বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

ঈদের শপিংয়ে সাবধান, টেইলার্স ও শপিং মলের ট্রায়েলরুমে সিসি ক্যামেরা!

মো: সাজেদুর রহমান ।।

আসছে মুসলমানদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব ঈদ-উল ফিতর। ধর্মীয় পরিভাষায় একে পুরস্কারের দিবস হিসেবেও বর্ণনা করা হয়েছে।মুসলমানেরা এই দিনটি ধর্মীয় কর্তব্যপালনসহ খুব আনন্দের সঙ্গে পালন করে থাকেন। এই আনন্দ আরো বেগময় করতে মুসলমানরা এদিন নতুন পাঞ্জাবী, জুতা, স্যান্ডেল, শাড়ি, গয়না প্রভৃতি কিনে থাকেন। আবার যাদের সামর্থ্য বেশি তারা এই দিনকে সামনে রেখে নতুন গাড়ি-বাড়িও কেনেন।

তবে নতুন জামা কিনতে গিয়ে আপনি নতুন কোনো বিপদে জড়াচ্ছেন না তো? পাঠক বন্ধু ভাবছেন কেন এই কথা বলছি! নিশ্চয় কারণ আছে!  এই ঈদে নতুন পোশাক কিনতে এরইমধ্যে রাজধানীর বিভিন্ন শপিংমলগুলোতে ক্রেতাদের আনাগোনা বেড়েছে। নিজের পছন্দের পোশাক কিনতে ক্রেতারা ছুটছেন নামিদামি সব শপিংমলে।

এর মধ্যে অনেকেই নিজেদের পছন্দের জিনিসপত্র কিনে ফেলেছেন আবার অনেকে এখনো দেখছেন। তবে রেডিমেট পোশাক কিনতে যারা শপিংমলগুলোতে যান, তারা সাধারণত ট্রায়াল রুমে ট্রায়াল দিয়ে পোশাক কিনে থাকেন। মূলত এই ধরনের বিপদ তাদের বেলায় বেশি দেখা যেতে পারে। এবার নিশ্চয় বুঝেছেন, কেন বললাম এই কথা! কারণ, শখের পোশাক কিনতে গিয়ে এরই মধ্যে এমন বিপদের খবর পাওয়া গেছে।

তাই আমরাও সতর্ক করতে চাই পাঠকদের। আমরা আগে থেকে জানাতে চাই, যারা এখনো ঈদের শপিং করেননি, তারা আজই সতর্ক হোন। বিশেষ করে নারীদের ক্ষেত্রে রেডিমেট পোশাক কেনা ও ট্রায়াল রুমের গোপন ক্যামেরা থাকার খবর বেশি পাওয়া যায়, তাই এখনই সাবধান হোন! কারণ সামান্য অসাবধনতার কারণে ধ্বংস হতে পারে আপনার জীবন। তাই ট্রায়াল রুমে কাজ সারার আগে গোপন ক্যামেরার বিষয়ে সর্তক থাকতে হবে।

কিন্তু সে সতর্ক কীভাবে হবেন? গোপন ক্যামেরা তো গোপনে বসানো থাকে, তাহলে জানবেন কীভাবে? চলুন জেনে নেই, কীভাবে বুঝবেন ট্রায়াল রুমে গোপন ক্যামেরা কীভাবে লুকিয়ে রাখা হয়েছে।

১) অন্য লাইট ব্যবহার করুন : ধরুন, আপনার ব্যবহৃত ট্রায়াল রুমে কোনো ফ্লাশ লাইট বা সেলফোনের লাইট বা টর্চলাইটের আলো ফেলুন। ঠিক আয়নার মধ্যে আপনার খুব কাছ থেকে এই আলোটি ফেলুন। সম্ভব হলে ট্রায়াল রুমের নিজস্ব লাইট বন্ধ করে দিন। এমতাবস্থায় এটা টু ওয়ে মিরর হলে, অন্য পাশে কী আছে? তা স্পষ্ট দেখা যাবে।

২) নখ দিয়ে জেনে নিন : ট্রায়াল রুমের আয়নাটি টু ওয়ে মিরর কিনা পরীক্ষা করার সবচেয়ে দুর্বল পদ্ধতি হলো, নখ দিয়ে পরীক্ষা করা। এর ফলাফল নিখুঁত নাও হতে পারে। তবে এই পদ্ধতিও জেনে রাখা ভালো।

৩) সেলফোনের সাহায্য নিন : ট্রায়াল রুমে সিকিউরিটি ক্যামেরা বা গোপন ক্যামেরা রাখা হলে এক ধরনের ফ্রিকোয়েন্সির কারণে আপনার সেলফোনের নেটওয়ার্ক কমে যেতে পারে। যদি কোনো জায়গায় বা ট্রায়াল রুমে এমনটা দেখেন, আপনার মোবাইল ফোন ভালো সার্ভিস দিচ্ছে না এবং আপনার নজরে কোনো ক্যামেরাও পড়ছে না, তাহলে মনে করবেন সেখানে কাছাকাছি কোথাও গোপন ক্যামেরা বসানো আছে।

৪) গ্লাস পরীক্ষা করুন আপনি যখন কাপড় ট্রায়াল দিতে ঢুকবেন, তখন প্রথমেই সেখানকার আয়না কিংবা গ্লাস পরীক্ষা করে দেখুন। দেখবেন আয়নাটি কীভাবে বসানো আছে। যদি দেখেন, আয়নাটি দেয়ালে ঝোলানো অথবা দেয়ালে লাগানো? নাকি দেয়ালের সঙ্গে একেবারে খোদাই করা অবস্থায় আছে? টু ওয়ে মিরর বা একপাশে আয়না ও অন্য পাশে স্বচ্ছ এমন গ্লাসগুলো সাধারণত দেয়ালে একেবারে খোদাই করা অবস্থায় থাকে। তাই ঢোকার আগে অবশ্য গ্লাস পরীক্ষা করে নিবেন।

৫) আয়নাতে টোকা দিন ট্রায়াল রুমে গিয়ে প্রথমে আপনার আঙুলের গিঁট দিয়ে আয়নাতে টোকা দিন। আয়না যেহেতু দেয়ালে বসানো আছে, সুতরাং নরমাল আয়না হলে তা সাধারণ আওয়াজ করবে। কিন্তু টু ওয়ে মিরর হলে ফাঁপা শব্দ করবে।

৬) আয়নার ভেতরে তাকান আপনার আয়নার ওপর প্রান্তে কী আছে তা জানার জন্য আয়নার ভেতরে তাকান, যদি এটা টু ওয়ে মিরর হয় তাহলে আয়নার খুব কাছে চোখ রাখলে অপর সাইড দেখা যাবে। অথবা আপনার মুখ আয়নাতে চেপে ধরুন এবং হাত দিয়ে মুখের সাইডে এমনভাবে ব্লক করুন যাতে কোনো আলো সে আয়নায় না পড়ে। এটা টু ওয়ে মিরর হলে অবশ্য আয়নার অপর পাশে কী আছে, তা আপনি দেখতে পারবেন। তবে এসব নিয়মাবলীর মধ্যে স্মার্টফোনের মাধ্যমে আপনি সহজে বুঝতে পারবেন, ট্রায়াল রুম আপনার জন্য উপযুক্ত কিনা। কারণ, কোন একটি ইলেকট্রিক ডিভাইস আগে থেকে লাগানো থাকলে, আপনার ফোনের নেটওয়ার্ক একেবারে কমে যাবে।

প্রসঙ্গত, এই লেখায় টু ওয়ে মিররের কথা বলা হয়েছে। প্রশ্ন আসতে পারে এটা কী? এটা এমন এক ধরনের আয়না, যা আপনার জন্য অনেক বড় একটা হুমকি হতে পারে। মূলত এই আয়নাকে বলা হয় ‘টু-ওয়ে মিরর’। এর সাহায্যে আয়নার পেছনে থেকেই যে কেউ দেখে নিতে পারে আপনার গোপন মুহূর্ত। এটি দেখতে পুরোপুরি সাধারণ আয়নার মতোই দেখায়, তবে এর পেছনে কেউ থাকলে তাকে দেখা যাবে না। অথচ সে আপনাকে স্পষ্ট দেখতে পাবে। আর সেখান থেকেই তৈরি হবে গোপন মুহূর্তের ছবি ও ভিডিও।

আপনার মন্তব্য লিখুন

লেখকের সম্পর্কে

Shahriar Hossain

ঈদের শপিংয়ে সাবধান, টেইলার্স ও শপিং মলের ট্রায়েলরুমে সিসি ক্যামেরা!

