শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

যুক্তরাজ্য প্রবাসী নারীর মৃত্যুর পর তার গ্রামের বাড়ি সবাই কে হোম কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে

সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি:=

সিলেটের শহীদ শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালে(সদর হাসপাতাল)আইসোলেশনে থাকা ঐ নারীর মৃত্যুর পর তার গ্রামের বাড়ির সবাইকে হোম কোয়ারেন্টিনে রেখেছে প্রশাসন।
ঐ নারীর বাড়ি সুনামগঞ্জ জেলার জগন্নাথপুর উপজেলার পাটলী ইউনিয়নের সাতহাল গ্রামের বাসিন্দা যুক্তরাজ্য প্রবাসী।
রবিবার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে বাড়িটি পরিদর্শন করেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও স্বাস্থ্য বিভাগের লোকজন। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ওই বাড়ির সবাইকে আগামী ১৪দিন কঠোরভাবে হোম কোয়ারেন্টিন মেনে চলার নির্দেশনা দিয়েছেন। এর ব্যত্যয় করলে ভ্রাম্যমাণ আদালতে সাজা দেওয়া হবে বলে তাদেরকে সতর্ক করে এসেছেন।
রোববার (২২ মার্চ) ভোরে মারা গেলে ওই নারীর লাশ গ্রামে এনে দাফনের খবরে দিনভর আতঙ্ক বিরাজ করছিল গ্রামবাসীর মধ্যে।
পাটলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সিরাজুল হক বলেন,আইসোলেশনে থাকা নারীর মৃত্যুর পর তার লাশ গ্রামে এনে দাফন করার মাইকিং শুনে গ্রামবাসীর মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। অনেকেই আমাকে আতঙ্কের কথা জানান। আমি বিষয়টি প্রশাসনকে অবহিত করি।
তিনি বলেন,ওই নারীর মৃত্যুর খবর শুনে তার স্বজনরা বাড়িতে একটি গরু জবাই করে শিরনী ও কবর খোঁড়ার আয়োজন করেন। পরে প্রশাসনিক হস্তক্ষেপে তা বন্ধ হয়।
জগন্নাথপুর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) ইয়াসির আরাফাত ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জগন্নাথপুর সার্কেল মাহমুদুল হাসান চৌধুরী রোববার বিকেলে ওই বাড়ি পরিদর্শন করেছেন।
সাতহাল গ্রামের বাসিন্দা ইউপি সদস্য জসিম উদ্দিন বলেন, গত ৪মার্চ স্বামীর সঙ্গে ওই নারী গ্রামের বাড়িতে আসেন। কয়েকদিন বাড়িতে থেকে তারা সিলেট নগরীর শামীমাবাদ আবাসিক এলাকার বাসায় চলে যান। সেখান থেকে গত ২০মার্চ তিনি হাসপাতালে ভর্তি হন।
জগন্নাথপুর উপজেলার স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মধু সুধন ধর বলেন, ওই প্রবাসীর বাড়িতে গিয়ে পরিবারের সদস্যদের বুঝিয়ে আমরা শিরনী ও কবর খোঁড়ার আয়োজন বন্ধ করেছি এবং বাড়ির লোকজনকে বাড়ি থেকে বের না হতে বলেছি।
জগন্নাথপুর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) ইয়াসির আরাফাত বলেন,আমরা ওই নারীর বাড়িতে গিয়ে তার স্বজনদের আগামী ১৪ দিন বাড়ি থেকে বের না হয়ে সর্তকতার সহিত থাকতে বলেছি এবং বাড়িতে জনসমাগম হয় এমন কোনো আয়োজন করতে নিষেধ করেছি।
প্রসঙ্গত,গত ৪মার্চ স্বামীর সঙ্গে যুক্তরাজ্যের ম্যানচেস্টার শহর থেকে সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার পাটলী ইউনিয়নের সাতহাল গ্রামে আসেন ওই নারী। গ্রামের বাড়িতে কিছুদিন থাকার পর সিলেট নগরীর শামিমাবাদের বাসায় যান তিনি। গত ২০মার্চ ওই নারী জ্বর, সর্দি, কাশি ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে সিলেটের শহীদ শামসুদ্দিন হাসপাতালের আইসোলেশন ইউনিটে ভর্তি হন। চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৬১বছর বয়সী ওই নারী রোববার ভোররাতে মারা যান।
অন্যদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় ৯৫জন বিদেশফেরত নাগরিককে হোম কোয়ারেন্টিনে নেওয়া হয়েছে। এ নিয়ে জেলায় সর্বমোট ২৩২জনকে হোম কোয়ারেন্টিনে নেওয়া হয়েছে। তবে গত গত ৩মার্চ থেকে জেলায় প্রায় ৪হাজার প্রবাসী সুনামগঞ্জে প্রবেশ করেছেন বলে জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে।

