শুক্রবার, ০৪ অক্টোবর ২০২৪, ১৯ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আদালতে আটকে যেতে পারে কাশ্মীর নিয়ে মোদীর সিদ্ধান্ত

নজরুল ইসলাম ।। 

সম্প্রতি কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা সংক্রান্ত সংবিধানের ৩৭০ ধারা বাতিল করেছে ভারত। ক্ষমতাসীন মোদী সরকারের এই সিদ্ধান্তের মধ্য দিয়ে কাশ্মীরকে রাজ্য থেকে পরিণত করেছে কেন্দ্র শাসিত অঞ্চলে।

এরপর উদ্ভূত পরিস্থিতি সামাল দিতে কাশ্মীরজুড়ে গণগ্রেফতার শুরু করেছে মোদী সরকার। সাবেক দুই মুখ্যমন্ত্রীসহ দুই দিনে সেখানে গ্রেফতার করা হয়েছে ৪ শতাধিক মানুষকে।

এদিকে, ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছেন, পরিস্থিতির উন্নতি হলে, আবারও রাজ্যের মর্যাদা ফিরে পেতে পারে কাশ্মীর। তবে, বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিলের সিদ্ধান্ত আদালতে বাধার মুখে পড়তে পারে।

অন্যদিকে, প্রয়োজনে যুদ্ধের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী।

কাশ্মীরের অলিগলিতেও সেনা টহল চলছে গণগ্রেফতার। এতে বিচ্ছিন্নভাবে ছোট ছোট দলে ভাগ হয়ে প্রতিবাদমুখর কাশ্মীরিরা।

নূন্যতম প্রতিবাদ করারও সাহসটুকু কেড়ে নেওয়া হয়েছে কাশ্মীরিদের। তারপরও সেনা টহল উপেক্ষা করে বিজেপি সরকারের কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে তারা বিক্ষোভ করছেন।

ভারতের গণমাধ্যম জানায়, সাবেক দুই মুখ্যমন্ত্রী ছাড়াও দুদিনে এ পর্যন্ত কারাগারে মানবাধিকারকর্মীসহ অন্তত ৪শ’ কাশ্মীরী। বিষয়টি নিয়ে উত্তেজনা ছিল খোদ লোকসভাতেও। বিরোধীদের তোপের মুখে এ বিষয়ে মুখ খোলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহও। সাবেক মুখ্যমন্ত্রী এবং লোকসভার বর্তমান এমপি ফারুক আবদুল্লাহর অভিযোগ তাকে গৃহবন্দি করে রাখা হয়েছে।

সংযুক্ত আরব আমিরাত বিজেপি সরকারকে সমর্থন জানালেও ভারতের সিদ্ধান্তের নিন্দা জানিয়েছে চীন। কাশ্মীরে ধরপাকড় ও অতিরিক্ত বলপ্রয়োগের নিন্দা জানিয়েছে জাতিসংঘ।

জাতিসংঘ মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার রুপার্ট কলভাইল বলেন, যেভাবে টেলিযোগাযোগ বন্ধ রেখে, নেতাদের আটক ও শান্তিপূর্ণ সমাবেশে বাধা দেয়া হচ্ছে, এতে আমাদের আশঙ্কা কাশ্মীরে চরম আকারে মানবাধিকার লঙ্ঘন চলছে।

এমন পরিস্থিতিতে, পাকিস্তান প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান সতর্ক করেছেন কাশ্মীরে জাতিগত নিধন চালাতে পারে ভারত।

ইমরান খান বলেন, কাশ্মীরের জনমিতি পাল্টে দিতে চায় মোদি সরকার। কাশ্মীরিদের ওপর আর কোনও নিপীড়ন মেনে নেবে না পাকিস্তান। এতে যদি ভারত আমাদের ওপরও হামলার চেষ্টা করে তবে কঠিন জবাব দেওয়া হবে। যুদ্ধ লেগে যাবে।

এদিকে, সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ বিলুপ্তির বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে রিট করেছেন এক আইনজীবী। আইন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আদালতে বাধার মুখে পড়তে পারে মোদীর সিদ্ধান্ত।

