![](https://bartakontho.com/wp-content/plugins/print-bangla-news/assest/img/print-news.png)
প্রফেসর জিন্নাত আলী ।।
কিছুদিন আগেও পরিবেশবাদী গবেষকরা বলেছিলেন পৃথিবীকে বাঁচাতে আমাদের হাতে ১২ বছর সময় আছে। এই সময়ের মধ্যে জলবায়ু পরিবর্তন রোধে কার্যকর পদক্ষেপ না নিলে প্রাকৃতিক বিক্ষুব্ধতায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হতে পারে। কিন্তু সম্প্রতি গবেষকরা বলছেন, আমাদের হাতে সময় আছে মাত্র আর ১৮ মাস।
গত বছর ইন্টারগভর্নমেন্টাল প্যানেল অব ক্লাইমেট চেঞ্জের (আইপিসিসি) রিপোর্টে বলা হয়, এই শতকে বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির হার দেড় ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নামিয়ে আনতে হবে। সেই লক্ষ্যে ২০৩০ সালের মধ্যে কার্বন নির্গমনের হার ৪৫ শতাংশ কমানোর পরিকল্পনাও নেওয়া হয়। কিন্তু পর্যবেক্ষকরা এখন বলছেন, আগামী বছর শেষ হওয়ার আগেই পরিবর্তিত বাস্তবতা মোকাবিলায় বৈশ্বিক সমন্বিত উদ্যোগ দরকার।
পটসড্যাম ক্লাইমেট ইনস্টিটিউটের প্রধান নির্বাহী জোয়াশিম শেলেনহুবার বলেন, ‘জলবায়ুবিষয়ক অংশ নির্মম হলেও পরিষ্কার। আগামী কয়েক বছরের মধ্যে পৃথিবীর ক্ষতিপূরণ করা সম্ভব হবে না। ২০২০ সাল পর্যন্ত করা অবহেলার খেসারত দিতে হবে আমাদের।’ প্রিন্স চার্লস সম্প্রতি কমনওয়েলথ পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের এক অনুষ্ঠানে বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় আমাদের সক্ষমতা আগামী ১৮ মাসের মধ্যে প্রমাণ করতে হবে। এই সময়ের মধ্যে আমাদের বেঁচে থাকার জন্য প্রকৃতির যে সংস্কার করা দরকার তা করতে হবে।’ ২০১৫ সালের ডিসেম্বরে প্যারিস চুক্তি হওয়ার পরও জলবায়ু পরিবর্তনে পদক্ষেপ নেওয়া প্রশ্নে অনেক গড়িমসি লক্ষ্য করা যায়। ওই চুক্তির অধীন দেশগুলো প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল তাদের কার্বন নির্গমনের হার আগামী বছরের শেষ হওয়ার আগেই কমাবে। বর্তমান কর্মপরিকল্পনা এতটা শক্তিশালী নয় যে, কার্বন নির্গমনের মাত্রা দেড় ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নামানো সম্ভব হবে। এখন নির্গমন যে হারে এগোচ্ছে তাতে ২১০০ সাল আসার আগেই পৃথিবীর তাপমাত্রা তিন ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছাবে। দেশগুলো সাধারণত কোনো পরিকল্পনা পাঁচ অথবা দশ বছর মেয়াদে নেয়। ২০৩০ সালের মধ্যে ৪৫ শতাংশ কার্বন নির্গমন কমানোর পরিকল্পনা দীর্ঘমেয়াদে বাস্তবায়ন না করে ২০২০ সালের মধ্যেই করতে হবে। বিশ্বব্যাপী পরিবেশবাদী আন্দোলনকর্মীরা শুধু বৈঠক আর চুক্তির মধ্যে সীমাবদ্ধ না থাকার আহ্বান জানাচ্ছে। উন্নত দেশগুলোর রাজনীতিকদের একত্রিত হয়ে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ ছাড়া কোনো বিকল্প নেই বলেও তাদের অভিমত। এক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় প্রতিবন্ধক মনে করা হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে।