নুরুজ্জামান লিটন :=-
সৌ’দি আরবের রা’জধানী জেদ্দায় গত’কাল ইহুদি’বাদী ইসরাইলি একটি পরিকল্পনার বিষয়ে আলোচনার জন্য ইসলামি সহযোগিতা সংস্থা ওআইসি’র
পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের জরুরি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। দখলদার ইসরাইল জর্দান নদীর পশ্চিম তীরকে অধিকৃত ভূখণ্ডে অন্তর্ভুক্ত করার যে ঘোষণা দিয়েছে সে বিষয়ে জেদ্দায় আলোচনা হয়েছে।
ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন নেতানিয়াহু শনিবার এক নির্বাচনী প্রচারণায় বলেছেন, তার দল বিজয়ী হলে এবং নতুন সরকার গঠন করতে পারলে জর্দান নদীর পশ্চিম তীরসহ আরো
গুরুত্বপূর্ণ কিছু এলাকা অধিকৃত ভূখণ্ডের অন্তর্ভুক্ত করা হবে। মুসলিম দেশগুলো নেতানিয়াহুর এ বক্তব্যের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। এর প্রতিক্রিয়ায় সৌদি আরবের আহ্বানে জেদ্দায় ওআইসি’র
বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। পর্যবেক্ষকরা বলছেন, এ বৈঠক কয়েকটি দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ। প্রথমত, এতে প্রমাণিত হয় ফিলিস্তিন এখনো মুসলিম বিশ্বের প্রধান সংকট ও গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। তাই
জর্দান নদীর পশ্চিম তীর এলাকাকে দখল করে নেয়ার যে হুমকি নেতানিয়াহু দিয়েছেন তা এতো সহজ হবে না। সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইব্রাহিম আল এসাফ ওআইসির বৈঠকে বলেছেন, ফিলিস্তিন
সংকট মুসলিম দেশগুলোর প্রধান সমস্যা। দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি হচ্ছে, ওআইসি’র পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে ইসরাইলি অপরাধযজ্ঞ বিশেষ করে জর্দান নদীর
পশ্চিম তীর দখলের হুমকির ব্যাপারে মুসলিম দেশগুলোর নিষ্ক্রিয়তা এবং এ ব্যাপারে আমেরিকার সমর্থনের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। জেদ্দা বৈঠকে তুর্কি পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেভলুত চাভুস ওগ্লু পশ্চিম তীর দখলে নেয়ার জন্য ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর হুমকিকে নির্লজ্জ অভিহিত করে বলেছেন, “কয়েকটি দেশের সমর্থন নিয়ে ইসরাইল বেপরোয়া হয়ে উঠেছে এবং দখলদারিত্ব
চালিয়ে যাচ্ছে। তারা এখন বর্ণবাদের প্রতীকে পরিণত হয়েছে।” তুর্কি পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরো বলেন, “মুসলিম বিশ্ব যদি এ ব্যাপারে শক্ত প্রতিক্রিয়া দেখাতো তাহলে ইসরাইল ও আমেরিকার কোনো পরিকল্পনাই বাস্তবায়িত হতো না এবং তারা এতো ঔদ্ধত্য দেখাতো না।” জেদ্দা বৈঠকের চতুর্থ গুরুত্বপূর্ণ দিকটি হচ্ছে, বৈঠকে অংশগ্রহণকারী দেশগুলো আরো ফিলিস্তিন ভূখণ্ড দখল করে
নেয়ার ইসরাইলি হুমকিকে নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাবের লঙ্ঘন বলে অভিহিত করেছে। সুতরাং এ ব্যাপারে নিরাপত্তা পরিষদের পদক্ষেপ নেয়া জরুরি হয়ে পড়েছে। ওআইসি’র মহাসচিব ইউসুফ বিন আহমাদ বলেছেন, নেতানিয়াহুর এ ঘোষণা নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাবের লঙ্ঘন। পঞ্চম বিষয়টি হচ্ছে, মুসলিম দেশগুলো যদি কেবল বিবৃতি প্রকাশ না কোরে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়
তাহলেই ইসরাইলের বিরুদ্ধে একটা কিছু করতে পারবে। ইসরাইলের বিরুদ্ধে শুধু মৌখিক নিন্দা জানিয়ে কোনো লাভ হবে না। কারণ ইসরাইল এ ধরণের নিন্দা জানানোর তোয়াক্কা করে না। এ অবস্থায় ইসরাইল পশ্চিম তীর দখল করে নেয়ার যে হুমকি দিয়েছে তা মোকাবেলার জন্য মুসলিম দেশগুলোর ঐক্যবদ্ধ অবস্থান নেয়ার কোনা বিকল্প নেই বলে পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন।