শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

বালিয়াকান্দিতে বাঁশ ও বেত শিল্পের চরম দুর্দিন

 মেহেদী হাসান (রাজবাড়ী) প্রতিনিধি ।।
প্লাস্টিক পন্যের প্রভাবে বাজার থেকে হারিয়ে যেতে বসেছে পরিবেশ সম্মত বাঁশ ও বেত শিল্প। স্বল্প পুঁজিতে রোজগার কম হওয়ার কারণে এ শিল্পীরা এখন ভিন্ন পেশায় ঝুকছেন।পুঁজি সল্পতার কারণে চরম দুর্দিন যাচ্ছে এই শিল্পে।তারপরও অনকেই স্বল্প পুঁজি দিয়েই ঘুরে দাড়ানোর চেষ্টা করছেন।
রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলা শহরের সন্নিকটে পুর্বমৌকুড়ী ঋষিপল্লী। এ পল্লীর ৩৫টি পরিবারের বেশির ভাগই বাঁশ ও বেত দিয়ে তৈরী করে ডালা, কুলা, সর, ধামা, চালুন, চালাসহ গ্রামাঞ্চলের কৃষক পরিবারের কাজের জন্য বিভিন্ন ধরণের তৈজসপত্র।
এ পল্লীর বেশির ভাগ কর্মজীবি নারী সল্প পুঁজিতে কাজ করছেন। তাদেরকে সরকারী ভাবে সহযোগিতা করে স্বাবলম্বী হিসেবে গড়ে তোলা সম্ভব।
 রুপালী দাস বালিয়াকান্দি সদর ইউনিয়নের পুর্বমৌকুড়ি গ্রামের প্রদীপ দাসের স্ত্রী। স্বামী সেলুনের কাজ করলেও তিনি বাড়ীতে বসে না থেকে বাড়ীর কাজের পাশাপাশি করেন বাঁশের  তৈরী চালুন ও কুলা তৈরীর কাজ। ২ ছেলে লেখাপড়া করছে আর মেয়ে বিয়ে দিয়ছেন।
তার ১৬-১৭ বছর বয়সে বিয়ে হয়। বিয়ের পর অভাবের সংসার একটু সচ্ছলতা আনতে বঁাশের  কুলা ও চালুন তৈরীর কাজ করে আসছেন। পুঁজি সল্পতা ও অর্থাভাবে ১-২টা কর বঁাশ ক্রয় করে তৈরী করেন। এতে তার সপ্তাহ ৫-৬শত টাকা আয় হয়।
পুঁজি বাড়লে আয়ও বেশি করা সম্ভব। তিনি বলেন, সরকারী ভাবে সহজ শর্তে ঋন বা এককালীন অনুদান দিলেও তাদের ব্যবসা প্রসার করে সংসার সচ্ছলতা আনা সম্ভব বলে সহায়তার দাবী জানান।
শেফালী দাস পুর্বমৌকুড়ী গ্রামের মিলন দাসের স্ত্রী। তার স্বামীও সেলুনের কাজ করেন। ২ ছেলে একজন এসএসসি পাশ করার পরে গ্রীলের কাজ শিখছে আর ছোট ছেলে চয়ন দাস অষ্টম শ্রণীতে লেখাপড়া করছে।
 তিনিও বাঁশ দিয়ে আসবাবপত্র তৈরীর কাজ করেন। নিজের সল্প পুজিতে বাঁশ ক্রয় করে তৈরী করে এতে সপ্তাহ ৫-৬শত টাকা আয় হয়। ১৪-১৫ বছর বয়সে বিয়ে হয় তার। আর্থিক সহায়তা বা সহজ শর্ত ঋন পেলে আরো বেশি আয় করা সম্ভব। আর বঁাশের তৈরী আসবাবপত্র বিক্রি করতে বাজারে যেতে হয় না। বাড়ী থেকেই বিক্রি করা হয়। অর্থের অভাবে অনেক সময় কাজ বন্ধ করতে হয়।
ইতি দাস তিনি পূর্বমৌকুড়ী গ্রামের চিত্ত দাসের স্ত্রী। বঁাশের তৈরী আসবাবপত্র তৈরী করেই চলে তার সংসার।  এক মেয়ে স্কুলে পড়ে। সপ্তাহ ৫-৬শত টাকা আয় হয়। তবে অর্থাভাবে এ কাজ৷ স্বল্পপরিষরে  করতে হচ্ছে। সরকারী ভাবে সহযোগিতা পেলে সংসারে সচ্ছলতা ও ব্যবসার পরিধি বাড়ানো সম্ভব হবে।
রাজবাড়ী জেলা দলিত পঞ্চায়েত  ফোরামের সাধারণ সম্পাদক বিপুল কুমার দাস বলেন, বঁাশ ও বেতের অতি মূল্যর কারণে পুজির অভাবে বেশির ভাগ বঁাশ ও বঁত শিল্পীদের দুর্দিন চলছে। কারণ বেশির ভাগ এসব কাজ করে নারীরা। সরকারী ভাবে আর্থিক সুবিধা, অনুদান বা সহজশর্তে ঋন দিলে এদেরকে স্বাবলম্বী করে গড়ে তোলা সম্ভব।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) মো. হাসিবুল হাসান বলেন, মাননীয় প্রধানম্ত্রী শেখ হাসিনা  স্বপ দেখিয়েছেন ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত বাংলাদেশ বির্নিমানে। সকল পেশার মানুষের অংশগ্রহণে স্বপপুরণ হবে। আমরা পুর্বমকুড়ী ঋষিপল্লীর  বাঁশ ও বেত শিল্পীদের সব সময়ই সহযাগিতা করে থাকি। তারা যদি আমাদের কোন সহযাগিতা চান তাহল অবশ্যই তাদের সহযোগিতা করার জন্য প্রস্তত রয়েছি।

