শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

জন্মশতবার্ষিকী স্পন্দনে এডিবির সাথে ভারত- বাংলাদেশ দ্বিপাক্ষিক সভা ফলপ্রসু হয়েছে —কাস্টমস কমিশনার বেলাল হোসাইন চৌধুরী

নুরুজ্জামান লিটন :=

আরেকটি দ্বিপাক্ষিক সভা। এনবিআরের কল। ২৭ ফেব্রুয়ারি আকতার জানালো। স্পর্শকাতর ও গুরুত্বপূর্ণ। নেতৃত্ব দিতে হবে। গন্তব্য কোলকাতা। মার্চের দ্বিতীয় সপ্তাহে। দেশের জন্যে লড়তে হবে। মুজিব বর্ষে। সেটাও মার্চ মাসে! ভেতরে অন্যরকম স্পন্দন!করোনা আতংকে ক্রমেই বিপর্যস্ত বিশ্ব! বিদেশে যেতে বন্ধু পরিজনের কঠিন বারণ। দেশের বড় স্বার্থ এজেন্ডায়। আমাদের বাণিজ্য ও অর্থনীতির। এখন নাহলে হবেনা।মুক্তিযুদ্ধ করিনি। শহীদরা জীবন দিয়েছেন। দেশের জন্য! আমাদের জন্য! এবার আমাদের পালা। দেশকে দেয়ার। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন পূরণের। তাঁর ত্যাগ, দর্শন, শক্তি, সাহস, প্রেরণায় এগিয়ে যাবার।

বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন সুখী সমৃদ্ধ বাংলাদেশ। সুষ্ঠু বাণিজ্য, এর অবিচ্ছেদ্য অংশ। দুদেশের সীমান্তের বাণিজ্যদশা বদলাতে হবে! বিশেষ করে বাংলাদেশ অংশের অবকাঠামো। সেটাও দেশের অর্থ ও জনবল সাশ্রয়ে। এডিবি বা দাতার অর্থায়নে। মেপে পরিমাপে। বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীর এ শুভক্ষণে।

পরদিন সকাল-সন্ধ্যা সভা। সময় কম। কলকাতা ঢুকে ১১মার্চ রাতেই সোজা হাজি মুহম্মদ মহসিন স্কোয়ারের বিখ্যাত বেকার হোস্টেলে। কক্ষ নম্বর ২৪ আজো সাক্ষ্যবাহী অম্লান। বঙ্গবন্ধুর স্মৃতি বহন করছে। রাফি আহমদ কিডওয়ারি সড়কের মাওলানা আযাদ কলেজ। শতবর্ষের ঐতিহ্যে আজো বাঙময়।বাংলাদেশ-ভারত দ্বিপাক্ষিক সভা! সবসময়ই স্নায়ুধরা অন্যরকম। দেয়া নেয়ার নৈর্ব্যক্তিক দ্বৈরথ! এশিয় উন্নয়ন ব্যাংক তৃতীয় কুশীলব। ফিলিপাইনের আইলিন ছাড়া সবাই ভারতীয়। ভীতি জাগানিয়া বটে।

সভার উদ্দেশ্য, উন্নত সেবা, সময় ও অর্থ সাশ্রয়ী দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের উপায় সন্ধান। ডেলয়েটের তৈরি SASEC কোলকাতা-ঢাকা রুটের ওপর আড়াইশ পাতার স্টাডি পর্যালোচনা ও দেনদরবার।ভারতের কুটনীতিকরা প্রস্তুত থাকেন। মনস্তাত্বিক ঐতিহ্যে আমরা বরাবর পিছিয়ে। টেকনিকাল বিষয় হলে বেশী! মুসাফির দলের সদস্য যেন উত্তম শ্রোতা। মূল প্রেক্ষপট থাকে অজ্ঞাত, অর্পিত, অবহেলিত।

