শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আমদানি করা ডিউটি ফ্রি এলপিজি দেওয়ার উদ্দেশ্য কী: বিএনপি

নজরুল ইসলাম =

ভারতের সঙ্গে সর্বশেষ চুক্তিতে তরলীকৃত গ্যাস (এলপিজি) রফতানির সমালোচনা করে বিএনপি বলেছে, ‘আমদানি করা ডিউটি ফ্রি এলপিজি দেওয়ার উদ্দেশ্য কী?’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরে যেসব চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে তা ‘দেশের স্বার্থ বিরোধী’ আখ্যা দিয়ে বাতিলের দাবিও জানিয়েছে বিএনপি। দলটি বলছে, এ সব চুক্তি নিজ দেশ ও জনগণের স্বার্থ বিকিয়ে শক্তিমান প্রতিবেশীকে খুশি করে ক্ষমতার মসনদ টিকিয়ে রাখার সাময়িক ও ব্যর্থ চেষ্টা মাত্র। বৃহস্পতিবার রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তুলে ধরেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির প্রথম সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন।

লিখিত বক্তব্যে মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘জনগণের ভোটে নির্বাচিত না হওয়ায় জনগণের কাছে দায়বদ্ধ নয়, এমন একটি শক্তি যখন কৌশলে রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করে তখন তার পরিণতি দেশ ও জনগণের জন্য কতটা ভয়াবহ ও ক্ষতিকর হয়, তার সাম্প্রতিক প্রমাণ প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরের ফলাফল। এর আগেও ভারত সফর শেষে দেশে ফিরে প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, আমরা যা দিয়েছি ভারত তা চিরদিন মনে রাখবে। তাহলে এবার আরো এত কিছু দেওয়ার কী প্রয়োজন ছিল? বিদেশিদের গ্যাস দিতে রাজি হননি বলে ২০০১ সালে ক্ষমতায় আসতে পারেননি। তাহলে এবার আমদানি করা ডিউটি ফ্রি এলপিজি দেওয়ার উদ্দেশ্য কী’?

খন্দকার মোশাররফ বলেন, ‘বহু বছর ধরে তিস্তা এবং ৫৪টি অভিন্ন নদীর পানির ন্যায্য হিস্যা পাওয়ার ব্যাপারে শুধুই আশ্বাস চলছে। অথচ প্রধানমন্ত্রী তার ভারত সফরে ফেনী নদীর পানি দেওয়ার অঙ্গীকার করে এসেছেন। আসামের নাগরিক পঞ্জির পরিপ্রেক্ষিতে কয়েক লাখ আসামবাসীকে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেওয়ার ব্যাপারে ভারদের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীসহ আসাম রাজ্য ও কেন্দ্রীয় গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের স্পষ্ট হুমকির মুখে দুই প্রধানমন্ত্রীর যৌথ বিবৃতিতে এ ব্যাপারে ইতিবাচক কোনো স্পষ্ট প্রতিশ্রুতির উল্লেখ নেই। ভারতে পাটজাত দ্রব্যসহ অন্যান্য পণ্য রপ্তানির ওপর আরোপিত অন্যায় বাধা অপসারণে নিশ্চয়তা আদায় করতেও সরকার ব্যর্থ হয়েছে’।

বিএনপি নেতা মোশাররফ বলেন, ‘চট্টগ্রাম ও মোংলা বন্দর ব্যবহারের অনুমতি দেওয়ায় বাংলাদেশের অবকাঠামো, নাগরিক পরিবহন চলাচল এবং অর্থনৈতিক ক্ষয়ক্ষতির নিশ্চিত সম্ভাবনা রয়েছে। সমুদ্র উপকূলে যৌথ নজরদারির ফলে জাতীয় নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়ারও সম্ভাবনা রয়েছে। দেশের স্বার্থ অনিশ্চয়তায় ঝুলিয়ে রেখে অন্যের স্বর্থপূরণ করা সরকারের নতজানু নীতিরই প্রমাণ’।

ভারতে এলপিজি রপ্তানি চুক্তির বিরোধিতা করে তিনি বলেন, ‘‘বাংলাদেশ এলপিজি আমদানি করে। প্রতিবেশীর প্রয়োজনে তা রপ্তানির জন্য ইতিমধ্যে ওমেরা পেট্রোলিয়াম লিমিটেড ও বেক্সিমকো এলপিজি ইউনিটকে লাভবান করার এই উদ্যোগ ব্যক্তি ও গোষ্ঠী বিশেষকে লাভবান করবে, দেশকে নয়। ভারতকে এই সুবিধা দেওয়ার বিনিময়ে আমরা ‘ঠাকুর শান্তি পুরস্কার’ ছাড়া কী পেলাম’’?

