শনিবার, ০৩ জুন ২০২৩, ২০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

যুক্তরাষ্ট্রকে বাদ দিয়ে ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষায় শক্তিশালী হলো তুরস্ক

প্রফেসর জিন্নাত আলী ।। 

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিরোধিতা সত্ত্বেও রাশিয়ার কাছ থেকে ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা কিনেছে তুরস্ক। আর সেই ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এস-৪০০ এর প্রথম চালান শুক্রবার পৌঁছে গেছে আঙ্কারার মুরিটিড বিমান ঘাঁটিতে।

রাশিয়া জানিয়েছে, এস-৪০০ এর যন্ত্রাংশ বহনকারী আরেকটি বিমান শিগগিরই উড়াল দেবে। এরপর সমুদ্রপথে ১২০টি গাইডেড মিসাইলের তৃতীয় একটি বহর তুরস্কে পাঠানো হবে। এসব কার্যক্রম সব ধরনের বাধ্যবাধকতাই মেনে করা হচ্ছে।

বিবিসির খবরে বলা হয়, রাশিয়ার কাছ থেকে প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা কেনার বিরোধিতা করেছিল যুক্তরাষ্ট্র। পেন্টাগন বলছে, তুরস্কের এস-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এবং এফ-৩৫ স্টেলথ যুদ্ধবিমান এক সঙ্গে থাকতে পারে না।

এর আগে হুশিয়ারি দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র বলেছিল, প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা কিনলে এফ-৩৫ স্টেলথ যুদ্ধবিমানের প্রকল্প থেকে তুরস্ককে বাদ দেওয়া হবে। কারণ রাশিয়ার প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার মাধ্যমে এফ-৩৫ থেকে গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ ও বিশ্লেষণ করা হতে পারে।

এফ-৩৫ জেট ইতিহাসের সবচেয়ে দামি যুদ্ধবিমান। এই বিমানের প্রাণঘাতী হামলা ছাড়াও বৈচিত্র্যময় দক্ষতা রয়েছে। স্টেলথ সক্ষমতা, শব্দের চেয়েও বেশি গতিসম্পন্ন, প্রচণ্ড ক্ষিপ্রতা ও সেনসর ফিউশন প্রযুক্তিসম্পন্ন এটি।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রুশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা কেনায় প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে রিসেপ তাইয়েপ এরদোগানের সম্পর্ক আরও ঘনিষ্ঠতার দিকে গেছে। অপরদিকে এটা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তুরস্কের সম্পর্কের জন্য বিপত্তি হয়ে দাঁড়িয়েছে।

বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, ২৯ সদস্যের সামরিক জোট ন্যাটোতে তুরস্কের দ্বিতীয় বৃহত্তম সেনাবাহিনী রয়েছে। এছাড়া তুরস্ক হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম মিত্র। কারণ তুরস্কের মাধ্যমে সিরিয়া, ইরাক ও ইরানের সীমান্তের সুবিধা নিয়ে থাকে পেন্টাগন। এত কিছুর পরেও প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও তুরস্কের সম্পর্ক প্রশ্নের মুখে পড়েছে।

এস-৪০০ যেভাবে কাজ করে : ১. এস-৪০০-এর রাডারগুলো অনেক দূর পর্যন্ত সফলভাবে ট্র্যাক করতে পারে। শত্রু পক্ষের তথ্য নিয়ে তা নিয়ন্ত্রণকারী গাড়িতে পাঠায়। ২. এরপর লক্ষ্য বস্তুকে চিহ্নিত করে নিয়ন্ত্রণকারী গাড়িকে মিসাইল নিক্ষেপের বার্তা দেয়। ৩. এ পর্যায়ে মিসাইল নিক্ষেপের গাড়িকে সঠিক অবস্থানে নেওয়া হয়। ৪. সবশেষ রাডারের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে লক্ষ্য বস্তুর দিকে মিসাইল ছোড়া হয়।

