মামুন বাবু :=
করোনায় কাঁপছে বিশ্ব। প্রতিদিনই হাজার হাজার মানুষ এই মারণ ভাইরাসে আক্রান্ত হচ্ছেন। করোনার থাবা থেকে রক্ষা পায়নি যুক্তরাষ্ট্র, ইতালি ও স্পেনের মতো দেশগুলো। যুক্তরাজ্যেও ছড়িয়ে পড়েছে করোনা।
করোনার রোগী চিহ্নিত করার জন্য ‘কভিড সিম্পটম ট্র্যাকার’ নামের একটি অ্যাপ এনেছে লন্ডনের কিংস কলেজের বিজ্ঞানীরা। আর সেই অ্যাপই বলছে ব্রিটেনে করোনায় আক্রান্ত দেশটির ছয় দশমিক ছয় মিলিয়ন মানুষ। অর্থাৎ প্রায় ৬৬ লাখ।
গত সপ্তাহেই এই অ্যাপটিকে বাজারে ছাড়া হয়। অ্যাপ চালুর মাত্র ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অন্তত ৬ লাখ ৫০ হাজার মানুষ সেটি ডাউনলোড করেছেন। এক সপ্তাহ পর এই অ্যাপ কর্তৃপক্ষ বলছে, তাদের অ্যাপে করোনার লক্ষণ সম্পর্কে বিস্তারিত জানিয়ে ব্যবহারকারীদের কাছে কিছু প্রশ্নের উত্তর জানতে চেয়েছিল। সেখানে ব্যবহারকারীদের দেয়া তথ্য বলছে, দেশটিতে ইতোমধ্যে ৬৬ লাখের বেশি মানুষ করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন।
ডাউনলোডের পর সাইনআপ করে অ্যাপটির জরিপে অংশ নেয়া ১০ শতাংশ মানুষের শরীরে করোনাভাইরাসের লক্ষণ আছে বলে জানিয়েছেন। এই দশ শতাংশ মানুষ বলেছেন, তারা জ্বর, সর্দি, কাশি এবং অবসাদে ভুগছেন।
ব্রিটেনের স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ হাসপাতালে ভর্তি না হওয়া পর্যন্ত কারও করোনা পরীক্ষা করছে না। যে কারণে দেশটিতে ঠিক কতজন করোনা সংক্রমিত হচ্ছেন তার প্রকৃত চিত্র উঠে আসছে না। এই অ্যাপের মাধ্যমে করোনা সংক্রমিত মানুষের সম্পর্কে একটি পরিষ্কার চিত্র উঠে আসতে পারে বলে জানিয়েছেন কিং কলেজের বিজ্ঞানীরা।
ব্রিটেনের ৬ কোটি ৬০ লাখ মানুষের প্রত্যেক ১০ জনের মধ্যে যদি একজনও সংক্রমিত হন; তাহলে মোট সংক্রমিত মানুষের সংখ্যা ৬৬ লাখ কিংবা তারও বেশি হয়। কিন্তু তা গোপন করা হচ্ছে। কোভিড সিম্পটম ট্র্যাকারের এই তথ্য প্রকাশের পর দেশটিতে গণহারে করোনা পরীক্ষা না করায় ব্রিটেনের ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিসকে নিয়ে ব্যাপক বিতর্ক শুরু হয়েছে।
তবে অনেকেই বলছেন, প্রত্যেকদিন অন্তত একবার ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিসের কর্মীদের করোনা পরীক্ষা করা উচিত। কর্মীরা স্বাস্থ্যসেবা দেয়ার জন্য নিরাপদ কিনা সেটি আগে নিশ্চিত করা দরকার।
অ্যাপটির ডেভেলপার কিংস কলেজের অধ্যাপক টিম স্পেকটর দ্য টেলিগ্রাফকে বলেছেন, আমাদের প্রথম বিশ্লেষণে দেখা গেছে, প্রত্যেক দশজনের মধ্যে একজনের শরীরে করোনার লক্ষণ রয়েছে।
এই অ্যাপটি যারা ব্যবহার করেছেন তাদের মধ্যে ৬৫ হাজার মানুষ ইতোমধ্যে করোনা সংক্রমিত হয়েছেন বলে ধারণা করছেন অধ্যাপক টিম। কিন্তু দেশটির সরকারি তথ্য বলছে, বৃহস্পতিবার পর্যন্ত দেশটিতে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৯ হাজার ৫২৯ এবং মারা গেছেন ৪৬৫ জন। এছাড়া এই ভাইরাসে চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়েছেন ১৩৫ জন।