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সেলিমা রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ, মো. শাহজাহান, যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন প্রমুখ।

আপনার মন্তব্য লিখুন

লেখকের সম্পর্কে

Shahriar Hossain

ইসরায়েল ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র আক্রমণ’ও চালায়,তার জবাব হবে কঠোর-ইরানের প্রেসিডেন্ট

আমদানি করা ডিউটি ফ্রি এলপিজি দেওয়ার উদ্দেশ্য কী: বিএনপি

প্রকাশের সময় : ১০:৪৯:০২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১০ অক্টোবর ২০১৯
নজরুল ইসলাম =

ভারতের সঙ্গে সর্বশেষ চুক্তিতে তরলীকৃত গ্যাস (এলপিজি) রফতানির সমালোচনা করে বিএনপি বলেছে, ‘আমদানি করা ডিউটি ফ্রি এলপিজি দেওয়ার উদ্দেশ্য কী?’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরে যেসব চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে তা ‘দেশের স্বার্থ বিরোধী’ আখ্যা দিয়ে বাতিলের দাবিও জানিয়েছে বিএনপি। দলটি বলছে, এ সব চুক্তি নিজ দেশ ও জনগণের স্বার্থ বিকিয়ে শক্তিমান প্রতিবেশীকে খুশি করে ক্ষমতার মসনদ টিকিয়ে রাখার সাময়িক ও ব্যর্থ চেষ্টা মাত্র। বৃহস্পতিবার রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তুলে ধরেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির প্রথম সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন।

লিখিত বক্তব্যে মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘জনগণের ভোটে নির্বাচিত না হওয়ায় জনগণের কাছে দায়বদ্ধ নয়, এমন একটি শক্তি যখন কৌশলে রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করে তখন তার পরিণতি দেশ ও জনগণের জন্য কতটা ভয়াবহ ও ক্ষতিকর হয়, তার সাম্প্রতিক প্রমাণ প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরের ফলাফল। এর আগেও ভারত সফর শেষে দেশে ফিরে প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, আমরা যা দিয়েছি ভারত তা চিরদিন মনে রাখবে। তাহলে এবার আরো এত কিছু দেওয়ার কী প্রয়োজন ছিল? বিদেশিদের গ্যাস দিতে রাজি হননি বলে ২০০১ সালে ক্ষমতায় আসতে পারেননি। তাহলে এবার আমদানি করা ডিউটি ফ্রি এলপিজি দেওয়ার উদ্দেশ্য কী’?

খন্দকার মোশাররফ বলেন, ‘বহু বছর ধরে তিস্তা এবং ৫৪টি অভিন্ন নদীর পানির ন্যায্য হিস্যা পাওয়ার ব্যাপারে শুধুই আশ্বাস চলছে। অথচ প্রধানমন্ত্রী তার ভারত সফরে ফেনী নদীর পানি দেওয়ার অঙ্গীকার করে এসেছেন। আসামের নাগরিক পঞ্জির পরিপ্রেক্ষিতে কয়েক লাখ আসামবাসীকে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেওয়ার ব্যাপারে ভারদের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীসহ আসাম রাজ্য ও কেন্দ্রীয় গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের স্পষ্ট হুমকির মুখে দুই প্রধানমন্ত্রীর যৌথ বিবৃতিতে এ ব্যাপারে ইতিবাচক কোনো স্পষ্ট প্রতিশ্রুতির উল্লেখ নেই। ভারতে পাটজাত দ্রব্যসহ অন্যান্য পণ্য রপ্তানির ওপর আরোপিত অন্যায় বাধা অপসারণে নিশ্চয়তা আদায় করতেও সরকার ব্যর্থ হয়েছে’।

বিএনপি নেতা মোশাররফ বলেন, ‘চট্টগ্রাম ও মোংলা বন্দর ব্যবহারের অনুমতি দেওয়ায় বাংলাদেশের অবকাঠামো, নাগরিক পরিবহন চলাচল এবং অর্থনৈতিক ক্ষয়ক্ষতির নিশ্চিত সম্ভাবনা রয়েছে। সমুদ্র উপকূলে যৌথ নজরদারির ফলে জাতীয় নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়ারও সম্ভাবনা রয়েছে। দেশের স্বার্থ অনিশ্চয়তায় ঝুলিয়ে রেখে অন্যের স্বর্থপূরণ করা সরকারের নতজানু নীতিরই প্রমাণ’।

ভারতে এলপিজি রপ্তানি চুক্তির বিরোধিতা করে তিনি বলেন, ‘‘বাংলাদেশ এলপিজি আমদানি করে। প্রতিবেশীর প্রয়োজনে তা রপ্তানির জন্য ইতিমধ্যে ওমেরা পেট্রোলিয়াম লিমিটেড ও বেক্সিমকো এলপিজি ইউনিটকে লাভবান করার এই উদ্যোগ ব্যক্তি ও গোষ্ঠী বিশেষকে লাভবান করবে, দেশকে নয়। ভারতকে এই সুবিধা দেওয়ার বিনিময়ে আমরা ‘ঠাকুর শান্তি পুরস্কার’ ছাড়া কী পেলাম’’?

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সেলিমা রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ, মো. শাহজাহান, যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন প্রমুখ।