প্রকাশের সময় : ০৭:২২:২৮ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৫ অগাস্ট ২০১৯

মো: সাজেদুর রহমান ।।

আসছে মুসলমানদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব ঈদ-উল ফিতর। ধর্মীয় পরিভাষায় একে পুরস্কারের দিবস হিসেবেও বর্ণনা করা হয়েছে।মুসলমানেরা এই দিনটি ধর্মীয় কর্তব্যপালনসহ খুব আনন্দের সঙ্গে পালন করে থাকেন। এই আনন্দ আরো বেগময় করতে মুসলমানরা এদিন নতুন পাঞ্জাবী, জুতা, স্যান্ডেল, শাড়ি, গয়না প্রভৃতি কিনে থাকেন। আবার যাদের সামর্থ্য বেশি তারা এই দিনকে সামনে রেখে নতুন গাড়ি-বাড়িও কেনেন।

তবে নতুন জামা কিনতে গিয়ে আপনি নতুন কোনো বিপদে জড়াচ্ছেন না তো? পাঠক বন্ধু ভাবছেন কেন এই কথা বলছি! নিশ্চয় কারণ আছে!  এই ঈদে নতুন পোশাক কিনতে এরইমধ্যে রাজধানীর বিভিন্ন শপিংমলগুলোতে ক্রেতাদের আনাগোনা বেড়েছে। নিজের পছন্দের পোশাক কিনতে ক্রেতারা ছুটছেন নামিদামি সব শপিংমলে।

এর মধ্যে অনেকেই নিজেদের পছন্দের জিনিসপত্র কিনে ফেলেছেন আবার অনেকে এখনো দেখছেন। তবে রেডিমেট পোশাক কিনতে যারা শপিংমলগুলোতে যান, তারা সাধারণত ট্রায়াল রুমে ট্রায়াল দিয়ে পোশাক কিনে থাকেন। মূলত এই ধরনের বিপদ তাদের বেলায় বেশি দেখা যেতে পারে। এবার নিশ্চয় বুঝেছেন, কেন বললাম এই কথা! কারণ, শখের পোশাক কিনতে গিয়ে এরই মধ্যে এমন বিপদের খবর পাওয়া গেছে।

তাই আমরাও সতর্ক করতে চাই পাঠকদের। আমরা আগে থেকে জানাতে চাই, যারা এখনো ঈদের শপিং করেননি, তারা আজই সতর্ক হোন। বিশেষ করে নারীদের ক্ষেত্রে রেডিমেট পোশাক কেনা ও ট্রায়াল রুমের গোপন ক্যামেরা থাকার খবর বেশি পাওয়া যায়, তাই এখনই সাবধান হোন! কারণ সামান্য অসাবধনতার কারণে ধ্বংস হতে পারে আপনার জীবন। তাই ট্রায়াল রুমে কাজ সারার আগে গোপন ক্যামেরার বিষয়ে সর্তক থাকতে হবে।

কিন্তু সে সতর্ক কীভাবে হবেন? গোপন ক্যামেরা তো গোপনে বসানো থাকে, তাহলে জানবেন কীভাবে? চলুন জেনে নেই, কীভাবে বুঝবেন ট্রায়াল রুমে গোপন ক্যামেরা কীভাবে লুকিয়ে রাখা হয়েছে।

১) অন্য লাইট ব্যবহার করুন : ধরুন, আপনার ব্যবহৃত ট্রায়াল রুমে কোনো ফ্লাশ লাইট বা সেলফোনের লাইট বা টর্চলাইটের আলো ফেলুন। ঠিক আয়নার মধ্যে আপনার খুব কাছ থেকে এই আলোটি ফেলুন। সম্ভব হলে ট্রায়াল রুমের নিজস্ব লাইট বন্ধ করে দিন। এমতাবস্থায় এটা টু ওয়ে মিরর হলে, অন্য পাশে কী আছে? তা স্পষ্ট দেখা যাবে।

২) নখ দিয়ে জেনে নিন : ট্রায়াল রুমের আয়নাটি টু ওয়ে মিরর কিনা পরীক্ষা করার সবচেয়ে দুর্বল পদ্ধতি হলো, নখ দিয়ে পরীক্ষা করা। এর ফলাফল নিখুঁত নাও হতে পারে। তবে এই পদ্ধতিও জেনে রাখা ভালো।

৩) সেলফোনের সাহায্য নিন : ট্রায়াল রুমে সিকিউরিটি ক্যামেরা বা গোপন ক্যামেরা রাখা হলে এক ধরনের ফ্রিকোয়েন্সির কারণে আপনার সেলফোনের নেটওয়ার্ক কমে যেতে পারে। যদি কোনো জায়গায় বা ট্রায়াল রুমে এমনটা দেখেন, আপনার মোবাইল ফোন ভালো সার্ভিস দিচ্ছে না এবং আপনার নজরে কোনো ক্যামেরাও পড়ছে না, তাহলে মনে করবেন সেখানে কাছাকাছি কোথাও গোপন ক্যামেরা বসানো আছে।

৪) গ্লাস পরীক্ষা করুন আপনি যখন কাপড় ট্রায়াল দিতে ঢুকবেন, তখন প্রথমেই সেখানকার আয়না কিংবা গ্লাস পরীক্ষা করে দেখুন। দেখবেন আয়নাটি কীভাবে বসানো আছে। যদি দেখেন, আয়নাটি দেয়ালে ঝোলানো অথবা দেয়ালে লাগানো? নাকি দেয়ালের সঙ্গে একেবারে খোদাই করা অবস্থায় আছে? টু ওয়ে মিরর বা একপাশে আয়না ও অন্য পাশে স্বচ্ছ এমন গ্লাসগুলো সাধারণত দেয়ালে একেবারে খোদাই করা অবস্থায় থাকে। তাই ঢোকার আগে অবশ্য গ্লাস পরীক্ষা করে নিবেন।

৫) আয়নাতে টোকা দিন ট্রায়াল রুমে গিয়ে প্রথমে আপনার আঙুলের গিঁট দিয়ে আয়নাতে টোকা দিন। আয়না যেহেতু দেয়ালে বসানো আছে, সুতরাং নরমাল আয়না হলে তা সাধারণ আওয়াজ করবে। কিন্তু টু ওয়ে মিরর হলে ফাঁপা শব্দ করবে।

৬) আয়নার ভেতরে তাকান আপনার আয়নার ওপর প্রান্তে কী আছে তা জানার জন্য আয়নার ভেতরে তাকান, যদি এটা টু ওয়ে মিরর হয় তাহলে আয়নার খুব কাছে চোখ রাখলে অপর সাইড দেখা যাবে। অথবা আপনার মুখ আয়নাতে চেপে ধরুন এবং হাত দিয়ে মুখের সাইডে এমনভাবে ব্লক করুন যাতে কোনো আলো সে আয়নায় না পড়ে। এটা টু ওয়ে মিরর হলে অবশ্য আয়নার অপর পাশে কী আছে, তা আপনি দেখতে পারবেন। তবে এসব নিয়মাবলীর মধ্যে স্মার্টফোনের মাধ্যমে আপনি সহজে বুঝতে পারবেন, ট্রায়াল রুম আপনার জন্য উপযুক্ত কিনা। কারণ, কোন একটি ইলেকট্রিক ডিভাইস আগে থেকে লাগানো থাকলে, আপনার ফোনের নেটওয়ার্ক একেবারে কমে যাবে।

প্রসঙ্গত, এই লেখায় টু ওয়ে মিররের কথা বলা হয়েছে। প্রশ্ন আসতে পারে এটা কী? এটা এমন এক ধরনের আয়না, যা আপনার জন্য অনেক বড় একটা হুমকি হতে পারে। মূলত এই আয়নাকে বলা হয় ‘টু-ওয়ে মিরর’। এর সাহায্যে আয়নার পেছনে থেকেই যে কেউ দেখে নিতে পারে আপনার গোপন মুহূর্ত। এটি দেখতে পুরোপুরি সাধারণ আয়নার মতোই দেখায়, তবে এর পেছনে কেউ থাকলে তাকে দেখা যাবে না। অথচ সে আপনাকে স্পষ্ট দেখতে পাবে। আর সেখান থেকেই তৈরি হবে গোপন মুহূর্তের ছবি ও ভিডিও।