শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

স্বামী এমপি হারুনকে নিয়ে পাপিয়ার হুঙ্কারই সত্য হলো

সাজ্জাদুল ইসলাম সৌর ভ :=

শুল্কমুক্ত গাড়ি আমদানি সুবিধা নিয়ে পরে তা বিক্রি করে শুল্ক ফাঁকির অভিযোগে দুদকের করা মামলায় গ্রেফতার হয়েছিলেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ও সংসদ সদস্য হারুন অর রশীদ।সে মামলায় গত ২১ অক্টোবর এমপি হারুনকে পাঁচ বছরের দণ্ড দিয়ে কারাগারে পাঠান আদালত।

এরপর সেদিনই এমপি হারুনের স্ত্রী ও বিএনপির সাবেক এমপি আসিফা আশরাফি পাপিয়া হুঙ্কার দেন, ১০ দিনের মধ্যে দুর্নীতির মামলায় ৫ বছরের কারাদণ্ডপ্রাপ্ত তার স্বামী এমপি হারুনের জামিন হয়ে যাবে।অতঃপর পাপিয়ার সেই হুঙ্কারই সত্য হলো। ১০দিনের আগেই জামিন পেয়েছেন এমপি হারুন।

এর আগে সোমবার সকালে এমপি হারুন তার দণ্ডের বিরুদ্ধে আপিল করেন ও জামিন চান।

গত ২১ অক্টোবর ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪ এর বিচারক শেখ নাজমুল আলম এমপি হারুনকে ৫ বছরের দণ্ড দেন। পাশাপাশি তাকে ৫০ লাখ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ছয় মাসের কারাদণ্ড দেয়া হয়। ওইদিনই তাকে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠানো হয়।এই মামলায় পলাতক আসামি চ্যানেল নাইনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. এনায়েতুর রহমান বাপ্পিকে দুই বছর সশ্রম কারাদণ্ড ও এক লাখ টাকা অর্থদণ্ড দেয়া হয়েছে। অর্থদণ্ড অনাদায়ে আরও দুই মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেয়া হয়।

এ ছাড়া অপর পলাতক আসামি গাড়ি ব্যবসায়ী স্কাই অটোসের মালিক ইশতিয়াক সাদেককে তিন বছর সশ্রম কারাদণ্ড ও ৪০ লাখ টাকা অর্থদণ্ড দেয়া হয়। অর্থদণ্ড অনাদায়ে আরও ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেন আদালত।

আদালত সূত্র জানায়, সংসদ সদস্য থাকাবস্থায় (এমপি কোটায়) ২০০৫ সালের ১৯ এপ্রিল শুল্কমুক্ত গাড়ি আমদানি করেন হারুন অর রশীদ। এর এক সপ্তাহ পরেই গাড়িটি তিনি স্কাই অটোসের মালিক ইশতিয়াক সাদেকের মাধ্যমে ক্রেতা মো. এনায়েতুর রহমানের কাছে বিক্রি করেন। গাড়িটির ইনভয়েস মূল্য ১১ লাখ ৬৪ হাজার ১১০ টাকা।

এ ঘটনায় হারুন অর রশীদসহ তিনজনের বিরুদ্ধে তেজগাঁও থানায় মামলা হয় ২০০৭ সালের ১৭ মার্চ। মামলার বাদী হলেন পুলিশের উপপরিদর্শক ইউনুস আলী। মামলাটি তদন্ত করে হারুনসহ তিনজনের বিরুদ্ধে ওই বছরের ১৮ জুলাই আদালতে চার্জশিট দেন দুদকের সহকারী পরিচালক মোনায়েম হোসেন। আদালত অভিযোগপত্র আমলে নিয়ে হারুনসহ তিনজনের বিরুদ্ধে ২০০৭ সালের ২০ আগস্ট বিচার শুরু করেন আদালত।হারুন অর রশীদ চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ আসনের এমপি। তিনি কেন্দ্রীয় বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব। একাদশ জাতীয় সংসদে বিএনপির সংসদীয় দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন তিনি।

হারুন অর রশীদ বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে সংসদে জোরালো বক্তব্য রেখে আসছিলেন। গত ১ অক্টোবর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে চিকিৎসাধীন খালেদা জিয়াকে দেখে এসে তার মুক্তির দাবি জানান। পরে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গেও বৈঠক করেন এমপি হারুন। খালেদা জিয়ার জামিনে মুক্তির বিষয়ে সরকারকে নমনীয় হতে ওবায়দুল কাদেরকে অনুরোধ করেন তিনি। পরে এ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গেও কথা বলেন ওবায়দুল কাদের।

