শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

করোনা প্রতিরোধে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে মাউশির নির্দেশনা

মো: ইদ্রিস আলী := 

বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাস (কভিড-১৯) প্রতিরোধে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকসহ সংশ্লিষ্টদের সতর্ক থাকার নির্দেশনা দিয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি)।

মঙ্গলবার (১০ মার্চ) মাউশির মহাপরিচালক ড. সৈয়দ মো. গোলাম ফারুক স্বাক্ষরিত আদেশে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং অধিদপ্তরের অধীন সব অফিসকে এ নির্দেশনা দেওয়া হয়। করোনাভাইরাস রোগ প্রতিরোধ ও চিকিৎসায় করণীয়’ শীর্ষক নির্দেশনায় সরকার করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধ ও আক্রান্ত রোগীর চিকিৎসার্থে সব প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়েছে বলে জানানো হয়েছে। তাছাড়া, এ ভাইরাস সংক্রমণরোধে সবার সতর্কতা ও সচেতনতা প্রয়োজন বলে জানানো হয়েছে।

এ সময় ‘মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের অধীন সব অফিস ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সংশ্লিষ্ট সবাইকে এ পরিস্থিতি মোকাবিলায় সচেষ্ট থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়।’ গত রবিবার (৮ মার্চ) দেশে ৩ জন করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন বলে জানিয়েছে রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর)।এ পরিপ্রেক্ষিতে আইইডিসিআরর করোনা ভাইরাসের তথ্য সম্বলিত নির্দেশনা ও পরামর্শ অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছে মাউশি।

২০১৯ এন-করোনা ভাইরাস: অনেক প্রজাতির করোনা ভাইরাসের মধ্যে যে সাতটি মানুষের দেহে সংক্রমিত হতে পারে তার একটি ২০১৯ এন-করোনা ভাইরাস (কভিড-১৯)

যেভাবে ছড়ায়: এ ভাইরাস কোনো প্রাণি থেকে মানুষের দেহে ঢুকেছে। এখন মানুষ থেকে মানুষে সংক্রমিত হচ্ছে। করোনাভাইরাস মানুষের ফুসফুসে সংক্রমণ ঘটায় এবং শ্বাসতন্ত্রের মাধ্যমে (হাঁচি, কাশি, কফ, থুথু) অথবা আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে আসলে একজন থেকে আরেকজনে ছড়ায়।

লক্ষণসমূহ: ভাইরাস শরীরে ঢোকার পর সংক্রমণের লক্ষণ দেখা দিতে প্রায় ২-১৪ দিন লাগে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে প্রথম লক্ষণ জ্বর। এছাড়া শুকনো কাশি বা গলা ব্যথা হতে পারে। শ্বাসকষ্ট বা নিউমোনিয়া দেখা দিতে পারে। অন্যান্য অসুস্থতা (ডায়াবেটিস বা উচ্চ রক্তচাপ বা শ্বাসকষ্ট বা হৃদরোগ বা কিডনি সমস্যা বা ক্যান্সার) থাকলে অরগ্যান ফেইলিওর বা দেহের বিভিন্ন প্রত্যঙ্গ বিকল হতে পারে। প্রতিকার: যেহেতু এই ভাইরাসটি নতুন, তাই এর কোনো টিকা বা ভ্যাকসিন এখনো তৈরি হয়নি।  চিকিৎসা লক্ষণভিত্তিক।

প্রতিরোধে করণীয় (ব্যক্তিগত সচেতনতা):  ঘন ঘন সাবান ও পানি দিয়ে হাত ধুতে হবে (অন্তত ২০ সেকেন্ড)।  অপরিস্কার হাতে চোখ, নাক ও মুখ স্পর্শ করা যাবে না।  ইতোমধ্যে আক্রন্তি এমন ব্যক্তির সংস্পর্শ এড়িয়ে চলতে হবে। কাশির শিষ্টাচার মেনে চলতে হবে (হাঁচি বা কাশির সময় বাহু বা টিস্যু বা কাপড় দিয়ে নাক-মুখ ঢেকে রাখতে হবে)।  অসুস্থ পশু বা পাখির সংস্পর্শ পরিহার করতে হবে।  মাছ-মাংস ভালোভাবে রান্না করে খেতে হবে। অসুস্থ হলে ঘরে থাকুন, বাইরে যাওয়া অত্যাবশ্যক হলে নাক-মুখ ঢাকার জন্য মাস্ক ব্যবহার করতে হবে। জরুরি প্রয়োজন ব্যতীত বিদেশ ভ্রমণ করা থেকে বিরত থাকুন এবং প্রয়োজন ব্যতীয় এ সময়ে বাংলাদেশ ভ্রমণে নিরুৎসাহিত করতে হবে। প্রয়োজন ছাড়া যেকোনো জনসমাগম এড়িয়ে চলতে হবে। অত্যাবশ্যকীয় ভ্রমণে সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে।