১২ মার্চ ২০২০! দি ওবেরয় গ্রান্ডের ঘরানা কক্ষ! সকাল সাড়ে আটটা। সুনসান নিরবতাময়। ভাঙ্গার অপেক্ষা কাটছেনা! অপেক্ষায় হলভর্তি দুদেশের সকল প্রতিনিধি।এডিবি শুরু করবে। উপস্থাপনায় সপ্রতিভ বোদ্ধা সতীশ রেড্ডি। ভারতীয় কাস্টমসের সাবেক এডিসি। কয়েকবছর ধরে বাংলাদেশে এডিবিতে কাজ করছেন। দুদেশে সীমা পরিসীমা ভালো অবগত। বিষয়ে বলনে বিশ্লেষণে মুন্সিয়ানা। সতীশ যতো এগুচ্ছেন ‘অজানার ভয়’ আমাদের জেঁকে ধরছে।

এ বিশাল স্টাডি ডেলয়েটের বিশেষজ্ঞদের মেধা ও নিবিড় কষ্টের ফসল। স্টাডির ভালো দিকগুলো নোট করছিলাম। উপস্থাপনা শেষ পরিকল্পনামাফিক আমরা জোরে হাততালি দিলাম। কমেন্টস সেশনে ওদের কষ্টে তৈরি প্রতিবেদনের ভালোদিকগুলো তুলে ধরলাম। মুসকিল আসান শুরু হয়ে গেল!দলকে বললাম, বাস্তবমুখী যুক্তি বাহাসে থাকব। টেকনিক্যাল দিক ছাপিয়ে দেশের অর্থ, জনবল, সময় সাশ্রয়ের সাথে সামগ্রিক প্রাপ্তি আগে। অপ্রিয় হলেও বিতর্ক পরিত্যাজ্য! সবার ইনপুটে একজন গুছিয়ে বলবে।

দলবদ্ধ চেষ্টা সার্থক আমাদের। দ্বিতীয় সচিব তারেক দলনেতার চিত্তচাঞ্চল্যে কখনো আশীর্বাদ হয়েছেন। স্থলবন্দরের পরিচালক আলাউদ্দিন নিজের বিষয় বলে গেছেন। দুই জেসি নাহিদ ও বাপ্পী পঠন দর্শনে। সওজের বিশেষজ্ঞ জাকিয়া অনুকূল তথ্য দিয়েছেন।

আইনি জ্ঞান, অভিজ্ঞতা ও ক্ষুদ্রতর বুদ্ধিবিবেচনা খাটিয়ে প্রতিপক্ষের ইস্যু মোকাবেলার সাথে দেশের স্বার্থ আদায়ে নিবিড় চেষ্টা করে গেছি। কিছু ধারণাগত বিষয় চেপেই যাচ্ছিল। বিনয়ের সাথে বুঝিয়ে বলেছি কখনো ইংরেজি বা হিন্দিতে। মুজিব শতবর্ষকেও বৃহৎ ক্যানভাসে ও উপলক্ষ্যে রেখেছি।প্রথম সেশন শেষে এডিবির ফিরোজ আহমেদ (৮২ বিসিএস) স্যার দ্বৈরথী মনোভাবের জন্য অভিবাদন দিলেন। সহকর্মীরা অনায়াস স্পন্দিত!

প্রস্তাবে বাংলাদেশ অংশে এডিবির টাকায়—
– ম্যানিফেস্ট মডিউলের আওতায় দুদেশের ম্যানিফেস্ট ডাটা বিনিময়সহ একইরকম কার্গো ব্যবস্থাপনা হবে;
– এজন্যে স্থাপনাসহ একইরকম হার্ডওয়্যার সফটওয়্যার নির্মাণ হবে;
– বেনাপোল-ঢাকা ও ভোমরা-ঢাকা রুটে বেশ কয়েকটি নতুন বাইপাস সড়ক নির্মাণ হবে;
– সিজিসি-৯ বাইপাসসহ কয়েকটি ২লেন সড়ককে ৪লেন করা
– বন্দর উন্নয়নের অনেকগুলো প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে
– দর্শনা ও বেনাপোলে রেল কার্গো খালাসের ব্যবস্থা হবে; দর্শনারগুলো সিরাজগঞ্জে খালাস হবে
– ভারত অংশে বনগাঁ-পেট্রাপোলে ‘লাস্টমাইল’ সংযোগ সড়ক তৈরি হবে; অন্যান্য বন্দরেও পরে হবে
– বেনাপোল চেকপোস্ট থেকে রেলস্টেশন পর্যন্ত শাটল্ ট্রেন ও বাস চালুর প্রস্তাব গৃহীত;
– দুদেশে কার্গো ট্র্যাকিং পদ্ধতি চালু হবে
– রেলকার্গোত ১৪টি শিল্পপণ্য আমাদানির প্রস্তাব গৃহীত
– বন্দরে পণ্যজট কমাতে দুদেশে বন্দরের কাছাকাছি প্রাইভেট আইসিডি নির্মাণ করা হবে;
– সীমান্তে পদস্থ দুদেশের কাস্টমস কর্মকর্তারা জরুরী প্রয়োজনে বিনা ভিসায় মিটিং করতে পারবে

