নুরুজ্জামান লিটন:=
নতুন বছরের শুরুতেই মন্ত্রিসভায় রদবদলের ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে। সরকারের একাধিক দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে প্রধানমন্ত্রী যেকোনো সময় মন্ত্রিসভার রদবদল করতে পারেন। এমনকি মন্ত্রিসভার রদবদলের জন্য ইতোমধ্যেই তিনি প্রস্তুতি গ্রহণ করেছেন।
সরকারের দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে, দলের কাউন্সিল অধিবেশনের জন্য মন্ত্রিসভার রদবদল বিলম্বিত হয়েছিল। মন্ত্রিসভার রদবদলে বেশ কয়েকজন প্রতিমন্ত্রী এবং উপমন্ত্রী রয়েছেন যারা গত মেয়াদে সুষ্ঠু ভাবে নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছেন এবং যারা দলের কাউন্সিলের পদ থেকে বঞ্চিত হয়েছেন বা বিভিন্ন পদ থেকে যাদের সরিয়ে দেয়া হয়েছে তাদের পদোন্নতি হতে পারে।
সরকারের দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে, সরকারের নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী পূর্ণ মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পেতে পারেন। এছাড়াও আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক এবং ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি এনামুল হক শামীম উপমন্ত্রী থেকে প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পেতে পারেন বলে একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করেছে।
শিক্ষা উপমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করা মহিবুল চৌধুরী নওফেলও উপমন্ত্রী থেকে প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পেতে পারেন বলে একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র আভাস দিয়েছে।
এছাড়া মন্ত্রিসভায় যে সমস্ত মন্ত্রী এখন পর্যন্ত তেমন কোনো সাফল্য দেখাতে পারেননি বা দায়িত্ব পালনে যোগ্যতার পরিচয় দিতে পারেননি তাদের জন্য দুইটি বিকল্প চিন্তা করা হচ্ছে বলে সরকারের একটি সূত্রে জানা গেছে।
প্রথম বিকল্প চিন্তা হলো তাদেরকে সরিয়ে অপেক্ষাকৃত কম গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেয়া। আর দ্বিতীয় বিকল্প চিন্তা হলো তাদের স্থানে একজন করে প্রতিমন্ত্রীকে দায়িত্ব দেয়া। যাতে মন্ত্রণালয়ের কাজে গতি আসে। বিশেষ করে বাণিজ্য, অর্থ ও খাদ্য মন্ত্রণালয়ে একজন করে প্রতিমন্ত্রী দেওয়ার বিষয়টি বিবেচনা করা হচ্ছে বলে সরকারের একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র আভাস দিয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, আওয়ামী লীগের কাউন্সিলে যে মন্ত্রীদেরকে দলের পদ থেকে বাদ দেয়া হয়েছে তাদের ব্যাপারে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণ করা হয়েছে। সরকার মনে করছে তাঁরা যেন সরকারের কাজে এবং মন্ত্রণালয়ের কাজে আরো গতি আনতে পারে সেজন্যই তাদেরকে দলের সাংগঠনিক দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেয়া হয়েছে এবং এদের অধিকাংশই তরুণ এবং প্রথমবারের মন্ত্রী। একমাত্র বেগম মুন্নুজান সুফিয়ান ছাড়া বাকী সবাই প্রথমবার মন্ত্রিসভার সদস্য হয়েছেন। কাজেই মন্ত্রিসভার কাজগুলো বোঝা, মন্ত্রণালয়ের কাজগুলোর জন্য সময় দেবার বিষয়টি বিবেচনায় রেখেই দলের নেতৃত্বে রাখা হয়নি। এজন্যই মন্ত্রিসভার রদবদলে তাদের পদন্নোতির সম্ভাবনা রয়েছে। আর যারা পূর্ণমন্ত্রী থেকে দলের দায়িত্ব পাননি, যেমন শ ম রেজাউল করিম বা টিপু মুন্সী- তাদের ক্ষেত্রে কি করা হবে তা এখনো অনিশ্চিত। তবে পেঁয়াজ নিয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ব্যর্থতা নিয়ে বাণিজ্য মন্ত্রী টিপু মুন্সীর সরে যাবার গুঞ্জন রয়েছে। তবে তিনি একেবারে মন্ত্রিসভা থেকে বাদ পড়বেন এমনটা মনে করা হচ্ছে না। বরং মন্ত্রিসভায় তাকে অন্য কোন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেয়া হতে পারে বলে সরকারের একাধিক সূত্র আভাস দিচ্ছে।
তবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, মন্ত্রিসভার রদবদল সম্পুর্ণভাবে প্রধানমন্ত্রীর এখতিয়ারিধীন বিষয়। তিনি কাকে কখন মন্ত্রিসভায় আনবেন বা বাদ দিবেন এটা তাঁর একান্ত বিষয়। তবে আওয়ামী লীগের একাধিক সূত্র বলছে, শেখ হাসিনা এরকম ইঙ্গিত দিয়েই রেখেছিলেন যে, কাউন্সিল অধিবেশনের পরে মন্ত্রিসভায় একটি রদবদল করা হবে, আর এই রদবদলের জন্যই তিনি প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে সরকারের একাধিক সূত্র আভাস দিচ্ছে।