আপনার মন্তব্য লিখুন

লেখকের সম্পর্কে

Shahriar Hossain

যুক্তরাষ্ট্রকে বাদ দিয়ে ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষায় শক্তিশালী হলো তুরস্ক

প্রকাশের সময় : ০৯:২০:৫৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১২ জুলাই ২০১৯

প্রফেসর জিন্নাত আলী ।। 

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিরোধিতা সত্ত্বেও রাশিয়ার কাছ থেকে ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা কিনেছে তুরস্ক। আর সেই ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এস-৪০০ এর প্রথম চালান শুক্রবার পৌঁছে গেছে আঙ্কারার মুরিটিড বিমান ঘাঁটিতে।

রাশিয়া জানিয়েছে, এস-৪০০ এর যন্ত্রাংশ বহনকারী আরেকটি বিমান শিগগিরই উড়াল দেবে। এরপর সমুদ্রপথে ১২০টি গাইডেড মিসাইলের তৃতীয় একটি বহর তুরস্কে পাঠানো হবে। এসব কার্যক্রম সব ধরনের বাধ্যবাধকতাই মেনে করা হচ্ছে।

বিবিসির খবরে বলা হয়, রাশিয়ার কাছ থেকে প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা কেনার বিরোধিতা করেছিল যুক্তরাষ্ট্র। পেন্টাগন বলছে, তুরস্কের এস-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এবং এফ-৩৫ স্টেলথ যুদ্ধবিমান এক সঙ্গে থাকতে পারে না।

এর আগে হুশিয়ারি দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র বলেছিল, প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা কিনলে এফ-৩৫ স্টেলথ যুদ্ধবিমানের প্রকল্প থেকে তুরস্ককে বাদ দেওয়া হবে। কারণ রাশিয়ার প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার মাধ্যমে এফ-৩৫ থেকে গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ ও বিশ্লেষণ করা হতে পারে।

এফ-৩৫ জেট ইতিহাসের সবচেয়ে দামি যুদ্ধবিমান। এই বিমানের প্রাণঘাতী হামলা ছাড়াও বৈচিত্র্যময় দক্ষতা রয়েছে। স্টেলথ সক্ষমতা, শব্দের চেয়েও বেশি গতিসম্পন্ন, প্রচণ্ড ক্ষিপ্রতা ও সেনসর ফিউশন প্রযুক্তিসম্পন্ন এটি।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রুশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা কেনায় প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে রিসেপ তাইয়েপ এরদোগানের সম্পর্ক আরও ঘনিষ্ঠতার দিকে গেছে। অপরদিকে এটা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তুরস্কের সম্পর্কের জন্য বিপত্তি হয়ে দাঁড়িয়েছে।

বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, ২৯ সদস্যের সামরিক জোট ন্যাটোতে তুরস্কের দ্বিতীয় বৃহত্তম সেনাবাহিনী রয়েছে। এছাড়া তুরস্ক হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম মিত্র। কারণ তুরস্কের মাধ্যমে সিরিয়া, ইরাক ও ইরানের সীমান্তের সুবিধা নিয়ে থাকে পেন্টাগন। এত কিছুর পরেও প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও তুরস্কের সম্পর্ক প্রশ্নের মুখে পড়েছে।

এস-৪০০ যেভাবে কাজ করে : ১. এস-৪০০-এর রাডারগুলো অনেক দূর পর্যন্ত সফলভাবে ট্র্যাক করতে পারে। শত্রু পক্ষের তথ্য নিয়ে তা নিয়ন্ত্রণকারী গাড়িতে পাঠায়। ২. এরপর লক্ষ্য বস্তুকে চিহ্নিত করে নিয়ন্ত্রণকারী গাড়িকে মিসাইল নিক্ষেপের বার্তা দেয়। ৩. এ পর্যায়ে মিসাইল নিক্ষেপের গাড়িকে সঠিক অবস্থানে নেওয়া হয়। ৪. সবশেষ রাডারের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে লক্ষ্য বস্তুর দিকে মিসাইল ছোড়া হয়।