শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

লবণ নিয়ে গুজব”যশোরের বাজারে হঠাৎ লবন কেনার হিড়িক

আলহাজ্ব আব্দুল লতিফ :=

লবণ নিয়ে গুজবযশোরের বাজারে হঠাৎ লবন কেনার হিড়িক পড়েছে। যে যেভাবে পারছেন একাধিক প্যাকেট লবণ না কিনে বাড়িতে ফিরছেন না। বধূ থেকে শুরু করে ছেলে, বুড়োরা বাজারমুখো হয়েছেন লবণ কিনতে। যে দোকানে দিনে ১০ প্যাকেট লবণ বিক্রি হতো না সেই দোকানেই এক ঘণ্টায় বিক্রি হয়েছে কয়েশ’ প্যাকেট। বাজারে লবণ সংকট গুজব ছড়িয়ে পড়ায় এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। কয়েকটি এলাকা থেকে খবর পাওয়া গেছে গ্রামাঞ্চলের দোকানগুলোতে বিক্রেতারা লবণ বিক্রি বন্ধ রেখেছেন। কোনো দোকানে এক থেকে দেড়শ টাকা কেজিতে লবণ বিক্রি করতে দেখা গেছে। তবে বাজারে পর্যাপ্ত লবণ রয়েছে এবং ঘাটতি হওয়ার কোনো কারণ নেই বলে জানিয়েছে শিল্প মন্ত্রণালয়। উৎপাদনকারী পাঁচটি প্রতিষ্ঠান থেকেও জানানো হয়েছে তাদের হাতে পর্যাপ্ত লবণ রয়েছে, সংকটের বিষয়টি সম্পূর্ণ গুজব। বিকেল থেকে সন্ধ্যে পর্যন্ত যশোর বড়ো বাজারে সরেজমিনে লবণের জন্যে মানুষকে উদভ্রান্তের মতো দৌড়াদৌড়ি করতে দেখা যায়। এক দোকান থেকে মানুষ ছুটছে আর এক দোকানে। যে যা পারছে বেশি বেশি লবণ কিনে ফিরছেন। ক্রেতাদের মোটরসাইকেল, বাইসাইকেল, রিকশা, ভ্যান, প্যাকেটে করে বস্তা বস্তা লবণ নিয়ে বাড়ি ফিরতে দেখা গেছে। অনেকে লবণের বস্তা সঠিকভাবে না নিতে পেরে রাস্তায়ও ফেলে ফাটিয়ে ফেলেছেন। বাজারের মুটেরা একের পর এক গুদাম থেকে লবণ নিয়ে আসছেন আর মুহুর্তেই কর্পূরের মতো দোকান থেকে হাওয়া হয়ে যাচ্ছে। কয়েকটি ঘটনায় এক মুটের মাথার লবণের বস্তা কাড়াকাড়ি করতে দেখা যায়। এই সুযোগে দোকানিরা প্রতি প্যাকেট লবণ পাঁচ টাকা বাড়িয়ে দেয়। গ্রামাঞ্চলে এই পরিস্থিতি আরও খারাপ। শংকরপুর গোলপাতার মসজিদ এলাকার কয়েকটি দোকানে লবণ বিক্রি বিকেল থেকেই বন্ধ হয়ে যায়। স্থানীয়দের অভিযোগ দোকানিরা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে। দাম বাড়লে তারা বিক্রি শুরু করবে। দু’টো দোকানে সন্ধ্যায় লবণ বিক্রি করা হয় প্রতি প্যাকেট একশ টাকায়।