আপনার মন্তব্য লিখুন

লেখকের সম্পর্কে

Shahriar Hossain

যুক্তরাজ্য প্রবাসী নারীর মৃত্যুর পর তার গ্রামের বাড়ি সবাই কে হোম কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে

প্রকাশের সময় : ০৮:৫১:৩৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ২২ মার্চ ২০২০

সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি:=

সিলেটের শহীদ শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালে(সদর হাসপাতাল)আইসোলেশনে থাকা ঐ নারীর মৃত্যুর পর তার গ্রামের বাড়ির সবাইকে হোম কোয়ারেন্টিনে রেখেছে প্রশাসন।
ঐ নারীর বাড়ি সুনামগঞ্জ জেলার জগন্নাথপুর উপজেলার পাটলী ইউনিয়নের সাতহাল গ্রামের বাসিন্দা যুক্তরাজ্য প্রবাসী।
রবিবার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে বাড়িটি পরিদর্শন করেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও স্বাস্থ্য বিভাগের লোকজন। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ওই বাড়ির সবাইকে আগামী ১৪দিন কঠোরভাবে হোম কোয়ারেন্টিন মেনে চলার নির্দেশনা দিয়েছেন। এর ব্যত্যয় করলে ভ্রাম্যমাণ আদালতে সাজা দেওয়া হবে বলে তাদেরকে সতর্ক করে এসেছেন।
রোববার (২২ মার্চ) ভোরে মারা গেলে ওই নারীর লাশ গ্রামে এনে দাফনের খবরে দিনভর আতঙ্ক বিরাজ করছিল গ্রামবাসীর মধ্যে।
পাটলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সিরাজুল হক বলেন,আইসোলেশনে থাকা নারীর মৃত্যুর পর তার লাশ গ্রামে এনে দাফন করার মাইকিং শুনে গ্রামবাসীর মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। অনেকেই আমাকে আতঙ্কের কথা জানান। আমি বিষয়টি প্রশাসনকে অবহিত করি।
তিনি বলেন,ওই নারীর মৃত্যুর খবর শুনে তার স্বজনরা বাড়িতে একটি গরু জবাই করে শিরনী ও কবর খোঁড়ার আয়োজন করেন। পরে প্রশাসনিক হস্তক্ষেপে তা বন্ধ হয়।
জগন্নাথপুর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) ইয়াসির আরাফাত ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জগন্নাথপুর সার্কেল মাহমুদুল হাসান চৌধুরী রোববার বিকেলে ওই বাড়ি পরিদর্শন করেছেন।
সাতহাল গ্রামের বাসিন্দা ইউপি সদস্য জসিম উদ্দিন বলেন, গত ৪মার্চ স্বামীর সঙ্গে ওই নারী গ্রামের বাড়িতে আসেন। কয়েকদিন বাড়িতে থেকে তারা সিলেট নগরীর শামীমাবাদ আবাসিক এলাকার বাসায় চলে যান। সেখান থেকে গত ২০মার্চ তিনি হাসপাতালে ভর্তি হন।
জগন্নাথপুর উপজেলার স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মধু সুধন ধর বলেন, ওই প্রবাসীর বাড়িতে গিয়ে পরিবারের সদস্যদের বুঝিয়ে আমরা শিরনী ও কবর খোঁড়ার আয়োজন বন্ধ করেছি এবং বাড়ির লোকজনকে বাড়ি থেকে বের না হতে বলেছি।
জগন্নাথপুর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) ইয়াসির আরাফাত বলেন,আমরা ওই নারীর বাড়িতে গিয়ে তার স্বজনদের আগামী ১৪ দিন বাড়ি থেকে বের না হয়ে সর্তকতার সহিত থাকতে বলেছি এবং বাড়িতে জনসমাগম হয় এমন কোনো আয়োজন করতে নিষেধ করেছি।
প্রসঙ্গত,গত ৪মার্চ স্বামীর সঙ্গে যুক্তরাজ্যের ম্যানচেস্টার শহর থেকে সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার পাটলী ইউনিয়নের সাতহাল গ্রামে আসেন ওই নারী। গ্রামের বাড়িতে কিছুদিন থাকার পর সিলেট নগরীর শামিমাবাদের বাসায় যান তিনি। গত ২০মার্চ ওই নারী জ্বর, সর্দি, কাশি ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে সিলেটের শহীদ শামসুদ্দিন হাসপাতালের আইসোলেশন ইউনিটে ভর্তি হন। চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৬১বছর বয়সী ওই নারী রোববার ভোররাতে মারা যান।
অন্যদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় ৯৫জন বিদেশফেরত নাগরিককে হোম কোয়ারেন্টিনে নেওয়া হয়েছে। এ নিয়ে জেলায় সর্বমোট ২৩২জনকে হোম কোয়ারেন্টিনে নেওয়া হয়েছে। তবে গত গত ৩মার্চ থেকে জেলায় প্রায় ৪হাজার প্রবাসী সুনামগঞ্জে প্রবেশ করেছেন বলে জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে।