শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ঈদে জেনে বুঝে খান গরুর মাংস

অফসরাহ মহসিন ।। 

প্রাণিজ আমিষের মধ্যে মাংস ১টি খাদ্য উপাদান। আসছে কোরবানির ঈদে যে সব পশু কোরবানি দেওয়া হয়, তাদের মধ্যে গরু-খাসিই প্রধান। দেশে ওবেসিটি, উচ্চ রক্তচাপ এবং হৃদরোগের সংখ্যা এত বেড়ে গেছে ফলে অনেকেই আজকাল গরু-খাসির মাংস খাওয়া কমিয়ে দিয়েছেন। কারণ এ ধরনের মাংসগুলোকে বলা হয় চোরা চর্বির ভাণ্ডার। কিন্তু পুষ্টিগত তাৎপর্যে গরু-খাসির মাংসের পুষ্টিগুণও অনেক। আমিষ প্রধান গরু-খাসির মাংসে আমিষ থাকে ২২ভাগ।

তাই ক্যালরি মূল্য প্রতি ১০০ গ্রামে ১১৪ কিলোক্যালরি। সম্পূর্ণ চর্বির ১৫ভাগ এর মধ্যে ১৯ শতাংশই সম্পৃক্ত চর্বি। প্রতি পরিবেশনে সম্পৃক্ত চর্বি ৩.৭ গ্রাম, মনোসম্পৃক্ত চর্বি ৪ গ্রাম, ওমেগা- ৩ ফ্যাটি এসিড ৩৪.৮ মিলিগ্রাম, এবং ওমেগা ৬ ফ্যাটি এসিড ২৬৩ মিলিগ্রাম। এখানে কোলেস্টেরল থাকে ২৪%। আধা কাপ বা ১ পরিবেশনে ক্যালসিয়াম ১১ মিলিগ্রাম, আয়রন ২.৫ মিলিগ্রাম, পটাশিয়াম ১৬৪ মিলিগ্রাম, সোডিয়াম ৫১.৮ মিলিগ্রাম থাকে। প্রয়োজনীয় খনিজ উপাদান জিংক থাকে ৫.৭ মিলিগ্রাম। সামান্য পরিমাণে ভিটামিন বি’ও আছে। হিসাব করলে দেখা যায় মাংসের ৯০ভাগ মাংস এবং ১০ভাগ চর্বি।

রান্নার পদ্ধতি : মাংস সম্পূর্ণ সেদ্ধ করে রান্না করে খাওয়া উচিত। বিভিন্ন ধরনের আইটেম তৈরি করা যায়- ভুনা করে রান্না, বিভিন্ন রকমের কাবাব, গ্রিল, বেকড, বার বি কিউ ইত্যাদি। তবে গরুর মাংসের ক্ষতিকর দিক কমানোর জন্য রান্নায় পরিবর্তন প্রয়োজন। যেমন- চর্বি ছাড়া মাংস যদি বাঁধাকপি দিয়ে রান্না করা হয়, তাহলে চর্বি কমে যায়। রান্নার শেষভাগে মাশরুম দিয়ে রান্না করলে মাংসের ক্ষতিকর কোলেস্টেরলের মাত্রা কমে যায়। গরুর মাংস খাওয়ার সময় অবশ্যই লেবুযোগে খাওয়া প্রয়োজন। কারণ মাংসের আয়রন শোষণের জন্য লেবুর রস খুবই জরুরি।

তাছাড়া লেবুর রস দেহে অতিরিক্ত চর্বি জমতে দেয় না। অনেকেই আছেন নেহারি বা পায়া রান্না করেন। বাড়ন্ত বয়সের শিশু-কিশোরদের জন্য যতটা উপকারী, ঠিক ততটাই ক্ষতিকর প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য। কলিজা, মগজ এগুলোতে অনেক বেশি ক্ষতিকর কোলেস্টেরল থাকে।

স্বাভাবিক ওজন না হলে কিশোর-কিশোরীদের কলিজা-গুর্দা, মগজ একেবারে দেওয়া যাবে না। যদিও গরু-খাসির মাংসকে স্বাস্থ্যের সমস্যায় অনেকাংশে দায়ী করা হয়, কিন্তু গরুর মাংসে উপকারী উপাদানই বেশি। ক্ষতিকর সম্পৃক্ত চর্বি অংশটুকু। অতএব চর্বি ছাড়া গরুর মাংস অথবা ঝোল ছাড়া গরুর মাংস লেবুযোগে সবধরনের রোগেই গ্রহণ করা যায়।

গরুর মাংসে ইউরিক এসিড বেশি তাই আর্থ্রাইটিস রোগীরা খেলে ব্যথা বাড়ে। তবে আর্থ্রাইটিস রোগীরা সেক্ষেত্রে কম প্রোটিন ও ফ্যাট সমৃদ্ধ মহিষের মাংস খেতে পারেন।

 

আপনার মন্তব্য লিখুন

লেখকের সম্পর্কে

Shahriar Hossain

ঈদে জেনে বুঝে খান গরুর মাংস

প্রকাশের সময় : ০৭:৪৯:১৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৯ অগাস্ট ২০১৯

অফসরাহ মহসিন ।। 

প্রাণিজ আমিষের মধ্যে মাংস ১টি খাদ্য উপাদান। আসছে কোরবানির ঈদে যে সব পশু কোরবানি দেওয়া হয়, তাদের মধ্যে গরু-খাসিই প্রধান। দেশে ওবেসিটি, উচ্চ রক্তচাপ এবং হৃদরোগের সংখ্যা এত বেড়ে গেছে ফলে অনেকেই আজকাল গরু-খাসির মাংস খাওয়া কমিয়ে দিয়েছেন। কারণ এ ধরনের মাংসগুলোকে বলা হয় চোরা চর্বির ভাণ্ডার। কিন্তু পুষ্টিগত তাৎপর্যে গরু-খাসির মাংসের পুষ্টিগুণও অনেক। আমিষ প্রধান গরু-খাসির মাংসে আমিষ থাকে ২২ভাগ।

তাই ক্যালরি মূল্য প্রতি ১০০ গ্রামে ১১৪ কিলোক্যালরি। সম্পূর্ণ চর্বির ১৫ভাগ এর মধ্যে ১৯ শতাংশই সম্পৃক্ত চর্বি। প্রতি পরিবেশনে সম্পৃক্ত চর্বি ৩.৭ গ্রাম, মনোসম্পৃক্ত চর্বি ৪ গ্রাম, ওমেগা- ৩ ফ্যাটি এসিড ৩৪.৮ মিলিগ্রাম, এবং ওমেগা ৬ ফ্যাটি এসিড ২৬৩ মিলিগ্রাম। এখানে কোলেস্টেরল থাকে ২৪%। আধা কাপ বা ১ পরিবেশনে ক্যালসিয়াম ১১ মিলিগ্রাম, আয়রন ২.৫ মিলিগ্রাম, পটাশিয়াম ১৬৪ মিলিগ্রাম, সোডিয়াম ৫১.৮ মিলিগ্রাম থাকে। প্রয়োজনীয় খনিজ উপাদান জিংক থাকে ৫.৭ মিলিগ্রাম। সামান্য পরিমাণে ভিটামিন বি’ও আছে। হিসাব করলে দেখা যায় মাংসের ৯০ভাগ মাংস এবং ১০ভাগ চর্বি।

রান্নার পদ্ধতি : মাংস সম্পূর্ণ সেদ্ধ করে রান্না করে খাওয়া উচিত। বিভিন্ন ধরনের আইটেম তৈরি করা যায়- ভুনা করে রান্না, বিভিন্ন রকমের কাবাব, গ্রিল, বেকড, বার বি কিউ ইত্যাদি। তবে গরুর মাংসের ক্ষতিকর দিক কমানোর জন্য রান্নায় পরিবর্তন প্রয়োজন। যেমন- চর্বি ছাড়া মাংস যদি বাঁধাকপি দিয়ে রান্না করা হয়, তাহলে চর্বি কমে যায়। রান্নার শেষভাগে মাশরুম দিয়ে রান্না করলে মাংসের ক্ষতিকর কোলেস্টেরলের মাত্রা কমে যায়। গরুর মাংস খাওয়ার সময় অবশ্যই লেবুযোগে খাওয়া প্রয়োজন। কারণ মাংসের আয়রন শোষণের জন্য লেবুর রস খুবই জরুরি।

তাছাড়া লেবুর রস দেহে অতিরিক্ত চর্বি জমতে দেয় না। অনেকেই আছেন নেহারি বা পায়া রান্না করেন। বাড়ন্ত বয়সের শিশু-কিশোরদের জন্য যতটা উপকারী, ঠিক ততটাই ক্ষতিকর প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য। কলিজা, মগজ এগুলোতে অনেক বেশি ক্ষতিকর কোলেস্টেরল থাকে।

স্বাভাবিক ওজন না হলে কিশোর-কিশোরীদের কলিজা-গুর্দা, মগজ একেবারে দেওয়া যাবে না। যদিও গরু-খাসির মাংসকে স্বাস্থ্যের সমস্যায় অনেকাংশে দায়ী করা হয়, কিন্তু গরুর মাংসে উপকারী উপাদানই বেশি। ক্ষতিকর সম্পৃক্ত চর্বি অংশটুকু। অতএব চর্বি ছাড়া গরুর মাংস অথবা ঝোল ছাড়া গরুর মাংস লেবুযোগে সবধরনের রোগেই গ্রহণ করা যায়।

গরুর মাংসে ইউরিক এসিড বেশি তাই আর্থ্রাইটিস রোগীরা খেলে ব্যথা বাড়ে। তবে আর্থ্রাইটিস রোগীরা সেক্ষেত্রে কম প্রোটিন ও ফ্যাট সমৃদ্ধ মহিষের মাংস খেতে পারেন।