শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ডেঙ্গু থেকে বাঁচতে করণীয়

নুরুজ্জামান লিটন ।।

ডেঙ্গুজ্বরের প্রকোপ দিন দিন বাড়ছেই। বৃষ্টি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এডিস মশার বংশবিস্তার বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে কোনোভাবেই নিস্তার মিলছে না ডেঙ্গু কিংবা এই রোগবাহী মশা থেকে। তবে একটু সতর্ক থাকলে ডেঙ্গু থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।

বর্ষাকালে ঘুমানোর আগে অবশ্যই মশারি ব্যবহার করুন। এটা ডেঙ্গু প্রতিরোধের সর্বোত্তম পন্থা।স্বচ্ছ পানিতে এডিস মশা ডিম পাড়ে। ময়লা-দুর্গন্ধযুক্ত ড্রেনের পানি এদের পছন্দ নয়। তাই ডেঙ্গু প্রতিরোধে এডিস মশার ডিম পাড়ার উপযোগী স্থান যেমন- ফুলদানি, অব্যবহৃত কৌটা, প্লাস্টিকের পাত্র, পরিত্যক্ত টায়ার, প্লাস্টিকের ড্রাম, মাটির পাত্র, ডাবের পরিত্যক্ত খোসা, কনটেইনার, ব্যাটারির শেল, পলিথিন, চিপসের প্যাকেট, বাথরুমের কমোড, ঘরের অ্যাকুরিয়াম, ফ্রিজ বা এয়ার কন্ডিশনারের নিচে জমে থাকা পানি তিন থেকে পাঁচ দিন পরপর ফেলে দিন। এতে এডিস মশার লার্ভা মারা যাবে।

বাড়ির বারান্দা বা ছাদের টবে বা পাত্রে যেন কোনো ধরনের পানি পাঁচ দিনের বেশি জমে না থাকে, সে বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে। বাড়ির আশপাশের ঝোপঝাড়, জঙ্গল, জলাশয় ইত্যাদি পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে।

রাস্তাঘাট, জলাধার, বাসাবাড়ি, হাসপাতাল, অফিস-আদালতের আনাচে-কানাচে সপ্তাহে অন্তত তিন দিন মশা নিধনের জন্য স্প্রে করতে হবে।সম্ভব হলে ঘরের দরজা ও জানালায় নেট লাগান যেতে পারে। প্রয়োজনে মসকুইটো রিপেলন্ট স্প্রে, লোশন, কয়েল, ম্যাট ব্যবহার করা যেতে পারে।

সম্ভব হলে শুধু দিন নয়, রাতের বেলাও সারা শরীরে মশা নিরোধক ক্রিম ব্যবহার করা দরকার। দিনের বেলা হাত ও পায়ে নারকেল তেল লাগিয়ে রাখতে পারেন। নারকেল তেল অ্যান্টি-হিসেবে কাজ করে।দিনের বেলা শিশুদের হাফপ্যান্টের বদলে ফুলপ্যান্ট বা পায়জামা পরিয়ে রাখুন।

ব্যালকনিতে বা জানালার পাশে তুলসি গাছ লাগাতে পারেন। কারণ এই গাছে এমন কতগুলো গুরুত্বপূর্ণ উপাদান রয়েছে যা মশা তাড়াতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। এটাও ডেঙ্গু প্রতিরোধের ভালো উপায় হতে পারে।প্রকৃতির উপায়ে মশা তাড়াতে কর্পূর ব্যবহারের বিকল্প নেই। দরজা-জানালা বন্ধ করে কর্পূর জ্বালিয়ে রুমের ভেতর রাখুন। ২০ মিনিট পর দেখবেন মশা একেবারেই চলে গেছে। মশার হাত থেকে বাঁচতে প্রতিদিন সকাল এবং সন্ধ্যায় কর্পূর জ্বালিয়ে রাখুন।

কয়েক কোয়া রসুন নিয়ে থেঁতো করে নিন। তারপর সেটা খুব ভালো করে ফুটিয়ে নিন তিন কাপ জলে। জল ফুটে অর্ধেক হলে নামিয়ে ছেঁকে বোতলে ভরে রাখুন। ঠাণ্ডা হলে ঘরের কোণে স্প্রে করে দিন এই মিশ্রণ।ডেঙ্গুর নির্দিষ্ট কোনো চিকিৎসা না থাকলেও, এ সময় প্রয়োজন প্রচুর পরিমাণে তরলজাতীয় খাবার গ্রহণ করতে হবে। যেমন ডাবের পানি, লেবুর শরবত, ফলের জুস এবং খাওয়ার স্যালাইন। এমন নয় যে প্রচুর পরিমাণে পানি পান করতে হবে, পানিজাতীয় খাবার গ্রহণ করতে হবে। জ্বর কমানোর জন্য কোনো মতেই প্যারাসিটামল ছাড়া অন্য ওষুধ খাওয়া যাবে না। আর অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

আপনার মন্তব্য লিখুন

লেখকের সম্পর্কে

Shahriar Hossain

ডেঙ্গু থেকে বাঁচতে করণীয়

প্রকাশের সময় : ০৮:১০:৩০ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৭ অগাস্ট ২০১৯
নুরুজ্জামান লিটন ।।

ডেঙ্গুজ্বরের প্রকোপ দিন দিন বাড়ছেই। বৃষ্টি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এডিস মশার বংশবিস্তার বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে কোনোভাবেই নিস্তার মিলছে না ডেঙ্গু কিংবা এই রোগবাহী মশা থেকে। তবে একটু সতর্ক থাকলে ডেঙ্গু থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।

বর্ষাকালে ঘুমানোর আগে অবশ্যই মশারি ব্যবহার করুন। এটা ডেঙ্গু প্রতিরোধের সর্বোত্তম পন্থা।স্বচ্ছ পানিতে এডিস মশা ডিম পাড়ে। ময়লা-দুর্গন্ধযুক্ত ড্রেনের পানি এদের পছন্দ নয়। তাই ডেঙ্গু প্রতিরোধে এডিস মশার ডিম পাড়ার উপযোগী স্থান যেমন- ফুলদানি, অব্যবহৃত কৌটা, প্লাস্টিকের পাত্র, পরিত্যক্ত টায়ার, প্লাস্টিকের ড্রাম, মাটির পাত্র, ডাবের পরিত্যক্ত খোসা, কনটেইনার, ব্যাটারির শেল, পলিথিন, চিপসের প্যাকেট, বাথরুমের কমোড, ঘরের অ্যাকুরিয়াম, ফ্রিজ বা এয়ার কন্ডিশনারের নিচে জমে থাকা পানি তিন থেকে পাঁচ দিন পরপর ফেলে দিন। এতে এডিস মশার লার্ভা মারা যাবে।

বাড়ির বারান্দা বা ছাদের টবে বা পাত্রে যেন কোনো ধরনের পানি পাঁচ দিনের বেশি জমে না থাকে, সে বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে। বাড়ির আশপাশের ঝোপঝাড়, জঙ্গল, জলাশয় ইত্যাদি পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে।

রাস্তাঘাট, জলাধার, বাসাবাড়ি, হাসপাতাল, অফিস-আদালতের আনাচে-কানাচে সপ্তাহে অন্তত তিন দিন মশা নিধনের জন্য স্প্রে করতে হবে।সম্ভব হলে ঘরের দরজা ও জানালায় নেট লাগান যেতে পারে। প্রয়োজনে মসকুইটো রিপেলন্ট স্প্রে, লোশন, কয়েল, ম্যাট ব্যবহার করা যেতে পারে।

সম্ভব হলে শুধু দিন নয়, রাতের বেলাও সারা শরীরে মশা নিরোধক ক্রিম ব্যবহার করা দরকার। দিনের বেলা হাত ও পায়ে নারকেল তেল লাগিয়ে রাখতে পারেন। নারকেল তেল অ্যান্টি-হিসেবে কাজ করে।দিনের বেলা শিশুদের হাফপ্যান্টের বদলে ফুলপ্যান্ট বা পায়জামা পরিয়ে রাখুন।

ব্যালকনিতে বা জানালার পাশে তুলসি গাছ লাগাতে পারেন। কারণ এই গাছে এমন কতগুলো গুরুত্বপূর্ণ উপাদান রয়েছে যা মশা তাড়াতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। এটাও ডেঙ্গু প্রতিরোধের ভালো উপায় হতে পারে।প্রকৃতির উপায়ে মশা তাড়াতে কর্পূর ব্যবহারের বিকল্প নেই। দরজা-জানালা বন্ধ করে কর্পূর জ্বালিয়ে রুমের ভেতর রাখুন। ২০ মিনিট পর দেখবেন মশা একেবারেই চলে গেছে। মশার হাত থেকে বাঁচতে প্রতিদিন সকাল এবং সন্ধ্যায় কর্পূর জ্বালিয়ে রাখুন।

কয়েক কোয়া রসুন নিয়ে থেঁতো করে নিন। তারপর সেটা খুব ভালো করে ফুটিয়ে নিন তিন কাপ জলে। জল ফুটে অর্ধেক হলে নামিয়ে ছেঁকে বোতলে ভরে রাখুন। ঠাণ্ডা হলে ঘরের কোণে স্প্রে করে দিন এই মিশ্রণ।ডেঙ্গুর নির্দিষ্ট কোনো চিকিৎসা না থাকলেও, এ সময় প্রয়োজন প্রচুর পরিমাণে তরলজাতীয় খাবার গ্রহণ করতে হবে। যেমন ডাবের পানি, লেবুর শরবত, ফলের জুস এবং খাওয়ার স্যালাইন। এমন নয় যে প্রচুর পরিমাণে পানি পান করতে হবে, পানিজাতীয় খাবার গ্রহণ করতে হবে। জ্বর কমানোর জন্য কোনো মতেই প্যারাসিটামল ছাড়া অন্য ওষুধ খাওয়া যাবে না। আর অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।