শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আওয়ামী লীগের নেতা বৃদ্ধা মা ও ছোট ভাইকে পিটিয়ে বাড়ি ছাড়া করলো

মোস্তাফিজুর রহমান: লালমনিরহাট জেলা প্রতিনিধিঃ==

জেলা সদরের মহেন্দ্রনগর ইউনিয়ন আওয়ামীরীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদের সদস্য তাহমিদুল ইসলাম বিপ্লব (৪৮) ১৬ মার্চ সকাল ৯টায় মা আলহাজ্ব মোছাঃ আনোয়ারা বেগম (৬৫), আপন ছোট ভাই তাজবেরুল ইসলাম সুমন (৩৬) ও ছোট ভাইয়ের স্ত্রী খাদিজাতুল কোবরা (২৫) কে দলীয় ক্যাডারদের দিয়ে মারধর করে বাড়ি হতে বেরকরে দিয়েছে।

বাড়ির চত্বরে থাকা ১৮টি সুপারি গাছ, ৪টি আমগাছ ও ২টি লিচুগাছ কেটে নিয়ে যায়। বর্তমানে ক্যাডাররা বাড়ির সামনে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে পাহাড়ায় রয়েছে। নিরুপায় হয়ে আওয়ামী লীগ ও জেলা পরিষদের এই নেতা হাত হতে বাঁচতে মা বাদি হয়ে লালমনিরহাট সদর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছে। একই সাথে ডিসি ও এসপিকে মা বিষয়টি অভিযোগ আকারে দায়ের করেছে।

জানা গেছে, মহেন্দ্রনগর ইউপি আওয়অমী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদের সদস্য তাহমিদুল ইসলাম বিপ্লব (৪৮) বিভিন্ন সময় মা, ভাইদের সাথে বিরোধ করে আসছে। এই নেতার বাবা কাশিপুর দ্বি-মূখী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তোফায়েল হোসেন সরকার প্রায় ২০ বছর পূর্বে মারা যায়। সে সময় স্ত্রী, ৩ ছেলে ও ৪ মেয়ে রেখে যায়। মৃত স্বামীর স্মৃতি আঁকড়ে ধরে মা আলহাজ্ব আনোয়ারা বেগম তার ছেলে মেয়েদের শিক্ষিত করে মানুষ করেন। তবে এক ছেলে অকাল মৃত্যু হয়। বর্তমানে দুই ছেলে ও ৪ মেয়ে রয়েছে।

মেয়েদের মধ্যে একজন ব্যারিষ্টার তাসলিন আরেফা সবনম স্বামীসহ ৮ বছর ধরে লন্ডনে রয়েছে। অন্য মেয়েদের বিবাহ হয়েছে। এখন এই বৃদ্ধা মা ছোট ছেলের সংসারে থাকেন। সম্পত্তির লোভে আওয়াম লীগের এই নেতা মা ও ভাইকে বাড়ি হতে বিতারিত করে দিয়েছেন।

পুত্রের হাতে অত্যাচারিত মা আলহাজ্ব আনোয়ারা বেগম (৬৫) জানান, বড় ছেলে আওয়াম লীগের নেতা ও জেলা পরিষদের সদস্য হওয়ায় তার রয়েছে দলীয় ক্যাডারবাহিনী। সেই ক্যাডারদের মাধ্যমে আমাকে ও তার ভাইকে মারধর করে বাড়ি হতে বেড় করে দিয়েছে। এর আগে আমার ছোট ছেলের বুড়িবাজারের ডিসের ব্যাবসা সে দখল করে নেয়।

আমার ছোট ছেলে অর্থনীতি বিষয়ে এমএ পাশ করে গ্রামে এসে কৃষি কাজ করে আসছে। সেই তার উপার্জিত অর্থে নুর এতিমখানা ও হাফিজিয়া মাদ্রাসা চালায়। স্থানীয় গ্রাম্য জামে মসজিদের সভাপতি। তাকে সামাজিক ভাবে হেয় করতে সবসময় লেগে থাকে। তার অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে ১৬ মার্চ দুপুরে লালমনিরহাট সদর থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে। এসপি ও ডিসির কাছে অভিযোগ দিয়েছি। বাড়িতে যেতে পারছিনা সন্ত্রাসীদের ভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছি।

বিচারের আশায় দ্বারে দ্বারে ঘুরছি।লালমনিরহাট সদর থানার অফিসার ইনচার্জ মাহাফুজুর রহমান জানান, একুট বাহিরে আছি। অভিযোগের তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও পরিষদের চেয়ারম্যান এ্যাডভোকেট মোঃ মতিয়ার রহমান জানান, বিষয়টি পারিবারিক সম্পর্কে আমার জানা নেই। তবে আমি তার কাছে বিষয়টি সর্ম্পকে খোঁজ খবর রাখছি।

আপনার মন্তব্য লিখুন

লেখকের সম্পর্কে

Shahriar Hossain

আওয়ামী লীগের নেতা বৃদ্ধা মা ও ছোট ভাইকে পিটিয়ে বাড়ি ছাড়া করলো

প্রকাশের সময় : ১১:০৬:২৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৬ মার্চ ২০২০
মোস্তাফিজুর রহমান: লালমনিরহাট জেলা প্রতিনিধিঃ==

জেলা সদরের মহেন্দ্রনগর ইউনিয়ন আওয়ামীরীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদের সদস্য তাহমিদুল ইসলাম বিপ্লব (৪৮) ১৬ মার্চ সকাল ৯টায় মা আলহাজ্ব মোছাঃ আনোয়ারা বেগম (৬৫), আপন ছোট ভাই তাজবেরুল ইসলাম সুমন (৩৬) ও ছোট ভাইয়ের স্ত্রী খাদিজাতুল কোবরা (২৫) কে দলীয় ক্যাডারদের দিয়ে মারধর করে বাড়ি হতে বেরকরে দিয়েছে।

বাড়ির চত্বরে থাকা ১৮টি সুপারি গাছ, ৪টি আমগাছ ও ২টি লিচুগাছ কেটে নিয়ে যায়। বর্তমানে ক্যাডাররা বাড়ির সামনে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে পাহাড়ায় রয়েছে। নিরুপায় হয়ে আওয়ামী লীগ ও জেলা পরিষদের এই নেতা হাত হতে বাঁচতে মা বাদি হয়ে লালমনিরহাট সদর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছে। একই সাথে ডিসি ও এসপিকে মা বিষয়টি অভিযোগ আকারে দায়ের করেছে।

জানা গেছে, মহেন্দ্রনগর ইউপি আওয়অমী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদের সদস্য তাহমিদুল ইসলাম বিপ্লব (৪৮) বিভিন্ন সময় মা, ভাইদের সাথে বিরোধ করে আসছে। এই নেতার বাবা কাশিপুর দ্বি-মূখী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তোফায়েল হোসেন সরকার প্রায় ২০ বছর পূর্বে মারা যায়। সে সময় স্ত্রী, ৩ ছেলে ও ৪ মেয়ে রেখে যায়। মৃত স্বামীর স্মৃতি আঁকড়ে ধরে মা আলহাজ্ব আনোয়ারা বেগম তার ছেলে মেয়েদের শিক্ষিত করে মানুষ করেন। তবে এক ছেলে অকাল মৃত্যু হয়। বর্তমানে দুই ছেলে ও ৪ মেয়ে রয়েছে।

মেয়েদের মধ্যে একজন ব্যারিষ্টার তাসলিন আরেফা সবনম স্বামীসহ ৮ বছর ধরে লন্ডনে রয়েছে। অন্য মেয়েদের বিবাহ হয়েছে। এখন এই বৃদ্ধা মা ছোট ছেলের সংসারে থাকেন। সম্পত্তির লোভে আওয়াম লীগের এই নেতা মা ও ভাইকে বাড়ি হতে বিতারিত করে দিয়েছেন।

পুত্রের হাতে অত্যাচারিত মা আলহাজ্ব আনোয়ারা বেগম (৬৫) জানান, বড় ছেলে আওয়াম লীগের নেতা ও জেলা পরিষদের সদস্য হওয়ায় তার রয়েছে দলীয় ক্যাডারবাহিনী। সেই ক্যাডারদের মাধ্যমে আমাকে ও তার ভাইকে মারধর করে বাড়ি হতে বেড় করে দিয়েছে। এর আগে আমার ছোট ছেলের বুড়িবাজারের ডিসের ব্যাবসা সে দখল করে নেয়।

আমার ছোট ছেলে অর্থনীতি বিষয়ে এমএ পাশ করে গ্রামে এসে কৃষি কাজ করে আসছে। সেই তার উপার্জিত অর্থে নুর এতিমখানা ও হাফিজিয়া মাদ্রাসা চালায়। স্থানীয় গ্রাম্য জামে মসজিদের সভাপতি। তাকে সামাজিক ভাবে হেয় করতে সবসময় লেগে থাকে। তার অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে ১৬ মার্চ দুপুরে লালমনিরহাট সদর থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে। এসপি ও ডিসির কাছে অভিযোগ দিয়েছি। বাড়িতে যেতে পারছিনা সন্ত্রাসীদের ভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছি।

বিচারের আশায় দ্বারে দ্বারে ঘুরছি।লালমনিরহাট সদর থানার অফিসার ইনচার্জ মাহাফুজুর রহমান জানান, একুট বাহিরে আছি। অভিযোগের তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও পরিষদের চেয়ারম্যান এ্যাডভোকেট মোঃ মতিয়ার রহমান জানান, বিষয়টি পারিবারিক সম্পর্কে আমার জানা নেই। তবে আমি তার কাছে বিষয়টি সর্ম্পকে খোঁজ খবর রাখছি।