শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মঙ্গলে টিঁকে থাকাই চ্যালেঞ্জ মহাকাশযানগুলির

নজরুল ইসলাম ## সাত মাস সময়, অবতরণের সাত মিনিটের আতঙ্ক ও মাইনাস ৬০ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড। মঙ্গল মিশনে যে কোনও দেশের কাছে আপাতত চ্যালেঞ্জ এই তিনটি বিষয়। পৃথিবী থেকে সাত মাসের দূরত্ব পেরিয়ে মঙ্গলে পৌঁছলেও সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় সেখানকার তাপমাত্রার সঙ্গে খাপ খাইয়ে সক্রিয় থাকা ও মঙ্গলের এবড়ো খেবড়ো পৃষ্ঠে নিরাপদে অবতরণ।

জানা গিয়েছে, পুরো শীত জুড়ে মঙ্গলের গায়ে থাকে হিমবাহ। বসন্তে সেগুলো একটি গলতে শুরু করে। তবে পৃথিবীর সঙ্গে মঙ্গলের তফাৎ একটাই (Human Habitation in MARS), এই বরফ আসলে কার্ব-ডাই-অক্সাইডের তৈরি। অর্থাৎ যাকে বলে ড্রাই আইস বা শুকনো বরফ। বসন্তে যখন মঙ্গলের গায়ে সূর্যের তেজ বাড়তে শুরু করে, তখন বরফের পাহাড়গুলো ভাঙতে শুরু করে ও একটা কালচে বালি বেরিয়ে পড়ে এর তলা থেকে। তবে শীতে এই গ্রহের তেজ আলাদা।

মাইনাস ষাট ডিগ্রি সেন্টিগ্রেডে কোনও মহাকাশযানের কাজ করা ও সক্রিয় থেকে পৃথিবীতে ছবি পাঠানো কার্যত অসম্ভব (MARS exploration)। যদিও নাসার সাধের মঙ্গলযান নিরাপদে অবতরণ করেছে মঙ্গলের জেজোরো ক্রেটারে (NASA’s mission in MARS)।

এই জেজোরো ক্রেটারের আয়তন ২৮ মাইলেরও বেশি। ওই গোটা এলাকাই জেজোরো ক্রেটার নামে পরিচিত। মঙ্গলের পৃষ্ঠের বেশিরভাগ জায়গাই বেশ কয়েক কোটি বছর আগে কোনও সুবিশাল আগ্নেয়গিরির উদগিরণের ফলে তৈরি হয়। এই কারণেই লাল গ্রহের পৃষ্ঠে তৈরি হয়েছে বিশালাকার একাধিক গর্ত বা ক্রেটার। এলাকাটি ভর্তি খুব উঁচু উঁচু পাহাড়ে। সমতল সেখানে খুবই কম। ৩০০ কি ৪০০ মিটার অন্তর সুউচ্চ পর্বতশৃঙ্গ রয়েছে মঙ্গলপৃষ্ঠে।

তাই যে কোনও মহাকাশযানের অবতরণের জন্য প্রয়োজন অসম্ভব দক্ষতার। নিখুঁত টাইমিং ও সঠিক স্থান নির্বাচন এক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে জানাচ্ছেন নাসার বিজ্ঞানীরা। নামার আগে থেকে খুব নিখুঁত ভাবে জায়গাটাকে চিনতে বুঝতে না পারলে যে কোনও সুউচ্চ পাহাড়ে ধাক্কা লেগে ভেঙে পড়তে পারে নাসার ল্যান্ডার ও রোভার। এমনকি তা পাহাড়ের খাঁজে আটকে গিয়ে বিকল হয়ে যেতে পারে মুহুর্তে। নাসার পারসিভিয়ারেন্স সেই বিপদ উতরে গিয়েছে।

এবার পালা চিনের। চলতি বছরের মে মাসে চিনের মঙ্গলযান গ্রহের মাটি ছোঁয়ার কথা। উল্লেখ্য পারসিভিয়ারেন্স সাফল্য পেলেও এখনও প্রতীক্ষা করতে হবে। কারণ মঙ্গলের অত্যধিক শৈত্য এই মহাকাশযানের কার্যক্ষমতা কতটা সক্রিয় রাখতে দেবে, সেখানে প্রশ্ন থাকছে। এদিকে, ১৯৯০ সাল থেকে একাধিকবার মঙ্গলে নামার চেষ্টা করেছে নাসার মহাকাশযান (History of Mars Exploration)। প্রায় ছটি মিশন ব্যর্থ হয়েছে নাসার।

আপনার মন্তব্য লিখুন

লেখকের সম্পর্কে

Shahriar Hossain

মঙ্গলে টিঁকে থাকাই চ্যালেঞ্জ মহাকাশযানগুলির

প্রকাশের সময় : ০৩:৪৪:০০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২ মার্চ ২০২১
নজরুল ইসলাম ## সাত মাস সময়, অবতরণের সাত মিনিটের আতঙ্ক ও মাইনাস ৬০ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড। মঙ্গল মিশনে যে কোনও দেশের কাছে আপাতত চ্যালেঞ্জ এই তিনটি বিষয়। পৃথিবী থেকে সাত মাসের দূরত্ব পেরিয়ে মঙ্গলে পৌঁছলেও সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় সেখানকার তাপমাত্রার সঙ্গে খাপ খাইয়ে সক্রিয় থাকা ও মঙ্গলের এবড়ো খেবড়ো পৃষ্ঠে নিরাপদে অবতরণ।

জানা গিয়েছে, পুরো শীত জুড়ে মঙ্গলের গায়ে থাকে হিমবাহ। বসন্তে সেগুলো একটি গলতে শুরু করে। তবে পৃথিবীর সঙ্গে মঙ্গলের তফাৎ একটাই (Human Habitation in MARS), এই বরফ আসলে কার্ব-ডাই-অক্সাইডের তৈরি। অর্থাৎ যাকে বলে ড্রাই আইস বা শুকনো বরফ। বসন্তে যখন মঙ্গলের গায়ে সূর্যের তেজ বাড়তে শুরু করে, তখন বরফের পাহাড়গুলো ভাঙতে শুরু করে ও একটা কালচে বালি বেরিয়ে পড়ে এর তলা থেকে। তবে শীতে এই গ্রহের তেজ আলাদা।

মাইনাস ষাট ডিগ্রি সেন্টিগ্রেডে কোনও মহাকাশযানের কাজ করা ও সক্রিয় থেকে পৃথিবীতে ছবি পাঠানো কার্যত অসম্ভব (MARS exploration)। যদিও নাসার সাধের মঙ্গলযান নিরাপদে অবতরণ করেছে মঙ্গলের জেজোরো ক্রেটারে (NASA’s mission in MARS)।

এই জেজোরো ক্রেটারের আয়তন ২৮ মাইলেরও বেশি। ওই গোটা এলাকাই জেজোরো ক্রেটার নামে পরিচিত। মঙ্গলের পৃষ্ঠের বেশিরভাগ জায়গাই বেশ কয়েক কোটি বছর আগে কোনও সুবিশাল আগ্নেয়গিরির উদগিরণের ফলে তৈরি হয়। এই কারণেই লাল গ্রহের পৃষ্ঠে তৈরি হয়েছে বিশালাকার একাধিক গর্ত বা ক্রেটার। এলাকাটি ভর্তি খুব উঁচু উঁচু পাহাড়ে। সমতল সেখানে খুবই কম। ৩০০ কি ৪০০ মিটার অন্তর সুউচ্চ পর্বতশৃঙ্গ রয়েছে মঙ্গলপৃষ্ঠে।

তাই যে কোনও মহাকাশযানের অবতরণের জন্য প্রয়োজন অসম্ভব দক্ষতার। নিখুঁত টাইমিং ও সঠিক স্থান নির্বাচন এক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে জানাচ্ছেন নাসার বিজ্ঞানীরা। নামার আগে থেকে খুব নিখুঁত ভাবে জায়গাটাকে চিনতে বুঝতে না পারলে যে কোনও সুউচ্চ পাহাড়ে ধাক্কা লেগে ভেঙে পড়তে পারে নাসার ল্যান্ডার ও রোভার। এমনকি তা পাহাড়ের খাঁজে আটকে গিয়ে বিকল হয়ে যেতে পারে মুহুর্তে। নাসার পারসিভিয়ারেন্স সেই বিপদ উতরে গিয়েছে।

এবার পালা চিনের। চলতি বছরের মে মাসে চিনের মঙ্গলযান গ্রহের মাটি ছোঁয়ার কথা। উল্লেখ্য পারসিভিয়ারেন্স সাফল্য পেলেও এখনও প্রতীক্ষা করতে হবে। কারণ মঙ্গলের অত্যধিক শৈত্য এই মহাকাশযানের কার্যক্ষমতা কতটা সক্রিয় রাখতে দেবে, সেখানে প্রশ্ন থাকছে। এদিকে, ১৯৯০ সাল থেকে একাধিকবার মঙ্গলে নামার চেষ্টা করেছে নাসার মহাকাশযান (History of Mars Exploration)। প্রায় ছটি মিশন ব্যর্থ হয়েছে নাসার।