শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

 করোনার চেয়ে কঠিন পেটের  ক্ষুদা ঘড়ে খাবার নাই!! 

মোস্তাফিজুর রহমান :লালমনিরহাট জেলা প্রতিনিধিঃ
পাঁচদিন ধরে কোন কাম কাজ নাই খালি ভ্যান খান নিয়া বসে আছি। হামার রোগের ভয় নাই পেটের টানে বাইরে ভ্যান নিয়া আসছি। সকলের ঘর থেকে বেড়াচ্ছি আর সাহস পাই না ঘরে যাওয়ার। সরকার থাকি কোন খাবার পাইনো না। হামা কি না খেয়া মরে যাম বাহে? এ ভাবে কথা গুলো বলছিলেন ভ্যান চালক জহির আলী (৫৫)।লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার তুষভান্ডার ইউনিয়নের ঘনেশ্যাম গ্রামের ভ্যান চালক জহির আলী। প্রতিদিন ভ্যান চালিয়ে যা অর্থ আসে তা দিয়ে চাউল, ডাল কিনে বাড়ি ফিরেন। গত পাঁচদিন থেকে কোন ভাড়া না পেয়ে উপজেলার তুষভান্ডারের চিড়ার মিলে ভ্যান নিয়ে দুরচিন্তায় বসে আছেন। জহির আলীর ২ ছেলে ২ মেয়েসহ ৬ জনের সংসার। ভ্যান চালিয়ে সংসার চালান তিনি। করোনা ভাইরাসে সব কিছু বন্ধ হওয়ায় পরিবারটি এখন মানবেতর জীবন কাটাচ্ছেন।রোববার (২৯ মার্চ) সকালে লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার তুষভান্ডার এলাকায় কথা হয় ভ্যান চালক মাছুম আলী (৫০) ও আতিকুল ইসলাম (৪৫) এর সাথে তারা জানান, কয়েক দিন ধরে পরিবার নিয়ে খুবই কষ্টে আছি। কোন কামাই নাই। মানুষ ঘর থেকে বেড়ায় না। ঘরে খাবার নাই। সরকার এখনও হামার ভুতি (দিকে) দেখে নাই। আজ যে খামো তার কোন বুদ্ধি নাই এ ভাবে তাদের কষ্টের কথা বলছিলেন।এ দিকে করোনা ভাইরাসে লালমনিরহাটের ৫ উপজেলায় সব দোকানপাট, ট্রেন, বাস ও মানুষ প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বেড় হচ্ছে না। ফলে নি¤œ আয়ের সাধারন মানুষের জীবন হয়ে উঠেছে দুর্বিষহ। পরিবারের খাবার জোগাতে এসব মানুষের নাভিশ্বাস উঠেছে। সরকারী ভাবে কিছু পরিবারকে খাদ্য সামগ্রী দিলেও তা ছিল খুবই কম।বুড়িমারী স্থলবন্দরে প্রায় ১০ হাজার পাথরভাঙা শ্রমিক কাজ হারিয়ে দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। স্থল বন্দরের কাজ বন্ধ থাকায় শ্রমিকরা পরিবার পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবন কাটাচ্ছেন। পাটগ্রাম উপজেলার বুড়িমারী ইউনিয়নের পাথরভাঙা শ্রমিক শফিকুল বলেন, প্যাট কি আর অসুখ মানে! হামার হাত দুকোনার উপরোত চলে সংসার। কাজ বন্ধ হওয়ায় খুব কষ্টে আছি।হাতীবান্ধা  উপজেলা নির্বাহী অফিসার সামিউল আমিন জানান, উপজেলায় হতদরিদ্র প্রায় ৩শত পরিবারকে চাল,ডাল,তেল বিতরন করা হয়েছে। আরও বরাদ্দ চেয়ে জেলায় প্রাশাসকের কাছে আবেদন করা হয়েছে। এ বিষয়ে লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক আবু জাফর বলেন, পাঁচ উপজেলার ৩ হাজার দরিদ্রের জন্য ১৯২ মেট্রিক টন চাল ও ১ লাখ ৮৭ হাজার টাকা বরাদ্দ এসে তা বিতরণ করা হয়েছে। নতুন করে ১ শত মেট্রিক টন চাল ও ৭ লাখ টাকা এসেছে তা দ্রুত বিতরন করা হবে।

 

আপনার মন্তব্য লিখুন

লেখকের সম্পর্কে

Shahriar Hossain

 করোনার চেয়ে কঠিন পেটের  ক্ষুদা ঘড়ে খাবার নাই!! 

