শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

লালমনিরহাট জেলায় হাঁড় কাঁপানো শীতে জনজীবন বিপর্যস্ত

মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তাফা :  লালমনিরহাট প্রতিনিধিঃ=

উত্তরের সীমান্তবর্তী লালমনিরহাট জেলায় হাঁড় কাঁপানো শীতে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। গত ২ দিন ধরে ঘন কুয়াশার পাশাপাশি মৃদু শৈত্য প্রবাহ অব্যাহত থাকায় শীতে কাঁপছে জেলার কয়েক লাখ মানুষ।
প্রতিনিয়ত শীতের তীব্রতা সহ্যের বাইরে চলে যাচ্ছে। গতকাল থেকে সূর্যের দেখা মেলেনি এ জেলায়। ঘন কুয়াশার কারণে জেলার যানবাহন চলাচল মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। যতই দিন যাচ্ছে শীতের তীব্রতা ততই বাড়ছে।প্রচন্ড শীতের কারণে নিউমোনিয়া, অ্যাজমা, কোল্ড এলার্জি ও ডায়রিয়াসহ বিভিন্ন ঠান্ডাজনিত রোগ দেখা দিয়েছে। সব চেয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়েছে তিস্তা ও ধরলা নদীর চরাঞ্চলের লোকজন।শীতের কারণে বিপাকে পড়েছে দিন মজুর শ্রেণীর লোকজন। শীতের কারণে বাইরে কাজ করতে যেতে না পাওয়ায় তাদের ঘরে খাবার সংকট দেখা দিয়েছে। অন্য দিকে শীত বস্ত্রের অভাবে কষ্ট করছে।লালমনিরহাটের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, ৪ দিকে তিস্তা ও ধরলা নদী বেস্টিত জেলায় শীত মওসুমে শীতের তীব্রতা অন্য যে কোন জেলার চেয়ে বেশি।
বিগত বছরের তুলনায় এবার অনেক আগে থেকেই শীত জেঁকে বসেছে। স্থলভাগের তুলনায এই শীতে চরাঞ্চলগুলোর মানুষের দুর্ভোগ সবচেয়ে বেশি। জনবসতিপূর্ণ এসব চরের প্রায় শতভাগ মানুষই শীতবস্ত্রহীন।এসব এলাকার মানুষের শীত নিবারনের অবলম্বন বলতে ধানের খড় কুটোর আগুনের তাপ। শীত নিবারন হয়না বলে চরের ভূমিহীনরা ঘরের দুয়ারে খড়-গোবরের মুঠিয়া জ্বালিয়ে রাখেন সারারাত। রাতে দুই কাঁথায় তাদের শীত কাটে। ছেলেমেয়েদের পরনে গরম কাপড় নেই।
একদিকে অভাব-অনটন, অন্য দিকে শীত বস্ত্রহীন দিনরাত অতিবাহিত করছে এ জেলার নিম্ন আয়ের মানুষ।বিদ্যালয় গুলোতে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি কমে গেছে। গবাদি পশুকেও প্রচন্ড শীতের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। অনেক স্থানে গবাদি পশুর বাচ্চা মরে যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে।সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা জানান, জেলায় সরকারি ও বেসরকারি ভাবে যে শীতবস্ত্র বিতরণ করা হয়েছে যা প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম। তাই প্রশাসনের পাশাপাশি সমাজের বিত্তবান মানুষের শীত বস্ত্র নিয়ে এগিয়ে আসা প্রয়োজন।জেলার বুড়িমারী স্থল বন্দর সুত্রে জানা গেছে, ওই শুল্ক ষ্টেশন থেকে প্রতিদিন আমদানীকৃত কমলা, আপেল, আঙুর ও পাথরসহ ভারত থেকে আমদানিকৃত বিভিন্ন পন্য বহনকারী শত শত ট্রাকগুলো পড়েছে আরো দুর্বিপাকে।ঘন কুয়াশার কারনে গন্তব্য যেতে কয়েক ঘন্টা সময় বেশি লাগছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।এদিকে লালমনিরহাট বিভাগীয় রেলওয়ে কন্ট্রোলরুম সূত্রে জানা গেছে, ঘন কুয়াশার কারনে লালমনিরহাট থেকে ছেড়ে যাওয়া ও ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা আন্তনগর ও লোকালসহ সব টেন ঝুকিপূর্ণ অবস্থায় চলাচল করছে।লালমনিরহাটের জেলা প্রশাসক আবু জাফর জানান, শীতার্ত মানুষের জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণ শীতবস্ত্র রয়েছে। পাঁচটি উপজেলার নির্বাহী অফিসাররা শীতার্ত মানুষের মাঝে কম্বল বিতরণ শুরু করেছেন।রংপুর আবহাওয়া অফিস থেকে জানানো হয়েছে, বর্তমানে লালমনিরহাটের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১০. ডিগ্রি সেলসিয়াস। তাপমাত্রা ধীরে ধীরে কমতে পারে।

আপনার মন্তব্য লিখুন

লেখকের সম্পর্কে

Shahriar Hossain

রাজনীতিতে নাম লেখাতে যাচ্ছেন সানিয়া মির্জা

লালমনিরহাট জেলায় হাঁড় কাঁপানো শীতে জনজীবন বিপর্যস্ত

প্রকাশের সময় : ০৬:৩১:৩২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২০ ডিসেম্বর ২০১৯
মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তাফা :  লালমনিরহাট প্রতিনিধিঃ=

উত্তরের সীমান্তবর্তী লালমনিরহাট জেলায় হাঁড় কাঁপানো শীতে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। গত ২ দিন ধরে ঘন কুয়াশার পাশাপাশি মৃদু শৈত্য প্রবাহ অব্যাহত থাকায় শীতে কাঁপছে জেলার কয়েক লাখ মানুষ।
প্রতিনিয়ত শীতের তীব্রতা সহ্যের বাইরে চলে যাচ্ছে। গতকাল থেকে সূর্যের দেখা মেলেনি এ জেলায়। ঘন কুয়াশার কারণে জেলার যানবাহন চলাচল মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। যতই দিন যাচ্ছে শীতের তীব্রতা ততই বাড়ছে।প্রচন্ড শীতের কারণে নিউমোনিয়া, অ্যাজমা, কোল্ড এলার্জি ও ডায়রিয়াসহ বিভিন্ন ঠান্ডাজনিত রোগ দেখা দিয়েছে। সব চেয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়েছে তিস্তা ও ধরলা নদীর চরাঞ্চলের লোকজন।শীতের কারণে বিপাকে পড়েছে দিন মজুর শ্রেণীর লোকজন। শীতের কারণে বাইরে কাজ করতে যেতে না পাওয়ায় তাদের ঘরে খাবার সংকট দেখা দিয়েছে। অন্য দিকে শীত বস্ত্রের অভাবে কষ্ট করছে।লালমনিরহাটের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, ৪ দিকে তিস্তা ও ধরলা নদী বেস্টিত জেলায় শীত মওসুমে শীতের তীব্রতা অন্য যে কোন জেলার চেয়ে বেশি।
বিগত বছরের তুলনায় এবার অনেক আগে থেকেই শীত জেঁকে বসেছে। স্থলভাগের তুলনায এই শীতে চরাঞ্চলগুলোর মানুষের দুর্ভোগ সবচেয়ে বেশি। জনবসতিপূর্ণ এসব চরের প্রায় শতভাগ মানুষই শীতবস্ত্রহীন।এসব এলাকার মানুষের শীত নিবারনের অবলম্বন বলতে ধানের খড় কুটোর আগুনের তাপ। শীত নিবারন হয়না বলে চরের ভূমিহীনরা ঘরের দুয়ারে খড়-গোবরের মুঠিয়া জ্বালিয়ে রাখেন সারারাত। রাতে দুই কাঁথায় তাদের শীত কাটে। ছেলেমেয়েদের পরনে গরম কাপড় নেই।
একদিকে অভাব-অনটন, অন্য দিকে শীত বস্ত্রহীন দিনরাত অতিবাহিত করছে এ জেলার নিম্ন আয়ের মানুষ।বিদ্যালয় গুলোতে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি কমে গেছে। গবাদি পশুকেও প্রচন্ড শীতের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। অনেক স্থানে গবাদি পশুর বাচ্চা মরে যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে।সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা জানান, জেলায় সরকারি ও বেসরকারি ভাবে যে শীতবস্ত্র বিতরণ করা হয়েছে যা প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম। তাই প্রশাসনের পাশাপাশি সমাজের বিত্তবান মানুষের শীত বস্ত্র নিয়ে এগিয়ে আসা প্রয়োজন।জেলার বুড়িমারী স্থল বন্দর সুত্রে জানা গেছে, ওই শুল্ক ষ্টেশন থেকে প্রতিদিন আমদানীকৃত কমলা, আপেল, আঙুর ও পাথরসহ ভারত থেকে আমদানিকৃত বিভিন্ন পন্য বহনকারী শত শত ট্রাকগুলো পড়েছে আরো দুর্বিপাকে।ঘন কুয়াশার কারনে গন্তব্য যেতে কয়েক ঘন্টা সময় বেশি লাগছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।এদিকে লালমনিরহাট বিভাগীয় রেলওয়ে কন্ট্রোলরুম সূত্রে জানা গেছে, ঘন কুয়াশার কারনে লালমনিরহাট থেকে ছেড়ে যাওয়া ও ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা আন্তনগর ও লোকালসহ সব টেন ঝুকিপূর্ণ অবস্থায় চলাচল করছে।লালমনিরহাটের জেলা প্রশাসক আবু জাফর জানান, শীতার্ত মানুষের জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণ শীতবস্ত্র রয়েছে। পাঁচটি উপজেলার নির্বাহী অফিসাররা শীতার্ত মানুষের মাঝে কম্বল বিতরণ শুরু করেছেন।রংপুর আবহাওয়া অফিস থেকে জানানো হয়েছে, বর্তমানে লালমনিরহাটের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১০. ডিগ্রি সেলসিয়াস। তাপমাত্রা ধীরে ধীরে কমতে পারে।