শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

সবজি বিক্রেতা কুদ্দুসের স্বপ্নভঙ্গ

ফরিদপুর ব্যুরো ## সবজি বিক্রেতা কুদ্দুস শেখ স্বপ্ন দেখেছিলেন নিজের একটি বাড়ির। কিন্তু এ স্বপ্ন বাস্তবায়নে প্রতারকের খপ্পরে পড়ে খোয়া গেল তার পৈতৃক ভিটে বিক্রির ২১ হাজার টাকা। এদিকে বাড়িও পাননি তিনি। এমনই অভিযোগ এই অসহায় গৃহহীনের।

ছোটবেলায় বাবা-মাকে হারিয়ে কুদ্দুস শেখ নিজ জেলা রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি ছেড়ে পার্শ্ববর্তী ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে চলে আসেন মাত্র ১৬ বছর বয়সে। জীবিকার তাগিদে প্রথমে অন্যের বাড়িতে কাজ করলেও এখন সবজির ব্যবসা আবার কখনও পিঠা বিক্রি করে কোনো রকমে দুই বেলা পেটের ভাত যোগান দিচ্ছে। নিজের কোনো বাড়ি নেই, রোদ-বৃষ্টি-ঝড় কখনও কেটেছে পরের ঘরের বারান্দায়, কখনও স্কুলঘরে, এখন বোয়ালমারী সরকারি কলেজ রোডে অন্যের জমির উপর একটি ছাপড়াঘরে মাসিক ৩০০ টাকায় ভাড়া থাকে গৃহহীন ভূমিহীন এই পরিবার। নিজস্ব একটু মাথা গুজার ঠাঁই পেতে অনেকদিন চেষ্টা করেও সাধ্যের মধ্যে জমি কিনতে পারেনি। অবশেষে বছর দেড়েক আগে একটু আশার আলো দেখিয়েছিলেন বোয়ালমারী ইউনিয়নের চালিনগর গ্রামের জাকির হোসেন। কিন্তু তাকে বিশ্বাস করে নিজের পৈতৃক ভিটেটি মাত্র ২১ হাজার টাকায় বিক্রি করে টাকা তুলে দিয়েছিল প্রতারক জাকিরের হাতে। কথা ছিল তাকে পাঁচ শতক জমি দেবে জাকির। ইচ্ছে ছিল তিনি জায়গায় একটি ঘর করে শান্তিতে বসবাস করবেন। কিন্তু জমি কিনে দেয়ার কথা বলে ওই টাকা জাকির হোসেন আত্মসাৎ করেছে বলে অভিযোগ কুদ্দুসের।

বর্তমানে সবজি বিক্রি করে ভাড়া বাসায় থেকে দুবেলা দুমুঠো খেয়ে কোনো রকমে দিনাতিপাত করছেন তিনি।

স্ত্রী ছটু বেগম এবং দশ বছরের এক পুত্রসন্তান নিয়ে পঞ্চাশোর্ধ কুদ্দুসের অভাবী সংসার। বর্তমানে সবজি বিক্রি করে কোনো রকমে কষ্টে সংসারের ঘানি টানছেন তিনি।

কান্না জড়িত কণ্ঠে কুদ্দুস বলেন, ‘বালিয়াকান্দি উপজেলার শালিমারি গ্রামে বাবার একটুখানি জমি ছিল। সেটা বিক্রি করে ২১ হাজার টাকা পাই। সেই টাকা দিয়ে জমি ক্রয় করতে বোয়ালমারী উপজেলার সদর ইউনিয়ের চালিনগর গ্রামের জাকির হোসেনকে ওই টাকা দেই। তিনি আমাকে টাকাও দিচ্ছেন না, জমিও কিনে দিচ্ছেন না। টাকা চাইলে নানা টালবাহানা করে সে।

আপনার মন্তব্য লিখুন

লেখকের সম্পর্কে

Shahriar Hossain

রাজনীতিতে নাম লেখাতে যাচ্ছেন সানিয়া মির্জা

সবজি বিক্রেতা কুদ্দুসের স্বপ্নভঙ্গ

প্রকাশের সময় : ০৬:৩০:২৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩ মার্চ ২০২১

ফরিদপুর ব্যুরো ## সবজি বিক্রেতা কুদ্দুস শেখ স্বপ্ন দেখেছিলেন নিজের একটি বাড়ির। কিন্তু এ স্বপ্ন বাস্তবায়নে প্রতারকের খপ্পরে পড়ে খোয়া গেল তার পৈতৃক ভিটে বিক্রির ২১ হাজার টাকা। এদিকে বাড়িও পাননি তিনি। এমনই অভিযোগ এই অসহায় গৃহহীনের।

ছোটবেলায় বাবা-মাকে হারিয়ে কুদ্দুস শেখ নিজ জেলা রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি ছেড়ে পার্শ্ববর্তী ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে চলে আসেন মাত্র ১৬ বছর বয়সে। জীবিকার তাগিদে প্রথমে অন্যের বাড়িতে কাজ করলেও এখন সবজির ব্যবসা আবার কখনও পিঠা বিক্রি করে কোনো রকমে দুই বেলা পেটের ভাত যোগান দিচ্ছে। নিজের কোনো বাড়ি নেই, রোদ-বৃষ্টি-ঝড় কখনও কেটেছে পরের ঘরের বারান্দায়, কখনও স্কুলঘরে, এখন বোয়ালমারী সরকারি কলেজ রোডে অন্যের জমির উপর একটি ছাপড়াঘরে মাসিক ৩০০ টাকায় ভাড়া থাকে গৃহহীন ভূমিহীন এই পরিবার। নিজস্ব একটু মাথা গুজার ঠাঁই পেতে অনেকদিন চেষ্টা করেও সাধ্যের মধ্যে জমি কিনতে পারেনি। অবশেষে বছর দেড়েক আগে একটু আশার আলো দেখিয়েছিলেন বোয়ালমারী ইউনিয়নের চালিনগর গ্রামের জাকির হোসেন। কিন্তু তাকে বিশ্বাস করে নিজের পৈতৃক ভিটেটি মাত্র ২১ হাজার টাকায় বিক্রি করে টাকা তুলে দিয়েছিল প্রতারক জাকিরের হাতে। কথা ছিল তাকে পাঁচ শতক জমি দেবে জাকির। ইচ্ছে ছিল তিনি জায়গায় একটি ঘর করে শান্তিতে বসবাস করবেন। কিন্তু জমি কিনে দেয়ার কথা বলে ওই টাকা জাকির হোসেন আত্মসাৎ করেছে বলে অভিযোগ কুদ্দুসের।

বর্তমানে সবজি বিক্রি করে ভাড়া বাসায় থেকে দুবেলা দুমুঠো খেয়ে কোনো রকমে দিনাতিপাত করছেন তিনি।

স্ত্রী ছটু বেগম এবং দশ বছরের এক পুত্রসন্তান নিয়ে পঞ্চাশোর্ধ কুদ্দুসের অভাবী সংসার। বর্তমানে সবজি বিক্রি করে কোনো রকমে কষ্টে সংসারের ঘানি টানছেন তিনি।

কান্না জড়িত কণ্ঠে কুদ্দুস বলেন, ‘বালিয়াকান্দি উপজেলার শালিমারি গ্রামে বাবার একটুখানি জমি ছিল। সেটা বিক্রি করে ২১ হাজার টাকা পাই। সেই টাকা দিয়ে জমি ক্রয় করতে বোয়ালমারী উপজেলার সদর ইউনিয়ের চালিনগর গ্রামের জাকির হোসেনকে ওই টাকা দেই। তিনি আমাকে টাকাও দিচ্ছেন না, জমিও কিনে দিচ্ছেন না। টাকা চাইলে নানা টালবাহানা করে সে।