সন্দেহভাজন রোগের ক্ষেত্রে করণীয়:  প্রবাসী আত্মীয় জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বাংলাদেশ ভ্রমণে নিরুৎসাহিত করা। অসুস্থ রোগীকে ঘরে থাকতে বলুন। মারাত্মক অসুস্থ রোগীকে নিকটস্থ সদর হাসপাতালে যেতে বলুন। রোগীকে নাক-মুখ ঢাকার জন্য মাস্ক ব্যবহার করতে বলুন।  রোগীর নাম, বয়স, যোগাযোগের জন্য পূর্ণ ঠিকানা ও মোবাইল নম্বর সংরক্ষণ করুন। আইইডিসিআরের করোনা কন্ট্রোল রুমে (০১৭০০-৭০৫৭৩৭) অথবা হটলাইন (০১৪০১-১৮৪ ৫৫১, ০১৪০১-১৮৪ ৫৫৪, ০১৪০১-১৮৪ ৫৫৫, ০১৪০১-১৮৪ ৫৫৬, ০১৪০১-১৮৪ ৫৫৯, ০১৪০১-১৮৪ ৫৬০, ০১৪০১-১৮৪ ৫৬৩, ০১৪০১-১৮৪ ৫৬৮, ০১৯২৭-৭১১ ৭৮৪, ০১৯২৭-৭১১ ৭৮৫, ০১৯৩৭-০০০ ০১১, ০১৯৩৭-১১০ ০১১) যোগাযোগ করুন।

শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি জানিয়েছেন, আইইডিসিআরর মতামত অনুযায়ী দেশে এখনও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করার মতো পরিস্থিত হয়নি। দেশে করোনাভাইরাস প্রতিরোধের অংশ হিসেবে প্রয়োজন হলে বিশেষজ্ঞদের মতামতের পরিপ্রেক্ষিতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। এ সময় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে করোনা ইস্যুতে সচেতনতামূলক প্রয়োজনীয় নির্দেশনা পাঠানো হচ্ছে বলে জানান শিক্ষামন্ত্রী।

আপনার মন্তব্য লিখুন

লেখকের সম্পর্কে

Shahriar Hossain

২৮ ঘন্টা বাঘের ডেরায়, রাত কেটেছে উচুঁ কেওড়া গাছের ডালে

করোনা প্রতিরোধে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে মাউশির নির্দেশনা

প্রকাশের সময় : ০৮:০৭:২৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১০ মার্চ ২০২০
মো: ইদ্রিস আলী := 

বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাস (কভিড-১৯) প্রতিরোধে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকসহ সংশ্লিষ্টদের সতর্ক থাকার নির্দেশনা দিয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি)।

মঙ্গলবার (১০ মার্চ) মাউশির মহাপরিচালক ড. সৈয়দ মো. গোলাম ফারুক স্বাক্ষরিত আদেশে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং অধিদপ্তরের অধীন সব অফিসকে এ নির্দেশনা দেওয়া হয়। করোনাভাইরাস রোগ প্রতিরোধ ও চিকিৎসায় করণীয়’ শীর্ষক নির্দেশনায় সরকার করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধ ও আক্রান্ত রোগীর চিকিৎসার্থে সব প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়েছে বলে জানানো হয়েছে। তাছাড়া, এ ভাইরাস সংক্রমণরোধে সবার সতর্কতা ও সচেতনতা প্রয়োজন বলে জানানো হয়েছে।

এ সময় ‘মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের অধীন সব অফিস ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সংশ্লিষ্ট সবাইকে এ পরিস্থিতি মোকাবিলায় সচেষ্ট থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়।’ গত রবিবার (৮ মার্চ) দেশে ৩ জন করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন বলে জানিয়েছে রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর)।এ পরিপ্রেক্ষিতে আইইডিসিআরর করোনা ভাইরাসের তথ্য সম্বলিত নির্দেশনা ও পরামর্শ অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছে মাউশি।

২০১৯ এন-করোনা ভাইরাস: অনেক প্রজাতির করোনা ভাইরাসের মধ্যে যে সাতটি মানুষের দেহে সংক্রমিত হতে পারে তার একটি ২০১৯ এন-করোনা ভাইরাস (কভিড-১৯)

যেভাবে ছড়ায়: এ ভাইরাস কোনো প্রাণি থেকে মানুষের দেহে ঢুকেছে। এখন মানুষ থেকে মানুষে সংক্রমিত হচ্ছে। করোনাভাইরাস মানুষের ফুসফুসে সংক্রমণ ঘটায় এবং শ্বাসতন্ত্রের মাধ্যমে (হাঁচি, কাশি, কফ, থুথু) অথবা আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে আসলে একজন থেকে আরেকজনে ছড়ায়।

লক্ষণসমূহ: ভাইরাস শরীরে ঢোকার পর সংক্রমণের লক্ষণ দেখা দিতে প্রায় ২-১৪ দিন লাগে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে প্রথম লক্ষণ জ্বর। এছাড়া শুকনো কাশি বা গলা ব্যথা হতে পারে। শ্বাসকষ্ট বা নিউমোনিয়া দেখা দিতে পারে। অন্যান্য অসুস্থতা (ডায়াবেটিস বা উচ্চ রক্তচাপ বা শ্বাসকষ্ট বা হৃদরোগ বা কিডনি সমস্যা বা ক্যান্সার) থাকলে অরগ্যান ফেইলিওর বা দেহের বিভিন্ন প্রত্যঙ্গ বিকল হতে পারে। প্রতিকার: যেহেতু এই ভাইরাসটি নতুন, তাই এর কোনো টিকা বা ভ্যাকসিন এখনো তৈরি হয়নি।  চিকিৎসা লক্ষণভিত্তিক।

প্রতিরোধে করণীয় (ব্যক্তিগত সচেতনতা):  ঘন ঘন সাবান ও পানি দিয়ে হাত ধুতে হবে (অন্তত ২০ সেকেন্ড)।  অপরিস্কার হাতে চোখ, নাক ও মুখ স্পর্শ করা যাবে না।  ইতোমধ্যে আক্রন্তি এমন ব্যক্তির সংস্পর্শ এড়িয়ে চলতে হবে। কাশির শিষ্টাচার মেনে চলতে হবে (হাঁচি বা কাশির সময় বাহু বা টিস্যু বা কাপড় দিয়ে নাক-মুখ ঢেকে রাখতে হবে)।  অসুস্থ পশু বা পাখির সংস্পর্শ পরিহার করতে হবে।  মাছ-মাংস ভালোভাবে রান্না করে খেতে হবে। অসুস্থ হলে ঘরে থাকুন, বাইরে যাওয়া অত্যাবশ্যক হলে নাক-মুখ ঢাকার জন্য মাস্ক ব্যবহার করতে হবে। জরুরি প্রয়োজন ব্যতীত বিদেশ ভ্রমণ করা থেকে বিরত থাকুন এবং প্রয়োজন ব্যতীয় এ সময়ে বাংলাদেশ ভ্রমণে নিরুৎসাহিত করতে হবে। প্রয়োজন ছাড়া যেকোনো জনসমাগম এড়িয়ে চলতে হবে। অত্যাবশ্যকীয় ভ্রমণে সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে।

সন্দেহভাজন রোগের ক্ষেত্রে করণীয়:  প্রবাসী আত্মীয় জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বাংলাদেশ ভ্রমণে নিরুৎসাহিত করা। অসুস্থ রোগীকে ঘরে থাকতে বলুন। মারাত্মক অসুস্থ রোগীকে নিকটস্থ সদর হাসপাতালে যেতে বলুন। রোগীকে নাক-মুখ ঢাকার জন্য মাস্ক ব্যবহার করতে বলুন।  রোগীর নাম, বয়স, যোগাযোগের জন্য পূর্ণ ঠিকানা ও মোবাইল নম্বর সংরক্ষণ করুন। আইইডিসিআরের করোনা কন্ট্রোল রুমে (০১৭০০-৭০৫৭৩৭) অথবা হটলাইন (০১৪০১-১৮৪ ৫৫১, ০১৪০১-১৮৪ ৫৫৪, ০১৪০১-১৮৪ ৫৫৫, ০১৪০১-১৮৪ ৫৫৬, ০১৪০১-১৮৪ ৫৫৯, ০১৪০১-১৮৪ ৫৬০, ০১৪০১-১৮৪ ৫৬৩, ০১৪০১-১৮৪ ৫৬৮, ০১৯২৭-৭১১ ৭৮৪, ০১৯২৭-৭১১ ৭৮৫, ০১৯৩৭-০০০ ০১১, ০১৯৩৭-১১০ ০১১) যোগাযোগ করুন।

শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি জানিয়েছেন, আইইডিসিআরর মতামত অনুযায়ী দেশে এখনও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করার মতো পরিস্থিত হয়নি। দেশে করোনাভাইরাস প্রতিরোধের অংশ হিসেবে প্রয়োজন হলে বিশেষজ্ঞদের মতামতের পরিপ্রেক্ষিতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। এ সময় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে করোনা ইস্যুতে সচেতনতামূলক প্রয়োজনীয় নির্দেশনা পাঠানো হচ্ছে বলে জানান শিক্ষামন্ত্রী।