বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারী ২০২৫, ৩ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ভরা বর্ষামৌসুমেও পুড়ছে যশোরাঞ্চল, চাষাবাদ ব্যাহত

জহিরুল ইসলাম রিপন ।। 

বর্ষা পেরিয়ে শ্রাবণ  এলোও ভারী বৃষ্টিপাতের দেখা নেই যশোরাঞ্চলে। নেই বর্ষা মৌসুমে আমন আবাদের কাঙ্খিত বৃষ্টি। আবহাওয়া স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে ভাদ্রের তীব্র খরতাপ আর দাবদাহকে। বরং তাপমাত্রার পারদ এখন উর্ধ্বমুখী। বৃষ্টি না হওয়ায় চরম বিপাকে পড়েছেন আমন ও পাট চাষিরা। পানির অভাবে বিস্তীর্ণ মাঠ এখন খা খা করছে।বর্ষার আষাঢ় মাস জুড়েই মানুষ বৃষ্টির অপেক্ষায় প্রহর গুনেছে। কিন্তু প্রত্যাশার সেই বৃষ্টি দেখা মেলেনি এখনো।
কৃষক জানান, ইতোমধ্যে রোপা আমনের মৌসুম শেষ হয়ে গেছে। অথচ এক কাঠা জমিও রোপন করতে পারেনি তারা। ইঞ্জিনচালিত ও বিদ্যুতচালিত সেচ পাম্পের মাধ্যমে পানি দিয়ে বীজতলা তৈরি করে ধানের চারা তৈরি করলেও পানির অভাবে রোপন করতে পারছেন না তারা। ফলে কৃষকের মাঝে বিরাজ করছে চরম অস্থিরতা ও হতাশা।

জেলার সদর উপজেলার বিল হরিনা এলাকার চাষি মোক্তার আলী বলেন, রোপা আমনের পাশাপাশি পাট নিয়েও তারা বড় বিপদে আছেন। ইতোমধ্যে ক্ষেতের পাট কাটার উপযুক্ত সময় চলে এসেছে। অথচ কোথাও পানি নেই। ডোবা-নালাতো দূরের কথা খাল-বিলে পর্যন্ত পানি নেই। এ অবস্থায় পাট জাগ কীভাবে দেবে সেই চিন্তা তাদের।
একই এলাকার কৃষক শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘গত বোরো মৌসুমে ধান আবাদে চরম লোকসান করেছি। ধানের আবাদ ভালো হওয়া সত্ত্বেও কাঙ্খিত দাম না পেয়ে আমরা পুঁজি রক্ষা করতে পারিনি। পানির দরে উৎপাদিত ধান বিক্রি করে এখন আমরা নিশ্ব।তিনি আরও বলেন, মনে করেছিলাম আমন আবাদ করে বোরোর ক্ষতি পুশিয়ে নিতে পারবো। কিন্তু পানির অভাবে তা সম্ভব হচ্ছে না।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপপরিচালক সুষান্ত কুমার তরফদার বার্তা ২৪ কে জানান, বলেন, জলবায়ূ পরিবর্তনের কারণে যশোরসহ দক্ষিণাঞ্চলে বৃষ্টিপাত কম হচ্ছে। দেশের বিভিন্ন এলাকায় যখন অতিবৃষ্টির কারণে বন্যার সৃষ্টি হচ্ছে তখন যশোরের মাঠের পর মাঠ জমি খা খা করছে।

যশোর জেলায় চলতি মৌসুমে ১ লাখ ৬০ হাজার হেক্টর জমিতে আমন আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। ইতোমধ্যে কৃষক সেচের পানি দিয়ে বীজতলা তৈরি করেছে। অথচ ওইসব বীজতলার ধানের চারা বড় হয়ে গেলেও পানির অভাবে রোপন করতে পারছেন না কৃষক। তিনি বলেন, আগামী ১০ দিনের মধ্যে ভারী বৃষ্টিপাত না হলে আমন আবাদ হুমকির মুখে পড়বে। যা এ অঞ্চলের কৃষির ওপর বড় প্রভাব পড়তে পারে। আমন আবাদের পাশাপাশি পাট আবাদ নিয়েও কৃষক অনেক চিন্তায় রয়েছে। পাট কাটার উপযুক্ত সময়েও পানির অভাবে জাগ দিতে পারবে না বলে কৃষক পাট কাটছেন না। ফলে কৃষক এখন উভয় সঙ্কটে পড়েছে।

