শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পুতিন-জিনপিংয়ের কড়া সমালোচনায় বাইডেন

আন্তর্জাতিক ডেস্ক ।।
গ্লাসগোতে কপ ২৬ (সিওপি ২৬) শীর্ষ সম্মেলনে ব্যক্তিগতভাবে উপস্থিত না হওয়ায় চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং এবং রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের কড়া সমালোচনা করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। মঙ্গলবার রাতে এক ভাষণে তিনি জলবায়ু পরিবর্তনকে একটি ‘গিগান্টিক’ বা প্রকাণ্ড ইস্যু বলে অভিহিত করেন। সমালোচনা করেন সম্মেলন থেকে ওই দুটি দেশের নেতাদের দূরে সরে থাকার।
স্কটল্যান্ডের রাজধানী গ্লাসগোতে এবার ১২০টিরও দেশের সরকার প্রধানরা জাতিসংঘের জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিয়েছেন। কিন্তু পুতিন বা শি জিনপিং কেউই এই সম্মেলনে ব্যক্তিগতভাবে উপস্থিত হননি। পক্ষান্তরে দুটি দেশই এই আলোচনায় অংশ নিতে প্রতিনিধি দল পাঠিয়েছে। আগামী ১৪ নভেম্বর পর্যন্ত চলবে সম্মেলন। এ খবর দিয়েছে অনলাইন বিবিসি।
বিশ্বে সবচেয়ে বেশি কার্বন ডাই অক্সাইড নিঃসরণ করে চীন। এরপরেই রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন ও ভারতের পরে পঞ্চম সর্বোচ্চ কার্বন নির্গমনকারী দেশ হলো রাশিয়া। এরই মধ্যে এবারের সম্মেলনে যোগ দেয়া দেশগুলো জলবায়ু পরিবর্তনের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছে। বন উজার করে মানুষই মানুষের কবর রচনা করছে বলে আতঙ্কের কথা জানানো হয়েছে।
এর প্রেক্ষিতে বেশ কিছু বড় ধরণের চুক্তির ঘোষণা দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে ২০৩০ সালের মধ্যে মিথেনের মাত্রা কমিয়ে আনার প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছে বিশ্বব্যাপী। ওই একই বছরের মধ্যে বন উজার এবং ধ্বংস করা বন সৃষ্টি করতে প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছে। এমন প্রতিশ্রুতিতে স্বাক্ষর করেছে চীন ও রাশিয়া উভয়েই। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বাইডেন বক্তব্য রাখার আগে মঙ্গলবার কপ ২৬ শীর্ষ সম্মেলনে ভার্চ্যুয়াল ভাষণ দেন ভ্লাদিমির পতিন। এতে তিনি জানান বনভূমি সংরক্ষণে সবচেয়ে শক্তিশালী এবং সবচেয়ে জোরালো পদক্ষেপ নিয়েছে রাশিয়া।
এরপরে বক্তব্য রাখেন জো বাইডেন। তার কাছে চীন, রাশিয়া এবং সৌদি আরবের মতো দেশগুলোর ভূমিকা সম্পর্কে জানতে চাওয়া হয়। তারা এখন পর্যন্ত কি ভূমিকা পালন করেছে তা জানতে চাওয়া হয় তার কাছে। জবাবে জো বাইডেন সম্মেলনে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের যোগ না দেয়াকে একটি মারাত্মক ভুল বলে মন্তব্য করেন। বলেন, এটা বোধগম্য যে- নিজেদেরকে সামনে না এনে চীন চাইছে বিশ্বে নিজেদের নেতৃত্বকে জাহির করতে। রাশিয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, রাশিয়ায় বিস্তীর্ণ বনাঞ্চল পুড়ছে। আর তাদের প্রেসিডেন্ট এ নিয়ে চুপ রয়েছেন।
এবারের সম্মেলনে ভ্লাদিমির পুতিন কেন যোগ দিচ্ছেন না সে বিষয়ে কোনো কারণ উপস্থাপন করেননি পুতিনের মুখপাত্র দমিত্রি পেসকভ। অক্টোবরে তারা এমন সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিয়েছেন। তবে রাশিয়া বলেছে, জলবায়ু পরিবর্তন হলো রাশিয়ার জন্য একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু। একই মাসে বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনকে কর্মকর্তারা জানিয়ে দিয়েছিলেন যে, এই সম্মেলনে যোগ দিচ্ছেন না চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। এখানে মনে রাখা দরকার যে ২০২০ সালের প্রথম দিক থেকে প্রেসিডেন্ট শি চীনের বাইরে বের হননি। সেপ্টেম্বরে তিনি ঘোষণা দিয়েছেন, ২০৬০ সালের মধ্যে কার্বন নিষ্ক্রিয়তার লক্ষ্য নিয়েছে চীন। তবে ২০৩০ সালের আগে কার্বন নির্গমণ তারা পিক-এ রাখার পরিকল্পনা করে।
বিশ্বে শীর্ষ পাঁচটি কার্বন নিঃসরণকারী দেশ হলো চীন, যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন, ভারত ও রাশিয়া। তারা যে পরিমাণ কার্বন প্রতি বছর নিঃসরণ করে তার তালিকা এরকম-
চীন- ১১৫৩৫ মেগাটন।
যুক্তরাষ্ট্র ৫১০৭ মেগাটন।
ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন ৩৩০৪ মেগাটন।
ভারত ২৫৯৭ মেগাটন।
রাশিয়া ১৭৯২ মেগাটন। উল্লেখ্য, এক মেগাটন সমান ১০ লাখ টন।
 
