বাবার কথা জানতে চায় কোনো উত্তর দিতে পারেন না ইলিয়াস আলীর সন্তানরা।

প্রতি বছরের ১৭ এপ্রিল ইলিয়াস আলীর নিখোঁজের দিনটিতে কোনো না কোনো সংগঠনের পক্ষ থেকে কর্মসূচি রাখা হয়। বিএনপিও পালন করে। তবে এবার করোনার কারণে কর্মসূচিতে যায়নি দলটি।

শনিবার ইলিয়াস আলীর ভক্ত অনুরাগীদের একটি ভার্চুয়্যাল আলোচনায় যুক্ত হয়ে তাহসিনা রুশদীর লুনা কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘আমরা এখনো বিশ্বাস করি একদিন ইলিয়াস আলী ফিরে আসবেন। আমার সন্তানরা তো ছোট। যখন তাকে গুম করা হয় তখনও ওরা ছোট ছিলো। কিন্তু এখন বাবাকে ছাড়া ওরা বড় হচ্ছে। বিশেষ করে আমার মেয়েটা খুব কষ্ট পায় যখন ওর স্কুলের বন্ধুরা জানতে চায় তার বাবা কি করেন? ও কি বলবে কারণ কিছুই তো জানে না।’

ইলিয়াসপত্নী বলেন, এই দিনটি আমাদের জন্য গত নয় বছর ধরে বেদনার। নয়বছর আগে সরকারের গুম বাহিনী তাকে নিয়ে গেল। অথচ এখনো তার কোনো সন্ধান পেলাম না। আমরা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেছি কিন্তু কোনো সহযোগিতা পাইনি। উল্টো আমাদের অপদস্ত হতে হয়েছে। আমার বাসায় হামলা হয়েছে।

সরকার বিদায় নিলে ইলিয়াস আলী ফিরে আসবেন এমন প্রত্যাশার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা সবসময় দাবি করে যাবো তার সন্ধান। এরসঙ্গে কারা জড়িত তাও খুঁজে বের করতে হবে। বিশেষ করে ভবিষ্যত প্রজন্মের কাছে আমরা দাবি রেখে যাবো। আশা করি কেউ না কেউ আসবে সহযোগিতা করার জন্য। তারা খুঁজে বের করবে এরসঙ্গে কারা জড়িত। তারা রহস্য বের করবেন।

বিএনপির তৎকালীন সাংগঠনিক সম্পাদক (সিলেট বিভাগ) ইলিয়াস আলী ও তার গাড়িচালক ২০১২ সালের ১৭ এপ্রিল রাতে রাজধানীর বনানী থেকে নিখোঁজ হন।

ইলিয়াস আলীর স্ত্রী তাহমিনা রুশদির লুনা ২০১২ সালের ১৯ এপ্রিল এ বিষয়ে হাইকোর্টে রিট পিটিশন দায়ের করেন। সেখানে বলা হয়, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তার স্বামীকে বেআইনিভাবে আটক করে রেখেছে। এ ছাড়া, ইলিয়াস আলীর মুক্তির জন্য তিনি হাইকোর্টে আবেদন করেন।

ইলিয়াস আলীকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী আটক করেছে- স্ত্রীর এই অভিযোগের পর, ইলিয়াস আলীকে আদালতে হাজির করার নির্দেশ কেন দেওয়া হবে না, সরকারকে তা জানাতে বলেন আদালত। স্বরাষ্ট্রসচিব থেকে শুরু করে থানার ওসি পর্যন্ত ১০ জনকে ১০ দিনের মধ্যে এই রুলের জবাবও দিতে বলা হয়।

এরপর ৯ বছর পেরিয়ে গেলেও সরকার এ বিষয়ে আর কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি এবং হাইকোর্টও এ বিষয়ে কোনো পক্ষের শুনানি গ্রহণ করেননি। ফলে বিষয়টি এখনো অমীমাংসিতই রয়ে গেছে।

 

আপনার মন্তব্য লিখুন

লেখকের সম্পর্কে

Shahriar Hossain

রাজনীতিতে নাম লেখাতে যাচ্ছেন সানিয়া মির্জা

ইলিয়াস আলীকে ফিরে পেতে আশায় বুক বেঁধে আছেন পরিবার

প্রকাশের সময় : ০৯:৫০:১৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২১

ঢাকা ব্যুরো ##   নিখোঁজ বিএনপি নেতা এম ইলিয়াস আলীর স্ত্রী তাহসীনা রুশদীর লুনা নয় বছর ধরে স্বামীর খোঁজে সব কিছুই করেছেন। তবে এখনো হাল ছাড়েননি তিনি। আশায় বুক বেঁধে আছেন একদিন ঠিকই বাড়িতে ফিরবেন তার তিন সন্তানের বাবা ইলিয়াস আলী।

তবে লুনার কষ্ট তার সন্তানদের নিয়ে। কারণ তারা জানে না কোথায়, কেমন আছেন তাদের বাবা। যে কারণে বন্ধু-সহপাঠিরা যখন তাদের বাবার কথা জানতে চায় কোনো উত্তর দিতে পারেন না ইলিয়াস আলীর সন্তানরা।

প্রতি বছরের ১৭ এপ্রিল ইলিয়াস আলীর নিখোঁজের দিনটিতে কোনো না কোনো সংগঠনের পক্ষ থেকে কর্মসূচি রাখা হয়। বিএনপিও পালন করে। তবে এবার করোনার কারণে কর্মসূচিতে যায়নি দলটি।

শনিবার ইলিয়াস আলীর ভক্ত অনুরাগীদের একটি ভার্চুয়্যাল আলোচনায় যুক্ত হয়ে তাহসিনা রুশদীর লুনা কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘আমরা এখনো বিশ্বাস করি একদিন ইলিয়াস আলী ফিরে আসবেন। আমার সন্তানরা তো ছোট। যখন তাকে গুম করা হয় তখনও ওরা ছোট ছিলো। কিন্তু এখন বাবাকে ছাড়া ওরা বড় হচ্ছে। বিশেষ করে আমার মেয়েটা খুব কষ্ট পায় যখন ওর স্কুলের বন্ধুরা জানতে চায় তার বাবা কি করেন? ও কি বলবে কারণ কিছুই তো জানে না।’

ইলিয়াসপত্নী বলেন, এই দিনটি আমাদের জন্য গত নয় বছর ধরে বেদনার। নয়বছর আগে সরকারের গুম বাহিনী তাকে নিয়ে গেল। অথচ এখনো তার কোনো সন্ধান পেলাম না। আমরা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেছি কিন্তু কোনো সহযোগিতা পাইনি। উল্টো আমাদের অপদস্ত হতে হয়েছে। আমার বাসায় হামলা হয়েছে।

সরকার বিদায় নিলে ইলিয়াস আলী ফিরে আসবেন এমন প্রত্যাশার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা সবসময় দাবি করে যাবো তার সন্ধান। এরসঙ্গে কারা জড়িত তাও খুঁজে বের করতে হবে। বিশেষ করে ভবিষ্যত প্রজন্মের কাছে আমরা দাবি রেখে যাবো। আশা করি কেউ না কেউ আসবে সহযোগিতা করার জন্য। তারা খুঁজে বের করবে এরসঙ্গে কারা জড়িত। তারা রহস্য বের করবেন।

বিএনপির তৎকালীন সাংগঠনিক সম্পাদক (সিলেট বিভাগ) ইলিয়াস আলী ও তার গাড়িচালক ২০১২ সালের ১৭ এপ্রিল রাতে রাজধানীর বনানী থেকে নিখোঁজ হন।

ইলিয়াস আলীর স্ত্রী তাহমিনা রুশদির লুনা ২০১২ সালের ১৯ এপ্রিল এ বিষয়ে হাইকোর্টে রিট পিটিশন দায়ের করেন। সেখানে বলা হয়, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তার স্বামীকে বেআইনিভাবে আটক করে রেখেছে। এ ছাড়া, ইলিয়াস আলীর মুক্তির জন্য তিনি হাইকোর্টে আবেদন করেন।

ইলিয়াস আলীকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী আটক করেছে- স্ত্রীর এই অভিযোগের পর, ইলিয়াস আলীকে আদালতে হাজির করার নির্দেশ কেন দেওয়া হবে না, সরকারকে তা জানাতে বলেন আদালত। স্বরাষ্ট্রসচিব থেকে শুরু করে থানার ওসি পর্যন্ত ১০ জনকে ১০ দিনের মধ্যে এই রুলের জবাবও দিতে বলা হয়।

এরপর ৯ বছর পেরিয়ে গেলেও সরকার এ বিষয়ে আর কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি এবং হাইকোর্টও এ বিষয়ে কোনো পক্ষের শুনানি গ্রহণ করেননি। ফলে বিষয়টি এখনো অমীমাংসিতই রয়ে গেছে।