আপনার মন্তব্য লিখুন

লেখকের সম্পর্কে

Shahriar Hossain

স্বামী এমপি হারুনকে নিয়ে পাপিয়ার হুঙ্কারই সত্য হলো

প্রকাশের সময় : ০৭:১৫:৪৬ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৯ অক্টোবর ২০১৯
সাজ্জাদুল ইসলাম সৌর ভ :=

শুল্কমুক্ত গাড়ি আমদানি সুবিধা নিয়ে পরে তা বিক্রি করে শুল্ক ফাঁকির অভিযোগে দুদকের করা মামলায় গ্রেফতার হয়েছিলেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ও সংসদ সদস্য হারুন অর রশীদ।সে মামলায় গত ২১ অক্টোবর এমপি হারুনকে পাঁচ বছরের দণ্ড দিয়ে কারাগারে পাঠান আদালত।

এরপর সেদিনই এমপি হারুনের স্ত্রী ও বিএনপির সাবেক এমপি আসিফা আশরাফি পাপিয়া হুঙ্কার দেন, ১০ দিনের মধ্যে দুর্নীতির মামলায় ৫ বছরের কারাদণ্ডপ্রাপ্ত তার স্বামী এমপি হারুনের জামিন হয়ে যাবে।অতঃপর পাপিয়ার সেই হুঙ্কারই সত্য হলো। ১০দিনের আগেই জামিন পেয়েছেন এমপি হারুন।

এর আগে সোমবার সকালে এমপি হারুন তার দণ্ডের বিরুদ্ধে আপিল করেন ও জামিন চান।

গত ২১ অক্টোবর ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪ এর বিচারক শেখ নাজমুল আলম এমপি হারুনকে ৫ বছরের দণ্ড দেন। পাশাপাশি তাকে ৫০ লাখ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ছয় মাসের কারাদণ্ড দেয়া হয়। ওইদিনই তাকে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠানো হয়।এই মামলায় পলাতক আসামি চ্যানেল নাইনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. এনায়েতুর রহমান বাপ্পিকে দুই বছর সশ্রম কারাদণ্ড ও এক লাখ টাকা অর্থদণ্ড দেয়া হয়েছে। অর্থদণ্ড অনাদায়ে আরও দুই মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেয়া হয়।

এ ছাড়া অপর পলাতক আসামি গাড়ি ব্যবসায়ী স্কাই অটোসের মালিক ইশতিয়াক সাদেককে তিন বছর সশ্রম কারাদণ্ড ও ৪০ লাখ টাকা অর্থদণ্ড দেয়া হয়। অর্থদণ্ড অনাদায়ে আরও ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেন আদালত।

আদালত সূত্র জানায়, সংসদ সদস্য থাকাবস্থায় (এমপি কোটায়) ২০০৫ সালের ১৯ এপ্রিল শুল্কমুক্ত গাড়ি আমদানি করেন হারুন অর রশীদ। এর এক সপ্তাহ পরেই গাড়িটি তিনি স্কাই অটোসের মালিক ইশতিয়াক সাদেকের মাধ্যমে ক্রেতা মো. এনায়েতুর রহমানের কাছে বিক্রি করেন। গাড়িটির ইনভয়েস মূল্য ১১ লাখ ৬৪ হাজার ১১০ টাকা।

এ ঘটনায় হারুন অর রশীদসহ তিনজনের বিরুদ্ধে তেজগাঁও থানায় মামলা হয় ২০০৭ সালের ১৭ মার্চ। মামলার বাদী হলেন পুলিশের উপপরিদর্শক ইউনুস আলী। মামলাটি তদন্ত করে হারুনসহ তিনজনের বিরুদ্ধে ওই বছরের ১৮ জুলাই আদালতে চার্জশিট দেন দুদকের সহকারী পরিচালক মোনায়েম হোসেন। আদালত অভিযোগপত্র আমলে নিয়ে হারুনসহ তিনজনের বিরুদ্ধে ২০০৭ সালের ২০ আগস্ট বিচার শুরু করেন আদালত।হারুন অর রশীদ চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ আসনের এমপি। তিনি কেন্দ্রীয় বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব। একাদশ জাতীয় সংসদে বিএনপির সংসদীয় দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন তিনি।

হারুন অর রশীদ বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে সংসদে জোরালো বক্তব্য রেখে আসছিলেন। গত ১ অক্টোবর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে চিকিৎসাধীন খালেদা জিয়াকে দেখে এসে তার মুক্তির দাবি জানান। পরে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গেও বৈঠক করেন এমপি হারুন। খালেদা জিয়ার জামিনে মুক্তির বিষয়ে সরকারকে নমনীয় হতে ওবায়দুল কাদেরকে অনুরোধ করেন তিনি। পরে এ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গেও কথা বলেন ওবায়দুল কাদের।