মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

আপনিও দীর্ঘ আয়ু লাভ করতে পারেন! জাপানি চিকিৎসকের ৬টি গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ

রোকনুজ্জামান রিপন ।। 

ডা. শিগেয়াকি হিনোহারা। ২০১৭ সালের ২৫ জুলাই ১০৫ বছর বয়সে মারা যান জাপানি এই চিকিৎসক। দীর্ঘজীবন ধারণে তাঁকে একজন বিশেষজ্ঞ মানা হয়। তাঁর পরামর্শেই গড় আয়ুর দিক থেকে জাপান বিশ্বে শীর্ষস্থান অধিকার করেছে। বেশি দিন বেঁচে থাকার জন্য তাঁর কিছু পরামর্শ বিশ্বব্যাপী সমাদৃত। বিশেষ করে হিনোহারার ছয়টি পরামর্শ— প্রথম পরামর্শ: যত দেরিতে সম্ভব কর্মজীবন থেকে অবসর নিন। জাপানি এই চিকিৎসক নিজে মৃত্যুর মাত্র কয়েক সপ্তাহ আগেও কর্মজীবনে সক্রিয় ছিলেন।

তাঁর এই পরামর্শ খুবই কার্যকর। সাধারণত চাকরিজীবীদের ক্ষেত্রে দেখা যায়, অবসর নেওয়ার পর যেন তাঁদের বার্ধক্য হু হু করে বাড়ে। দেখা দিতে থাকে নানা অসুখ-বিসুখ। কাজ মানুষের বার্ধক্য আটকে রাখে। দ্বিতীয় পরামর্শ: ওজনের দিকে খেয়াল রাখো। দিনে একবার খাও। ডিনারে মাছ ও সবজির ওপর বেশি জোর দিয়েছেন। মাংস অবশ্যই খেতে হবে। তবে সপ্তাহে দুবারের বেশি নয়। জলপাইয়ের তেল (অলিভ অয়েল) খাওয়ার ওপর জোর দিয়েছেন তিনি। শরীরের ত্বক ও শিরা-ধমনি ভালো রাখার জন্য জলপাই তেল ভালো কাজ করে।

তৃতীয় পরামর্শ:আনন্দে সময় কাটাও। অতিরিক্ত নিয়মকানুনের চাপে শরীর ক্লান্ত হয়ে পড়ে। শৈশবে খাবারদাবারের অনিয়ম সত্ত্বেও শরীর অসুস্থ হয় না। কেন? কারণ, মানসিক চাপ থাকে না। মূলত ঘুমিয়ে বা কিছু না করেই শরীর ক্লান্ত না করার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। চতুর্থ পরামর্শ: যা জানো, তা অন্যকে জানাও। তিনি বিশ্বাস করতেন, আমরা পৃথিবীতে এসেছিই এই সভ্যতায় কিছু না কিছু অবদান রাখার জন্য, মানুষকে সাহায্য করার জন্য। আজ, আগামীকাল, এমনকি পাঁচ বছর পরের পরিকল্পনা করতেন তিনি।

পঞ্চম পরামর্শ: জাগতিক সম্পদ নিয়ে চিন্তা না করা। ভালো থাকার পেছনে অর্থবহ কাজ করাটাই জরুরি। বস্তুগত চিন্তার তুলনায় আধ্যাত্মিক চিন্তায় শরীর ও মন ভালো থাকে বলে বিশ্বাস করতেন। অর্থবিত্ত মানুষকে আরও বেশি মানসিক চাপের মধ্যে ফেলে। অল্পতেই তুষ্ট হওয়া তাই জরুরি। তিনি সব সময় এটা মনে রাখতে বলেছেন, শেষ ঠিকানায় এসব কিছুই সঙ্গে যাবে না।

ষষ্ঠ পরামর্শ: সিঁড়ি ব্যবহার করা। হিনোহারা নিজে একবারে সিঁড়ির দুটি ধাপ পার করতেন, যাতে তাঁর পেশি ঠিক থাকে। শারীরিক ব্যায়ামের জন্য দৈনন্দিন কাজকর্মে যান্ত্রিকতা কমানোর ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন। কায়িক শ্রম পছন্দ করতেন। ডাক্তারের পরামর্শকে অন্ধভাবে বিশ্বাস করতে মানা করতেন তিনি। চিকিৎসকেরা জীবন দিতে পারেন না। তাই অযথা সার্জারি করার বিপক্ষে ছিলেন। সূত্র: বিবিসি।

আপনার মন্তব্য লিখুন

লেখকের সম্পর্কে

Shahriar Hossain

আপনিও দীর্ঘ আয়ু লাভ করতে পারেন! জাপানি চিকিৎসকের ৬টি গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ

প্রকাশের সময় : ০২:২৭:৪১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৮ জুলাই ২০১৯
রোকনুজ্জামান রিপন ।। 

ডা. শিগেয়াকি হিনোহারা। ২০১৭ সালের ২৫ জুলাই ১০৫ বছর বয়সে মারা যান জাপানি এই চিকিৎসক। দীর্ঘজীবন ধারণে তাঁকে একজন বিশেষজ্ঞ মানা হয়। তাঁর পরামর্শেই গড় আয়ুর দিক থেকে জাপান বিশ্বে শীর্ষস্থান অধিকার করেছে। বেশি দিন বেঁচে থাকার জন্য তাঁর কিছু পরামর্শ বিশ্বব্যাপী সমাদৃত। বিশেষ করে হিনোহারার ছয়টি পরামর্শ— প্রথম পরামর্শ: যত দেরিতে সম্ভব কর্মজীবন থেকে অবসর নিন। জাপানি এই চিকিৎসক নিজে মৃত্যুর মাত্র কয়েক সপ্তাহ আগেও কর্মজীবনে সক্রিয় ছিলেন।

তাঁর এই পরামর্শ খুবই কার্যকর। সাধারণত চাকরিজীবীদের ক্ষেত্রে দেখা যায়, অবসর নেওয়ার পর যেন তাঁদের বার্ধক্য হু হু করে বাড়ে। দেখা দিতে থাকে নানা অসুখ-বিসুখ। কাজ মানুষের বার্ধক্য আটকে রাখে। দ্বিতীয় পরামর্শ: ওজনের দিকে খেয়াল রাখো। দিনে একবার খাও। ডিনারে মাছ ও সবজির ওপর বেশি জোর দিয়েছেন। মাংস অবশ্যই খেতে হবে। তবে সপ্তাহে দুবারের বেশি নয়। জলপাইয়ের তেল (অলিভ অয়েল) খাওয়ার ওপর জোর দিয়েছেন তিনি। শরীরের ত্বক ও শিরা-ধমনি ভালো রাখার জন্য জলপাই তেল ভালো কাজ করে।

তৃতীয় পরামর্শ:আনন্দে সময় কাটাও। অতিরিক্ত নিয়মকানুনের চাপে শরীর ক্লান্ত হয়ে পড়ে। শৈশবে খাবারদাবারের অনিয়ম সত্ত্বেও শরীর অসুস্থ হয় না। কেন? কারণ, মানসিক চাপ থাকে না। মূলত ঘুমিয়ে বা কিছু না করেই শরীর ক্লান্ত না করার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। চতুর্থ পরামর্শ: যা জানো, তা অন্যকে জানাও। তিনি বিশ্বাস করতেন, আমরা পৃথিবীতে এসেছিই এই সভ্যতায় কিছু না কিছু অবদান রাখার জন্য, মানুষকে সাহায্য করার জন্য। আজ, আগামীকাল, এমনকি পাঁচ বছর পরের পরিকল্পনা করতেন তিনি।

পঞ্চম পরামর্শ: জাগতিক সম্পদ নিয়ে চিন্তা না করা। ভালো থাকার পেছনে অর্থবহ কাজ করাটাই জরুরি। বস্তুগত চিন্তার তুলনায় আধ্যাত্মিক চিন্তায় শরীর ও মন ভালো থাকে বলে বিশ্বাস করতেন। অর্থবিত্ত মানুষকে আরও বেশি মানসিক চাপের মধ্যে ফেলে। অল্পতেই তুষ্ট হওয়া তাই জরুরি। তিনি সব সময় এটা মনে রাখতে বলেছেন, শেষ ঠিকানায় এসব কিছুই সঙ্গে যাবে না।

ষষ্ঠ পরামর্শ: সিঁড়ি ব্যবহার করা। হিনোহারা নিজে একবারে সিঁড়ির দুটি ধাপ পার করতেন, যাতে তাঁর পেশি ঠিক থাকে। শারীরিক ব্যায়ামের জন্য দৈনন্দিন কাজকর্মে যান্ত্রিকতা কমানোর ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন। কায়িক শ্রম পছন্দ করতেন। ডাক্তারের পরামর্শকে অন্ধভাবে বিশ্বাস করতে মানা করতেন তিনি। চিকিৎসকেরা জীবন দিতে পারেন না। তাই অযথা সার্জারি করার বিপক্ষে ছিলেন। সূত্র: বিবিসি।