চিফ কমিশনারের সাথে বসে বোনপোলের
“BSFচেকিং ইস্যু,
“সকাল ৬টা থেকে ট্রাক নেয়া,
“ফাস্টার কার্গো ক্লিয়ারেন্স,
“রিস্ক ম্যানেজমেন্ট ব্যবস্থাপনাসহ অন্যান্য ইস্যুতেও আমাদের প্রাপ্তি বহুল।
যমুনা সেতু পশ্চিমের ICD প্রস্তাব গৃহীত।
সার্বিক সভা উপভোগ্য ছিল।

প্রতিপক্ষের একজন বললেন ১৪টি শিল্পপণ্যসহ বহু দ্বিপাক্ষিক বিষয় দীর্ঘদিন আলোচিত হয়ে আসছে। এবারের পারস্পর্য, সৌহার্দ্য ও অর্জন নজিরবিহীন অনবদ্য! একটি পারস্পর্যময় মহৎ সভা সবমিলিয়ে! ওবেরয়ের দ্বিতীয় দিনের শেষ অধ্যায় গড়িয়ে। দেশের প্রাপ্তি যখন প্রত্যাশা ছাড়িয়ে! সংস্কারের সকল আশংকা মাড়িয়ে। সমগ্র দেশটা যেন হৃদয়ে! ডেলয়েটের একজন বললেন বাংলাদেশ অর্জন অপূর্ব নি:সন্দেহে!

বেলাশেষে আমরা প্রতিপক্ষের প্রবল সমীহে। চিফ কমিশনার প্রমোদ আগারওযাল ১৮৪০সালে নির্মিত কলকাতা কাস্টম হাউসের নিজ কক্ষে টেনে নিয়ে গেলেন। উপহার দিলেন। প্রিন্সিপাল কমিশনার রাজেশ জিন্দাল, এলপিএ পরিচালক, পরোক্ষ কর বোর্ডের পরিচালক তেমসুনারো জমিরসহ ভারতীয় দলের সৌজন্য সমাদর সমীহ ছিল মুগ্ধকর! এডিবি ধনযবাদার্হ। তাদের কারণেই এ স্টাডি ও ২০২০ এর স্মরণীয় প্রাপ্তি!

বিস্মিত হয়েছি, যখন মিটিং শেষে ভারতীয় সড়ক মন্ত্রণালয়ের চিফ ইঞ্জিনিয়ার কৌশিক বসু হাত ঝাঁকিয়ে অভিবাদন দিয়ে বললেন’ “Extraordinarily team leading Mr Commissioner! I witnessed so many international meetings and this is one of the best! I’m sure all enjoyed the whole session like me.”

দক্ষ ভারতীয় দল আগাম প্রস্তুতি, সংখ্যাধিক্য, দেশীয় আবহ ও তথ্যউপাত্তে এগিয়ে। এ স্টাডিও তাদের চাওযাতেই হয়েছিল। পরে মনে হয়েছে আমাদের জন্য। আমাদের দলীয় শৃংখলা ও জাতির পিতার জন্মশতাব্দীর একাত্ম স্পন্দনময় অনুভব! মগজে মননে আজন্ম যোদ্ধা ও মুক্তির মহানায়কের সংগ্রামী জীবন। তাঁর জীবন দর্শনে শ্রদ্ধাবনত সভায় আগত ভারতীয় কর্মকর্তারাও। এ আমাদের অন্তহীন গৌরবের অনন্য প্রাপ্তি।

শততম শুভ জন্মদিন

বিনম্র শ্রদ্ধা
মানবতার মুক্তির মহানায়ক
হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান!

আপনার মন্তব্য লিখুন

লেখকের সম্পর্কে

Shahriar Hossain

জন্মশতবার্ষিকী স্পন্দনে এডিবির সাথে ভারত- বাংলাদেশ দ্বিপাক্ষিক সভা ফলপ্রসু হয়েছে —কাস্টমস কমিশনার বেলাল হোসাইন চৌধুরী

প্রকাশের সময় : ০৮:৪৭:৫৫ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৮ মার্চ ২০২০

নুরুজ্জামান লিটন :=

আরেকটি দ্বিপাক্ষিক সভা। এনবিআরের কল। ২৭ ফেব্রুয়ারি আকতার জানালো। স্পর্শকাতর ও গুরুত্বপূর্ণ। নেতৃত্ব দিতে হবে। গন্তব্য কোলকাতা। মার্চের দ্বিতীয় সপ্তাহে। দেশের জন্যে লড়তে হবে। মুজিব বর্ষে। সেটাও মার্চ মাসে! ভেতরে অন্যরকম স্পন্দন!করোনা আতংকে ক্রমেই বিপর্যস্ত বিশ্ব! বিদেশে যেতে বন্ধু পরিজনের কঠিন বারণ। দেশের বড় স্বার্থ এজেন্ডায়। আমাদের বাণিজ্য ও অর্থনীতির। এখন নাহলে হবেনা।মুক্তিযুদ্ধ করিনি। শহীদরা জীবন দিয়েছেন। দেশের জন্য! আমাদের জন্য! এবার আমাদের পালা। দেশকে দেয়ার। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন পূরণের। তাঁর ত্যাগ, দর্শন, শক্তি, সাহস, প্রেরণায় এগিয়ে যাবার।

বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন সুখী সমৃদ্ধ বাংলাদেশ। সুষ্ঠু বাণিজ্য, এর অবিচ্ছেদ্য অংশ। দুদেশের সীমান্তের বাণিজ্যদশা বদলাতে হবে! বিশেষ করে বাংলাদেশ অংশের অবকাঠামো। সেটাও দেশের অর্থ ও জনবল সাশ্রয়ে। এডিবি বা দাতার অর্থায়নে। মেপে পরিমাপে। বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীর এ শুভক্ষণে।

পরদিন সকাল-সন্ধ্যা সভা। সময় কম। কলকাতা ঢুকে ১১মার্চ রাতেই সোজা হাজি মুহম্মদ মহসিন স্কোয়ারের বিখ্যাত বেকার হোস্টেলে। কক্ষ নম্বর ২৪ আজো সাক্ষ্যবাহী অম্লান। বঙ্গবন্ধুর স্মৃতি বহন করছে। রাফি আহমদ কিডওয়ারি সড়কের মাওলানা আযাদ কলেজ। শতবর্ষের ঐতিহ্যে আজো বাঙময়।বাংলাদেশ-ভারত দ্বিপাক্ষিক সভা! সবসময়ই স্নায়ুধরা অন্যরকম। দেয়া নেয়ার নৈর্ব্যক্তিক দ্বৈরথ! এশিয় উন্নয়ন ব্যাংক তৃতীয় কুশীলব। ফিলিপাইনের আইলিন ছাড়া সবাই ভারতীয়। ভীতি জাগানিয়া বটে।

সভার উদ্দেশ্য, উন্নত সেবা, সময় ও অর্থ সাশ্রয়ী দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের উপায় সন্ধান। ডেলয়েটের তৈরি SASEC কোলকাতা-ঢাকা রুটের ওপর আড়াইশ পাতার স্টাডি পর্যালোচনা ও দেনদরবার।ভারতের কুটনীতিকরা প্রস্তুত থাকেন। মনস্তাত্বিক ঐতিহ্যে আমরা বরাবর পিছিয়ে। টেকনিকাল বিষয় হলে বেশী! মুসাফির দলের সদস্য যেন উত্তম শ্রোতা। মূল প্রেক্ষপট থাকে অজ্ঞাত, অর্পিত, অবহেলিত।

১২ মার্চ ২০২০! দি ওবেরয় গ্রান্ডের ঘরানা কক্ষ! সকাল সাড়ে আটটা। সুনসান নিরবতাময়। ভাঙ্গার অপেক্ষা কাটছেনা! অপেক্ষায় হলভর্তি দুদেশের সকল প্রতিনিধি।এডিবি শুরু করবে। উপস্থাপনায় সপ্রতিভ বোদ্ধা সতীশ রেড্ডি। ভারতীয় কাস্টমসের সাবেক এডিসি। কয়েকবছর ধরে বাংলাদেশে এডিবিতে কাজ করছেন। দুদেশে সীমা পরিসীমা ভালো অবগত। বিষয়ে বলনে বিশ্লেষণে মুন্সিয়ানা। সতীশ যতো এগুচ্ছেন ‘অজানার ভয়’ আমাদের জেঁকে ধরছে।

এ বিশাল স্টাডি ডেলয়েটের বিশেষজ্ঞদের মেধা ও নিবিড় কষ্টের ফসল। স্টাডির ভালো দিকগুলো নোট করছিলাম। উপস্থাপনা শেষ পরিকল্পনামাফিক আমরা জোরে হাততালি দিলাম। কমেন্টস সেশনে ওদের কষ্টে তৈরি প্রতিবেদনের ভালোদিকগুলো তুলে ধরলাম। মুসকিল আসান শুরু হয়ে গেল!দলকে বললাম, বাস্তবমুখী যুক্তি বাহাসে থাকব। টেকনিক্যাল দিক ছাপিয়ে দেশের অর্থ, জনবল, সময় সাশ্রয়ের সাথে সামগ্রিক প্রাপ্তি আগে। অপ্রিয় হলেও বিতর্ক পরিত্যাজ্য! সবার ইনপুটে একজন গুছিয়ে বলবে।

দলবদ্ধ চেষ্টা সার্থক আমাদের। দ্বিতীয় সচিব তারেক দলনেতার চিত্তচাঞ্চল্যে কখনো আশীর্বাদ হয়েছেন। স্থলবন্দরের পরিচালক আলাউদ্দিন নিজের বিষয় বলে গেছেন। দুই জেসি নাহিদ ও বাপ্পী পঠন দর্শনে। সওজের বিশেষজ্ঞ জাকিয়া অনুকূল তথ্য দিয়েছেন।

আইনি জ্ঞান, অভিজ্ঞতা ও ক্ষুদ্রতর বুদ্ধিবিবেচনা খাটিয়ে প্রতিপক্ষের ইস্যু মোকাবেলার সাথে দেশের স্বার্থ আদায়ে নিবিড় চেষ্টা করে গেছি। কিছু ধারণাগত বিষয় চেপেই যাচ্ছিল। বিনয়ের সাথে বুঝিয়ে বলেছি কখনো ইংরেজি বা হিন্দিতে। মুজিব শতবর্ষকেও বৃহৎ ক্যানভাসে ও উপলক্ষ্যে রেখেছি।প্রথম সেশন শেষে এডিবির ফিরোজ আহমেদ (৮২ বিসিএস) স্যার দ্বৈরথী মনোভাবের জন্য অভিবাদন দিলেন। সহকর্মীরা অনায়াস স্পন্দিত!

প্রস্তাবে বাংলাদেশ অংশে এডিবির টাকায়—
– ম্যানিফেস্ট মডিউলের আওতায় দুদেশের ম্যানিফেস্ট ডাটা বিনিময়সহ একইরকম কার্গো ব্যবস্থাপনা হবে;
– এজন্যে স্থাপনাসহ একইরকম হার্ডওয়্যার সফটওয়্যার নির্মাণ হবে;
– বেনাপোল-ঢাকা ও ভোমরা-ঢাকা রুটে বেশ কয়েকটি নতুন বাইপাস সড়ক নির্মাণ হবে;
– সিজিসি-৯ বাইপাসসহ কয়েকটি ২লেন সড়ককে ৪লেন করা
– বন্দর উন্নয়নের অনেকগুলো প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে
– দর্শনা ও বেনাপোলে রেল কার্গো খালাসের ব্যবস্থা হবে; দর্শনারগুলো সিরাজগঞ্জে খালাস হবে
– ভারত অংশে বনগাঁ-পেট্রাপোলে ‘লাস্টমাইল’ সংযোগ সড়ক তৈরি হবে; অন্যান্য বন্দরেও পরে হবে
– বেনাপোল চেকপোস্ট থেকে রেলস্টেশন পর্যন্ত শাটল্ ট্রেন ও বাস চালুর প্রস্তাব গৃহীত;
– দুদেশে কার্গো ট্র্যাকিং পদ্ধতি চালু হবে
– রেলকার্গোত ১৪টি শিল্পপণ্য আমাদানির প্রস্তাব গৃহীত
– বন্দরে পণ্যজট কমাতে দুদেশে বন্দরের কাছাকাছি প্রাইভেট আইসিডি নির্মাণ করা হবে;
– সীমান্তে পদস্থ দুদেশের কাস্টমস কর্মকর্তারা জরুরী প্রয়োজনে বিনা ভিসায় মিটিং করতে পারবে

