শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

বিরাজনীতিকরণের ষড়যন্ত্র চলছে: মির্জা ফখরুল

আলহাজ্ব হাফিজুর রহমান :=

দেশে বিরাজনীতিকরণের ষড়যন্ত্র চলছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, খালেদা জিয়াকে আটক করে রাখার পেছনে গভীর ষড়যন্ত্র রয়েছে। সেই ষড়যন্ত্রটি হচ্ছে বাংলাদেশকে বিরাজনীতিকরণ। তাকে (খালেদা জিয়া) যদি বাইরে রাখা হয়, তাহলে তারা (আওয়ামী লীগ) ক্ষমতায় থাকতে পারবে না। ক্ষমতাকে চিরস্থায়ী করার জন্যই তারা দেশনেত্রীকে আটক করে রেখেছে। মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে বুধবার মহানগর নাট্যমঞ্চে এক আলোচনা সভায় তিনি এ সব কথা বলেন। বিএনপি সভার আয়োজন করে।

মির্জা ফখরুল বলেন, মানবসভ্যতার ইতিহাস বলে, অন্যায়-অবিচার, দুর্নীতি-দমননীতি চালিয়ে কিছু দিনের জন্য ক্ষমতায় থাকা যায়; চিরকালের জন্য না। অতীতে যেভাবে স্বৈরাচারকে পরাজিত করা হয়েছে, অতীতে যেভাবে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীকে এখান থেকে সরিয়ে দেয়া হয়েছে; ঠিক একইভাবে আজকের হানাদার বাহিনী, দখলদার বাহিনী আওয়ামী লীগকে আন্দোলনের মাধ্যমে সরিয়ে দেয়া হবে। এরপর জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করে দেশনেত্রীকে মুক্ত করা হবে। আজ বিজয় দিবসের আলোচনায় এই হোক আমাদের শপথ। কারও নাম উল্লেখ না করে মির্জা ফখরুল বলেন, ওপরের নির্দেশে আজ সব স্তব্ধ হয়ে যায়। ওপরের নির্দেশে বিচারক খালেদা জিয়ার রায় দেন। বিচার বিভাগ স্বাধীন নয়। ৪৮ বছর পর আজ আমাদের এ কথা বলতে হচ্ছে। আওয়ামী লীগ মানুষের স্বাধীনতা বিশ্বাস করে না। শুধু তাদের উন্নয়নে বিশ্বাস করে।

দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব নিয়ে আমরা চিন্তিত। মেরুদণ্ডহীন সরকার কোনো প্রতিবাদ করতে পারছে না। এনআরসির মাধ্যমে ভারত বাংলাদেশকে বিপদগ্রস্ত করছে। সরকার কোনো প্রতিবাদ করতে পারছে না।

স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, আমাদের প্রবীণ নেতারা বলছিলেন, জুনিয়র নেতারা প্রতিযোগিতা করে সমানে বক্তৃতা দিলেন, এখন সিনিয়র নেতারা বক্তৃতা দেয়ার সময় পাচ্ছেন না। গতকাল (মঙ্গলবার) আমি, মহাসচিব, গয়েশ্বর রায়, মোশাররফ হোসেনসহ স্ট্যান্ডিং কমিটির সদস্যরা একটা পরীক্ষা করেছিলাম। সেই পরীক্ষায়ও আমাদের জুনিয়র নেতারা ফেল করেছেন। খেয়াল করেছেন নিশ্চয় মঙ্গলবার ট্রাকের ওপরে ওরা মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে। আর আমরা নিচে দাঁড়িয়ে আছি। বেয়াদবির একটা সীমা থাকা দরকার। এই দলে এই ধরনের বেয়াদবি যতক্ষণ পর্যন্ত বন্ধ না হবে, নিয়মকানুন না মানা হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত আপনারা কোনো আন্দোলন করতে পারবেন না।

দলটির স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, আমরা ভারতকে শত্রু মনে করি না। কিন্তু তাদের কথাবার্তায় মনে হয় তারা আমাদের শত্র“ মনে করে। তারা বাংলাদেশে শুধু আওয়ামী লীগের বন্ধু। তিনি বলেন, এনআরসি ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয় নয়, অন্য দেশের জাতীয় স্বার্থে আঘাত লাগলে অভ্যন্তরীণ বিষয় বলে চাপা দেয়া যাবে না। আমাদের প্রতিবাদ করতে হবে।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সভাপতিত্বে ও প্রচার সম্পাদক শহীদউদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, সহ-প্রচার সম্পাদক আমিরুল ইসলাম খান আলিমের পরিচালনায় আলোচনা সভায় স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মিজানুর রহমান মিনু, আবদুস সালাম, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, হাবিব-উন-নবী খান সোহেল, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কাজী আবুল বাশার, মহানগর উত্তরের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এজিএম শামছুল হক প্রমুখ বক্তব্য দেন।

এ ছাড়া অঙ্গসংগঠনের নেতাদের মধ্যে যুবদলের সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক আবদুল কাদির ভূঁইয়া জুয়েল, মুক্তিযোদ্ধা দলের সাধারণ সম্পাদক সাদেক খান, মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক সুলতানা রহমান, ছাত্রদলের সভাপতি ফজলুর রহমান খোকন প্রমুখ বক্তব্য দেন।

আপনার মন্তব্য লিখুন

লেখকের সম্পর্কে

Shahriar Hossain

রাজনীতিতে নাম লেখাতে যাচ্ছেন সানিয়া মির্জা

বিরাজনীতিকরণের ষড়যন্ত্র চলছে: মির্জা ফখরুল

প্রকাশের সময় : ১০:০১:৩৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০১৯
আলহাজ্ব হাফিজুর রহমান :=

দেশে বিরাজনীতিকরণের ষড়যন্ত্র চলছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, খালেদা জিয়াকে আটক করে রাখার পেছনে গভীর ষড়যন্ত্র রয়েছে। সেই ষড়যন্ত্রটি হচ্ছে বাংলাদেশকে বিরাজনীতিকরণ। তাকে (খালেদা জিয়া) যদি বাইরে রাখা হয়, তাহলে তারা (আওয়ামী লীগ) ক্ষমতায় থাকতে পারবে না। ক্ষমতাকে চিরস্থায়ী করার জন্যই তারা দেশনেত্রীকে আটক করে রেখেছে। মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে বুধবার মহানগর নাট্যমঞ্চে এক আলোচনা সভায় তিনি এ সব কথা বলেন। বিএনপি সভার আয়োজন করে।

মির্জা ফখরুল বলেন, মানবসভ্যতার ইতিহাস বলে, অন্যায়-অবিচার, দুর্নীতি-দমননীতি চালিয়ে কিছু দিনের জন্য ক্ষমতায় থাকা যায়; চিরকালের জন্য না। অতীতে যেভাবে স্বৈরাচারকে পরাজিত করা হয়েছে, অতীতে যেভাবে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীকে এখান থেকে সরিয়ে দেয়া হয়েছে; ঠিক একইভাবে আজকের হানাদার বাহিনী, দখলদার বাহিনী আওয়ামী লীগকে আন্দোলনের মাধ্যমে সরিয়ে দেয়া হবে। এরপর জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করে দেশনেত্রীকে মুক্ত করা হবে। আজ বিজয় দিবসের আলোচনায় এই হোক আমাদের শপথ। কারও নাম উল্লেখ না করে মির্জা ফখরুল বলেন, ওপরের নির্দেশে আজ সব স্তব্ধ হয়ে যায়। ওপরের নির্দেশে বিচারক খালেদা জিয়ার রায় দেন। বিচার বিভাগ স্বাধীন নয়। ৪৮ বছর পর আজ আমাদের এ কথা বলতে হচ্ছে। আওয়ামী লীগ মানুষের স্বাধীনতা বিশ্বাস করে না। শুধু তাদের উন্নয়নে বিশ্বাস করে।

দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব নিয়ে আমরা চিন্তিত। মেরুদণ্ডহীন সরকার কোনো প্রতিবাদ করতে পারছে না। এনআরসির মাধ্যমে ভারত বাংলাদেশকে বিপদগ্রস্ত করছে। সরকার কোনো প্রতিবাদ করতে পারছে না।

স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, আমাদের প্রবীণ নেতারা বলছিলেন, জুনিয়র নেতারা প্রতিযোগিতা করে সমানে বক্তৃতা দিলেন, এখন সিনিয়র নেতারা বক্তৃতা দেয়ার সময় পাচ্ছেন না। গতকাল (মঙ্গলবার) আমি, মহাসচিব, গয়েশ্বর রায়, মোশাররফ হোসেনসহ স্ট্যান্ডিং কমিটির সদস্যরা একটা পরীক্ষা করেছিলাম। সেই পরীক্ষায়ও আমাদের জুনিয়র নেতারা ফেল করেছেন। খেয়াল করেছেন নিশ্চয় মঙ্গলবার ট্রাকের ওপরে ওরা মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে। আর আমরা নিচে দাঁড়িয়ে আছি। বেয়াদবির একটা সীমা থাকা দরকার। এই দলে এই ধরনের বেয়াদবি যতক্ষণ পর্যন্ত বন্ধ না হবে, নিয়মকানুন না মানা হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত আপনারা কোনো আন্দোলন করতে পারবেন না।

দলটির স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, আমরা ভারতকে শত্রু মনে করি না। কিন্তু তাদের কথাবার্তায় মনে হয় তারা আমাদের শত্র“ মনে করে। তারা বাংলাদেশে শুধু আওয়ামী লীগের বন্ধু। তিনি বলেন, এনআরসি ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয় নয়, অন্য দেশের জাতীয় স্বার্থে আঘাত লাগলে অভ্যন্তরীণ বিষয় বলে চাপা দেয়া যাবে না। আমাদের প্রতিবাদ করতে হবে।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সভাপতিত্বে ও প্রচার সম্পাদক শহীদউদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, সহ-প্রচার সম্পাদক আমিরুল ইসলাম খান আলিমের পরিচালনায় আলোচনা সভায় স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মিজানুর রহমান মিনু, আবদুস সালাম, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, হাবিব-উন-নবী খান সোহেল, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কাজী আবুল বাশার, মহানগর উত্তরের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এজিএম শামছুল হক প্রমুখ বক্তব্য দেন।

এ ছাড়া অঙ্গসংগঠনের নেতাদের মধ্যে যুবদলের সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক আবদুল কাদির ভূঁইয়া জুয়েল, মুক্তিযোদ্ধা দলের সাধারণ সম্পাদক সাদেক খান, মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক সুলতানা রহমান, ছাত্রদলের সভাপতি ফজলুর রহমান খোকন প্রমুখ বক্তব্য দেন।