আপনার মন্তব্য লিখুন

লেখকের সম্পর্কে

Shahriar Hossain

ভরা বর্ষামৌসুমেও পুড়ছে যশোরাঞ্চল, চাষাবাদ ব্যাহত

প্রকাশের সময় : ১০:২১:১৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ২২ জুলাই ২০১৯
জহিরুল ইসলাম রিপন ।। 

বর্ষা পেরিয়ে শ্রাবণ  এলোও ভারী বৃষ্টিপাতের দেখা নেই যশোরাঞ্চলে। নেই বর্ষা মৌসুমে আমন আবাদের কাঙ্খিত বৃষ্টি। আবহাওয়া স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে ভাদ্রের তীব্র খরতাপ আর দাবদাহকে। বরং তাপমাত্রার পারদ এখন উর্ধ্বমুখী। বৃষ্টি না হওয়ায় চরম বিপাকে পড়েছেন আমন ও পাট চাষিরা। পানির অভাবে বিস্তীর্ণ মাঠ এখন খা খা করছে।বর্ষার আষাঢ় মাস জুড়েই মানুষ বৃষ্টির অপেক্ষায় প্রহর গুনেছে। কিন্তু প্রত্যাশার সেই বৃষ্টি দেখা মেলেনি এখনো।
কৃষক জানান, ইতোমধ্যে রোপা আমনের মৌসুম শেষ হয়ে গেছে। অথচ এক কাঠা জমিও রোপন করতে পারেনি তারা। ইঞ্জিনচালিত ও বিদ্যুতচালিত সেচ পাম্পের মাধ্যমে পানি দিয়ে বীজতলা তৈরি করে ধানের চারা তৈরি করলেও পানির অভাবে রোপন করতে পারছেন না তারা। ফলে কৃষকের মাঝে বিরাজ করছে চরম অস্থিরতা ও হতাশা।

জেলার সদর উপজেলার বিল হরিনা এলাকার চাষি মোক্তার আলী বলেন, রোপা আমনের পাশাপাশি পাট নিয়েও তারা বড় বিপদে আছেন। ইতোমধ্যে ক্ষেতের পাট কাটার উপযুক্ত সময় চলে এসেছে। অথচ কোথাও পানি নেই। ডোবা-নালাতো দূরের কথা খাল-বিলে পর্যন্ত পানি নেই। এ অবস্থায় পাট জাগ কীভাবে দেবে সেই চিন্তা তাদের।
একই এলাকার কৃষক শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘গত বোরো মৌসুমে ধান আবাদে চরম লোকসান করেছি। ধানের আবাদ ভালো হওয়া সত্ত্বেও কাঙ্খিত দাম না পেয়ে আমরা পুঁজি রক্ষা করতে পারিনি। পানির দরে উৎপাদিত ধান বিক্রি করে এখন আমরা নিশ্ব।তিনি আরও বলেন, মনে করেছিলাম আমন আবাদ করে বোরোর ক্ষতি পুশিয়ে নিতে পারবো। কিন্তু পানির অভাবে তা সম্ভব হচ্ছে না।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপপরিচালক সুষান্ত কুমার তরফদার বার্তা ২৪ কে জানান, বলেন, জলবায়ূ পরিবর্তনের কারণে যশোরসহ দক্ষিণাঞ্চলে বৃষ্টিপাত কম হচ্ছে। দেশের বিভিন্ন এলাকায় যখন অতিবৃষ্টির কারণে বন্যার সৃষ্টি হচ্ছে তখন যশোরের মাঠের পর মাঠ জমি খা খা করছে।

যশোর জেলায় চলতি মৌসুমে ১ লাখ ৬০ হাজার হেক্টর জমিতে আমন আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। ইতোমধ্যে কৃষক সেচের পানি দিয়ে বীজতলা তৈরি করেছে। অথচ ওইসব বীজতলার ধানের চারা বড় হয়ে গেলেও পানির অভাবে রোপন করতে পারছেন না কৃষক। তিনি বলেন, আগামী ১০ দিনের মধ্যে ভারী বৃষ্টিপাত না হলে আমন আবাদ হুমকির মুখে পড়বে। যা এ অঞ্চলের কৃষির ওপর বড় প্রভাব পড়তে পারে। আমন আবাদের পাশাপাশি পাট আবাদ নিয়েও কৃষক অনেক চিন্তায় রয়েছে। পাট কাটার উপযুক্ত সময়েও পানির অভাবে জাগ দিতে পারবে না বলে কৃষক পাট কাটছেন না। ফলে কৃষক এখন উভয় সঙ্কটে পড়েছে।