চিফ কমিশনারের সাথে বসে বোনপোলের
“BSFচেকিং ইস্যু,
“সকাল ৬টা থেকে ট্রাক নেয়া,
“ফাস্টার কার্গো ক্লিয়ারেন্স,
“রিস্ক ম্যানেজমেন্ট ব্যবস্থাপনাসহ অন্যান্য ইস্যুতেও আমাদের প্রাপ্তি বহুল।
যমুনা সেতু পশ্চিমের ICD প্রস্তাব গৃহীত।
সার্বিক সভা উপভোগ্য ছিল।

প্রতিপক্ষের একজন বললেন ১৪টি শিল্পপণ্যসহ বহু দ্বিপাক্ষিক বিষয় দীর্ঘদিন আলোচিত হয়ে আসছে। এবারের পারস্পর্য, সৌহার্দ্য ও অর্জন নজিরবিহীন অনবদ্য! একটি পারস্পর্যময় মহৎ সভা সবমিলিয়ে! ওবেরয়ের দ্বিতীয় দিনের শেষ অধ্যায় গড়িয়ে। দেশের প্রাপ্তি যখন প্রত্যাশা ছাড়িয়ে! সংস্কারের সকল আশংকা মাড়িয়ে। সমগ্র দেশটা যেন হৃদয়ে! ডেলয়েটের একজন বললেন বাংলাদেশ অর্জন অপূর্ব নি:সন্দেহে!

বেলাশেষে আমরা প্রতিপক্ষের প্রবল সমীহে। চিফ কমিশনার প্রমোদ আগারওযাল ১৮৪০সালে নির্মিত কলকাতা কাস্টম হাউসের নিজ কক্ষে টেনে নিয়ে গেলেন। উপহার দিলেন। প্রিন্সিপাল কমিশনার রাজেশ জিন্দাল, এলপিএ পরিচালক, পরোক্ষ কর বোর্ডের পরিচালক তেমসুনারো জমিরসহ ভারতীয় দলের সৌজন্য সমাদর সমীহ ছিল মুগ্ধকর! এডিবি ধনযবাদার্হ। তাদের কারণেই এ স্টাডি ও ২০২০ এর স্মরণীয় প্রাপ্তি!

বিস্মিত হয়েছি, যখন মিটিং শেষে ভারতীয় সড়ক মন্ত্রণালয়ের চিফ ইঞ্জিনিয়ার কৌশিক বসু হাত ঝাঁকিয়ে অভিবাদন দিয়ে বললেন’ “Extraordinarily team leading Mr Commissioner! I witnessed so many international meetings and this is one of the best! I’m sure all enjoyed the whole session like me.”

দক্ষ ভারতীয় দল আগাম প্রস্তুতি, সংখ্যাধিক্য, দেশীয় আবহ ও তথ্যউপাত্তে এগিয়ে। এ স্টাডিও তাদের চাওযাতেই হয়েছিল। পরে মনে হয়েছে আমাদের জন্য। আমাদের দলীয় শৃংখলা ও জাতির পিতার জন্মশতাব্দীর একাত্ম স্পন্দনময় অনুভব! মগজে মননে আজন্ম যোদ্ধা ও মুক্তির মহানায়কের সংগ্রামী জীবন। তাঁর জীবন দর্শনে শ্রদ্ধাবনত সভায় আগত ভারতীয় কর্মকর্তারাও। এ আমাদের অন্তহীন গৌরবের অনন্য প্রাপ্তি।

শততম শুভ জন্মদিন

বিনম্র শ্রদ্ধা
মানবতার মুক্তির মহানায়ক
হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান!