শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ইসলামী বিশ্বিবদ্যালয় ছাত্রলীগ দু’গ্রুপের সংঘর্ষে মধ্যরাতে উত্তপ্ত ক্যাম্পাস: আহত ৫

অনি আতিকুর রহমান, ইবি
জুনিয়র কর্তৃক সিনিয়রকে মারধরের ঘটনাকে কেন্দ্র করে মধ্যরাতে সংঘর্ষে জড়িয়েছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের দুই গ্রুপ। এতে অন্তত ৫ জন আহত হয়েছেন। এদের মধ্যে একজনের অবস্থা গুরুতর বলে জানা গেছে। শনিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে ক্যাম্পাসের জিয়া হল মোড় এলাকায় দফায় দফায় এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

প্রত্যদর্শী ও দলীয় সূত্রে, শনিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের জিয়াউর রহমান হলে মার্কেটিং বিভাগের ২০১৫-১৬ শিাবর্ষের জেভিয়ারকে বন্ধু ভেবে ডাক দেন আইন বিভাগের ২০১৮-১৯ শিাবর্ষের কামাল হোসেন। জেভিয়ার সেখানে গেলে ভুল করে ডাকায় দুঃখ প্রকাশ করেন কামাল। দুঃখ প্রকাশ করার পরও চেনা-না চেনা নিয়ে তাদের মধ্যে কিছুটা বাকবিতণ্ডা হয়। এক পর্যায়ে জেভিয়ার কামালকে রুমে দেখা করতে বলেন। পরে কামাল তার বন্ধুদের নিয়ে জিয়া হলে (১২৭) জেভিয়ারের সাথে দেখা করতে গেলে তাদের মধ্যে আবারও বাকবিতণ্ডা হয়। এক পর্যায়ে জেভিয়ারকে মারধর করেন কামাল ও তার সঙ্গীরা। এ ঘটনায় ছাত্রলীগের আলমগীর হোসেন আলো, আবু হেনা, ফয়সাল সিদ্দিকী আরাফাত, বিপুল হোসাইন খান, কামরুল হাসান অনিক, শাহজালাল ইসলাম সোহাগসহ সিনিয়র নেতারা ঘটনাস্থলে এসে বিষয়টি সমাধান করেন।

পরে জিয়া হলের ২০৮ নম্বর রুমে কামাল অবস্থান করছে এমন সংবাদ পেয়ে জেভিয়ার ও তার সঙ্গী ইমতিয়াজ, স্বপ্ন, সজন, আলাল ইবনে জয়, সালমান, হোসাইন, ফারুক সোহেল, হামজা, কাব্য সহ কয়েকজনকে নিয়ে সেখানে যায় এবং কামালকে বের করে দিতে বলে। পরে তাকে না পেয়ে দরজায় ধাক্কাধাক্কি করে এবং জানালায় ভাংচুর করে আসে। পরে পুণরায় সিনিয়র নেতারা এসে তাদের নিয়ে গেলে কামালের সঙ্গীরা আবার জেভিয়ারের বন্ধু ইমতিয়াজের (৪১৫) রুমে গিয়ে কামাল, ওশান, রমজানসহ কয়েকজন ব্যাপক ভাংচুর চালায়।

এসব ঘটনায় দু-গ্রুপের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। পরে জিয়া হল মোড় এলাকায় বঙ্গবন্ধু হল ও সাদ্দাম হোসেন হল থেকে উভয় গ্রুপের নেতাকর্মীরা এসে জড়ো হয়। একপর্যায়ে তাদের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ বেধে যায়। এতে জিয়া হলের সামনের ফাঁকা স্থানে হিমেল চাকমা (হিসাববিজ্ঞান ১৪-১৫) গুরুতর আহত হন। এছাড়াও সেখানে মারধরের শিকার হন রাফসান, রাব্বি, রিয়নসহ কয়েকজন। এসময় উভয় গ্রুপের কর্মীদের হাতে লাঠিসোঠা ও দেশিয় অস্ত্র দেখা যায়।

আহতদের মধ্যে হিমেল চাকমাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।এদিকে ক্যাম্পাসে এই সংঘর্ষের ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টরিয়াল বডির ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে। তারা দাবি করেন, সংঘর্ষের সময় প্রক্টর নিজে ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকলেও একপর্যায়ে তিনি চলে যান। পরে সংঘর্ষ শেষে প্রক্টরিয়াল বডির অন্য সদস্যদের নিয়ে ঘটনাস্থলে আসেন।

ছাত্রলীগনেতা ফয়সাল সিদ্দিকী আরাফাত বলেন, বিষয়টি আমরা মিমাংসা করে দিয়েছি। এখন পরিবেশ শান্ত। আহত হিমেল চাকমার বিষয়ে তিনি জানান, সিটি স্কান রিপোর্ট ভালো। আজ বাড়িতে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে।বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. পরেশ চন্দ্র বর্ম্মন ছাত্রনেতাদের অভিযোগকে অসত্য দাবি করে বলেন, ‘ঘটনার সংবাদ পেয়েই আমরা প্রক্টরিয়াল বডি ঘটনাস্থলে যাই এবং পুলিশকে ইনফর্ম করি। কিন্তু ছাত্রলীগের নেতারা সেখানে উপস্থিত থাকায় তাদেরকেই বিষয়টি সমাধান করে নিতে আমরা উৎসাহিত করেছি।’এ বিষয়ে ইবি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহাঙ্গীর আরিপ বলেন, ‘আমাদের বিষয়টি জানানো হয়েছিল। আমরা ফোর্স নিয়ে প্রধান ফটকের সামনে ছিলাম। পরিস্থিতি অনুকূলে না থাকায় তারা ঘটনাস্থলে যাইনি।’

আপনার মন্তব্য লিখুন

লেখকের সম্পর্কে

Shahriar Hossain

ইসলামী বিশ্বিবদ্যালয় ছাত্রলীগ দু’গ্রুপের সংঘর্ষে মধ্যরাতে উত্তপ্ত ক্যাম্পাস: আহত ৫

প্রকাশের সময় : ০৬:০১:৩৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৩ ফেব্রুয়ারী ২০২০
অনি আতিকুর রহমান, ইবি
জুনিয়র কর্তৃক সিনিয়রকে মারধরের ঘটনাকে কেন্দ্র করে মধ্যরাতে সংঘর্ষে জড়িয়েছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের দুই গ্রুপ। এতে অন্তত ৫ জন আহত হয়েছেন। এদের মধ্যে একজনের অবস্থা গুরুতর বলে জানা গেছে। শনিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে ক্যাম্পাসের জিয়া হল মোড় এলাকায় দফায় দফায় এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

প্রত্যদর্শী ও দলীয় সূত্রে, শনিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের জিয়াউর রহমান হলে মার্কেটিং বিভাগের ২০১৫-১৬ শিাবর্ষের জেভিয়ারকে বন্ধু ভেবে ডাক দেন আইন বিভাগের ২০১৮-১৯ শিাবর্ষের কামাল হোসেন। জেভিয়ার সেখানে গেলে ভুল করে ডাকায় দুঃখ প্রকাশ করেন কামাল। দুঃখ প্রকাশ করার পরও চেনা-না চেনা নিয়ে তাদের মধ্যে কিছুটা বাকবিতণ্ডা হয়। এক পর্যায়ে জেভিয়ার কামালকে রুমে দেখা করতে বলেন। পরে কামাল তার বন্ধুদের নিয়ে জিয়া হলে (১২৭) জেভিয়ারের সাথে দেখা করতে গেলে তাদের মধ্যে আবারও বাকবিতণ্ডা হয়। এক পর্যায়ে জেভিয়ারকে মারধর করেন কামাল ও তার সঙ্গীরা। এ ঘটনায় ছাত্রলীগের আলমগীর হোসেন আলো, আবু হেনা, ফয়সাল সিদ্দিকী আরাফাত, বিপুল হোসাইন খান, কামরুল হাসান অনিক, শাহজালাল ইসলাম সোহাগসহ সিনিয়র নেতারা ঘটনাস্থলে এসে বিষয়টি সমাধান করেন।

পরে জিয়া হলের ২০৮ নম্বর রুমে কামাল অবস্থান করছে এমন সংবাদ পেয়ে জেভিয়ার ও তার সঙ্গী ইমতিয়াজ, স্বপ্ন, সজন, আলাল ইবনে জয়, সালমান, হোসাইন, ফারুক সোহেল, হামজা, কাব্য সহ কয়েকজনকে নিয়ে সেখানে যায় এবং কামালকে বের করে দিতে বলে। পরে তাকে না পেয়ে দরজায় ধাক্কাধাক্কি করে এবং জানালায় ভাংচুর করে আসে। পরে পুণরায় সিনিয়র নেতারা এসে তাদের নিয়ে গেলে কামালের সঙ্গীরা আবার জেভিয়ারের বন্ধু ইমতিয়াজের (৪১৫) রুমে গিয়ে কামাল, ওশান, রমজানসহ কয়েকজন ব্যাপক ভাংচুর চালায়।

এসব ঘটনায় দু-গ্রুপের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। পরে জিয়া হল মোড় এলাকায় বঙ্গবন্ধু হল ও সাদ্দাম হোসেন হল থেকে উভয় গ্রুপের নেতাকর্মীরা এসে জড়ো হয়। একপর্যায়ে তাদের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ বেধে যায়। এতে জিয়া হলের সামনের ফাঁকা স্থানে হিমেল চাকমা (হিসাববিজ্ঞান ১৪-১৫) গুরুতর আহত হন। এছাড়াও সেখানে মারধরের শিকার হন রাফসান, রাব্বি, রিয়নসহ কয়েকজন। এসময় উভয় গ্রুপের কর্মীদের হাতে লাঠিসোঠা ও দেশিয় অস্ত্র দেখা যায়।

আহতদের মধ্যে হিমেল চাকমাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।এদিকে ক্যাম্পাসে এই সংঘর্ষের ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টরিয়াল বডির ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে। তারা দাবি করেন, সংঘর্ষের সময় প্রক্টর নিজে ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকলেও একপর্যায়ে তিনি চলে যান। পরে সংঘর্ষ শেষে প্রক্টরিয়াল বডির অন্য সদস্যদের নিয়ে ঘটনাস্থলে আসেন।

ছাত্রলীগনেতা ফয়সাল সিদ্দিকী আরাফাত বলেন, বিষয়টি আমরা মিমাংসা করে দিয়েছি। এখন পরিবেশ শান্ত। আহত হিমেল চাকমার বিষয়ে তিনি জানান, সিটি স্কান রিপোর্ট ভালো। আজ বাড়িতে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে।বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. পরেশ চন্দ্র বর্ম্মন ছাত্রনেতাদের অভিযোগকে অসত্য দাবি করে বলেন, ‘ঘটনার সংবাদ পেয়েই আমরা প্রক্টরিয়াল বডি ঘটনাস্থলে যাই এবং পুলিশকে ইনফর্ম করি। কিন্তু ছাত্রলীগের নেতারা সেখানে উপস্থিত থাকায় তাদেরকেই বিষয়টি সমাধান করে নিতে আমরা উৎসাহিত করেছি।’এ বিষয়ে ইবি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহাঙ্গীর আরিপ বলেন, ‘আমাদের বিষয়টি জানানো হয়েছিল। আমরা ফোর্স নিয়ে প্রধান ফটকের সামনে ছিলাম। পরিস্থিতি অনুকূলে না থাকায় তারা ঘটনাস্থলে যাইনি।’