শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

রোনা সতর্কতা: হাঁচি-কাশির সময় তালু নয়, মুখ ঢাকুন বাহু দিয়ে

কোলকাতা ব্যুরো :=‘

কোভিড-১৯’-এর ভাইরাসের সংক্রমণের হাত থেকে বাঁচতে হাঁচি, কাশির সময় তালু দিয়ে না ঢেকে বাহু (‘আর্ম’) দিয়েই নাক, মুখ ঢাকা উচিত। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (‘হু’) জানিয়েছে, করোনার সংক্রমণ এড়ানোর জন্য এটাই অন্যতম সহজ আর বাস্তবসম্মত উপায়। কিন্তু হাঁচি, কাশির সময় তালুর পরিবর্তে কেন বাহু দিয়ে নাক, মুখ ঢাকতে বলা হচ্ছে?

চিকিৎসক সব্যসাচী সেনগুপ্ত বলছেন, ‘‘আমরা মুখের সামনে সাধারণত হাতের তালু এনে ঢাকা দিই হাঁচি, কাশির সময়। যে হাতটা বেশি ব্যবহার করি, তার তালু দিয়ে। মুখ ঢেকে হাঁচি বা কাশির পর হাতের তালু ভিজে যায়। এটাই কফ। ওতেই থাকে জীবাণু। হাঁচি, কাশির সময় মুখ, নাক দিয়ে যে কফের বিন্দু (ড্রপলেটস) বেরিয়ে আসে তার মধ্যেই লুকিয়ে থাকে লক্ষ কোটি জীবাণু। সেই জীবাণু যক্ষারও হতে পারে, করোনারও হতে পারে। আবার সাধারণ জ্বর, সর্দিরও হতে পারে। তালু দিয়ে নাক, মুখ ঢেকে হাঁচলে বা কাশলে ড্রপলেটস হাতের আঙুলের ফাঁক দিয়ে বেরিয়ে যায়। ফলে, সেই ড্রপলেটসে যদি কোভিড-১৯-এর ভাইরাস থাকে, তা হলে তা সহজেই বাতাসে মিশতে পারে। তালুর ব্যবহার বেশি হয় বলে তার মাধ্যমে জীবাণু সংক্রমণের সুযোগ অনেক বেশি। কিন্তু বাহু (কনুইয়ের উল্টো পিঠ বা তৎসংলগ্ন অংশ) দিয়ে নাক ও মুখ ঢেকে হাঁচলে বা কাশলে সেই ভয়টা থাকে না। কারণ, তালুর মতো আমরা সব সময় বাহুর ব্যবহার করি না। কনুই দিয়ে আমরা লিখি না। কারও হাতও ধরি না। খাই না। ফলে, বাহু দিয়ে নাক, মুখ ঢাকলে কোভিড-১৯-এর ভাইরাস বাতাসে মেশার তেমন সুযোগ পায় না। তাই এ ক্ষেত্রে বাহুর ব্যবহার করাটাই সবচেয়ে ভাল।’’

আমরা অনেক সময় রুমাল দিয়েও নাক, মুখ চাপা দিই হাঁচি, কাশির সময়। কিন্তু সব সময় পকেট থেকে রুমাল বের করার সুযোগ পাওয়া যায় না। সব্যসাচীর বক্তব্য, ‘‘যদি রুমাল ব্যবহার করি, তা হলে ব্যবহারের পরেই তা কেচে নেওয়া উচিত। না হলে রুমালের মাধ্যমে সংক্রমণ হবে।’’ ‘হু’ তাই ‘কাফ এটিকেট’ মেনে চলতে বলেছে। এও বলেছে, যদি হাঁচি বা কাশির সময় তালুর পরিবর্তে রুমাল দিয়ে নাক ও মুখ ঢেকে হাঁচেন বা কাশেন, তা হলে ঠিক সময়ে সেই রুমালটি কেচে নিন। কারণ এই ক্ষেত্রে জীবাণু/কফ আটকে থাকবে রুমাল বা সেই রুমাল যেখানে রেখেছেন সেই প্যান্টের পকেটে। এ ছাড়াও করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন, এমন সন্দেহের সূত্রপাত হলে আরও কিছু করণীয় রয়েছে। একা একা সরকারি হাসপাতালে যাবেন না। রাজ্য সরকারের চালু করা হেল্পলাইন নম্বরে ফোন করে নিজের অবস্থা জানান। হেল্পলাইন নম্বরগুলি, ১৮০০০৩১৩৪৪৪২২ এবং ০৩৩২৩৪১২৬০০। খবর পেলে জেলার দায়িত্বে থাকা মেডিক্যাল অফিসার আপনার কাছে আসবেন। জানাবেন, কেমন চিকিৎসার প্রয়োজন। সরকারের পাঠানো অ্যাম্বুল্যান্সেই রোগীদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হবে। সেখানেই রক্তপরীক্ষা করা হবে। চিকিৎসকরাই ঠিক করবেন, রোগীকে হাসপাতালে রাখা হবে নাকি বাড়িতে রেখে চিকিৎসা চলবে। রোগ ধরা পড়ার পর অন্তত ১৪ দিন চলবে ওষুধ, বিশ্রাম। তাতেও না কমলে ফের চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

আপনার মন্তব্য লিখুন

লেখকের সম্পর্কে

Shahriar Hossain

রোনা সতর্কতা: হাঁচি-কাশির সময় তালু নয়, মুখ ঢাকুন বাহু দিয়ে

প্রকাশের সময় : ০৮:৫১:৫৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৩ মার্চ ২০২০
কোলকাতা ব্যুরো :=‘

কোভিড-১৯’-এর ভাইরাসের সংক্রমণের হাত থেকে বাঁচতে হাঁচি, কাশির সময় তালু দিয়ে না ঢেকে বাহু (‘আর্ম’) দিয়েই নাক, মুখ ঢাকা উচিত। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (‘হু’) জানিয়েছে, করোনার সংক্রমণ এড়ানোর জন্য এটাই অন্যতম সহজ আর বাস্তবসম্মত উপায়। কিন্তু হাঁচি, কাশির সময় তালুর পরিবর্তে কেন বাহু দিয়ে নাক, মুখ ঢাকতে বলা হচ্ছে?

চিকিৎসক সব্যসাচী সেনগুপ্ত বলছেন, ‘‘আমরা মুখের সামনে সাধারণত হাতের তালু এনে ঢাকা দিই হাঁচি, কাশির সময়। যে হাতটা বেশি ব্যবহার করি, তার তালু দিয়ে। মুখ ঢেকে হাঁচি বা কাশির পর হাতের তালু ভিজে যায়। এটাই কফ। ওতেই থাকে জীবাণু। হাঁচি, কাশির সময় মুখ, নাক দিয়ে যে কফের বিন্দু (ড্রপলেটস) বেরিয়ে আসে তার মধ্যেই লুকিয়ে থাকে লক্ষ কোটি জীবাণু। সেই জীবাণু যক্ষারও হতে পারে, করোনারও হতে পারে। আবার সাধারণ জ্বর, সর্দিরও হতে পারে। তালু দিয়ে নাক, মুখ ঢেকে হাঁচলে বা কাশলে ড্রপলেটস হাতের আঙুলের ফাঁক দিয়ে বেরিয়ে যায়। ফলে, সেই ড্রপলেটসে যদি কোভিড-১৯-এর ভাইরাস থাকে, তা হলে তা সহজেই বাতাসে মিশতে পারে। তালুর ব্যবহার বেশি হয় বলে তার মাধ্যমে জীবাণু সংক্রমণের সুযোগ অনেক বেশি। কিন্তু বাহু (কনুইয়ের উল্টো পিঠ বা তৎসংলগ্ন অংশ) দিয়ে নাক ও মুখ ঢেকে হাঁচলে বা কাশলে সেই ভয়টা থাকে না। কারণ, তালুর মতো আমরা সব সময় বাহুর ব্যবহার করি না। কনুই দিয়ে আমরা লিখি না। কারও হাতও ধরি না। খাই না। ফলে, বাহু দিয়ে নাক, মুখ ঢাকলে কোভিড-১৯-এর ভাইরাস বাতাসে মেশার তেমন সুযোগ পায় না। তাই এ ক্ষেত্রে বাহুর ব্যবহার করাটাই সবচেয়ে ভাল।’’

আমরা অনেক সময় রুমাল দিয়েও নাক, মুখ চাপা দিই হাঁচি, কাশির সময়। কিন্তু সব সময় পকেট থেকে রুমাল বের করার সুযোগ পাওয়া যায় না। সব্যসাচীর বক্তব্য, ‘‘যদি রুমাল ব্যবহার করি, তা হলে ব্যবহারের পরেই তা কেচে নেওয়া উচিত। না হলে রুমালের মাধ্যমে সংক্রমণ হবে।’’ ‘হু’ তাই ‘কাফ এটিকেট’ মেনে চলতে বলেছে। এও বলেছে, যদি হাঁচি বা কাশির সময় তালুর পরিবর্তে রুমাল দিয়ে নাক ও মুখ ঢেকে হাঁচেন বা কাশেন, তা হলে ঠিক সময়ে সেই রুমালটি কেচে নিন। কারণ এই ক্ষেত্রে জীবাণু/কফ আটকে থাকবে রুমাল বা সেই রুমাল যেখানে রেখেছেন সেই প্যান্টের পকেটে। এ ছাড়াও করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন, এমন সন্দেহের সূত্রপাত হলে আরও কিছু করণীয় রয়েছে। একা একা সরকারি হাসপাতালে যাবেন না। রাজ্য সরকারের চালু করা হেল্পলাইন নম্বরে ফোন করে নিজের অবস্থা জানান। হেল্পলাইন নম্বরগুলি, ১৮০০০৩১৩৪৪৪২২ এবং ০৩৩২৩৪১২৬০০। খবর পেলে জেলার দায়িত্বে থাকা মেডিক্যাল অফিসার আপনার কাছে আসবেন। জানাবেন, কেমন চিকিৎসার প্রয়োজন। সরকারের পাঠানো অ্যাম্বুল্যান্সেই রোগীদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হবে। সেখানেই রক্তপরীক্ষা করা হবে। চিকিৎসকরাই ঠিক করবেন, রোগীকে হাসপাতালে রাখা হবে নাকি বাড়িতে রেখে চিকিৎসা চলবে। রোগ ধরা পড়ার পর অন্তত ১৪ দিন চলবে ওষুধ, বিশ্রাম। তাতেও না কমলে ফের চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।