মঙ্গলবার দুপুরের পর থেকেই টেলিভিশন চ্যানেল আর অনলাইন মিডিয়াগুলোতে একের পর এক ব্রেকিং দিয়ে জানানো হয় গুজবে পড়ে ঢাকায় লবণ বিক্রি বেড়ে গেছে। মুদি দোকানগুলোতে মানুষের উপচেপড়া ভিড়ের ফুটেজ ও ছবি দিয়ে মিডিয়াগুলো জানাতে থাকে সংকটের গুজবে আতঙ্কিত ক্রেতারা একসাথে একাধিক প্যাকেট লবণ কিনছেন। চাহিদা মেটাতে দোকানিরা হিমশিম খাচ্ছেন। এর রেশ পড়ে যশোরের বাজারেও। মুহুর্তেই তা সর্বত্র ভাইরাল হয়ে যায়। এক সময় গুজবটি আতঙ্কে পরিণত হয়। লবণ সংকটের আশংকায় সাধারণ মানুষ দ্রুত লবণের খোঁজে বের হন। ক্রমেই তা চরম আকার ধারণ করে। বিভিন্ন স্থান থেকে গ্রামের কাগজ দপ্তরে ফোন আসতে থাকে পরিস্থিতি জানার জন্যে। স্থানীয় বাজারে লবণের দাম বেড়ে গেছে বলেও জানান কেউ কেউ। যশোর সদরের আরবপুরসহ কয়েকটি এলাকা থেকে ফোন করে জানানো হয় স্থানীয় দোকানিরা লবণ বিক্রি বন্ধ করে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে। বাড়ি থেকে নারীসহ অন্যরা গুজব শুনে দোকানে যেয়ে ফিরে এসেছে।ক্রেতাদের সাথে আলোচনা করে জানা গেছে, তারা শুনেছেন লবণের দাম কেজি প্রতি একশ টাকা ছাড়িয়ে যাবে। এ আশঙ্কায় তারা বাড়তি লবণ কিনে রাখছেন। কিন্তু এটা যে ¯্রফে গুজব-এমন কথায় বিশ্বাস স্থাপন করতে পারছেন না কেউ। ক্রেতাদের ভাষ্য পেঁয়াজ নিয়েও মন্ত্রীরা গুজব, দাম কমবে, কোনো সংকট নেই ইত্যাদি কথা বলেছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত জনগণকে আড়াইশ টাকার ওপরে কেজিতে পেঁয়াজ কিনতে হয়েছে। এদিকে, লবণের কোনো ঘাটতি নেই এবং দাম বৃদ্ধির খবর সম্পূর্ণ গুজব উল্লেখ করে বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে শিল্প মন্ত্রণালয়। বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, দেশে বর্তমানে সাড়ে ৬ লাখ মেট্রিক টনের বেশি ভোজ্যলবণ মজুদ রয়েছে। এর মধ্যে কক্সবাজার ও চট্টগ্রামের লবণচাষিদের কাছে চার লাখ পাঁচ হাজার মেট্রিক টন এবং বিভিন্ন লবণ মিলের গুদামে দু’লাখ ৪৫ হাজার মেট্রিক টন লবণ মজুদ রয়েছে।শিল্প মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, সারাদেশে বিভিন্ন লবণ কোম্পানির ডিলার, পাইকারি ও খুচরা বিক্রেতাদের কাছে পর্যাপ্ত পরিমাণে লবণ মজুদ রয়েছে। পাশাপাশি চলতি নভেম্বর মাস থেকে লবণের উৎপাদন মৌসুম শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যে কক্সবাজার জেলার কুতুবদিয়া ও মহেশখালী উপজেলায় উৎপাদিত নতুন লবণও বাজারে আসতে শুরু করেছে।দেশে প্রতি মাসে ভোজ্যলবণের চাহিদা কমবেশি এক লাখ মেট্রিক টন। অন্যদিকে, লবণের মজুদ আছে সাড়ে ছয় লাখ মেট্রিক টন। সে হিসাবে লবণের কোনো ধরনের ঘাটতি বা সংকট হওয়ার প্রশ্নই ওঠে না।বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, একটি স্বার্থান্বেষী মহল লবণের সংকট রয়েছে মর্মে গুজব রটনা করে অধিক মুনাফা লাভের আশায় দাম অস্থিতিশীল করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে বলে প্রতীয়মান হচ্ছে। এ ধরনের গুজবে বিভ্রান্ত না হওয়ার জন্য শিল্প মন্ত্রণালয় সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করছে।লবণ সংক্রান্ত বিষয়ে তদারকির জন্য শিল্প মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশনের (বিসিক) প্রধান কার্যালয়ে একটি কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। এর নম্বর হচ্ছে: ০২-৯৫৭৩৫০৫ (ল্যান্ড ফোন), ০১৭১৫২২৩৯৪৯ (সেল ফোন)।এসংক্রান্ত যেকোনো তথ্যের প্রয়োজনে কন্ট্রোল রুমের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য অনুরোধ করেছে মন্ত্রণালয়।লবণের বাজারের শীর্ষ প্রতিষ্ঠান এসিআই সল্ট বলছে, লবণের কোনো ঘাটতি নেই। তারা লবণের দাম কোনোভাবেই বাড়ায়নি এবং বাড়াবে না। বরং নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে বেশি কেউ এসিআইয়ের লবণ বিক্রি করছে কি না, সেটা তারা নজরে রাখবে।

দাম বৃদ্ধির গুজবে বাঁকড়ার সাপ্তাহিক হাটের হাটুরেরা মাছ তরকারি কেনা বাদ দিয়ে লাইনে দাঁড়িয়ে লবণ কিনেছেন। এক একজন হাটুরে ১৫ থেকে ২০ কেজি কেউ কেউ আরও বেশি লবণ কিনে বাড়ি ফিরেছেন। এই সুযোগে দোকানিরা লবণের দামও বাড়িয়ে দিয়েছে। ১৫ টাকার প্রতিকেজি লুজ লবণ বিক্রি হয়েছে ৩০ টাকা আর ৩৮ টাকার প্যাকেট লবণ বিক্রি হয়েছে ৬০ টাকা। খবর পেয়ে বাঁকড়া ফাড়ির ইনচার্জ মেজবাহ উদ্দিন আহমেদ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। এসময় তিনি বেশি দামে লবণ বিক্রির বিরুদ্ধে দোকানিদের হুশিয়ারী করে দেন। কথা না শোনায় তিনি দু’জনকে আটকও করেছিল। পরে ভুল স্বীকার করায় তাকে ছেড়ে দেয়া হয়

এসিল্যান্ড ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ইফতেখার ইউনুস বলেছেন, প্রচুর অভিযোগ আসছে অতিরিক্ত দামে লবণ বিক্রির। তবে সরকার বা বাণিজ্য মন্ত্রণালয় লবণের মুল্য বৃদ্ধি করেনি। মুনাফালোভী কিছু ব্যবসায়ী বাজার মুল্যের চেয়ে অতিরিক্ত দামে লবণ বিক্রি করছে এমন সত্যতা মিলেছে। তাদের জরিমানা করা হয়েছে বলে জানান। এমন দু’জন হলেন অঞ্জন সাহা স্টোর ও মোল্লা স্টোরের মালিক।

আপনার মন্তব্য লিখুন

লেখকের সম্পর্কে

Shahriar Hossain

রাজনীতিতে নাম লেখাতে যাচ্ছেন সানিয়া মির্জা

লবণ নিয়ে গুজব”যশোরের বাজারে হঠাৎ লবন কেনার হিড়িক

প্রকাশের সময় : ০৭:১৫:২৮ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২০ নভেম্বর ২০১৯
আলহাজ্ব আব্দুল লতিফ :=

লবণ নিয়ে গুজবযশোরের বাজারে হঠাৎ লবন কেনার হিড়িক পড়েছে। যে যেভাবে পারছেন একাধিক প্যাকেট লবণ না কিনে বাড়িতে ফিরছেন না। বধূ থেকে শুরু করে ছেলে, বুড়োরা বাজারমুখো হয়েছেন লবণ কিনতে। যে দোকানে দিনে ১০ প্যাকেট লবণ বিক্রি হতো না সেই দোকানেই এক ঘণ্টায় বিক্রি হয়েছে কয়েশ’ প্যাকেট। বাজারে লবণ সংকট গুজব ছড়িয়ে পড়ায় এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। কয়েকটি এলাকা থেকে খবর পাওয়া গেছে গ্রামাঞ্চলের দোকানগুলোতে বিক্রেতারা লবণ বিক্রি বন্ধ রেখেছেন। কোনো দোকানে এক থেকে দেড়শ টাকা কেজিতে লবণ বিক্রি করতে দেখা গেছে। তবে বাজারে পর্যাপ্ত লবণ রয়েছে এবং ঘাটতি হওয়ার কোনো কারণ নেই বলে জানিয়েছে শিল্প মন্ত্রণালয়। উৎপাদনকারী পাঁচটি প্রতিষ্ঠান থেকেও জানানো হয়েছে তাদের হাতে পর্যাপ্ত লবণ রয়েছে, সংকটের বিষয়টি সম্পূর্ণ গুজব। বিকেল থেকে সন্ধ্যে পর্যন্ত যশোর বড়ো বাজারে সরেজমিনে লবণের জন্যে মানুষকে উদভ্রান্তের মতো দৌড়াদৌড়ি করতে দেখা যায়। এক দোকান থেকে মানুষ ছুটছে আর এক দোকানে। যে যা পারছে বেশি বেশি লবণ কিনে ফিরছেন। ক্রেতাদের মোটরসাইকেল, বাইসাইকেল, রিকশা, ভ্যান, প্যাকেটে করে বস্তা বস্তা লবণ নিয়ে বাড়ি ফিরতে দেখা গেছে। অনেকে লবণের বস্তা সঠিকভাবে না নিতে পেরে রাস্তায়ও ফেলে ফাটিয়ে ফেলেছেন। বাজারের মুটেরা একের পর এক গুদাম থেকে লবণ নিয়ে আসছেন আর মুহুর্তেই কর্পূরের মতো দোকান থেকে হাওয়া হয়ে যাচ্ছে। কয়েকটি ঘটনায় এক মুটের মাথার লবণের বস্তা কাড়াকাড়ি করতে দেখা যায়। এই সুযোগে দোকানিরা প্রতি প্যাকেট লবণ পাঁচ টাকা বাড়িয়ে দেয়। গ্রামাঞ্চলে এই পরিস্থিতি আরও খারাপ। শংকরপুর গোলপাতার মসজিদ এলাকার কয়েকটি দোকানে লবণ বিক্রি বিকেল থেকেই বন্ধ হয়ে যায়। স্থানীয়দের অভিযোগ দোকানিরা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে। দাম বাড়লে তারা বিক্রি শুরু করবে। দু’টো দোকানে সন্ধ্যায় লবণ বিক্রি করা হয় প্রতি প্যাকেট একশ টাকায়।

মঙ্গলবার দুপুরের পর থেকেই টেলিভিশন চ্যানেল আর অনলাইন মিডিয়াগুলোতে একের পর এক ব্রেকিং দিয়ে জানানো হয় গুজবে পড়ে ঢাকায় লবণ বিক্রি বেড়ে গেছে। মুদি দোকানগুলোতে মানুষের উপচেপড়া ভিড়ের ফুটেজ ও ছবি দিয়ে মিডিয়াগুলো জানাতে থাকে সংকটের গুজবে আতঙ্কিত ক্রেতারা একসাথে একাধিক প্যাকেট লবণ কিনছেন। চাহিদা মেটাতে দোকানিরা হিমশিম খাচ্ছেন। এর রেশ পড়ে যশোরের বাজারেও। মুহুর্তেই তা সর্বত্র ভাইরাল হয়ে যায়। এক সময় গুজবটি আতঙ্কে পরিণত হয়। লবণ সংকটের আশংকায় সাধারণ মানুষ দ্রুত লবণের খোঁজে বের হন। ক্রমেই তা চরম আকার ধারণ করে। বিভিন্ন স্থান থেকে গ্রামের কাগজ দপ্তরে ফোন আসতে থাকে পরিস্থিতি জানার জন্যে। স্থানীয় বাজারে লবণের দাম বেড়ে গেছে বলেও জানান কেউ কেউ। যশোর সদরের আরবপুরসহ কয়েকটি এলাকা থেকে ফোন করে জানানো হয় স্থানীয় দোকানিরা লবণ বিক্রি বন্ধ করে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে। বাড়ি থেকে নারীসহ অন্যরা গুজব শুনে দোকানে যেয়ে ফিরে এসেছে।ক্রেতাদের সাথে আলোচনা করে জানা গেছে, তারা শুনেছেন লবণের দাম কেজি প্রতি একশ টাকা ছাড়িয়ে যাবে। এ আশঙ্কায় তারা বাড়তি লবণ কিনে রাখছেন। কিন্তু এটা যে ¯্রফে গুজব-এমন কথায় বিশ্বাস স্থাপন করতে পারছেন না কেউ। ক্রেতাদের ভাষ্য পেঁয়াজ নিয়েও মন্ত্রীরা গুজব, দাম কমবে, কোনো সংকট নেই ইত্যাদি কথা বলেছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত জনগণকে আড়াইশ টাকার ওপরে কেজিতে পেঁয়াজ কিনতে হয়েছে। এদিকে, লবণের কোনো ঘাটতি নেই এবং দাম বৃদ্ধির খবর সম্পূর্ণ গুজব উল্লেখ করে বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে শিল্প মন্ত্রণালয়। বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, দেশে বর্তমানে সাড়ে ৬ লাখ মেট্রিক টনের বেশি ভোজ্যলবণ মজুদ রয়েছে। এর মধ্যে কক্সবাজার ও চট্টগ্রামের লবণচাষিদের কাছে চার লাখ পাঁচ হাজার মেট্রিক টন এবং বিভিন্ন লবণ মিলের গুদামে দু’লাখ ৪৫ হাজার মেট্রিক টন লবণ মজুদ রয়েছে।শিল্প মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, সারাদেশে বিভিন্ন লবণ কোম্পানির ডিলার, পাইকারি ও খুচরা বিক্রেতাদের কাছে পর্যাপ্ত পরিমাণে লবণ মজুদ রয়েছে। পাশাপাশি চলতি নভেম্বর মাস থেকে লবণের উৎপাদন মৌসুম শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যে কক্সবাজার জেলার কুতুবদিয়া ও মহেশখালী উপজেলায় উৎপাদিত নতুন লবণও বাজারে আসতে শুরু করেছে।দেশে প্রতি মাসে ভোজ্যলবণের চাহিদা কমবেশি এক লাখ মেট্রিক টন। অন্যদিকে, লবণের মজুদ আছে সাড়ে ছয় লাখ মেট্রিক টন। সে হিসাবে লবণের কোনো ধরনের ঘাটতি বা সংকট হওয়ার প্রশ্নই ওঠে না।বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, একটি স্বার্থান্বেষী মহল লবণের সংকট রয়েছে মর্মে গুজব রটনা করে অধিক মুনাফা লাভের আশায় দাম অস্থিতিশীল করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে বলে প্রতীয়মান হচ্ছে। এ ধরনের গুজবে বিভ্রান্ত না হওয়ার জন্য শিল্প মন্ত্রণালয় সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করছে।লবণ সংক্রান্ত বিষয়ে তদারকির জন্য শিল্প মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশনের (বিসিক) প্রধান কার্যালয়ে একটি কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। এর নম্বর হচ্ছে: ০২-৯৫৭৩৫০৫ (ল্যান্ড ফোন), ০১৭১৫২২৩৯৪৯ (সেল ফোন)।এসংক্রান্ত যেকোনো তথ্যের প্রয়োজনে কন্ট্রোল রুমের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য অনুরোধ করেছে মন্ত্রণালয়।লবণের বাজারের শীর্ষ প্রতিষ্ঠান এসিআই সল্ট বলছে, লবণের কোনো ঘাটতি নেই। তারা লবণের দাম কোনোভাবেই বাড়ায়নি এবং বাড়াবে না। বরং নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে বেশি কেউ এসিআইয়ের লবণ বিক্রি করছে কি না, সেটা তারা নজরে রাখবে।

দাম বৃদ্ধির গুজবে বাঁকড়ার সাপ্তাহিক হাটের হাটুরেরা মাছ তরকারি কেনা বাদ দিয়ে লাইনে দাঁড়িয়ে লবণ কিনেছেন। এক একজন হাটুরে ১৫ থেকে ২০ কেজি কেউ কেউ আরও বেশি লবণ কিনে বাড়ি ফিরেছেন। এই সুযোগে দোকানিরা লবণের দামও বাড়িয়ে দিয়েছে। ১৫ টাকার প্রতিকেজি লুজ লবণ বিক্রি হয়েছে ৩০ টাকা আর ৩৮ টাকার প্যাকেট লবণ বিক্রি হয়েছে ৬০ টাকা। খবর পেয়ে বাঁকড়া ফাড়ির ইনচার্জ মেজবাহ উদ্দিন আহমেদ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। এসময় তিনি বেশি দামে লবণ বিক্রির বিরুদ্ধে দোকানিদের হুশিয়ারী করে দেন। কথা না শোনায় তিনি দু’জনকে আটকও করেছিল। পরে ভুল স্বীকার করায় তাকে ছেড়ে দেয়া হয়

এসিল্যান্ড ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ইফতেখার ইউনুস বলেছেন, প্রচুর অভিযোগ আসছে অতিরিক্ত দামে লবণ বিক্রির। তবে সরকার বা বাণিজ্য মন্ত্রণালয় লবণের মুল্য বৃদ্ধি করেনি। মুনাফালোভী কিছু ব্যবসায়ী বাজার মুল্যের চেয়ে অতিরিক্ত দামে লবণ বিক্রি করছে এমন সত্যতা মিলেছে। তাদের জরিমানা করা হয়েছে বলে জানান। এমন দু’জন হলেন অঞ্জন সাহা স্টোর ও মোল্লা স্টোরের মালিক।