শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

‘খালেদার পরিবারের আবেদনের পরবর্তী ব্যবস্থা নেবে আইন মন্ত্রণালয়’

রোকনুজ্জামান রিপন :=

দুর্নীতির দুই মামলায় সাজাপ্রাপ্ত বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি চেয়ে পরিবারের করা আবেদনটি মতামতের জন্য আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।

মন্ত্রী এও জানিয়ে দিয়েছেন, খালেদা জিয়াকে মুক্তি দেয়ার বিষয়টি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রলয়ের এখতিয়ারে নেই। তাকে (খালেদা জিয়া) মুক্তি দিতে হলে আইনের আশ্রয় এবং আদালতে যেতে হবে। এছাড়া খালেদার পরিবারের করা আবেদনটির পরবর্তী ব্যবস্থা নেবে আইন মন্ত্রণালয়।

সোমবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে হজ্জ বুথ সেবা-২০২০ এর উদ্বোধন করতে এসে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন। পাসপোর্ট ও ইমিগ্রেশনের ডিজি সাকিল আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রম ন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোস্তাফা কামাল উদ্দিন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা বিভাগের সচিব শহিদুজ্জামান, ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সচিব নুরুল ইসলাম প্রমুখ এসময় উপস্থিত ছিলেন।

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদার সাময়িক মুক্তি চেয়ে পরিবারের পক্ষ থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আবেদন করা হয়েছে বলে রবিবার সংবাদমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়। তবে এদিন বিষয়টি তার জানা নেই বলে দাবি করেছিলেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘খালেদার পরিবার থেকে একটা আবেদন করেছে। সেই আবেদন অনুযায়ী স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কিন্তু তাকে মুক্তি দেবার ক্ষমতা রাখে না। আমরা আইনমন্ত্রণালয়ে সেই চিঠি পাঠিয়ে দিয়েছি মতামতের জন্য। তারাই পরবর্তী ব্যবস্থা নিবেন।’

তবে খালেদার মুক্তির বিষয়ে সিদ্ধান্তের এখতিয়ার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বলে আইনমন্ত্রীর বক্তব্যের বিষয়ে সাংবাদিকরা দৃষ্টি আকর্ষন করলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘দেখুন আইনের বাইরে তো আইনমন্ত্রী মহোদয় কিছু বলতে পারেন না। আবার আমরাও যেতে পারি না। আমরা যেখানে যা প্রয়োজন তাই করছি।’

‘তার (খালেদা) পরিবারের আবেদনটা আমরা আইনি মতামতের জন্য আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছি। আবারও বলছি, যা কিছুই করতে হয় এটা বিচার বিভাগীয় ব্যবস্থার মাধ্যমে হবে; এর বাইরে কিছু হবে না।’

মুজিববর্ষের সার্বিক নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন করা হলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘অনুষ্ঠান সম্পর্কে রবিবার গণভবন থেকে প্রেসরিলিজ দিয়েছে। ওখানে আমাদের যা যা বলা হয়েছে তাই আমরা ফলো করব। জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটি কালকে এবং ভবিষ্যতে কী করব সব প্রোগ্রাম আপনাদের তারাই জানাবে। এখানে আমাদের কিছু বলার নেই।’

নিরাপত্তা বাহিনী এবং দেশের জনগণ মুজিববর্ষ হৃদয় দিয়ে পালন করতে উম্মুখ হয়েছিল উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘তারা এই মুজিববর্ষটা হৃদয় দিয়ে পালন করবে। যে ভাইরাসের কথা বলা হচ্ছে সেটা আমাদের জনগনকে আটকে রাখতে পারবে না। জনগন যে যার জায়গা থেকে মুজিববর্ষ পালন করবে। যে কোনো কিছুতে আমাদের নিরাপত্তাবাহিনী সবসময় সজাগ থাকে। এই আনন্দের দিনে কেউ কোনো ধরণের বিব্রতকর পরিস্থিতি করার চেষ্টা আমার মনে হয় করবে না বা সাহস করবে না।’

প্রসঙ্গত, দুর্নীতির দুই মামলায় দণ্ডিত ৭৬ বছর বয়সী বিএনপিনেত্রী খালেদা জিয়া দুইবছর ধরে কারাবন্দী। এর মধ্যে এক বছর ধরেই তিনি বঙ্গবন্ধু মেডিকেলে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তার শারীরিক অবস্থা নিয়ে উদ্বেগ জানিয়ে তার মুক্তি দাবি করে আসছে বিএনপি।

খালেদার কারামুক্তির বিষয়ে বিএনপি এবং তার পরিবারের মধ্যে মতপার্থক্য রয়েছে বলে আভাস পাওয়া গেছে। পরিবারের সদস্যদের কাছে বিষয়টি আবেগের এবং যেকোনো মূল্যে তারা খালেদা জিয়াকে মুক্ত করে লন্ডনে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যেতে চান।

অন্যদিকে রাজনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়ে খালেদা জিয়ার মুক্তি চাইছে বিএনপি। তবে এবিষয়ে দলগতভাবে কোনো উদ্যোগ নিতে পারেনি দলটি। তাই বিএনপি এ বিষয়টি আপাতত পরিবারের ওপরই ছেড়ে দিয়েছে বলে জানা গেছে।

আপনার মন্তব্য লিখুন

লেখকের সম্পর্কে

Shahriar Hossain

‘খালেদার পরিবারের আবেদনের পরবর্তী ব্যবস্থা নেবে আইন মন্ত্রণালয়’

প্রকাশের সময় : ০৬:৫৫:৫৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ৯ মার্চ ২০২০
রোকনুজ্জামান রিপন :=

দুর্নীতির দুই মামলায় সাজাপ্রাপ্ত বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি চেয়ে পরিবারের করা আবেদনটি মতামতের জন্য আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।

মন্ত্রী এও জানিয়ে দিয়েছেন, খালেদা জিয়াকে মুক্তি দেয়ার বিষয়টি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রলয়ের এখতিয়ারে নেই। তাকে (খালেদা জিয়া) মুক্তি দিতে হলে আইনের আশ্রয় এবং আদালতে যেতে হবে। এছাড়া খালেদার পরিবারের করা আবেদনটির পরবর্তী ব্যবস্থা নেবে আইন মন্ত্রণালয়।

সোমবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে হজ্জ বুথ সেবা-২০২০ এর উদ্বোধন করতে এসে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন। পাসপোর্ট ও ইমিগ্রেশনের ডিজি সাকিল আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রম ন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোস্তাফা কামাল উদ্দিন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা বিভাগের সচিব শহিদুজ্জামান, ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সচিব নুরুল ইসলাম প্রমুখ এসময় উপস্থিত ছিলেন।

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদার সাময়িক মুক্তি চেয়ে পরিবারের পক্ষ থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আবেদন করা হয়েছে বলে রবিবার সংবাদমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়। তবে এদিন বিষয়টি তার জানা নেই বলে দাবি করেছিলেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘খালেদার পরিবার থেকে একটা আবেদন করেছে। সেই আবেদন অনুযায়ী স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কিন্তু তাকে মুক্তি দেবার ক্ষমতা রাখে না। আমরা আইনমন্ত্রণালয়ে সেই চিঠি পাঠিয়ে দিয়েছি মতামতের জন্য। তারাই পরবর্তী ব্যবস্থা নিবেন।’

তবে খালেদার মুক্তির বিষয়ে সিদ্ধান্তের এখতিয়ার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বলে আইনমন্ত্রীর বক্তব্যের বিষয়ে সাংবাদিকরা দৃষ্টি আকর্ষন করলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘দেখুন আইনের বাইরে তো আইনমন্ত্রী মহোদয় কিছু বলতে পারেন না। আবার আমরাও যেতে পারি না। আমরা যেখানে যা প্রয়োজন তাই করছি।’

‘তার (খালেদা) পরিবারের আবেদনটা আমরা আইনি মতামতের জন্য আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছি। আবারও বলছি, যা কিছুই করতে হয় এটা বিচার বিভাগীয় ব্যবস্থার মাধ্যমে হবে; এর বাইরে কিছু হবে না।’

মুজিববর্ষের সার্বিক নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন করা হলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘অনুষ্ঠান সম্পর্কে রবিবার গণভবন থেকে প্রেসরিলিজ দিয়েছে। ওখানে আমাদের যা যা বলা হয়েছে তাই আমরা ফলো করব। জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটি কালকে এবং ভবিষ্যতে কী করব সব প্রোগ্রাম আপনাদের তারাই জানাবে। এখানে আমাদের কিছু বলার নেই।’

নিরাপত্তা বাহিনী এবং দেশের জনগণ মুজিববর্ষ হৃদয় দিয়ে পালন করতে উম্মুখ হয়েছিল উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘তারা এই মুজিববর্ষটা হৃদয় দিয়ে পালন করবে। যে ভাইরাসের কথা বলা হচ্ছে সেটা আমাদের জনগনকে আটকে রাখতে পারবে না। জনগন যে যার জায়গা থেকে মুজিববর্ষ পালন করবে। যে কোনো কিছুতে আমাদের নিরাপত্তাবাহিনী সবসময় সজাগ থাকে। এই আনন্দের দিনে কেউ কোনো ধরণের বিব্রতকর পরিস্থিতি করার চেষ্টা আমার মনে হয় করবে না বা সাহস করবে না।’

প্রসঙ্গত, দুর্নীতির দুই মামলায় দণ্ডিত ৭৬ বছর বয়সী বিএনপিনেত্রী খালেদা জিয়া দুইবছর ধরে কারাবন্দী। এর মধ্যে এক বছর ধরেই তিনি বঙ্গবন্ধু মেডিকেলে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তার শারীরিক অবস্থা নিয়ে উদ্বেগ জানিয়ে তার মুক্তি দাবি করে আসছে বিএনপি।

খালেদার কারামুক্তির বিষয়ে বিএনপি এবং তার পরিবারের মধ্যে মতপার্থক্য রয়েছে বলে আভাস পাওয়া গেছে। পরিবারের সদস্যদের কাছে বিষয়টি আবেগের এবং যেকোনো মূল্যে তারা খালেদা জিয়াকে মুক্ত করে লন্ডনে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যেতে চান।

অন্যদিকে রাজনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়ে খালেদা জিয়ার মুক্তি চাইছে বিএনপি। তবে এবিষয়ে দলগতভাবে কোনো উদ্যোগ নিতে পারেনি দলটি। তাই বিএনপি এ বিষয়টি আপাতত পরিবারের ওপরই ছেড়ে দিয়েছে বলে জানা গেছে।