বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সরকারি স্কুলের অর্ধেকাংশে ভর্তি পরীক্ষা চালু রাখা যায়

কাজী আবু মোহাম্মদ খালেদ নিজাম।। 
দেশের সরকারি ও বেসরকারি স্কুল ভর্তিতে পরীক্ষার বদলে লটারি সিস্টেম চালু হয়েছে। যদিও ইতিপূর্বে ভর্তি পরীক্ষার মাধ্যমে স্কুলগুলোতে ছাত্রভর্তি করা হতো। মূলত: করোনার কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হওয়ায় শিক্ষার্থীদের প্রস্তুতির ঘাটতির কথা ভেবেই সাময়িকভাবে এই পদ্ধতি চালু হয়। কিন্তু সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, এই লটারি সিস্টেম পরবর্তীতেও চালু থাকবে! এমনিতে ২০২৩ সালে লটারির মাধ্যমে পরবর্তী শ্রেণিতে শিক্ষার্থী ভর্তির সিদ্ধান্ত ঘোষণা করা হয়েছে। লটারিতে শিক্ষার্থী ভর্তির পক্ষে-বিপক্ষে নানা আলোচনা চলছে। কেউ বলেন সঠিক প্রক্রিয়া কেউবা বলছেন মেধা নষ্টের কথা। ভালো স্কুলগুলো লটারির কারণে তাদের গৌরব হারানোর শংকায় পড়েছেন। লটারির কারণে অনেক ভালো ছাত্রছাত্রী নামকরা স্কুলে ভর্তি হতে না পেরে হতাশ হয়ে পড়ছে। অনেকে আবার কোন স্কুলেও ভর্তির সুযোগ পাচ্ছেনা। যদিও সংশ্লিষ্ট মহল থেকে বলা হচ্ছে, লটারি পদ্ধতি চালু হওয়ায় বৈষম্য দূর ও কোচিং বাণিজ্য বন্ধ হবে।
এ বিষয়ে আমি মনে করি, স্কুলভর্তি কার্যক্রম নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া দরকার। কারণ, করোনা পেন্ডামিকের কারণে হয়তো সাময়িক একটা ব্যবস্থা নেওয়া গেছে। অদূর ভবিষ্যতে কী হতে পারে অর্থাৎ এর সুফল-কুফল পর্যালোচনা করা প্রয়োজন। একেবারে হাল ছেড়ে দিলে শিক্ষার্থী ঝরে পড়ার কোন আশংকা আছে কিনা বা ভালো শিক্ষার্থীদের উৎসাহ, উদ্দীপনায় ভাটা পড়ছে কিনা তা দেখতে হবে। দেশের ভালো স্কুলগুলো এতোদিন যেভাবে শিক্ষার্থীদের তৈরী করেছে তার ধারাবাহিকতা লটারিতে শিক্ষার্থী ভর্তির ফলে থাকবেনা নিশ্চিতভাবে। আর একটি কথা না বললেই নয়। আর সেটা হলো, দেখা গেছে লটারির কারণে কেউ ভর্তির সুযোগ পেয়েছে কিন্তু সরকারি স্কুল দূরে গ্রামের বাইরে তথা শহরে হওয়ার কারণে সেখানে সে হয়তো ভর্তি হতে পারছেনা বা তার আর্থিক সচ্ছলতা নেই। এমনও হতে পারে, শহরে থাকাখাওয়া কষ্টকর হয়ে পড়ছে। এসব বিষয় বিবেচনায় নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া জরুরি বলে আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করছি।
এ প্রেক্ষিতে আমার অভিমত হলো, ন্যূনতম সংখ্যক শিক্ষার্থীকে ভালো স্কুলে পড়ার সুযোগ দিতে দেশের সরকারি স্কুলের অর্ধেকাংশে (৫০%) ভর্তি পরীক্ষা চালু করা যেতে পারে। বাকি স্কুলগুলোর ভর্তিতে না হয় লটারিই চালু থাকুক। বেসরকারি ভালো স্কুলগুলোতেও একই পদ্ধতি অনুসরণ করা যেতে পারে। যারা কোন স্কুলে ভর্তি হতে পারবেনা তাদের ব্যাপারে কী হবে সেটাও বিবেচনায় নিতে হবে। কেননা, শিক্ষার অধিকার থেকে কাউকে বঞ্চিত রাখার কোন সুযোগ নেই। সমন্বিত ও বাস্তব অবস্থার নিরিখে যেকোন সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত।
★ লেখক: শিক্ষক ও কলামিস্ট

