আব্দুল লতিফ ।।
পশ্চিমবঙ্গসহ গোটা দেশজুড়ে গেরুয়া তাণ্ডবে গণপিটুনিতে যেভাবে একের পর এক মুসলিম যুবকরা প্রাণ হারাচ্ছে তা অত্যন্ত উদ্বেগের। মোদী চাইলে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এসব বন্ধ করা সম্ভব’। এমন মন্তব্য করেছেন ভারতের সারা বাংলা সংখ্যালঘু যুব ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মাদ কামরুজ্জামান। মঙ্গলবার (২ জুলাই) ইরানি গণমাধ্যম রেডিও তেহরানকে দেয়া বিশেষ সাক্ষাৎকারে তিনি ওই মন্তব্য করেন।
কামরুজ্জামান বলেন, ‘এ সকল ঘটনায় সব থেকে বড় দোষীদের গ্রেফতার করার পরিবর্তে, তাদের শাস্তি দেয়ার পরিবর্তে পুলিশ-প্রশাসন, রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকার তারা যেভাবে নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছে তাতে এক শ্রেণির গেরুয়াধারীদের ঔদ্ধত্য দিনের পর দিন বাড়ছে। আমরা অত্যন্ত উদ্বিগ্ন যে, পশ্চিমবঙ্গের মালদহ জেলায় সানাউল শেখকে যেভাবে মোটর সাইকেল চুরির অপবাদ দিয়ে হত্যা করা হল, তা ঝাড়খণ্ডের তাবরেজ আনসারীর হত্যার মতোই।
একই স্টাইলে আরএসএস বিভিন্ন জায়গায় মুসলিম যুবকদের হত্যা করার পরিকল্পনা নিয়েছে এবং বিশেষকরে ধর্মপ্রাণ মুসলিম যুবকদের সর্বত্র বাসে, ট্রেনে হেনস্থা করা হচ্ছে তারপরেও আমরা একের পর এক দেখতে পাচ্ছি যে, প্রশাসন তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থ, তারা ইচ্ছাকৃতভাবে এড়িয়ে যাচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘আজ থেকে পনের দিন আগে দক্ষিণ ২৪ পরগণা জেলার ক্যানিং লোকাল ট্রেনে হাফেজ শাহরুখ হালদারকে আক্রমণ করা হল, তার ভিডিও ভাইরাল হল, কিন্তু তারপরেও অপরাধীদের পুলিশ এখনও পর্যন্ত গ্রেফতার করল না! এই বিষয়ে মুসলিমরা যেমন প্রশসানের কাছ থেকে কোনও সহযোগিতা পাচ্ছে না, আত্মীয়-স্বজনকে হারানোর পরেও পরিবারের মানুষ সুবিচার পাচ্ছে না।
এরপরে মুসলিমদের কাছে চাওয়ার দ্বিতীয় কোনও জায়গা নেই। ফলে আমরা যদি দেখি যে, পুলিশ প্রশাসন অপরাধীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থ হচ্ছে এবং তারা মুসলিম ভাইদেরকে যথাযথ সুবিচার দিতে ব্যর্থ হচ্ছে তাহলে আমাদের বৃহত্তর প্রতিবাদের পথে যাওয়া ছাড়া বিকল্প কোনও রাস্তা থাকবে না। আমি আশা করব মুসলিম যুবক, মুসলিম সমাজকে আইন হাতে তুলে নিতে সরকার ও প্রশাসন বাধ্য করবেন না।’
মুহাম্মাদ কামরুজ্জামান বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী চাইলে তিনি ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দেশজুড়ে যে গেরুয়া তাণ্ডব চলছে তা বন্ধ করতে পারেন। যখন একের পর এক তরুণ ও যুবকরা প্রাণ হারাচ্ছেন গেরুয়া বাহিনীর হাতে তখন নরেন্দ্র মোদি ‘মন কি বাত’ (রেডিওতে মনের কথা) অনুষ্ঠানে তার জয়-পরাজয়ের কাহিনী মানুষকে শোনাচ্ছেন। তার মনের মধ্যে এদেশের সংখ্যালঘু যুব সমাজের কোনও স্থান পাচ্ছে না! এটা ভারতের মতো ধর্মনিরপেক্ষ দেশের প্রধানমন্ত্রীর ‘রাজধর্ম’ হতে পারে না। এটা তার ‘মুখোশ পরা নীতি’ ছাড়া অন্য কিছু নয়। আমরা আশা করব যে দেশের সুশীল সমাজ এর বিরুদ্ধে সোচ্চার হবেন এবং একটা বড়সড় পরিবর্তন নিয়ে আসতে সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আমরা সমর্থ হবো।’ সূত্র: পার্স
ট্যুডে