বুধবার, ১৯ মার্চ ২০২৫, ৫ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

লালমনিরহাটে ঋণের টাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি  অনিশ্চিত শরীফুলের

মোস্তাফিজুর রহমান : লালমনিরহাট প্রতিনিধিঃ=
লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার সিংগীমারী গ্রামের হতদরিদ্র দিনমজুর রং মিস্ত্রীর সন্তান শরীফুল ইসলাম। পরিবারে অভাব অনটনের মাঝেও অষ্টম শ্রেণি থেকে টিউশনি করে পড়াশুনা চালিয়েছেন সে।শরীফুল টিউশনির টাকায় পড়াশুনা চালিয়ে গিয়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি হওয়ার সুযোগ পেলেও অর্থের অভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনা অনিশ্চিত হয়ে পড়ছে। দিনমজুর বাবার পক্ষে এত টাকা দিয়ে পড়াশোনা করার সমর্থন নেই। তাই অনিশ্চিত হয়ে পড়ছে শরীফুলের পড়াশুনা।জানা গেছে, শরীফুল ইসলাম লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার সিংঙ্গীমারী ইউনিয়নের উত্তর সিংঙ্গীমারী গ্রামের ক্লিনিক পাড়ার দিনমজুর রং মিস্ত্রীর জমির উদ্দিন ও মা শরীফা বেগমের ছেলে। এক বোন এক ভাইয়ের মধ্যে সে বড়। জায়গা জমি বলতে বাড়ি ভিটে ৫ শতক জমি ছাড়া কিছুই নেই তাদের। দিনমজুরীর টাকায় সংসার চলে পরিবারটির।শরীফুল হাতীবান্ধা উপজেলার আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে এসএসসি জিপিএ ৪.৫০ ও সরকারী হাতীবান্ধা আলিমুদ্দিন কলেজ থেকে মানবিক বিভাগ থেকে এইসএসসি জিপিএ ৪.০৮ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়। পরিবারে দারিদ্রতা আর অভাব অনটনের মাঝে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি হওয়ার সুযোগে সকলেই অভিভূত। তার ছোট বোন জেমি আক্তার স্থানীয় আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্রী।শরীফুল ইসলাম এসএসসিতে বিজ্ঞানের ছাত্র হয়েও অর্থের অভাবে এইসএসসিতে মানবিক শাখায় পড়তে হয়েছে। প্রাইভেট কিংবা কোচিংয়ে পড়াশুনার সুযোগ হয়নি। টিউশনির টাকায় পড়াশুনা চালাতে হয়েছে তাকে। সে পড়াশুনার সুযোগ পেলে বিসিএস দিয়ে ম্যাজিস্ট্রেট হওয়ার স্বপ্ন দেখচ্ছেন।শরীফুল বর্তমানে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগে প্রথম বর্ষে অধ্যায়নরত। সে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি পরীক্ষায় ‘ডি’ ইউনিটে ১৭৫২ তম স্থান লাভ করে। সে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে এ এফ রহমান হলের প্রথম তলার ১২৭ নং কক্ষে থাকেন।শরীফুল ইসলাস বলেন, অর্থ ছাড়া চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনা করতে খুবই কষ্ট কর। পড়াশুনার খরচ চালানোর মতো সামর্থ্য নেই পরিবারের। বর্তমানে পড়াশোনা বন্ধের উপক্রম হয়ে পড়ছে। কোন ব্যাক্তি বা সংস্থা আমার পড়াশুনা খরচ বহন করলে পড়াশুনাটা চালিয়ে যেতে পারব।শরীফুলে মা শরীফা বেগম বলেন, ছেলে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি জন্য এনজিও ঠেঙ্গামারা মহিলা সবুজ সংঘ (টিএমএসএস) থেকে ২০ হাজার টাকা ঋণ নিয়ে ছেলেকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি করিয়েছি। এখন তার পড়াশুনার খরচ চালাতে পারছিনা।
তার বাবা জমির উদ্দিন বলেন, অভাবের সংসারে ছেলে মেয়ের ইচ্ছা পড়াশুনা করার কিন্তু আমার সমর্থন নেই। দিনমুজরীর টাকায় ঠিকমত সংসার চলে না। কেউ যদি আমার ছেলেকে পড়াশুনা করার ব্যবস্থা করেন তাহলে আমার ছেলের স্বপ্ন ম্যাজিস্ট্রেট হওয়ার আশাটা পুরণ হত। তা না হলে তার পড়াশুনা বন্ধ হয়ে যাবে।এ বিষয়ে হাতীবান্ধা উপজেলার সিংঙ্গীমারী ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এমজি মোস্তফা বলেন, শরীফুল ইসলাম অদম্য মেধাবী ও গরীব। তার পড়াশুনার খরচ কেউ বহন করলে তার কাঙ্খিক্ষত লক্ষ্যে পৌঁছে যাবে।কেউ তার সাথে যোগাযোগ করতে চাইলে শরীফুল ইসলাম ০১৭৮৩-২১৯৫১০

আপনার মন্তব্য লিখুন

লেখকের সম্পর্কে

Shahriar Hossain

জনপ্রিয়

লালমনিরহাটে ঋণের টাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি  অনিশ্চিত শরীফুলের

প্রকাশের সময় : ০৮:০০:২২ অপরাহ্ন, বুধবার, ১১ মার্চ ২০২০
মোস্তাফিজুর রহমান : লালমনিরহাট প্রতিনিধিঃ=
লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার সিংগীমারী গ্রামের হতদরিদ্র দিনমজুর রং মিস্ত্রীর সন্তান শরীফুল ইসলাম। পরিবারে অভাব অনটনের মাঝেও অষ্টম শ্রেণি থেকে টিউশনি করে পড়াশুনা চালিয়েছেন সে।শরীফুল টিউশনির টাকায় পড়াশুনা চালিয়ে গিয়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি হওয়ার সুযোগ পেলেও অর্থের অভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনা অনিশ্চিত হয়ে পড়ছে। দিনমজুর বাবার পক্ষে এত টাকা দিয়ে পড়াশোনা করার সমর্থন নেই। তাই অনিশ্চিত হয়ে পড়ছে শরীফুলের পড়াশুনা।জানা গেছে, শরীফুল ইসলাম লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার সিংঙ্গীমারী ইউনিয়নের উত্তর সিংঙ্গীমারী গ্রামের ক্লিনিক পাড়ার দিনমজুর রং মিস্ত্রীর জমির উদ্দিন ও মা শরীফা বেগমের ছেলে। এক বোন এক ভাইয়ের মধ্যে সে বড়। জায়গা জমি বলতে বাড়ি ভিটে ৫ শতক জমি ছাড়া কিছুই নেই তাদের। দিনমজুরীর টাকায় সংসার চলে পরিবারটির।শরীফুল হাতীবান্ধা উপজেলার আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে এসএসসি জিপিএ ৪.৫০ ও সরকারী হাতীবান্ধা আলিমুদ্দিন কলেজ থেকে মানবিক বিভাগ থেকে এইসএসসি জিপিএ ৪.০৮ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়। পরিবারে দারিদ্রতা আর অভাব অনটনের মাঝে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি হওয়ার সুযোগে সকলেই অভিভূত। তার ছোট বোন জেমি আক্তার স্থানীয় আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্রী।শরীফুল ইসলাম এসএসসিতে বিজ্ঞানের ছাত্র হয়েও অর্থের অভাবে এইসএসসিতে মানবিক শাখায় পড়তে হয়েছে। প্রাইভেট কিংবা কোচিংয়ে পড়াশুনার সুযোগ হয়নি। টিউশনির টাকায় পড়াশুনা চালাতে হয়েছে তাকে। সে পড়াশুনার সুযোগ পেলে বিসিএস দিয়ে ম্যাজিস্ট্রেট হওয়ার স্বপ্ন দেখচ্ছেন।শরীফুল বর্তমানে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগে প্রথম বর্ষে অধ্যায়নরত। সে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি পরীক্ষায় ‘ডি’ ইউনিটে ১৭৫২ তম স্থান লাভ করে। সে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে এ এফ রহমান হলের প্রথম তলার ১২৭ নং কক্ষে থাকেন।শরীফুল ইসলাস বলেন, অর্থ ছাড়া চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনা করতে খুবই কষ্ট কর। পড়াশুনার খরচ চালানোর মতো সামর্থ্য নেই পরিবারের। বর্তমানে পড়াশোনা বন্ধের উপক্রম হয়ে পড়ছে। কোন ব্যাক্তি বা সংস্থা আমার পড়াশুনা খরচ বহন করলে পড়াশুনাটা চালিয়ে যেতে পারব।শরীফুলে মা শরীফা বেগম বলেন, ছেলে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি জন্য এনজিও ঠেঙ্গামারা মহিলা সবুজ সংঘ (টিএমএসএস) থেকে ২০ হাজার টাকা ঋণ নিয়ে ছেলেকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি করিয়েছি। এখন তার পড়াশুনার খরচ চালাতে পারছিনা।
তার বাবা জমির উদ্দিন বলেন, অভাবের সংসারে ছেলে মেয়ের ইচ্ছা পড়াশুনা করার কিন্তু আমার সমর্থন নেই। দিনমুজরীর টাকায় ঠিকমত সংসার চলে না। কেউ যদি আমার ছেলেকে পড়াশুনা করার ব্যবস্থা করেন তাহলে আমার ছেলের স্বপ্ন ম্যাজিস্ট্রেট হওয়ার আশাটা পুরণ হত। তা না হলে তার পড়াশুনা বন্ধ হয়ে যাবে।এ বিষয়ে হাতীবান্ধা উপজেলার সিংঙ্গীমারী ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এমজি মোস্তফা বলেন, শরীফুল ইসলাম অদম্য মেধাবী ও গরীব। তার পড়াশুনার খরচ কেউ বহন করলে তার কাঙ্খিক্ষত লক্ষ্যে পৌঁছে যাবে।কেউ তার সাথে যোগাযোগ করতে চাইলে শরীফুল ইসলাম ০১৭৮৩-২১৯৫১০