ঢাকা ব্যুরো ।।
অনিয়ম দুর্নীতির কোনো কাগজপত্র না রাখতেই স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ১৭টি ফাইল ‘হাওয়া করে’ দেওয়া হয়েছে বলে দাবি করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তার দাবি, সামনের দিনগুলোর পরিস্থিতি আন্দাজ করতে পেরে আওয়ামী লীগের মন্ত্রী, এমপি ও নেতারা দেশ ছাড়তে চাচ্ছেন। তাই যাতে কোনো ডকুমেন্ট না থাকে সেজন্য এই ১৭টি ফাইল গায়েব করে দেওয়া হয়েছে।
জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে মঙ্গলবার দুপুরে খাদ্যপণ্য ও ঐতিহ্যবাহী তাঁত শিল্পে ব্যবহৃত সুতা, রঙ, কেমিক্যালের দামের ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদে তাঁতী দলের মানববন্ধনে রিজভী এসব কথা বলেন।
রিজভী বলেন, ‘স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে ১৭টি ফাইল গায়েব হয়ে যায়, এতে কি বুঝতে বাকি আছে? এটা কারোর বোঝার বাকি নেই। আমার মনে হচ্ছে আওয়ামী লীগের মন্ত্রী, এমপি, নেতারা দেশ ছেড়ে চলে যেতে চাচ্ছে। তাই যাতে কোনো ডকুমেন্ট না থাকে সেজন্য এই ১৭টি ফাইল গায়েব করে দেয়া হয়েছে।’
বিএনপি নেতা বলেন, ‘সামনে কোন পরিস্থিতি হয় আবার এই ফাইলগুলো থেকে কত টাকা কোন জায়গা থেকে কত পার্সেন্টেস দেওয়া হয়েছে তার যদি কোনো ডকুমেন্ট থেকে থাকে এজন্যই ফাইলগুলো হাওয়া করে দেওয়া হয়েছে।’
রিজভী বলেন, ‘বাংলাদেশ আজ এমন এক অবস্থায় শেখ হাসিনা নিয়ে গেছে যার না আছে স্বাধীনতা, না আছে সার্বভৌমত্ব। আর গণতন্ত্র অনেক দিন আগেই কবর দিয়েছেন তিনি। তার যা ইচ্ছা তিনি তাই করবেন এজন্য তাকে কোনো জবাবদিহি করতে হবে না।’
মানববন্ধনে রাষ্ট্রপতির বিদেশে চিকিৎসা নেওয়ার সমালোচনা করে রিজভী বলেন, ‘রাষ্ট্রপতি মানে রাষ্ট্রের অভিভাবক, জাতির অভিভাবক। কিন্তু বর্তমান রাষ্ট্রপতি হচ্ছে আওয়ামী লীগের রাষ্ট্রপতি। তার নাক দিয়ে যদি একটু পানিও পড়ে হয় যাচ্ছেন সিঙ্গাপুর, না হয় লন্ডন। আর বেগম খালেদা জিয়ার অসুস্থতার কথা বারবার বলা হয়েছে যে, তিনি বাইরে থেকে চিকিৎসা নিয়ে আসবেন। প্রধানমন্ত্রী কী মনে করেন? আপনি (প্রধানমন্ত্রী) ১/১১ এর সময় মুচলেকা দিয়ে দেশ ছেড়েছিলেন, কিন্তু খালেদা জিয়া কি দেশ ছেড়েছেন?’
সরকার বিনাভোটে ক্ষমতার রাজসিংহাসনে বসে আছে- এমন মন্তব্য করে রিজভী বলেন, ‘ওই সিংহাসনের পা ধরে ধুলায় লুটিয়ে দিতে হবে। তাহলে আবার এদেশে গণতন্ত্রের সুবাতাস ফিরে আসবে। আজকে প্রত্যেকটি জায়গা থেকে আওয়ামী লীগের নেতাদের পার্সেন্টিস নিশ্চিত করতেই দ্রব্যমূল্য বাড়ছে। মানুষের গলায় পা দিয়ে টাকা তুলছে এই ক্ষমতাসীনরা। তারা অনির্বাচিত। তারা অগণতান্ত্রিক, তাদের নির্বাচনের দরকার নেই। তাই যারা ডাকাত, লুটেরা, দস্যুবৃত্তি যাদের রাজনীতি তারা কখনোই জনগণের কাছে জবাবদিহি করতে চায় না।
গ্লাসগোতে জলবায়ুবিষয়ক সম্মেলনে যোগ দেওয়া প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনার সমালোচনা করে রিজভী বলেন, ‘মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সবচেয়ে বেশি কার্বন নিঃসরণ করলেও তাদের কোনো নদীর পানি বিষাক্ত নয়। আর আপনার তুরাগ নদী, বুড়িগঙ্গা নদী নর্দমায় পরিণত করেছেন শেখ হাসিনা। আর আপনি গেছেন গ্লাসগোতে জলবায়ু সম্মেলনে। বাহ্, কী বৈপরীত্য, কী স্ববিরোধিতা।’
রিজভী বলেন, ‘গ্লাসগোতে গিয়েও তারেক রহমান সাহেবের বিরুদ্ধে কুৎসা রটনা করেছেন। আপনি যে সময় তুরাগ নদী, বুড়িগঙ্গা নদী নর্দমায় পরিণত করেছেন, আপনার পুলিশের মামলা, গ্রেপ্তারের হুমকির মুখেও বিএনপির নেতাকর্মীরা তারেক রহমানের নির্দেশে বাংলার এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে বর্ষার মধ্যে বৃক্ষরোপণ করেছে।’
মানববন্ধনের সভাপতিত্ব করেন তাঁতী দলের আহ্বায়ক আবুল কালাম আজাদ। সঞ্চালনায় ছিলেন সদস্য সচিব মজিবর রহমান।
অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, স্বেচ্ছাসেবকবিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু প্রমুখ।
বার্তাকণ্ঠ/এন