বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

৩০ বছর সশ্রম কারাদণ্ড মানে যাবজ্জীবন: আপিল বিভাগ

বার্তাকণ্ঠ ডেস্ক ।।

যাবজ্জীবন সাজা মানে ৩০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড এমন সিদ্ধান্ত জানিয়ে পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করেছে সুপ্রিম কোর্ট। আমৃত্যু উল্লেখ না থাকলে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হিসেবে ৩০ বছর সাজা খাটতে হবে আসামিকে।

বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে রায়টি প্রকাশ করা হয়েছে। এর আগে মঙ্গলবার প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন সাত বিচারপতির ভার্চুয়াল আপিল বেঞ্চ এই রায়ে সংক্ষিপ্ত আদেশ দেন। যাবজ্জীবন কারাদণ্ডকে আমৃত্যু কারাবাস বলে আপিল বিভাগের দেওয়া রায়ের বিরুদ্ধে করা রিভিউ আবেদন সংখ্যাগরিষ্ঠ মতামতের ভিত্তিতে নিষ্পত্তি করে রায় দিয়েছেন আপিল বিভাগ।

রায়ে লেখা হয়েছে ‘প্রাথমিকভাবে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড মানে হচ্ছে দণ্ডিত ব্যক্তির স্বাভাবিক মৃত্যু না হওয়া পর্যন্ত বাকি জীবন। কিন্তু ফৌজদারি কার্যবিধির ৪৫ ও ৫৩ ধারার সাথে দণ্ড বিধির ৫৫ ও ৫৭ ধারা এবং ফৌজদারি কার্যবিধির ৩৫ (এ) ধারা একসঙ্গে পড়লে যাবজ্জীবন মানে ৩০ বছরের কারাবাস। তবে আদালত, ট্রাইব্যুনাল বা আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল কর্তৃক কাউকে আমৃত্যু কারাদণ্ড দেওয়া হলে সেই দণ্ডিত ব্যক্তি ফৌজদারি কার্যবিধির ৩৫ (এ) ধারার সুবিধা পাবেন না।’

সর্বোচ্চ আদালতের আজকের রায় ঘোষণার সময় আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে যুক্ত ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিশ্বজিৎ দেবনাথ। আর আসামিপক্ষে ছিলেন আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন ও আইনজীবী শিশির মনির।

রায়ের পর অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, ‘যাবজ্জীবন মানে ৩০ বছরের কারাদণ্ড। তবে আদালত বা ট্রাইব্যুনাল যদি সাজায় আমৃত্যু কারাদণ্ড বলে দেন তাহলে সেটাই গণ্য হবে।’

এর ২০২০ সালের ১১ জুলাই আপিল বেঞ্চ এই রিভিউ এর শুনানি শেষে বিষয়টি রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ রাখেন। এরপর গত ২৪ নভেম্বর আপিল বিভাগ এবিষয়ে রায়ের জন্য ১ ডিসেম্বর দিন ধার্য করেন। সর্বোচ্চ আদালতে এই রিভিউ শুনানিতে আইনি মতামত তুলে ধরেন চার অ্যামিকাস কিউরি (আদালত বন্ধু)। তারা হলেন ব্যারিস্টার রোকন উদ্দিন মাহমুদ, এ এফ হাসান আরিফ, অ্যাডভোকেট আবদুর রেজাক খান ও এ এম আমিন উদ্দিন।

একটি হত্যা মামলায় দুই আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দিয়ে ২০০৩ সালের ১৫ অক্টোবর রায় দেন বিচারিক আদালত। এই রায়ের বিরুদ্ধে আসামিরা হাইকোর্টে আপিল করেন। তাদের মৃত্যুদণ্ড অনুমোদনের জন্য ডেথ রেফারেন্স (মৃত্যুদণ্ড অনুমোদন) শুনানির জন্য হাইকোর্টে আসে।

২০০৭ সালের ৩০ অক্টোবর এ মামলার শুনানি করে হাইকোর্ট রায়ে দুজনের মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখেন। তারা হলেন আতাউর মৃধা ওরফে আতাউর ও আনোয়ার হোসেন। এই রায়ের বিরুদ্ধে আসামিরা আপিল বিভাগে আপিল করেন। ২০১৭ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি আপিল বিভাগের দেয়া রায়ে দুই আসামির মৃত্যুদণ্ড কমিয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়। পাশাপাশি আদালত যাবজ্জীবন মানে আমৃত্যু কারাবাস বলে সাত দফা অভিমত দেন।

তবে আপিল বিভাগের দেওয়া এই রায় পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) আবেদন করে আসামি আতাউর মৃধা। সে রিভিউ শুনানি নিয়ে আজ সংক্ষিপ্ত রায় দেওয়া হলো।

৩০ বছর সশ্রম কারাদণ্ড মানে যাবজ্জীবন: আপিল বিভাগ

প্রকাশের সময় : ০৫:০০:১৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৫ জুলাই ২০২১

বার্তাকণ্ঠ ডেস্ক ।।

যাবজ্জীবন সাজা মানে ৩০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড এমন সিদ্ধান্ত জানিয়ে পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করেছে সুপ্রিম কোর্ট। আমৃত্যু উল্লেখ না থাকলে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হিসেবে ৩০ বছর সাজা খাটতে হবে আসামিকে।

বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে রায়টি প্রকাশ করা হয়েছে। এর আগে মঙ্গলবার প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন সাত বিচারপতির ভার্চুয়াল আপিল বেঞ্চ এই রায়ে সংক্ষিপ্ত আদেশ দেন। যাবজ্জীবন কারাদণ্ডকে আমৃত্যু কারাবাস বলে আপিল বিভাগের দেওয়া রায়ের বিরুদ্ধে করা রিভিউ আবেদন সংখ্যাগরিষ্ঠ মতামতের ভিত্তিতে নিষ্পত্তি করে রায় দিয়েছেন আপিল বিভাগ।

রায়ে লেখা হয়েছে ‘প্রাথমিকভাবে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড মানে হচ্ছে দণ্ডিত ব্যক্তির স্বাভাবিক মৃত্যু না হওয়া পর্যন্ত বাকি জীবন। কিন্তু ফৌজদারি কার্যবিধির ৪৫ ও ৫৩ ধারার সাথে দণ্ড বিধির ৫৫ ও ৫৭ ধারা এবং ফৌজদারি কার্যবিধির ৩৫ (এ) ধারা একসঙ্গে পড়লে যাবজ্জীবন মানে ৩০ বছরের কারাবাস। তবে আদালত, ট্রাইব্যুনাল বা আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল কর্তৃক কাউকে আমৃত্যু কারাদণ্ড দেওয়া হলে সেই দণ্ডিত ব্যক্তি ফৌজদারি কার্যবিধির ৩৫ (এ) ধারার সুবিধা পাবেন না।’

সর্বোচ্চ আদালতের আজকের রায় ঘোষণার সময় আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে যুক্ত ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিশ্বজিৎ দেবনাথ। আর আসামিপক্ষে ছিলেন আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন ও আইনজীবী শিশির মনির।

রায়ের পর অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, ‘যাবজ্জীবন মানে ৩০ বছরের কারাদণ্ড। তবে আদালত বা ট্রাইব্যুনাল যদি সাজায় আমৃত্যু কারাদণ্ড বলে দেন তাহলে সেটাই গণ্য হবে।’

এর ২০২০ সালের ১১ জুলাই আপিল বেঞ্চ এই রিভিউ এর শুনানি শেষে বিষয়টি রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ রাখেন। এরপর গত ২৪ নভেম্বর আপিল বিভাগ এবিষয়ে রায়ের জন্য ১ ডিসেম্বর দিন ধার্য করেন। সর্বোচ্চ আদালতে এই রিভিউ শুনানিতে আইনি মতামত তুলে ধরেন চার অ্যামিকাস কিউরি (আদালত বন্ধু)। তারা হলেন ব্যারিস্টার রোকন উদ্দিন মাহমুদ, এ এফ হাসান আরিফ, অ্যাডভোকেট আবদুর রেজাক খান ও এ এম আমিন উদ্দিন।

একটি হত্যা মামলায় দুই আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দিয়ে ২০০৩ সালের ১৫ অক্টোবর রায় দেন বিচারিক আদালত। এই রায়ের বিরুদ্ধে আসামিরা হাইকোর্টে আপিল করেন। তাদের মৃত্যুদণ্ড অনুমোদনের জন্য ডেথ রেফারেন্স (মৃত্যুদণ্ড অনুমোদন) শুনানির জন্য হাইকোর্টে আসে।

২০০৭ সালের ৩০ অক্টোবর এ মামলার শুনানি করে হাইকোর্ট রায়ে দুজনের মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখেন। তারা হলেন আতাউর মৃধা ওরফে আতাউর ও আনোয়ার হোসেন। এই রায়ের বিরুদ্ধে আসামিরা আপিল বিভাগে আপিল করেন। ২০১৭ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি আপিল বিভাগের দেয়া রায়ে দুই আসামির মৃত্যুদণ্ড কমিয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়। পাশাপাশি আদালত যাবজ্জীবন মানে আমৃত্যু কারাবাস বলে সাত দফা অভিমত দেন।

তবে আপিল বিভাগের দেওয়া এই রায় পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) আবেদন করে আসামি আতাউর মৃধা। সে রিভিউ শুনানি নিয়ে আজ সংক্ষিপ্ত রায় দেওয়া হলো।