শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

জমজ শিশু রাবেয়া-রুকাইয়াকে আলাদা করা বিশাল সফলতা : প্রধানমন্ত্রী

রোকনুজ্জামান রিপন ।। 

দেশে চিকিৎসাবিজ্ঞানের আরো উন্নয়নে সরকার প্রয়োজনীয় সবকিছু করবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।  তিনি বলেন, ‘শিক্ষক ও সংশ্লিষ্ট অন্যান্যদের বিদেশে পাঠানোসহ শিক্ষা ও উচ্চশিক্ষার জন্য আমরা প্রয়োজনীয় সবকিছু করব।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের দেশে রাবেয়া ও রোকেয়া জমজের সফল অস্ত্রোপচারের মতো আরো জটিল কাজ যাতে করা যায় সেজন্য আমরা সবধরনের শিক্ষার ব্যবস্থা করব।’ প্রধানমন্ত্রী সম্প্রতি ঢাকার সিএমএইচ-এ জমজ শিশুর সফল অস্ত্রোপচারকারী বাংলাদেশী ও হাঙ্গেরীয় চিকিৎসক এবং অন্যান্য কর্মচারীদের সমন্বয়ে গঠিত চিকিৎসক দলের উদ্দেশে ভাষণে একথা বলেন।

শেখ হাসিনা বলেন, এ জমজ শিশুর অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে বাংলাদেশের চিকিৎসকরা বিশাল অভিজ্ঞা অর্জন করেছেন। এখন আমরা এ সাফল্যের ধারা অব্যাহত রাখার মাধ্যমে চিকিৎসা বিজ্ঞানের আরো উন্নয়নে মনোনিবেশ করব।

শুক্রবার সন্ধ্যায় গণভবনে এ অনুষ্ঠানে আর্মড ফোর্সেস মেডিকেল সার্ভিসের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মো. ফশিউর রহমান, ডিজিএমএস’র কনসালটেন্ট সার্জন জেনারেল মেজর জেনারেল মাহবুবুর রহমান, ড. হাবিবে মিল্লাত এমপি, হাঙ্গেরীয় চিকিৎসক দলের ডা. কেসাপোডি, ডা. কোসোকি এবং পাটাকি বক্তব্য রাখেন। এছাড়া, অন্যান্য চিকিৎসক এবং সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারাও বক্তব্য রাখেন।

২ আগস্ট ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) দীর্ঘ ৩৩ ঘণ্টার সফল অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে জমজ শিশুকে আলাদা করা হয়।  প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং হাঙ্গেরী সরকারের সংস্থা ডিফেন্সলেস পিপল ফাউন্ডেশনের (এডিপিএফ) সহযোগিতায় এ অস্ত্রোপচার সম্পন্ন হয়। এর আগে জমজ শিশুকে চিকিৎসার জন্য হাঙ্গেরী পাঠানো হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশে-বিদেশে তাদের চিকিৎসার সব খরচ বহন করেন। পাবনার চাটমোহর উপজেলায় তারা জন্মগ্রহণ করে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, যে চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানগুলো জমজ শিশুর অস্ত্রোপচারে জড়িত ছিল সেগুলোকে অভিজ্ঞতার আলোকে আরো উন্নত ও আধুনিকায়ন করতে হবে।

শেখ হাসিনা এ সফল অস্ত্রোপচারের জন্য হাঙ্গেরীয় চিকিৎসক দলের সদস্যসহ সব চিকিৎসক, নার্স ও অন্যান্যদের অভিনন্দন জানান। তিনি বলেন, বাংলাদেশী ও হাঙ্গেরীয় চিকিৎসরা একটি অসাধারণ কাজ করেছেন। জমজ শিশুদ্বয় পুরোপুরি সুস্থ হয়ে শিগগিরই মায়ের কোলে ফিরে যাবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।  শেখ হাসিনা বলেন, এ সফল অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে বাংলাদেশের সরকারি চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানগুলোর চিকিৎসকরা নতুন অভিজ্ঞতা অর্জন করেছেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, রাবেয়া-রোকেয়ার সফল অস্ত্রোপচার বাংলাদেশের চিকিৎসকদের চোখ-কান খুলে দিয়েছে। তিনি বলেন, এ জটিল অস্ত্রোপচারে প্রবেশের মাধ্যমে বিভিন্ন হাসপাতাল ও চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে একটি সুন্দর সম্পর্ক সৃষ্টি হয়েছে। এসব হাসপাতাল ও প্রতিষ্ঠানের চিকিৎসকদের সমন্বিত কাজের প্রশংসা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এর মাধ্যমে সমঝোতা ও অভিজ্ঞতার উন্নয়ন হয়েছে।

তিনি বলেন, সফল অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে আপনারা রাবেয়া-রোকেয়ার মাথা আলাদা করেছেন। এটি সবার জন্য বড় ধরনের সফলতা।  চিকিৎসা বিজ্ঞানের উন্নয়নে সরকারের পদক্ষেপের বিস্তারিত তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে দেশের প্রথম মেডিকেল ইউনিভার্সিটি প্রতিষ্ঠা করা হয়।

হাঙ্গেরীয় চিকিৎসক দলের সদস্যরা অস্ত্রোপচারকালে বাংলাদেশী চিকিৎসকদের চমৎকার সহযোগিতার উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেন। তারা বাংলাদেশ সরকারের উষ্ণ আতিথেয়তারও প্রশংসা করেন।  তারা আরো বলেন, এ সফল অস্ত্রোপচার বাংলাদেশ ও হাঙ্গেরীর মধ্যে এক নতুন ধরনের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক সৃষ্টি করেছে।
রাবেয়া-রোকেয়ার বাবা রফিকুল ইসলাম তার কন্যাদের চিকিৎসার দায়িত্ব গ্রহণ করায় প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তিনি এই অস্ত্রোপচারে জড়িত বাংলাদেশ ও হাঙ্গেরীর চিকিৎসকদের ধন্যবাদ জানান।

আপনার মন্তব্য লিখুন

লেখকের সম্পর্কে

Shahriar Hossain

জমজ শিশু রাবেয়া-রুকাইয়াকে আলাদা করা বিশাল সফলতা : প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশের সময় : ০৭:৩৩:৫৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৭ অগাস্ট ২০১৯

রোকনুজ্জামান রিপন ।। 

দেশে চিকিৎসাবিজ্ঞানের আরো উন্নয়নে সরকার প্রয়োজনীয় সবকিছু করবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।  তিনি বলেন, ‘শিক্ষক ও সংশ্লিষ্ট অন্যান্যদের বিদেশে পাঠানোসহ শিক্ষা ও উচ্চশিক্ষার জন্য আমরা প্রয়োজনীয় সবকিছু করব।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের দেশে রাবেয়া ও রোকেয়া জমজের সফল অস্ত্রোপচারের মতো আরো জটিল কাজ যাতে করা যায় সেজন্য আমরা সবধরনের শিক্ষার ব্যবস্থা করব।’ প্রধানমন্ত্রী সম্প্রতি ঢাকার সিএমএইচ-এ জমজ শিশুর সফল অস্ত্রোপচারকারী বাংলাদেশী ও হাঙ্গেরীয় চিকিৎসক এবং অন্যান্য কর্মচারীদের সমন্বয়ে গঠিত চিকিৎসক দলের উদ্দেশে ভাষণে একথা বলেন।

শেখ হাসিনা বলেন, এ জমজ শিশুর অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে বাংলাদেশের চিকিৎসকরা বিশাল অভিজ্ঞা অর্জন করেছেন। এখন আমরা এ সাফল্যের ধারা অব্যাহত রাখার মাধ্যমে চিকিৎসা বিজ্ঞানের আরো উন্নয়নে মনোনিবেশ করব।

শুক্রবার সন্ধ্যায় গণভবনে এ অনুষ্ঠানে আর্মড ফোর্সেস মেডিকেল সার্ভিসের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মো. ফশিউর রহমান, ডিজিএমএস’র কনসালটেন্ট সার্জন জেনারেল মেজর জেনারেল মাহবুবুর রহমান, ড. হাবিবে মিল্লাত এমপি, হাঙ্গেরীয় চিকিৎসক দলের ডা. কেসাপোডি, ডা. কোসোকি এবং পাটাকি বক্তব্য রাখেন। এছাড়া, অন্যান্য চিকিৎসক এবং সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারাও বক্তব্য রাখেন।

২ আগস্ট ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) দীর্ঘ ৩৩ ঘণ্টার সফল অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে জমজ শিশুকে আলাদা করা হয়।  প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং হাঙ্গেরী সরকারের সংস্থা ডিফেন্সলেস পিপল ফাউন্ডেশনের (এডিপিএফ) সহযোগিতায় এ অস্ত্রোপচার সম্পন্ন হয়। এর আগে জমজ শিশুকে চিকিৎসার জন্য হাঙ্গেরী পাঠানো হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশে-বিদেশে তাদের চিকিৎসার সব খরচ বহন করেন। পাবনার চাটমোহর উপজেলায় তারা জন্মগ্রহণ করে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, যে চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানগুলো জমজ শিশুর অস্ত্রোপচারে জড়িত ছিল সেগুলোকে অভিজ্ঞতার আলোকে আরো উন্নত ও আধুনিকায়ন করতে হবে।

শেখ হাসিনা এ সফল অস্ত্রোপচারের জন্য হাঙ্গেরীয় চিকিৎসক দলের সদস্যসহ সব চিকিৎসক, নার্স ও অন্যান্যদের অভিনন্দন জানান। তিনি বলেন, বাংলাদেশী ও হাঙ্গেরীয় চিকিৎসরা একটি অসাধারণ কাজ করেছেন। জমজ শিশুদ্বয় পুরোপুরি সুস্থ হয়ে শিগগিরই মায়ের কোলে ফিরে যাবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।  শেখ হাসিনা বলেন, এ সফল অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে বাংলাদেশের সরকারি চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানগুলোর চিকিৎসকরা নতুন অভিজ্ঞতা অর্জন করেছেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, রাবেয়া-রোকেয়ার সফল অস্ত্রোপচার বাংলাদেশের চিকিৎসকদের চোখ-কান খুলে দিয়েছে। তিনি বলেন, এ জটিল অস্ত্রোপচারে প্রবেশের মাধ্যমে বিভিন্ন হাসপাতাল ও চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে একটি সুন্দর সম্পর্ক সৃষ্টি হয়েছে। এসব হাসপাতাল ও প্রতিষ্ঠানের চিকিৎসকদের সমন্বিত কাজের প্রশংসা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এর মাধ্যমে সমঝোতা ও অভিজ্ঞতার উন্নয়ন হয়েছে।

তিনি বলেন, সফল অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে আপনারা রাবেয়া-রোকেয়ার মাথা আলাদা করেছেন। এটি সবার জন্য বড় ধরনের সফলতা।  চিকিৎসা বিজ্ঞানের উন্নয়নে সরকারের পদক্ষেপের বিস্তারিত তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে দেশের প্রথম মেডিকেল ইউনিভার্সিটি প্রতিষ্ঠা করা হয়।

হাঙ্গেরীয় চিকিৎসক দলের সদস্যরা অস্ত্রোপচারকালে বাংলাদেশী চিকিৎসকদের চমৎকার সহযোগিতার উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেন। তারা বাংলাদেশ সরকারের উষ্ণ আতিথেয়তারও প্রশংসা করেন।  তারা আরো বলেন, এ সফল অস্ত্রোপচার বাংলাদেশ ও হাঙ্গেরীর মধ্যে এক নতুন ধরনের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক সৃষ্টি করেছে।
রাবেয়া-রোকেয়ার বাবা রফিকুল ইসলাম তার কন্যাদের চিকিৎসার দায়িত্ব গ্রহণ করায় প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তিনি এই অস্ত্রোপচারে জড়িত বাংলাদেশ ও হাঙ্গেরীর চিকিৎসকদের ধন্যবাদ জানান।