শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

কৃমি নিয়ে আর দু:শ্চিন্তা নয় —

রাশেদুর রহমান রাশু ।। বিশেষ প্রতিনিধি।

পৃথিবী জুড়েই শিশুদের মধ্যে বিভিন্ন কৃমির প্রাদুর্ভাব লক্ষ করা যায়। বাংলাদেশেও অধিকাংশ শিশু-কিশোর ও প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে কৃমির প্রাদুর্ভাব লক্ষ করা যায়। বিভিন্ন প্রকার কৃমির মধ্যে কেঁচো বা লম্বাকৃতি (এসকারিস লুমব্রিকয়েডস), বক্রকৃমি বা হুক ওয়ার্ম, সুতাকৃমি, ট্রাইচুরিস ট্রাইচুরা (টিটি), স্ট্রংগিলয়েড স্টারকোরালিস ও ডিম কোনোভাবে পেটে ঢুকলে তা থেকে পেটের মধ্যে কৃমি সৃষ্টি হয়।

বক্রকৃমি বা হুক ওয়ার্মের লার্ভা (ডিম থেকে বৃদ্ধি পাওয়া শিশু

কৃমি) পায়ের চামড়া ভেদ করে শরীরে প্রবেশ করে এবং ক্ষুদ্রান্ত্রে গিয়ে তার হুক আঁকশি দিয়ে রক্ত চোষে। এতে কিছুকাল পর রোগীর রক্তশূন্যতা দেখা দেয়। সুতাকৃমি পায়খানার রাস্তায় এসে কিলবিল করে এবং ডিম ছাড়ে। চুলকানোর সময় এসব ডিম হাতের আঙুল ও নখে লেগে থাকে। এটি খাবার ও পানির সঙ্গে পেটে ঢুকে কৃমিতে রূপান্তরিত হয়। ফিতাকৃমি অল্প সেদ্ধ বা অর্ধসেদ্ধ গরুর মাংস খেলে হতে পারে। এগুলোর দৈর্ঘ্য ৫ থেকে ২০ মিটার পর্যন্ত হতে পারে। এ জাতীয় কৃমি গরুর মতো পশুর মাংসে বাসা বাঁধে।

লম্বাকৃতি বা এসকারির লুমব্রিকয়েডসের প্রাদুর্ভাব আমাদের দেশে বেশি। বাংলাদেশে একটি সমীক্ষায় গ্রামাঞ্চল ও শহরের শিশুদের মধ্যে যথাক্রমে ৯২ ভাগ ও ২৮ ভাগ ক্ষেত্রে এই কৃমি দেখা গেছে। সাধারণত পেটে কৃমি থাকলে :

রোগীর পেটব্যথা হয়।

ক্ষুধামান্দ্য দেখা দেয়।

পেট ফাঁপা থাকে।

শরীর অজীর্ণ হয়।

কখনো বমি হতে পারে।

এমনকি কৃমি ক্ষুদ্রান্ত্রকে বন্ধ করে দিয়ে প্রচ- পেটব্যথার সৃষ্টি করতে পারে।

এ ছাড়া অন্ত্রনালিকে ছিদ্র করে দিতে পারে।

কৃমি পিত্তনালিতে ঢুকে পিত্তনালির পথ বন্ধ করে দিয়ে জন্ডিসের সৃষ্টি করার মতো মারাত্মক অবস্থার সৃষ্টি করতে পারে। চিকিৎসা কৃমির চিকিৎসা দেওয়ার আগে কৃমি হয়েছে কি না, সেই বিষয়ে নিশ্চিত হতে হবে। যেকোনো

কৃমির ক্ষেত্রে যে ওষুধ সাধারণভাবে ব্যবহৃত হয়ে থাকে, সেটি হচ্ছে মেবেনডাজল। এ ওষুধের উল্লেখযোগ্য বাজারজাত নাম হচ্ছে আরমক্স/ মেবেন। বয়স্কদের বেলায় মেবেন/আরমক্স ট্যাবলেট ১০০ মিলিগ্রাম একটা করে দিনে দুবার মোট তিন দিন খেতে হবে। শিশুদের বেলায় আরমক্স/মেবেন সিরাপ চা চামচের এক চামচ করে দিনে দুবার মোট তিন দিন খেতে দেওয়া যেতে পারে। এ ছাড়া কৃমির জন্য অন্য একটি ওষুধ এলবেনডাজল। বাজারে এটি আলবেনসহ অনেক নামে পাওয়া যায়। বয়স্ক ও শিশু উভয়ের বেলায় দুটি আলবেন রাতে শোবার সময় খাইয়ে দেওয়া যেতে পারে। দুই বছরের কম বয়সী শিশুদের বেলায় ২০০ মিলিগ্রামের একটি আলবেন ট্যাবলেট খাওয়ালেই চলবে। তবে যেকোনো ওষুধ সেবনের আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি। ডা. এস. এম. আশিকুর রহমান

এমবিবিএস (সি.ইউ) সিএমইউ (আল্ট্রা) পিজিটি (মেডিসিন) মেডিকেল অফিসার : এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং ঢাকা মনোরোগ ক্লিনিক মেডিকেল টেকনোলজি অ্যান্ড ম্যাটস, ঢাকা

 

আপনার মন্তব্য লিখুন

লেখকের সম্পর্কে

Shahriar Hossain

রাজনীতিতে নাম লেখাতে যাচ্ছেন সানিয়া মির্জা

কৃমি নিয়ে আর দু:শ্চিন্তা নয় —

প্রকাশের সময় : ০৫:৫৮:৪০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২২ অগাস্ট ২০১৯
রাশেদুর রহমান রাশু ।। বিশেষ প্রতিনিধি।

পৃথিবী জুড়েই শিশুদের মধ্যে বিভিন্ন কৃমির প্রাদুর্ভাব লক্ষ করা যায়। বাংলাদেশেও অধিকাংশ শিশু-কিশোর ও প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে কৃমির প্রাদুর্ভাব লক্ষ করা যায়। বিভিন্ন প্রকার কৃমির মধ্যে কেঁচো বা লম্বাকৃতি (এসকারিস লুমব্রিকয়েডস), বক্রকৃমি বা হুক ওয়ার্ম, সুতাকৃমি, ট্রাইচুরিস ট্রাইচুরা (টিটি), স্ট্রংগিলয়েড স্টারকোরালিস ও ডিম কোনোভাবে পেটে ঢুকলে তা থেকে পেটের মধ্যে কৃমি সৃষ্টি হয়।

বক্রকৃমি বা হুক ওয়ার্মের লার্ভা (ডিম থেকে বৃদ্ধি পাওয়া শিশু

কৃমি) পায়ের চামড়া ভেদ করে শরীরে প্রবেশ করে এবং ক্ষুদ্রান্ত্রে গিয়ে তার হুক আঁকশি দিয়ে রক্ত চোষে। এতে কিছুকাল পর রোগীর রক্তশূন্যতা দেখা দেয়। সুতাকৃমি পায়খানার রাস্তায় এসে কিলবিল করে এবং ডিম ছাড়ে। চুলকানোর সময় এসব ডিম হাতের আঙুল ও নখে লেগে থাকে। এটি খাবার ও পানির সঙ্গে পেটে ঢুকে কৃমিতে রূপান্তরিত হয়। ফিতাকৃমি অল্প সেদ্ধ বা অর্ধসেদ্ধ গরুর মাংস খেলে হতে পারে। এগুলোর দৈর্ঘ্য ৫ থেকে ২০ মিটার পর্যন্ত হতে পারে। এ জাতীয় কৃমি গরুর মতো পশুর মাংসে বাসা বাঁধে।

লম্বাকৃতি বা এসকারির লুমব্রিকয়েডসের প্রাদুর্ভাব আমাদের দেশে বেশি। বাংলাদেশে একটি সমীক্ষায় গ্রামাঞ্চল ও শহরের শিশুদের মধ্যে যথাক্রমে ৯২ ভাগ ও ২৮ ভাগ ক্ষেত্রে এই কৃমি দেখা গেছে। সাধারণত পেটে কৃমি থাকলে :

রোগীর পেটব্যথা হয়।

ক্ষুধামান্দ্য দেখা দেয়।

পেট ফাঁপা থাকে।

শরীর অজীর্ণ হয়।

কখনো বমি হতে পারে।

এমনকি কৃমি ক্ষুদ্রান্ত্রকে বন্ধ করে দিয়ে প্রচ- পেটব্যথার সৃষ্টি করতে পারে।

এ ছাড়া অন্ত্রনালিকে ছিদ্র করে দিতে পারে।

কৃমি পিত্তনালিতে ঢুকে পিত্তনালির পথ বন্ধ করে দিয়ে জন্ডিসের সৃষ্টি করার মতো মারাত্মক অবস্থার সৃষ্টি করতে পারে। চিকিৎসা কৃমির চিকিৎসা দেওয়ার আগে কৃমি হয়েছে কি না, সেই বিষয়ে নিশ্চিত হতে হবে। যেকোনো

কৃমির ক্ষেত্রে যে ওষুধ সাধারণভাবে ব্যবহৃত হয়ে থাকে, সেটি হচ্ছে মেবেনডাজল। এ ওষুধের উল্লেখযোগ্য বাজারজাত নাম হচ্ছে আরমক্স/ মেবেন। বয়স্কদের বেলায় মেবেন/আরমক্স ট্যাবলেট ১০০ মিলিগ্রাম একটা করে দিনে দুবার মোট তিন দিন খেতে হবে। শিশুদের বেলায় আরমক্স/মেবেন সিরাপ চা চামচের এক চামচ করে দিনে দুবার মোট তিন দিন খেতে দেওয়া যেতে পারে। এ ছাড়া কৃমির জন্য অন্য একটি ওষুধ এলবেনডাজল। বাজারে এটি আলবেনসহ অনেক নামে পাওয়া যায়। বয়স্ক ও শিশু উভয়ের বেলায় দুটি আলবেন রাতে শোবার সময় খাইয়ে দেওয়া যেতে পারে। দুই বছরের কম বয়সী শিশুদের বেলায় ২০০ মিলিগ্রামের একটি আলবেন ট্যাবলেট খাওয়ালেই চলবে। তবে যেকোনো ওষুধ সেবনের আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি। ডা. এস. এম. আশিকুর রহমান

এমবিবিএস (সি.ইউ) সিএমইউ (আল্ট্রা) পিজিটি (মেডিসিন) মেডিকেল অফিসার : এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং ঢাকা মনোরোগ ক্লিনিক মেডিকেল টেকনোলজি অ্যান্ড ম্যাটস, ঢাকা