বার্তাকণ্ঠ/এন

পুতিন-জিনপিংয়ের কড়া সমালোচনায় বাইডেন

প্রকাশের সময় : ১২:২৭:০৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩ নভেম্বর ২০২১
আন্তর্জাতিক ডেস্ক ।।
গ্লাসগোতে কপ ২৬ (সিওপি ২৬) শীর্ষ সম্মেলনে ব্যক্তিগতভাবে উপস্থিত না হওয়ায় চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং এবং রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের কড়া সমালোচনা করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। মঙ্গলবার রাতে এক ভাষণে তিনি জলবায়ু পরিবর্তনকে একটি ‘গিগান্টিক’ বা প্রকাণ্ড ইস্যু বলে অভিহিত করেন। সমালোচনা করেন সম্মেলন থেকে ওই দুটি দেশের নেতাদের দূরে সরে থাকার।
স্কটল্যান্ডের রাজধানী গ্লাসগোতে এবার ১২০টিরও দেশের সরকার প্রধানরা জাতিসংঘের জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিয়েছেন। কিন্তু পুতিন বা শি জিনপিং কেউই এই সম্মেলনে ব্যক্তিগতভাবে উপস্থিত হননি। পক্ষান্তরে দুটি দেশই এই আলোচনায় অংশ নিতে প্রতিনিধি দল পাঠিয়েছে। আগামী ১৪ নভেম্বর পর্যন্ত চলবে সম্মেলন। এ খবর দিয়েছে অনলাইন বিবিসি।
বিশ্বে সবচেয়ে বেশি কার্বন ডাই অক্সাইড নিঃসরণ করে চীন। এরপরেই রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন ও ভারতের পরে পঞ্চম সর্বোচ্চ কার্বন নির্গমনকারী দেশ হলো রাশিয়া। এরই মধ্যে এবারের সম্মেলনে যোগ দেয়া দেশগুলো জলবায়ু পরিবর্তনের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছে। বন উজার করে মানুষই মানুষের কবর রচনা করছে বলে আতঙ্কের কথা জানানো হয়েছে।
এর প্রেক্ষিতে বেশ কিছু বড় ধরণের চুক্তির ঘোষণা দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে ২০৩০ সালের মধ্যে মিথেনের মাত্রা কমিয়ে আনার প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছে বিশ্বব্যাপী। ওই একই বছরের মধ্যে বন উজার এবং ধ্বংস করা বন সৃষ্টি করতে প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছে। এমন প্রতিশ্রুতিতে স্বাক্ষর করেছে চীন ও রাশিয়া উভয়েই। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বাইডেন বক্তব্য রাখার আগে মঙ্গলবার কপ ২৬ শীর্ষ সম্মেলনে ভার্চ্যুয়াল ভাষণ দেন ভ্লাদিমির পতিন। এতে তিনি জানান বনভূমি সংরক্ষণে সবচেয়ে শক্তিশালী এবং সবচেয়ে জোরালো পদক্ষেপ নিয়েছে রাশিয়া।
এরপরে বক্তব্য রাখেন জো বাইডেন। তার কাছে চীন, রাশিয়া এবং সৌদি আরবের মতো দেশগুলোর ভূমিকা সম্পর্কে জানতে চাওয়া হয়। তারা এখন পর্যন্ত কি ভূমিকা পালন করেছে তা জানতে চাওয়া হয় তার কাছে। জবাবে জো বাইডেন সম্মেলনে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের যোগ না দেয়াকে একটি মারাত্মক ভুল বলে মন্তব্য করেন। বলেন, এটা বোধগম্য যে- নিজেদেরকে সামনে না এনে চীন চাইছে বিশ্বে নিজেদের নেতৃত্বকে জাহির করতে। রাশিয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, রাশিয়ায় বিস্তীর্ণ বনাঞ্চল পুড়ছে। আর তাদের প্রেসিডেন্ট এ নিয়ে চুপ রয়েছেন।
এবারের সম্মেলনে ভ্লাদিমির পুতিন কেন যোগ দিচ্ছেন না সে বিষয়ে কোনো কারণ উপস্থাপন করেননি পুতিনের মুখপাত্র দমিত্রি পেসকভ। অক্টোবরে তারা এমন সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিয়েছেন। তবে রাশিয়া বলেছে, জলবায়ু পরিবর্তন হলো রাশিয়ার জন্য একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু। একই মাসে বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনকে কর্মকর্তারা জানিয়ে দিয়েছিলেন যে, এই সম্মেলনে যোগ দিচ্ছেন না চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। এখানে মনে রাখা দরকার যে ২০২০ সালের প্রথম দিক থেকে প্রেসিডেন্ট শি চীনের বাইরে বের হননি। সেপ্টেম্বরে তিনি ঘোষণা দিয়েছেন, ২০৬০ সালের মধ্যে কার্বন নিষ্ক্রিয়তার লক্ষ্য নিয়েছে চীন। তবে ২০৩০ সালের আগে কার্বন নির্গমণ তারা পিক-এ রাখার পরিকল্পনা করে।
বিশ্বে শীর্ষ পাঁচটি কার্বন নিঃসরণকারী দেশ হলো চীন, যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন, ভারত ও রাশিয়া। তারা যে পরিমাণ কার্বন প্রতি বছর নিঃসরণ করে তার তালিকা এরকম-
চীন- ১১৫৩৫ মেগাটন।
যুক্তরাষ্ট্র ৫১০৭ মেগাটন।
ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন ৩৩০৪ মেগাটন।
ভারত ২৫৯৭ মেগাটন।
রাশিয়া ১৭৯২ মেগাটন। উল্লেখ্য, এক মেগাটন সমান ১০ লাখ টন।
 
বার্তাকণ্ঠ/এন