নুরুজ্জামান লিটন ।।
হাইড্রোক্সিক্লোরোকুইন না পাঠালে এর ফল ভোগ করতে হবে ভারতকে। দুইদিন আগে দিল্লিকে এমন হুমকির পর সুর নরম করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ভারত ম্যালেরিয়াপ্রতিরোধী এ ওষুধ ছাড় করতেই ট্রাম্প বললেন, মোদি খুব ভালো মানুষ। ফক্স নিউজকে এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প এ সব কথা বলেন।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক গণমাধ্যম ফক্স নিউজকে টেলিফোনে এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বলেন, আমি কয়েক মিলিয়ন ডোজ কিনেছি। ২৯ মিলিয়নেরও বেশি। আমি প্রধানমন্ত্রী (নরেন্দ্র) মোদির সঙ্গেও এই নিয়ে কথা বলেছি, এই ওষুধের বেশিটাই ভারত থেকে এসেছে। আমি তাকে আগেই এ বিষয়ে অনুরোধ করেছিলাম। সত্যিই উনি দুর্দান্ত মানুষ। প্রকৃত অর্থেই উনি ভালো মানুষ।
প্রেস ট্রাস্ট অব ইন্ডিয়া (পিটিআই) জানায়, গুজরাটের তিনটি কারখানা থেকে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশে আপাতত ২৯ মিলিয়ন ডোজ পাঠানো হয়েছে। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি জানায়, এর আগে সোমবার হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে ট্রাম্প বলেন, ‘আমি অবাক হব যদি উনি (প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি) এই সিদ্ধান্ত নেন, আপনারা জানেন। কারণ ভারতের সঙ্গে আমেরিকার সম্পর্ক খুব ভালো।’
এর পরই ট্রাম্প বলেন, ‘মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ওষুধ ও চিকিৎসা সরঞ্জাম রফতানিতে নিষেধাজ্ঞা চাপানো হলে প্রত্যাঘাত হবে।’একই সঙ্গে মার্কিন প্রেসিডেন্ট আরও জানিয়েছেন, ‘আমি এই সিদ্ধান্তটা পছন্দ করছি না। এটি তার (মোদি) সিদ্ধান্ত বলেও শুনিনি। আমি এটি জানি যে, কিছু দেশের ক্ষেত্রে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। আমি গতকালই তার সঙ্গে কথা বলেছি। দু’জনের মধ্যে খুব ভালো আলোচনাও হয়েছে। এটি তার সিদ্ধান্ত ছিল কিনা দেখব। বহু বছর ধরেই তারা (ভারত) বাণিজ্য ক্ষেত্রে আমেরিকার থেকে সুবিধা পেয়েছে।’
এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশে ক্লোরোকুইনের চালান পাঠানোর পরই মার্কিন প্রেসিডেন্ট তার সুর নরম করেন। ট্রাম্পের হুমকির পর মঙ্গলবার ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র অনুরাগ শ্রীবাস্তব বলেছেন, ভারত সব সময়েই আন্তর্জাতিক সংহতি ও সহযোগিতার কথা বলে এসেছে। তিনি বলেন, ‘এই মহামারীর সময়ে মানবতার কথা ভেবে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে যে, ভারত প্যারাসিটামল ও হাইড্রোক্সিক্লোরোকুইনের মতো ওষুধ যথাযথ পরিমাণে আমাদের প্রতিটি প্রতিবেশী দেশকে সরবরাহ করবে। যে সব দেশ করোনায় মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সেখানেও আমরা এই প্রয়োজনীয় ওষুধ সরবরাহ করব।’
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ৪ লাখের বেশি মানুষ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। আর এ ভাইরাসটিতে সংক্রমিত হয়ে দেশটিতে এ পর্যন্ত ১৩ হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে।