বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

বেনাপোলে ভারতগামী প্রতিবন্ধী ও ক্যানসার রুগিদের কাছ থেকে জোর করে টার্মিনাল ফী আদায়

মিলন হোসেন : স্টাফ রিপোর্টার ।। 
ভারতগামী বাংলাদেশি পাসপোর্টধারী যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা,শিশু,ক্যান্সার রোগী ও প্রতিবন্ধী যাত্রীদের কাছ থেকে জোর করে টার্মমিনাল ফী আদায় করছে বন্দর কর্তৃপক্ষ। বেনাপোল স্থলবন্দরের পরিচালক (ট্রাফিক) প্রদোষ কান্তি দাস সম্প্রতিিএ আদেশ জারি করায়  ক্ষোভ  প্রকাশ করেছেন যাত্রীরা। বুধবার(১০ জুলাই) সকালে বেনাপোল বন্দরে যাত্রীপ্রতি ৪২টাকা ৭৫ পয়সা টাকা থেকে ৫০ টাকা হারে কর আদায় করতে দেখা যায়।এর আগে পাঁচ বছরের নিচে শিশু, ক্যানসার আক্রান্ত রোগী, প্রতিবন্ধী ও যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য টার্মিনাল ফী  মওকুফ ছিল।
জানা যায়, প্রতিদিন বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে পাঁচ থেকে আট হাজার যাত্রী ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে যাতায়াত করছে। যার অধিকাংশ যাত্রী চিকিৎসার জন্য ভারত যাচ্ছেন। ভারতীয় যাত্রীরা যারা বাংলাদেশে আসেন ভারত সরকার তাদের কাছ থেকে কোনো বিদেশ ভ্রমণ কর আদায় করে না।  কিন্তু বাংলাদেশিরা ভারতে যাওয়ার সময় বাংলাদেশ সরকার যাত্রী প্রতি ভ্রমন কর ৫০০ টাকা ও বেনাপোল স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ ৪২ টাকা ৭৫ পয়সা টাকা হারে টর্ভ্রমিনাল ফী আদায় করে থাকেন। তবে পাঁচ বছরের নিচে শিশু, ক্যানসার আক্রান্ত রোগী, প্রতিবন্ধী ও যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের বাংলাদেশ সরকার ভ্রমণ ট্রাক্স মওকুফ করলেও বন্দর কর্তৃপ নতুন করে টার্মিনাল ফী সংযোগ করেন।
বেনাপোল চেকপোস্ট আন্তর্জাতিক প্যাসেঞ্জার টার্মিনালে কর্মরত সোনালী ব্যাংকের কর্মকর্তা নূরুল ইসলাম বলেন, সাধারণ যাত্রীদের কাছ থেকে ভ্রমণ কর বাবদ মোট ৫ শ৪২ টাকা ৭৫ পয়সা আদায় করা হচ্ছে।তবে প্রথম থেকেই শিশু, ক্যান্সার রোগী, যুদ্ধহত মুক্তিযোদ্ধা ও প্রতিবন্ধী পাসপোর্ট যাত্রীদের ক্ষেত্রে এই ভ্রমণ কর মওকুফ ছিল। চলতি সপ্তাহে বন্দর কর্তৃপ এসব যাত্রী প্রতি ৪২ টাকা ৭৫ পয়সা হারে  ফী আদায়ের নির্দেশনা দেন তাদের।আমদানি-রফতানি কারক নজরুল ইমলাম জানান, প্রায় তিন বছর হচ্ছে কেবল টয়লেট সুবিধা ছাড়া প্রতিশ্রুতিকৃত কোনো যাত্রী  সেবা চালু করতে পারেনি বন্দর কর্তৃপক্ষ। অথচ প্রতিবছর এ ট্যাক্স বেড়ে চলছে। এর মধ্যে আবার অসহায় মানুষদের কাছ থেকে ফী  আদায় শোভনীয় দেখায় না।
ভারতে চিকিৎসার উদ্দেশে বেনাপোল বন্দরে আসা ক্যান্সার ও প্রতিবন্ধী যাত্রীরা বলেন,এর আগে তারা যখন ভারতে গেছেন তাদের কোনো ভ্রমণ কর দেননি।  কিন্তু এখন বন্দর টার্মিনাল ফী  আদায় করা হচ্ছে জোর করে।বিষয়টি বন্দর কর্তৃপক্ষকে    পুনরায় বিবেচনা করার আহ্বান জানান এই পাসপোর্টধারী যাত্রীরা।

এদিকে বন্দরের টার্মিনাল ফী  যাত্রী প্রতি ৪২ টাকা ৭৫ পয়সা এবং বাংলাদেশ সরকারের ভ্রমণ কর ৫০০ টাকা নির্ধারণ হলেও সোনালী      ব্যাংক  কর্তৃপক্ষ খুচরা পয়সা নেই অযুহাত দেখিয়ে ৪২ টাকা ৭৫ পয়সার স্থলে ৪৫ টাকা থেকে ৫০ টাকা এবং ৫০০ টাকার স্থলে ৫১০ টাকা আদায় করছে বলেও অভিযোগ রয়েছে। এতে প্রতি মাসে নির্দিষ্ট ট্যাক্স ছাড়াও বাড়তি ঘুষ আদায় হচ্ছে প্রায় ১৮ লাখ টাকা।

ঘুষের অর্থ সোনালী ব্যাংক ও বন্দরের কয়েকজন কর্মকর্তা ভাগ বাটোয়ারা করে নেন প্রতিদিন।
বেনাপোল বন্দর পরিচালক (ট্রাফিক) প্রদোষ কান্তি দাস জানান,বাংলাদেশ স্থলবন্দর চেয়ারম্যান তপন কুমার চক্রবর্তীর সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে এই টার্মিনাল ফী  চালু করা হয়েছে।এখন থেকে সব ধরনের যাত্রীদের ভারত ভ্রমণের ক্ষেত্রে  ৪২ টাকা ৭৫ পয়সা হারে বন্দরের এই ফী পরিশোধ করতে হবে।#

আপনার মন্তব্য লিখুন

লেখকের সম্পর্কে

Shahriar Hossain

বেনাপোলে ভারতগামী প্রতিবন্ধী ও ক্যানসার রুগিদের কাছ থেকে জোর করে টার্মিনাল ফী আদায়

প্রকাশের সময় : ০৮:৩৮:২৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ১০ জুলাই ২০১৯

মিলন হোসেন : স্টাফ রিপোর্টার ।। 
ভারতগামী বাংলাদেশি পাসপোর্টধারী যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা,শিশু,ক্যান্সার রোগী ও প্রতিবন্ধী যাত্রীদের কাছ থেকে জোর করে টার্মমিনাল ফী আদায় করছে বন্দর কর্তৃপক্ষ। বেনাপোল স্থলবন্দরের পরিচালক (ট্রাফিক) প্রদোষ কান্তি দাস সম্প্রতিিএ আদেশ জারি করায়  ক্ষোভ  প্রকাশ করেছেন যাত্রীরা। বুধবার(১০ জুলাই) সকালে বেনাপোল বন্দরে যাত্রীপ্রতি ৪২টাকা ৭৫ পয়সা টাকা থেকে ৫০ টাকা হারে কর আদায় করতে দেখা যায়।এর আগে পাঁচ বছরের নিচে শিশু, ক্যানসার আক্রান্ত রোগী, প্রতিবন্ধী ও যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য টার্মিনাল ফী  মওকুফ ছিল।
জানা যায়, প্রতিদিন বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে পাঁচ থেকে আট হাজার যাত্রী ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে যাতায়াত করছে। যার অধিকাংশ যাত্রী চিকিৎসার জন্য ভারত যাচ্ছেন। ভারতীয় যাত্রীরা যারা বাংলাদেশে আসেন ভারত সরকার তাদের কাছ থেকে কোনো বিদেশ ভ্রমণ কর আদায় করে না।  কিন্তু বাংলাদেশিরা ভারতে যাওয়ার সময় বাংলাদেশ সরকার যাত্রী প্রতি ভ্রমন কর ৫০০ টাকা ও বেনাপোল স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ ৪২ টাকা ৭৫ পয়সা টাকা হারে টর্ভ্রমিনাল ফী আদায় করে থাকেন। তবে পাঁচ বছরের নিচে শিশু, ক্যানসার আক্রান্ত রোগী, প্রতিবন্ধী ও যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের বাংলাদেশ সরকার ভ্রমণ ট্রাক্স মওকুফ করলেও বন্দর কর্তৃপ নতুন করে টার্মিনাল ফী সংযোগ করেন।
বেনাপোল চেকপোস্ট আন্তর্জাতিক প্যাসেঞ্জার টার্মিনালে কর্মরত সোনালী ব্যাংকের কর্মকর্তা নূরুল ইসলাম বলেন, সাধারণ যাত্রীদের কাছ থেকে ভ্রমণ কর বাবদ মোট ৫ শ৪২ টাকা ৭৫ পয়সা আদায় করা হচ্ছে।তবে প্রথম থেকেই শিশু, ক্যান্সার রোগী, যুদ্ধহত মুক্তিযোদ্ধা ও প্রতিবন্ধী পাসপোর্ট যাত্রীদের ক্ষেত্রে এই ভ্রমণ কর মওকুফ ছিল। চলতি সপ্তাহে বন্দর কর্তৃপ এসব যাত্রী প্রতি ৪২ টাকা ৭৫ পয়সা হারে  ফী আদায়ের নির্দেশনা দেন তাদের।আমদানি-রফতানি কারক নজরুল ইমলাম জানান, প্রায় তিন বছর হচ্ছে কেবল টয়লেট সুবিধা ছাড়া প্রতিশ্রুতিকৃত কোনো যাত্রী  সেবা চালু করতে পারেনি বন্দর কর্তৃপক্ষ। অথচ প্রতিবছর এ ট্যাক্স বেড়ে চলছে। এর মধ্যে আবার অসহায় মানুষদের কাছ থেকে ফী  আদায় শোভনীয় দেখায় না।
ভারতে চিকিৎসার উদ্দেশে বেনাপোল বন্দরে আসা ক্যান্সার ও প্রতিবন্ধী যাত্রীরা বলেন,এর আগে তারা যখন ভারতে গেছেন তাদের কোনো ভ্রমণ কর দেননি।  কিন্তু এখন বন্দর টার্মিনাল ফী  আদায় করা হচ্ছে জোর করে।বিষয়টি বন্দর কর্তৃপক্ষকে    পুনরায় বিবেচনা করার আহ্বান জানান এই পাসপোর্টধারী যাত্রীরা।

এদিকে বন্দরের টার্মিনাল ফী  যাত্রী প্রতি ৪২ টাকা ৭৫ পয়সা এবং বাংলাদেশ সরকারের ভ্রমণ কর ৫০০ টাকা নির্ধারণ হলেও সোনালী      ব্যাংক  কর্তৃপক্ষ খুচরা পয়সা নেই অযুহাত দেখিয়ে ৪২ টাকা ৭৫ পয়সার স্থলে ৪৫ টাকা থেকে ৫০ টাকা এবং ৫০০ টাকার স্থলে ৫১০ টাকা আদায় করছে বলেও অভিযোগ রয়েছে। এতে প্রতি মাসে নির্দিষ্ট ট্যাক্স ছাড়াও বাড়তি ঘুষ আদায় হচ্ছে প্রায় ১৮ লাখ টাকা।

ঘুষের অর্থ সোনালী ব্যাংক ও বন্দরের কয়েকজন কর্মকর্তা ভাগ বাটোয়ারা করে নেন প্রতিদিন।
বেনাপোল বন্দর পরিচালক (ট্রাফিক) প্রদোষ কান্তি দাস জানান,বাংলাদেশ স্থলবন্দর চেয়ারম্যান তপন কুমার চক্রবর্তীর সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে এই টার্মিনাল ফী  চালু করা হয়েছে।এখন থেকে সব ধরনের যাত্রীদের ভারত ভ্রমণের ক্ষেত্রে  ৪২ টাকা ৭৫ পয়সা হারে বন্দরের এই ফী পরিশোধ করতে হবে।#