
তানজীর মহসিন :=
বন্দর নগরী বেনাপোল এখন ধুলোর নগরী। ধুলোর কারণে ঘর থেকে বের হচ্ছে না মানুষ। অনেকেই অসুস্থ হয়ে স্নরনাপন্ন হচ্ছে চিকিৎসকদের।
বেনাপোল সড়কটি নতুন ভাবে তৈরীর জন্য কোথাও রাস্তা খুড়ে রাখা হয়েছে, আবার কোথাও প্রাথমিক ভাবে পাথর ফেলে রোলার দিয়ে রেখে দেয়া হয়েছে। গত ১ মাস ধরে রাস্তার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মোজাহার এন্ড কোং রাস্তার কাজ শেষ না করেই এ ভাবে ফেলে রাখায় দু র্ভোগের শিকার হচ্ছেন কয়েক লক্ষ মানুষ।
বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রতিদিন ৫ ’শ পন্য বেঝাই ট্রাক আমদানি হয়ে আসেভারতে থেকে এবং বাংলাদেশ থেকে ২’শ ট্রাক পন্য রফতানি হয় ভারতে। সেই ষাতে প্রতিদিন ৮ হাজার পসপোর্র্ট যাত্রী আসা যাওয়া করেছে ভারতে। ধূলোর ভয়াবহতায় সাধারন মানুষ এখন ক্ষোভে ফূসে উঠেছে।
প্রতিদিন বেনাপোল চেকপোষ্ট থেকে পৌর শহরের দীর্ঘ পথ ধুলা, বালিতে আচ্ছন্ন হয়ে থাকায় পরিস্থিতি আরো ভয়াবহ করে তুলছে। ধূলোর হাত থেকে বাচতে অনেকেই আবার বাজার থেকে মাস্ক কিনে ব্যবহার করছেন।
বেনাপোল টু যশোর সড়কের উন্নয়ন কাজ শুরু হয়েছে প্রায় এক বছর । বিভিন্ন স্থানে রাস্তা খুড়ে খুড়ে নতুন করে নির্মানের এই কাজের জন্য বালি, মাটি, খুয়া, পাথর ফেলা রখা হয়েছে রাস্তা জুড়ে। আর এই রাস্তায় সকল প্রকার যান চলাচল করলে ধুলায় আচ্ছন্ন হচ্ছে গোটা বেনাপোল জুড়ে। যে কারনে মানুষ স্বাভাবিক নিঃশ্বাস নিতে পারছে না।
সুস্থ ও সবল মানুষও কাশতে কাশতে শ্বাস কষ্টে অসুস্থ হয়ে পড়ছে। বেনাপোল শহরের রাস্তার দু’ধারের অফিস আদালত , দোকান পাট সহ ঘরবাড়ি ধূলোয় আচ্ছন্ন হয়ে পড়ছে। বেনাপোলের সরজমিনে দেখা গেছে, সকাল থেকে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে শতশত যাত্রীবাহী বাস , ট্রাক ছোট গাড়ী রিকশা ভ্যান, ইজি বাইক বেনাপোলে প্রবেশ করছে। তখনই দেখা দিচ্ছে ধূলো।
বেনাপোল -যশোর সড়কের ৩৬ কি: মি: সড়কটি নির্মান কাজ শুরু হয় ২০১৭ সালের নভেম্বর মাসে। প্রথমে যশোরের চাচড়া এলাকা থেকে শুরু হয় নির্মান কাজ। পরবর্তীতে বেনাপোলে কাজ শুরু হয় চলতি মাসে জানুয়ারী মাসে। সেই থেকে নির্মান কাজ সম্পন্ন না করেই চলে যায় নাভারন ও শার্শা এলাকায় নতুন ভাবে খোড়া খুড়ির কাজ করতে। বেনাপোলের ২ কি: মি: এলাকা বর্তমানে অসমাপ্ত রয়েছে নির্মান কাজ।
সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মোয়াজ্জেম হোসেন জানান, বেনাপোল-যশোর সড়কটি চলতি বছরের ডিসেম্বরে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও যোগাযোগ মন্ত্রনালয় থেকে টাইম এক্সটেনশন করে আগামী ২০২০ সালের মধ্যে কাজ শেষ করার টাইম বেধে দেয়া হয়। তবে বেনাপোলের অসমাপ্ত কাজে প্রতিদিন পানি দেয়ার কথা থাকলেও কেন দেয়া হচ্ছে না সেটি খতিয়ে দেখা হবে।
বেনাপোলের চিকিৎসক আমজাদ হোসেন জানান, এই ধুলা বালির পরিবেশের কারনে প্রতিটি নিশ্বাস মানুষের দেহে শত শত রোগের জীবানু প্রবেশ করছে। আর যারা এ্যাজমা বা এলার্জি রোগে আক্রান্তদের জন্য মৃত্যুময় পরিবেশ তৈরী হয়েছে। রাস্তার উন্নয়ন কাজ যত দিন শেষ না হয় ততদিন সকাল বিকেল পানি দিয়ে ভিজিয়ে রেখে চলাচল’র উপযোগি করা জরুরী।
বেনাপোল সিএন্ড এফ এজেন্টস এসোসিয়েশনের সভাপতি আলহাজ্ব মফিজুর রহমান সজন বলেন, চলতি বছরে বৃষ্টি কম। যে কারনে বেনাপোল-যশোর সড়টি নির্মানাধীন রা¯তায় প্রচুর পরিমানে ধুলা বালি থাকায় রাস্তায় চলাচলে চরম ভাবে দূর্ভোগের শিকার হচ্ছেন সাধারন মানুষ।
প্রতিদিন সকাল থেকে রাত অবধী যন্ত্র চালিত যানবাহন চলায় দোকান, অফিসে ধুলোর স্তর পড়ে যাচ্ছে। যে কারনে শ্বাস কষ্ট বৃদ্ধি সহ বিভিন্ন রোগের সৃষ্টি হচ্ছে। তিনি বলেন বেনাপোল শহর ছোট হলেও অনেক লোকের বাস। ধুলা বালির কারনে এ সমস্থ লোকের চলাচল ও ব্যবসা বানিজ্যে চরম বিঘ্নিত হচ্ছে।
মোজাহার এন্ড কোং ঠিকাদারের প্রতিনিধি আ: রহিম জানান, রাস্তার কাজ দ্রুত কাজ শেষ কারার জন্য রাত দিন কাজ করা হচ্ছে। প্রতিদিন ধুলা বন্ধ করতে বেনাপোল শহরে রাস্তায় একাধিক ট্যাংকারের সাহায্যে পানি দিয়ে রাস্তায় ভেজানো হচেছ।