প্রকাশের সময় : ১০:২২:০৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩০ মার্চ ২০২০
মোস্তাফিজুর রহমান :লালমনিরহাট জেলা প্রতিনিধিঃ
পাঁচদিন ধরে কোন কাম কাজ নাই খালি ভ্যান খান নিয়া বসে আছি। হামার রোগের ভয় নাই পেটের টানে বাইরে ভ্যান নিয়া আসছি। সকলের ঘর থেকে বেড়াচ্ছি আর সাহস পাই না ঘরে যাওয়ার। সরকার থাকি কোন খাবার পাইনো না। হামা কি না খেয়া মরে যাম বাহে? এ ভাবে কথা গুলো বলছিলেন ভ্যান চালক জহির আলী (৫৫)।লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার তুষভান্ডার ইউনিয়নের ঘনেশ্যাম গ্রামের ভ্যান চালক জহির আলী। প্রতিদিন ভ্যান চালিয়ে যা অর্থ আসে তা দিয়ে চাউল, ডাল কিনে বাড়ি ফিরেন। গত পাঁচদিন থেকে কোন ভাড়া না পেয়ে উপজেলার তুষভান্ডারের চিড়ার মিলে ভ্যান নিয়ে দুরচিন্তায় বসে আছেন। জহির আলীর ২ ছেলে ২ মেয়েসহ ৬ জনের সংসার। ভ্যান চালিয়ে সংসার চালান তিনি। করোনা ভাইরাসে সব কিছু বন্ধ হওয়ায় পরিবারটি এখন মানবেতর জীবন কাটাচ্ছেন।রোববার (২৯ মার্চ) সকালে লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার তুষভান্ডার এলাকায় কথা হয় ভ্যান চালক মাছুম আলী (৫০) ও আতিকুল ইসলাম (৪৫) এর সাথে তারা জানান, কয়েক দিন ধরে পরিবার নিয়ে খুবই কষ্টে আছি। কোন কামাই নাই। মানুষ ঘর থেকে বেড়ায় না। ঘরে খাবার নাই। সরকার এখনও হামার ভুতি (দিকে) দেখে নাই। আজ যে খামো তার কোন বুদ্ধি নাই এ ভাবে তাদের কষ্টের কথা বলছিলেন।এ দিকে করোনা ভাইরাসে লালমনিরহাটের ৫ উপজেলায় সব দোকানপাট, ট্রেন, বাস ও মানুষ প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বেড় হচ্ছে না। ফলে নি¤œ আয়ের সাধারন মানুষের জীবন হয়ে উঠেছে দুর্বিষহ। পরিবারের খাবার জোগাতে এসব মানুষের নাভিশ্বাস উঠেছে। সরকারী ভাবে কিছু পরিবারকে খাদ্য সামগ্রী দিলেও তা ছিল খুবই কম।বুড়িমারী স্থলবন্দরে প্রায় ১০ হাজার পাথরভাঙা শ্রমিক কাজ হারিয়ে দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। স্থল বন্দরের কাজ বন্ধ থাকায় শ্রমিকরা পরিবার পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবন কাটাচ্ছেন। পাটগ্রাম উপজেলার বুড়িমারী ইউনিয়নের পাথরভাঙা শ্রমিক শফিকুল বলেন, প্যাট কি আর অসুখ মানে! হামার হাত দুকোনার উপরোত চলে সংসার। কাজ বন্ধ হওয়ায় খুব কষ্টে আছি।হাতীবান্ধা  উপজেলা নির্বাহী অফিসার সামিউল আমিন জানান, উপজেলায় হতদরিদ্র প্রায় ৩শত পরিবারকে চাল,ডাল,তেল বিতরন করা হয়েছে। আরও বরাদ্দ চেয়ে জেলায় প্রাশাসকের কাছে আবেদন করা হয়েছে। এ বিষয়ে লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক আবু জাফর বলেন, পাঁচ উপজেলার ৩ হাজার দরিদ্রের জন্য ১৯২ মেট্রিক টন চাল ও ১ লাখ ৮৭ হাজার টাকা বরাদ্দ এসে তা বিতরণ করা হয়েছে। নতুন করে ১ শত মেট্রিক টন চাল ও ৭ লাখ টাকা এসেছে তা দ্রুত বিতরন করা হবে।