২৮ ঘন্টা বাঘের ডেরায়, রাত কেটেছে উচুঁ কেওড়া গাছের ডালে

বালিয়াকান্দিতে বাঁশ ও বেত শিল্পের চরম দুর্দিন

প্রকাশের সময় : ০৫:০৬:৪৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২১
 মেহেদী হাসান (রাজবাড়ী) প্রতিনিধি ।।
প্লাস্টিক পন্যের প্রভাবে বাজার থেকে হারিয়ে যেতে বসেছে পরিবেশ সম্মত বাঁশ ও বেত শিল্প। স্বল্প পুঁজিতে রোজগার কম হওয়ার কারণে এ শিল্পীরা এখন ভিন্ন পেশায় ঝুকছেন।পুঁজি সল্পতার কারণে চরম দুর্দিন যাচ্ছে এই শিল্পে।তারপরও অনকেই স্বল্প পুঁজি দিয়েই ঘুরে দাড়ানোর চেষ্টা করছেন।
রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলা শহরের সন্নিকটে পুর্বমৌকুড়ী ঋষিপল্লী। এ পল্লীর ৩৫টি পরিবারের বেশির ভাগই বাঁশ ও বেত দিয়ে তৈরী করে ডালা, কুলা, সর, ধামা, চালুন, চালাসহ গ্রামাঞ্চলের কৃষক পরিবারের কাজের জন্য বিভিন্ন ধরণের তৈজসপত্র।
এ পল্লীর বেশির ভাগ কর্মজীবি নারী সল্প পুঁজিতে কাজ করছেন। তাদেরকে সরকারী ভাবে সহযোগিতা করে স্বাবলম্বী হিসেবে গড়ে তোলা সম্ভব।
 রুপালী দাস বালিয়াকান্দি সদর ইউনিয়নের পুর্বমৌকুড়ি গ্রামের প্রদীপ দাসের স্ত্রী। স্বামী সেলুনের কাজ করলেও তিনি বাড়ীতে বসে না থেকে বাড়ীর কাজের পাশাপাশি করেন বাঁশের  তৈরী চালুন ও কুলা তৈরীর কাজ। ২ ছেলে লেখাপড়া করছে আর মেয়ে বিয়ে দিয়ছেন।
তার ১৬-১৭ বছর বয়সে বিয়ে হয়। বিয়ের পর অভাবের সংসার একটু সচ্ছলতা আনতে বঁাশের  কুলা ও চালুন তৈরীর কাজ করে আসছেন। পুঁজি সল্পতা ও অর্থাভাবে ১-২টা কর বঁাশ ক্রয় করে তৈরী করেন। এতে তার সপ্তাহ ৫-৬শত টাকা আয় হয়।
পুঁজি বাড়লে আয়ও বেশি করা সম্ভব। তিনি বলেন, সরকারী ভাবে সহজ শর্তে ঋন বা এককালীন অনুদান দিলেও তাদের ব্যবসা প্রসার করে সংসার সচ্ছলতা আনা সম্ভব বলে সহায়তার দাবী জানান।
শেফালী দাস পুর্বমৌকুড়ী গ্রামের মিলন দাসের স্ত্রী। তার স্বামীও সেলুনের কাজ করেন। ২ ছেলে একজন এসএসসি পাশ করার পরে গ্রীলের কাজ শিখছে আর ছোট ছেলে চয়ন দাস অষ্টম শ্রণীতে লেখাপড়া করছে।
 তিনিও বাঁশ দিয়ে আসবাবপত্র তৈরীর কাজ করেন। নিজের সল্প পুজিতে বাঁশ ক্রয় করে তৈরী করে এতে সপ্তাহ ৫-৬শত টাকা আয় হয়। ১৪-১৫ বছর বয়সে বিয়ে হয় তার। আর্থিক সহায়তা বা সহজ শর্ত ঋন পেলে আরো বেশি আয় করা সম্ভব। আর বঁাশের তৈরী আসবাবপত্র বিক্রি করতে বাজারে যেতে হয় না। বাড়ী থেকেই বিক্রি করা হয়। অর্থের অভাবে অনেক সময় কাজ বন্ধ করতে হয়।
ইতি দাস তিনি পূর্বমৌকুড়ী গ্রামের চিত্ত দাসের স্ত্রী। বঁাশের তৈরী আসবাবপত্র তৈরী করেই চলে তার সংসার।  এক মেয়ে স্কুলে পড়ে। সপ্তাহ ৫-৬শত টাকা আয় হয়। তবে অর্থাভাবে এ কাজ৷ স্বল্পপরিষরে  করতে হচ্ছে। সরকারী ভাবে সহযোগিতা পেলে সংসারে সচ্ছলতা ও ব্যবসার পরিধি বাড়ানো সম্ভব হবে।
রাজবাড়ী জেলা দলিত পঞ্চায়েত  ফোরামের সাধারণ সম্পাদক বিপুল কুমার দাস বলেন, বঁাশ ও বেতের অতি মূল্যর কারণে পুজির অভাবে বেশির ভাগ বঁাশ ও বঁত শিল্পীদের দুর্দিন চলছে। কারণ বেশির ভাগ এসব কাজ করে নারীরা। সরকারী ভাবে আর্থিক সুবিধা, অনুদান বা সহজশর্তে ঋন দিলে এদেরকে স্বাবলম্বী করে গড়ে তোলা সম্ভব।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) মো. হাসিবুল হাসান বলেন, মাননীয় প্রধানম্ত্রী শেখ হাসিনা  স্বপ দেখিয়েছেন ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত বাংলাদেশ বির্নিমানে। সকল পেশার মানুষের অংশগ্রহণে স্বপপুরণ হবে। আমরা পুর্বমকুড়ী ঋষিপল্লীর  বাঁশ ও বেত শিল্পীদের সব সময়ই সহযাগিতা করে থাকি। তারা যদি আমাদের কোন সহযাগিতা চান তাহল অবশ্যই তাদের সহযোগিতা করার জন্য প্রস্তত রয়েছি।