সরকারি স্কুলের অর্ধেকাংশে ভর্তি পরীক্ষা চালু রাখা যায়

প্রকাশের সময় : ০৮:০৬:৩৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২১
কাজী আবু মোহাম্মদ খালেদ নিজাম।। 
দেশের সরকারি ও বেসরকারি স্কুল ভর্তিতে পরীক্ষার বদলে লটারি সিস্টেম চালু হয়েছে। যদিও ইতিপূর্বে ভর্তি পরীক্ষার মাধ্যমে স্কুলগুলোতে ছাত্রভর্তি করা হতো। মূলত: করোনার কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হওয়ায় শিক্ষার্থীদের প্রস্তুতির ঘাটতির কথা ভেবেই সাময়িকভাবে এই পদ্ধতি চালু হয়। কিন্তু সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, এই লটারি সিস্টেম পরবর্তীতেও চালু থাকবে! এমনিতে ২০২৩ সালে লটারির মাধ্যমে পরবর্তী শ্রেণিতে শিক্ষার্থী ভর্তির সিদ্ধান্ত ঘোষণা করা হয়েছে। লটারিতে শিক্ষার্থী ভর্তির পক্ষে-বিপক্ষে নানা আলোচনা চলছে। কেউ বলেন সঠিক প্রক্রিয়া কেউবা বলছেন মেধা নষ্টের কথা। ভালো স্কুলগুলো লটারির কারণে তাদের গৌরব হারানোর শংকায় পড়েছেন। লটারির কারণে অনেক ভালো ছাত্রছাত্রী নামকরা স্কুলে ভর্তি হতে না পেরে হতাশ হয়ে পড়ছে। অনেকে আবার কোন স্কুলেও ভর্তির সুযোগ পাচ্ছেনা। যদিও সংশ্লিষ্ট মহল থেকে বলা হচ্ছে, লটারি পদ্ধতি চালু হওয়ায় বৈষম্য দূর ও কোচিং বাণিজ্য বন্ধ হবে।
এ বিষয়ে আমি মনে করি, স্কুলভর্তি কার্যক্রম নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া দরকার। কারণ, করোনা পেন্ডামিকের কারণে হয়তো সাময়িক একটা ব্যবস্থা নেওয়া গেছে। অদূর ভবিষ্যতে কী হতে পারে অর্থাৎ এর সুফল-কুফল পর্যালোচনা করা প্রয়োজন। একেবারে হাল ছেড়ে দিলে শিক্ষার্থী ঝরে পড়ার কোন আশংকা আছে কিনা বা ভালো শিক্ষার্থীদের উৎসাহ, উদ্দীপনায় ভাটা পড়ছে কিনা তা দেখতে হবে। দেশের ভালো স্কুলগুলো এতোদিন যেভাবে শিক্ষার্থীদের তৈরী করেছে তার ধারাবাহিকতা লটারিতে শিক্ষার্থী ভর্তির ফলে থাকবেনা নিশ্চিতভাবে। আর একটি কথা না বললেই নয়। আর সেটা হলো, দেখা গেছে লটারির কারণে কেউ ভর্তির সুযোগ পেয়েছে কিন্তু সরকারি স্কুল দূরে গ্রামের বাইরে তথা শহরে হওয়ার কারণে সেখানে সে হয়তো ভর্তি হতে পারছেনা বা তার আর্থিক সচ্ছলতা নেই। এমনও হতে পারে, শহরে থাকাখাওয়া কষ্টকর হয়ে পড়ছে। এসব বিষয় বিবেচনায় নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া জরুরি বলে আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করছি।
এ প্রেক্ষিতে আমার অভিমত হলো, ন্যূনতম সংখ্যক শিক্ষার্থীকে ভালো স্কুলে পড়ার সুযোগ দিতে দেশের সরকারি স্কুলের অর্ধেকাংশে (৫০%) ভর্তি পরীক্ষা চালু করা যেতে পারে। বাকি স্কুলগুলোর ভর্তিতে না হয় লটারিই চালু থাকুক। বেসরকারি ভালো স্কুলগুলোতেও একই পদ্ধতি অনুসরণ করা যেতে পারে। যারা কোন স্কুলে ভর্তি হতে পারবেনা তাদের ব্যাপারে কী হবে সেটাও বিবেচনায় নিতে হবে। কেননা, শিক্ষার অধিকার থেকে কাউকে বঞ্চিত রাখার কোন সুযোগ নেই। সমন্বিত ও বাস্তব অবস্থার নিরিখে যেকোন সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত।
★ লেখক: শিক্ষক ও কলামিস্ট