আপনার মন্তব্য লিখুন

লেখকের সম্পর্কে

Shahriar Hossain

জনপ্রিয়

ভূরুঙ্গামারীতে প্রা.বি.সহকারী শিক্ষকদের ১০ম গ্রেড বাস্তবায়নের দাবিতে মানববন্ধন

আদালতে আটকে যেতে পারে কাশ্মীর নিয়ে মোদীর সিদ্ধান্ত

প্রকাশের সময় : ০৭:৫৪:৪৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৮ অগাস্ট ২০১৯

নজরুল ইসলাম ।। 

সম্প্রতি কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা সংক্রান্ত সংবিধানের ৩৭০ ধারা বাতিল করেছে ভারত। ক্ষমতাসীন মোদী সরকারের এই সিদ্ধান্তের মধ্য দিয়ে কাশ্মীরকে রাজ্য থেকে পরিণত করেছে কেন্দ্র শাসিত অঞ্চলে।

এরপর উদ্ভূত পরিস্থিতি সামাল দিতে কাশ্মীরজুড়ে গণগ্রেফতার শুরু করেছে মোদী সরকার। সাবেক দুই মুখ্যমন্ত্রীসহ দুই দিনে সেখানে গ্রেফতার করা হয়েছে ৪ শতাধিক মানুষকে।

এদিকে, ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছেন, পরিস্থিতির উন্নতি হলে, আবারও রাজ্যের মর্যাদা ফিরে পেতে পারে কাশ্মীর। তবে, বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিলের সিদ্ধান্ত আদালতে বাধার মুখে পড়তে পারে।

অন্যদিকে, প্রয়োজনে যুদ্ধের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী।

কাশ্মীরের অলিগলিতেও সেনা টহল চলছে গণগ্রেফতার। এতে বিচ্ছিন্নভাবে ছোট ছোট দলে ভাগ হয়ে প্রতিবাদমুখর কাশ্মীরিরা।

নূন্যতম প্রতিবাদ করারও সাহসটুকু কেড়ে নেওয়া হয়েছে কাশ্মীরিদের। তারপরও সেনা টহল উপেক্ষা করে বিজেপি সরকারের কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে তারা বিক্ষোভ করছেন।

ভারতের গণমাধ্যম জানায়, সাবেক দুই মুখ্যমন্ত্রী ছাড়াও দুদিনে এ পর্যন্ত কারাগারে মানবাধিকারকর্মীসহ অন্তত ৪শ’ কাশ্মীরী। বিষয়টি নিয়ে উত্তেজনা ছিল খোদ লোকসভাতেও। বিরোধীদের তোপের মুখে এ বিষয়ে মুখ খোলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহও। সাবেক মুখ্যমন্ত্রী এবং লোকসভার বর্তমান এমপি ফারুক আবদুল্লাহর অভিযোগ তাকে গৃহবন্দি করে রাখা হয়েছে।

সংযুক্ত আরব আমিরাত বিজেপি সরকারকে সমর্থন জানালেও ভারতের সিদ্ধান্তের নিন্দা জানিয়েছে চীন। কাশ্মীরে ধরপাকড় ও অতিরিক্ত বলপ্রয়োগের নিন্দা জানিয়েছে জাতিসংঘ।

জাতিসংঘ মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার রুপার্ট কলভাইল বলেন, যেভাবে টেলিযোগাযোগ বন্ধ রেখে, নেতাদের আটক ও শান্তিপূর্ণ সমাবেশে বাধা দেয়া হচ্ছে, এতে আমাদের আশঙ্কা কাশ্মীরে চরম আকারে মানবাধিকার লঙ্ঘন চলছে।

এমন পরিস্থিতিতে, পাকিস্তান প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান সতর্ক করেছেন কাশ্মীরে জাতিগত নিধন চালাতে পারে ভারত।

ইমরান খান বলেন, কাশ্মীরের জনমিতি পাল্টে দিতে চায় মোদি সরকার। কাশ্মীরিদের ওপর আর কোনও নিপীড়ন মেনে নেবে না পাকিস্তান। এতে যদি ভারত আমাদের ওপরও হামলার চেষ্টা করে তবে কঠিন জবাব দেওয়া হবে। যুদ্ধ লেগে যাবে।

এদিকে, সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ বিলুপ্তির বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে রিট করেছেন এক আইনজীবী। আইন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আদালতে বাধার মুখে পড়তে পারে মোদীর সিদ্ধান্ত।