আলেয়া খাতুন বৃস্টি :=
বিতর্কিতরা ছাড়া কেউ আওয়ামী লীগ থেকে বাদ যাবে না বলে মন্তব্য করেছেন দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেছেন, বিতর্কিত ছাড়া কেউ বাদ যাবে না। দায়িত্বের পরিবর্তন হবে। এখান থেকে ওখানে যাবে। কেউ তো এক পদে সারাজীবন থাকবে না। শুক্রবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে জাতীয় কাউন্সিলে করণীয় নিয়ে দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদকদের সঙ্গে বৈঠক শেষে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।
আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনগুলোর সম্মেলনকে সামনে রেখে নেতাকর্মীদের মধ্যে অসুস্থ প্রতিযোগিতা কোনোভাবেই বরদাশত করা হবে না বলে সতর্ক করেন কাদের।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘কয়েকদিন আগে আমরা প্রতিনিধি সম্মেলনে গিয়েছিলাম। তারপরও পত্রপত্রিকায় রাজশাহীর খারাপ খবরে ভরে গেলো। এটি আমাদের জন্য দুঃখজনক। সম্মেলনকে সামনে রেখে সকল তিক্ততার অবসান ঘটবে বলে আমি আশা করি। কাঁদা ছোঁড়াছুঁড়ি বন্ধ করতে হবে। আমাদের মধ্যে নেতৃত্বের প্রতিযোগিতা থাকবে। কিন্তু সেই প্রতিযোগিতা হবে সুস্থ। অসুস্থ প্রতিযোগিতা কোনোভাবেই বরদাশত করা হবে না। আমি এখানে নেত্রীর পক্ষ থেকে পরিষ্কারভাবে সবাইকে জানিয়ে দিতে চাই।’
বৈঠকে কী নিয়ে আলোচনা হয়েছে জানতে চাইলে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলন বাস্তবায়নে বিভিন্ন বিষয়ে করণীয় সম্পর্কে আলোচনা করেছি। সারা বাংলাদেশের আমাদের শাখা সংগঠনগুলো, জেলা-উপজেলা, থানা-ইউনিয়ন-ওয়ার্ড পর্যন্ত বিভিন্ন জায়গায় মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটিগুলো নতুনভাবে করা হচ্ছে। সেইসব বিষয়ে আমাদের নেতৃবৃন্দ বিস্তারিত আলাপ-আলোচনা করেছেন।’
অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড ও সাম্প্রদায়িক শক্তির সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা ছাড়া আওয়ামী লীগের যারা এসেছে, তারা অনুপ্রবেশকারী নয় বলে সংবাদ সম্মেলনে জানান সেতুমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘আমাদের পার্টিতে যারা এসেছে তারা অনুপ্রবেশকারী নয়। অনেক ক্লিন ইমেজের লোকও আমাদের পার্টিতে এসেছে। এদের সাম্প্রদায়িক সংশ্লিষ্ট কোনো ব্যাকগ্রাউন্ড যদি না থাকে এবং কোনো প্রকার মামলা মোকদ্দমা, অপরাধমূলক কাজে এদের সংশ্লিষ্টতা না থাকে; সেইসব লোকরা অবশ্যই অনুপ্রবেশকারী নয়।
বিএনপি নেতাদের পদত্যাগ দলটির নেতিবাচক রাজনীতি
এ সময় বিএনপি থেকে কয়েকজনের পদত্যাগ নিয়েও কথা বলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। বিএনপির সিনিয়র নেতাদের পদত্যাগের বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমার কাছে মনে হয় এটা বিএনপির নেতিবাচক রাজনীতির অনিবার্য পরিণতি। আমি এক কথায় এটাই বলবো।’
বৈঠকে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক দীপু মনি, জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, বিএম মোজাম্মেল হক, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, মহিবুল হাসান চৌধুরী, দপ্তর সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ, উপ দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া প্রমুখ উপস্থিতি ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনের আগে কৃষক লীগের নতুন নেতৃবৃন্দ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরসহ দলের শীর্ষ নেতাদের ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান। এ সময় কৃষক লীগের নব নির্বাচিত সভাপতি সমীর চন্দ্র এবং সাধারণ সম্পাদক উম্মে কুলসুম স্মৃতিসহ সংগঠনের নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।
পরে রাজশাহী বিভাগের সম্মেলন উপলক্ষ্যে করণীয় ও তারিখ নির্ধারণ নিয়ে স্থানীয় নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোহাম্মদ নাসিম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী। এ সময় রাজশাহী বিভাগের শীর্ষ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকের আগে মোহাম্মদ নাসিম বলেন, ‘রাজশাহী জেলার তৃণমূল পর্যায়ে সম্মেলন উপলক্ষ্যে আমরা বৈঠক করতে যাচ্ছি। আওয়ামী লীগ একমাত্র দল যারা সব সময় একটি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সম্মেলন করে থাকে। সর্বক্ষেত্রে পরাজিত বিএনপি-জামায়াতের অপশক্তির বিরুদ্ধে চূড়ান্ত বিজয় না হওয়া পর্যন্ত আমরা কাজ করে যাব।’
নাসিম বলেন, আওয়ামী লীগের সবচেয়ে বড় শক্তি হচ্ছে দলের নেতাকর্মী। উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্যে কাউন্সিল হবে। এবার একটা ভালো দিক জাতীয় কাউন্সিলের আগে সহযোগী সংগঠনের কাউন্সিল হচ্ছে।